

প্রীতি গুপ্তাঃ বিশ্বে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা আগামী দিনে বিজ্ঞানীদের কাছে সবচেয়ে বড় ইস্যু হতে চলেছে। সারা বিশ্বে যে অনুপাতে জনসংখ্যা বাড়ছে , অন্যদিকে সেই অনুপাতে চাষ জমি কমছে। এই অবস্থায় বহু ফসলী চাষাবাদ খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করনের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত।জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আমাদের দেশে বেশি হওয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আগামী দিনে ভারতে একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি হওয়ায় প্রতি বছর বাড়তি জনসংখ্যার মাথাগোঁজার জন্য গৃহ নির্মাণে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আবাদযোগ্য জমি চাষের আওতাবহির্ভূত হয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া শহরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ চাষযোগ্য জমিতে আবাসন প্রকল্প ও কলকারখানা স্থাপন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবকাঠামো স্থাপনের জন্য ব্যাপকভাবে আবাদি জমির পরিধি দ্রুত কমছে। এ অবস্থায় বহু ফসলি চাষ আমাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
আজ থেকে ৪০ বছর আগে যে পরিমাণ জমিতে আমাদের প্রধান খাদ্যশস্যগুলি যেমন ধান ,গম উৎপাদন হতো; বর্তমানে এই সব চাষে ব্যবহৃত জমির পরিমাণ কমলেও উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে উন্নত বীজ, সার ও কীটনাশকের ব্যবহার, যান্ত্রিক চাষ, একফসলি জমিকে দুই বা তিনফসলি ভূমিতে রূপান্তর, উন্নত জাতের বীজ উদ্ভাবন, বপন অথবা রোপণ থেকে পরিপক্ব হওয়ার সময়ের হ্রাসে সাফল্য, জমিতে প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ প্রভৃতি সমন্বিতভাবে কার্যকরের উদ্যোগ নেয়ার ফলে।
বহু ফসলি শস্য চাষের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আমাদের জীবনধারণে প্রয়োজনীয় সব কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা , সেই সাথে বাড়তি উৎপাদিত পণ্য রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন।আমরা ধান, গম,সবজি ও আলু উৎপাদনে দুর্যোগের সম্মুখীন না হলে চাহিদা মিটিয়ে রফতানির জন্য কিছু অবশিষ্ট পাচ্ছি। এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় সাফল্য। সাফল্যের এই ধারাবাহিকতায় আমরা যদি উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে পারি; তা এক দিকে যেমন আমাদানি নির্ভরতা কমাবে, অন্য দিকে কৃষকের জীবনে সমৃদ্ধি আনবে। আমাদের অর্থনীতি এখনো অনেকটা কৃষিনির্ভর। দেশে উল্লেখযোগ্য শিল্পায়ন হওয়া সত্ত্বেও ২০২০ – ২১ সালের ভারতীয় অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুসারে, ভারতে জাতীয় উৎপাদনে কৃষির অবদান ২০.২% ।কৃষকের উন্নয়ন মানে তার ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের আর্থিক সমৃদ্ধি।যা দেশের অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার করবে এবং সার্বিকভাবে অর্থনীতিকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করবে।
বর্তমানে দেশের অনেক স্থানে কৃষকরা ধানের সাথে মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। এ সফলতা কৃষকের আমিষের চাহিদা পূরণ করা ছাড়াও বাড়তি অর্থের জোগান দিচ্ছে। তবে চাষের পদ্ধতিটি নিচু জমিতে সীমিত রয়েছে। অনেক স্থানে ধানের সাথে খেসারি, কলাই ও মুগ ডালের চাষ হচ্ছে। আবার অনেক স্থানে ধানের এক বা দু’টি ফসল করার পর সবজি-মসলা, আলু প্রভৃতির আবাদ হচ্ছে।
একই কৃষিপণ্য সবসময় উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্য হিসেবে বিবেচিত হয় না। এটি মূলত নির্ভর করে একটি পণ্যের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর। আমাদের কৃষকদের উৎপাদন ও চাহিদা এ দু’টি বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় সাধারণত দেখা যায়, যেকোনো বছর একটি কৃষিপণ্যের উচ্চমূল্য পাওয়া গেলে পরবর্তী বছর কৃষকরা পণ্যটি অধিক হারে উৎপাদন করে। কিন্তু বেশি উৎপাদনে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় যে পণ্যের মূল্য নিম্নমুখী হয়; সে বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে প্রায়ই তাদের লাভের পরিবর্তে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
এমন অনেক উচ্চমূল্যের কৃষিপণ্য রয়েছে যেগুলোর চাহিদার কিয়দংশ দেশে উৎপাদন হয় যেমন- এলাচ, দারুচিনি, জিরা, গোলমরিচ প্রভৃতি। এসব কৃষিপণ্য ফসলের মাঠের পরিবর্তে বাড়ির আঙিনায় চাষ বেশি লাভজনক ও সুবিধাজনক। আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষক এখনো এসব কৃষিপণ্যের চাষ ও উৎপাদন পদ্ধতি বিষয়ে যথেষ্ট অবহিত নয়। এসব পণ্য চাষ বিষয়ে কৃষককে উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে অনেক দক্ষ কৃষিজিবী তৈরি করা সম্ভব।
আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে যেসব ফল উৎপন্ন হয় তার মধ্যে আম, লিচু, বেল, কমলা, তরমুজ, পেয়ারা প্রভৃতি উচ্চমূল্যের ফল হিসেবে বিবেচিত। এসব ফল বছরে একবার উৎপন্ন হয়। উচ্চতর প্রযুক্তি ব্যবহারে এসব ফলের উৎপাদন বাড়ানো গেলে কৃষক লাভবান হওয়ার পাশাপাশি ভোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রয়ের সুযোগ পাবে।
তবে এক্ষেত্রে বহু ফসলী চাষাবাদ-এর মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে আমাদের সামনে আসা প্রধান চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে একটি হল কীটনাশক এবং সারের ব্যবহার। যদিও এই রাসায়নিকগুলি ফসলের ফলন উন্নত করার জন্য অপরিহার্য, তবে অত্যধিক এবং নির্বিচারে ব্যবহারের ফলে খাদ্যে রাসায়নিকগুলি খাদ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে যা ভোক্তাদের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। সেই কারণে সুপারিশকৃত ডোজ এবং প্রয়োগ পদ্ধতি অনুসরণের গুরুত্ব সহ কীটনাশক ও সারের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে কৃষকদের শিক্ষিত করা দরকার।
একাধিক ফসল চাষে খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কিত আরেকটি সমস্যা হল সেচের জন্য দূষিত জলের ব্যবহার। ভারতের অনেক অঞ্চলে কৃষকরা সেচের জন্য নদী, হ্রদ এবং ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভর করে। যাইহোক, এই জল শিল্প দূষণকারী, পয়ঃনিষ্কাশন, এবং কৃষি রাসায়নিক দ্বারা দূষিত হতে পারে, যা ফসলকেও দূষিত করতে পারে এবং ভোক্তাদের জন্য একটি গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কৃষকদের জন্য জলের উৎসের গুণমান পরীক্ষা করা এবং সেচের জন্য ব্যবহৃত জল ফসল ফলানোর জন্য নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য।
উপরন্তু, ফসল সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং পরিবহনের সময় সঠিক স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দূষিত যন্ত্রপাতি, অনুপযুক্ত হ্যান্ডলিং এবং স্টোরেজ পরিস্থিতি সবই ফসলে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত পদার্থের বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারে, যা ভোক্তাদের অনেক খাদ্যজনিত অসুস্থতার কারণ হতে পারে। সেই কারণে খামার থেকে কাঁটা পর্যন্ত তাদের ফসলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকদের স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত করা দরকার।
বহু ফসলী চাষাবাদ খাদ্য নিরাপত্তার সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য, সরকারি সংস্থা, অলাভজনক সংস্থা এবং কৃষি বিশেষজ্ঞদের কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং সংস্থান প্রদানের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এর মধ্যে শস্য ব্যবস্থাপনা, মাটির স্বাস্থ্য, জলের ব্যবস্থাপনা এবং কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের সর্বোত্তম অনুশীলন সম্পর্কে কৃষকদের শিক্ষিত করা অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।এক্ষেত্রে উৎপাদিত ফসল যাতে নিরাপত্তার মান করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা প্রবিধান এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।
আরও পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন