![](https://uttarapath.com/oogokoab/2023/10/image-64.png)
![](https://uttarapath.com/oogokoab/2023/10/image-64.png)
উত্তরাপথঃ বিজ্ঞানীরা একটি রঙিন নতুন পেইন্ট ডিজাইন করেছেন যা আপনার বিদ্যুৎ বিল কামাতে পারে। আমরা বিশ্বে এমন এক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি যেখানে শক্তি সংরক্ষণ ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, বিজ্ঞানীদের দ্বারা তৈরি এই যুগান্তকারী উদ্ভাবন আমাদের বিদ্যুৎ খরচ কম করার চেষ্টাতে বিপ্লব ঘটাতে পারে।স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি নতুন পেইন্ট ডিজাইন করেছেন যা এয়ার কন্ডিশনার এবং হিটারের উপর আমাদের ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করতে পারে। বিজ্ঞানীদের তৈরি এই নতুন রঙিন পেইন্ট,শুধুমাত্র নান্দনিকতা বাড়াবে তা নয়,এটি আমাদের বিদ্যুৎ বিলের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাবে।
রঙ সবসময় আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, আমাদের মেজাজ, আবেগ এবং উপলব্ধিকে প্রভাবিত করে। গবেষকরা প্রকৃতিতে পাওয়া অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলি ব্যবহার করে এমন একটি পেইন্ট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে যা পেইন্টের এই ধারণাটিকে নান্দনিকতার বাইরে নিয়ে গেছেন।এর ফর্মুলেশনে বিশেষ কৌশল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, এই উদ্ভাবনী পেইন্টটি এমনভাবে আলোকে প্রতিফলিত এবং শোষণ করতে পারে যে এটি অদ্ভুতভাবে কৃত্রিম আলোর প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে। পেইন্টটি সূর্যের মধ্য-ইনফ্রারেড আলোর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিফলিত করতে সক্ষম, যা প্রচলিত রঙিন রঙের তুলনায় ১০ গুণ বেশি প্রতিফলন করে।
এই পেইন্টটি গ্রীষ্মে ঘর ঠান্ডা রাখে এবং শীতকালে ঘর উষ্ণ রাখে। তাই এই পেইন্টগুলি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ এবং ঘর গরম করার বিকল্প হিসাবে কাজ করতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনে ব্যাপকভাবে অবদান রাখে। প্রসিডিংস অফ ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সেস- এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন পেইন্টগুলির ব্যবহারের উপর একটি সমীক্ষা চালান হয়েছে তাতে দেখানো হয়েছে এয়ার কন্ডিশনারে সারা বিশ্বের ১৩ শতাংশ শক্তি ব্যবহার হয় এবং এটি ১১ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে অবদান রাখে। তবে নতুন পেইন্টের ব্যবহার ঘর শীতল করার জন্য ব্যবহৃত মোট শক্তি প্রায় ২১ শতাংশ কমিয়ে দেয়। বিজ্ঞানীদের এই নতুন আবিষ্কার এয়ার কন্ডিশনার এবং হিটিং প্রতিস্থাপন করতে পারে, এবং বিদ্যুৎ বিল কামাতে পারে। নতুন উদ্ভাবন অধ্যয়ন করার জন্য, বিজ্ঞানীরা একটি কৃত্রিমভাবে উষ্ণ পরিবেশে পেইন্টটি পরীক্ষা করেছেন। অ্যাপার্টমেন্টের দেয়াল এবং ছাদে এই পেইন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল,তাতে বিজ্ঞানীরা দেখেন হিটার এবং এয়ার কন্ডিশনা বাবদ বিদ্যুতের ব্যবহার এক বছরে ৭.৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
মধ্য-ইনফ্রারেড আলো সাধারণত বিল্ডিং পৃষ্ঠের তাপের শোষক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যখন একটি বিল্ডিংয়ের বাইরে ব্যবহার করা হয়, তখন পেইন্টটি তাপকে দূরে রাখে এবং তাপ ধরে রাখতে এটি ভিতরে ব্যবহার করা যেতে পারে। পেইন্টটি সূর্যের মধ্য-ইনফ্রারেড আলোর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিফলিত করতে সক্ষম, যা প্রচলিত রঙিন রঙের তুলনায় ১০ গুণ বেশি প্রতিফলন।পেইন্টের আবিষ্কর্তাদের মতে, এটি একটি “বছরব্যাপী শক্তি-সাশ্রয়ী সমাধান”, যা বিভিন্ন জলবায়ুতে ব্যবহার করা যেতে পারে। কৃত্রিমভাবে উষ্ণ অবস্থায় পরীক্ষা করা হলে, পেইন্টটি আবদ্ধ স্থানকে শীতল করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির পরিমাণ প্রায় ২১ শতাংশ কমিয়ে দেয়। আবার কোনও ঠান্ডা স্থানকে গরম করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির ব্যবহার ৩৬ শতাংশ কমিয়েছে।
যেহেতু আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি, তাই আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান গ্রহণ করা অপরিহার্য। এই রঙিন পেইন্ট শুধুমাত্র বিদ্যুৎ শক্তি সংরক্ষণ করে না বরং এটি পরিবেশে গ্রীন হাউস গ্যাস কমাতে সাহায্য করে। এই পেইন্টটির ব্যবহার আমাদের সবুজ ভবিষ্যতের দিকে এক ছোট পদক্ষেপ।এই রঙিন পেইন্টের আবিষ্কার দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের সন্ধানে বিশ্ববাসীর সামনে এক আশা নিয়ে আসে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে উদ্ভাবনের কোন সীমা নেই। বর্তমানের এক ছোট আবিষ্কারও ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। এই নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন আমাদের বিদ্যুৎ বিল কামাতে পারে তেমন,এর মাধ্যমে আমরা একটি উজ্জ্বল, আরও পরিবেশ সচেতন ভবিষ্যতের জন্য অবদান রাখতে পারি।
Ref- The study was published in PNAS
আরও পড়ুন
Vitamin-D: ভিটামিন ডি’র সেবন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়
উত্তরাপথ: হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক সহ কার্ডিওভাসকুলার রোগগুলি বর্তমানে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ।সম্প্রতি একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে দেখা গেছে যে ভিটামিন ডি সম্পূরকগুলি ৬০ বছরের বেশি বয়সী লোকেদের হার্ট অ্যাটাক সহ যে কোনও বড় ধরনের কার্ডিওভাসকুলার অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারে৷ গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন ডি প্রায়ই "সানশাইন ভিটামিন" হিসাবে পরিচিত। এটি গ্রহণকারীদের মধ্যে স্ট্রোক সহ কার্ডিওভাসকুলার রোগ ৯% হ্রাস পেয়েছে । যা ২৮ জুন দ্য বিএমজে দ্বারা প্রকাশিত একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Life in Saturn: শনিতে কি প্রাণের "ছোঁয়া"?
ড. সায়ন বসু: গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী গায়া (Gaia) এবং উরেনাস (Urenus)-এর সন্তান এঙ্কেলাডাস (Enceladus) ছিলেন একজন দৈত্য | দেবতা এবং দৈত্যদের যুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন যুদ্ধ এবং জ্ঞানের দেবী এথেনার (Athena) বিপক্ষে | এমনও মনে করা হয় যে এঙ্কেলাডাসকে ইতালির সিসিলিতে অবস্থিত এতেনা (Etena) পর্বতের নীচে সমাধি দেওয়া হয় | বলা হয়ে থাকে ভূমিকম্প এবং অগ্ন্যুৎপাতের জন্যে নাকি তার নিঃশ্বাস দায়ী | ঠিক তেমনই শনির একটি ছোট উপগ্রহ যার নামও এঙ্কেলাডাস তা থেকেও প্রচুর পরিমানে ফসফরাসের হদিশ পাওয়া গেছে যা কিনা বৈজ্ঞানিকদের .....বিস্তারিত পড়ুন
Rinku Singh: আন্তর্জাতিক ম্যাচের আগে বৃন্দাবনে গেলেন
উত্তরাপথ: উত্তর প্রদেশ ও কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটার রিঙ্কু সিংকে (Rinku Singh)নিয়ে জল্পনা, খুব শীঘ্র তাকে দেশের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যাবে। তার মাঝেই বৃন্দাবনে গেলেন রিঙ্কু। সেখানে বাঁকেবিহারীর মন্দিরে পুজোও দেন তিনি। সেখানে রিঙ্কুর সঙ্গে তাঁর কয়েক জন বন্ধুও ছিলেন। এবারের আইপিএলে কেকেআরের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন রিঙ্কু। তাঁর খেলা নজর কেড়েছিল বর্তমান .....বিস্তারিত পড়ুন
Gond Tribe: মধ্য প্রদেশে গোন্ড উপজাতির সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ
গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো: গোন্ড উপজাতি(Gond tribe) বিশ্বের বৃহত্তম উপজাতি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি। এটি ভারতের বৃহত্তম উপজাতি । এদের গায়ের রং কালো, চুল কালো, ঠোঁট মোটা, নাক বড় ও ছড়ানো। তারা অলিখিত ভাষা গোন্ডি ভাষাতে কথা বলে, যা দ্রাবিড় ভাষার সাথে সম্পর্কিত। গোন্ড উপজাতির একটি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, বিশ্বাস করা হয় যে তাদের শিকড় প্রাক-আর্য যুগে্র । গোন্ডদের সবচেয়ে গৌরবময় রাজা ছিলেন সংগ্রাম শাহ এবং দলগত শাহ, যারা ম্ধ্যপ্রদেশের গন্ডয়ানা রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় অনেকগুলি দুর্গ তৈরি করেছিলেন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে দলগত .....বিস্তারিত পড়ুন