বিনিয়োগ * ব্যাবসা * রাজনীতি

উত্তরাপথ

বর্তমানে আমরা এমন এক সমাজে বসবাস করছি যেখানে সাধারণ মানুষ হতাশাগ্রস্থ, রাজনীতি বানিজ্যে পরিণত হয়েছে। এই বাণিজ্যে যে দল বা প্রার্থী যত বেশী বিনিয়োগ করতে পারবে তাঁর মুনাফা তত বেশী হবে। রাজনীতিতে এই বিনিয়োগ অর্থ ও লোকবল এই দুই ক্ষেত্র থেকেই আসে। ক্ষমতার কাছে পরাজিত হয় স্বচ্ছতা ও দীনতা।
সামনেই আমাদের রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলি সাধারণত মনোনয়নের সময় প্রার্থীদের অর্থকেই প্রধান্য দেয়, আর এখান থেকেই শুরু নির্বাচনে প্রথম বিনিয়োগ। এরপর প্রচার সহ একাধিক ক্ষেত্রে একজন প্রার্থী বিনিয়োগ করেন। পঞ্চায়েত রাজনীতিতে যে প্রার্থীর বিনিয়োগ যত বেশী তাঁর জয় লাভের সম্ভাবনা ততো উজ্জ্বল। অন্যদিকে একজন সাধারণ প্রার্থী যার না আছে তেমন অর্থের জোর, না আছে লোকবল আর প্রশাসনিক ক্ষমতা। তাঁর কথা শুনবে কে? এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অধিকাংশ প্রার্থী অর্থ, লোকবল সহ প্রশাসনিক ক্ষমতাই বিরোধীদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। তাই নির্বাচনের ফল যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের অনুকুলে যাবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমাদের রাজ্য রাজনীতিতে পুলিশ, প্রশাসন সহ বিচার ব্যবস্থা বরাবর সক্রিয়। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ মেনে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন ঠিক কবে হবে তা কেউ জানে না।
সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে আমাদের এক সহ কর্মী মালদার বেশ কিছু গ্রামে যাই। আমাদের সহ কর্মীটি মালদার বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের এক পরিচিত মুখ। তাকে দেখে এক ষাটোর্ধ লোক এগিয়ে এলেন। ওই ব্যক্তি ব্যাংকে চাকুরী করতেন। এখন অবসর জীবন যাপন করছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বললেন। তাঁর কথায় নির্বাচনতো এখন জণগনের দ্বারা হয়না, যেখানে যে দল ক্ষমতাই থাকে তারাই নিজেদের মত করে ভোট করিয়ে নেয়।
২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনের রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে তৃনমূল নেত্রীকে যেভাবে সারা দেশে সমালোচনার মুখে পরতে হয়েছিল তাতে এবারের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ রাখতে তৃনমূল নেত্রীর রাজনৈতিক কৌশল কি হতে চলেছে তা দেখার জন্য রাজ্যবাসী অপেক্ষা করছে। তবে মজার ব্যাপার হছে এই নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কেউ ভাবছেন বা তা নিয়ে কারও তেমন কৌতূহল আছে বলে মনে হচ্ছেনা। প্রতিটি নির্বাচনের ভিন্ন ভিন্ন কৌশল গ্রহনের কৃতিত্ব যেমন তৃণমূল নেত্রীকে দিতে হয়, তেমনি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত সেই কৌশল গোপন রাখার কৃতিত্বও তাঁর। তাছাড়া দলটি যেভাবে দিনে দিনে পরিবার কেন্দ্রীক হয়ে উঠেছে তাতে দলের অন্য লোকেরা আগামী নির্বাচনী কৌশল সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন বলে মণে হয়না।
অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি সহ বাম ও কংগ্রেসের পঞ্চায়েত স্তরে তৃনমূলের মত মজবুত সংগঠন নেই। তবে আগামী দিনে বিরোধী দলগুলি সাগরদিঘীর উপনির্বাচনের ফলাফলে উৎসাহিত হয়ে কি কৌশল নিচ্ছে তাঁর উপর নির্ভর করবে আগামীতে তাদের আসন সংখ্যা। তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন যদি গতবারের মত তিন দিনে নির্বাচন না করে সারা রাজ্যে এক দিনে নির্বাচন করে তবে আশা করা যায় রাজ্যে নির্বাচনী সন্ত্রাস কিছু কম হবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


কৃষ্ণগহ্বরের "ছায়া" ও "ছবি"

ড. সায়ন বসু: ১৭৮৩ সালে ভূতত্ত্ববিদ জন মিচেল (John Michell) ‘ডার্ক স্টার’ (dark stars) শিরোনামে একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তার গবেষণা পত্রের বিষয়বস্তু ছিল "বিপুল পরিমাণ ভর বিশিষ্ট কোন বস্তু যার মহাকর্ষের প্রভাবে আলোক তরঙ্গ পর্যন্ত পালাতে পারে না"। এখান থেকেই মূলত কৃষ্ণগহ্বরের (Black Hole) ধারণা আসে এবং এটি নিয়ে গবেষনা ও অনুসন্ধান শুরু হয়। পরবর্তিতে অবশ্য এটি বিজ্ঞান মহলে একটি অযৌক্তিক তত্ত্ব হিসেবে বেশ অবহেলার স্বীকার হয়। আলোর মত কোন কিছু বেরিয়ে আসতে পারবে না এমন একটি তত্ত্ব বিজ্ঞানীদের কাছে বেশ অযৌক্তিক মনে হয়েছিল। তাই ধীরে ধীরে থেমে যায় কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষনা। .....বিস্তারিত পড়ুন

কতো অজানা রে

মৈত্রেয়ী চৌধুরী: ইতিহাস বিষয়ে আলোচনা করতে গেলেই আমাদের মনে যে সব সৌধের প্রসঙ্গ মনে আসে তারমধ্যে পার্লামেন্ট ভবন একটা অবশ্য দ্রষ্টব্য স্থান। বহু পর্যটক এই ভবন দেখতে যান. কিন্তু জানেন কি, এই পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন কে বানিয়েছিলেন ? 10 জনকে জিজ্ঞেস করলে 9 জনই বলতে পারবেন না। যাঁরা খুব ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন অথবা গুগুল সার্চ করে থাকেন, তাঁরা হয়তো উত্তরটা দিতে পারবেন। পার্লামেন্ট ভবনের ডিজাইন বানিয়েছিলেন বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি এডুইন লুটিয়েন। তাঁর সহকারী ছিলেন আরেক ব্রিটিশ স্থপতি হার্বার্ট বেকার। 1927 খ্রিস্টাব্দে এই ভবনটির নির্মাণ সম্পূর্ণ হয় এবং ব্রিটিশ .....বিস্তারিত পড়ুন

বেতন, মাসে ৩০,০০০ আর সম্পত্তির মালিকানা ৭ কোটির বেশী

উত্তরাপথ: এ এক দুর্নীতির অনন্য নজির যা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি কে লজ্জায় ফেলবে । দুর্নীতির এই অভিযোগটি উঠেছে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ হেমা মীনার বিরুদ্ধে।মধ্যপ্রদেশের সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের পর হেমা মীনা প্রচার মাধ্যমের নজরে আসে । এখন প্রশ্ন কে এই হেমা মীনা ? মধ্যপ্রদেশ পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োজিত সহকারী প্রকৌশলী ইনচার্জ যিনি মাসে ৩০,০০০ টাকা আয় করেন । দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তার বাড়ি থেকে সাতটি বিলাসবহুল গাড়ি, ২০,০০০ বর্গফুট .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top