আর কি ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান সারা দেবে?

উত্তরাপথঃ আশা সত্ত্বেও চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার আর রোভারের থেকে আর কোনও সাড়া পাচ্ছে না ইসরো। এখনও চন্দ্রযান ৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞান নিশ্চল হয়ে পড়ে আছে।নিশ্চল পড়ে থাকার কারণ  হিসেবে মনে করা হচ্ছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এখন সূর্যের আলো নেই। আলোর অভাবে সৌরকোষ (Solar Panel) চার্জ করতে পারছে না রোভার প্রজ্ঞান। ফলে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোরও যোগাযোগ করতে পারছে না এই রোভারের সঙ্গে।

তবে  চন্দ্রযান-3 তার বৈজ্ঞানিক উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ করার পর, ইসরো চাঁদে সূর্যাস্তের আগে যন্ত্রগুলির সমস্ত ক্রিয়াকলাপ বন্ধ করে দেয় এবং সেগুলিকে “স্লিপ মোডে” রেখে মিশনের জীবনকাল দীর্ঘ করার চেষ্টা করে।  মিশনটি এখানে পৃথিবীতে একটি চন্দ্র দিন বা প্রায় ১৪ দিন কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল।  ধারণাটি ছিল যে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে সূর্য উঠার সাথে সাথে পর্যাপ্ত সূর্যালোক পেলে ল্যান্ডার এবং রোভার  আবার জেগে উঠবে।সেই মত আশা করা হচ্ছে আরও ৫ দিন পরে, ৬ অক্টোবর প্রজ্ঞানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে।

তবে প্রজ্ঞানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারলেও ,চন্দ্রযান-৩ মিশন একটি অপ্রতিরোধ্য সাফল্য পেয়েছে।  মিশনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল চাঁদে একটি সফট-ল্যান্ডিং করার মাধ্যমে ভারতের ক্ষমতা প্রমাণ করা।  এটি করার মাধ্যমে, ভারত বিশ্বের সেই পাঁচটি দেশের তালিকায় যোগ দিয়েছে যেগুলি  চাঁদে সফল ভাবে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে।

এছাড়াও, প্রজ্ঞান রোভারটি চাঁদে প্রায় ১০০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে এবং চাঁদে বিভিন্ন উপাদানের উপস্থিতি সনাক্ত করেছে।  সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি সালফারের উপস্থিতির প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, যা অন্য কোনো মিশনের দ্বারা আগে করা হয়নি।এই অবস্থায় আবার যদি রোভার প্রজ্ঞানকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব হয় তা হলে তা হবে বাড়তি পাওনা।আর সেই চেষ্টাই করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।এ বিষয়ে ইসরো থেকে জানানো হয়েছে, ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। কিন্তু এখনো কোনো সংকেত পাওয়া যায়নি। তবে তারা যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

তবে একথা ঠিক বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের ইলেকট্রনিক্সগুলি চাঁদে চরম রাতের পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য ডিজাইন করা হয়নি।  চাঁদ রাতের সময়, সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকে যার কারণে সৌর-চালিত মিশন বিদ্যুৎ পায় না।সেইসময় তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ ডিগ্রির নীচে নেমে যায়, যার অর্থ ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রগুলি অকেজো হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ISRO-এর বিজ্ঞানীরা আত্মবিশ্বাসী  যে মহাকাশযানটি চরম পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে পারে এবং পুনরায় জেগে উঠবে।  

শেষপর্যন্ত যদি ৬ অক্টোবর রোভারটির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় তাহলে চাঁদ সম্পর্কে জানা যাবে আরও অনেক তথ্য। রোভারটি যে তাহলে চন্দ্রপৃষ্ঠে আরও পথ পাড়ি দেবে, তা বলা বাহুল্য। এখন শুধু অপেক্ষা। 

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Scroll to Top