অসীম পাঠকঃ ‘সহযাত্রী’এটিকে (নাটক না বলে কথোপকথন না বলে একে বলি জীবনের একটুকরো ছবি)
চরিত্র – অংশুমান ও দীপান্বিতা
হাওড়া স্টেশনে হেমন্তের গোধূলি বেলায় রাজধানী এক্সপ্রেসের কম্পার্টমেন্টে দুজনের দেখা বারো বছর পর ….
অংশু – অবশেষে রেল গাড়ির হঠাৎ দেখাটা হয়েই গেলো , ভাবিনি সম্ভব হবে কোনোদিন তা ম্যাডাম কতদূর তোমার গন্তব্য ?
দীপা – দিল্লি , তুমি ?
অংশু- কানপুর , একটা সেমিনার আছে।
দীপা – আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ?
অংশু – বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ?
দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ?
অংশু – ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো।
দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে …
অংশু – সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা …
দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ?
অংশু – সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি,
দীপা – তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ।
অংশু – যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি।
দীপা – ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার।
অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ?
দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ?
অংশু – এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ?
দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম।
অংশু – একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর।
দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি।
অংশু – আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ?
দীপা- এসব প্রশ্ন আজ অবান্তর। আমাদের মিউচুয়াল সেপারেশনের এই বারো বছরে বাউন্ডুলে অধ্যাপক ডক্টর অংশুমান সান্যাল একবারো আমার দরজার কড়া নাড়েনি। বেশতো আছো তুমি , ঘুরছো ফিরছো সুন্দরী তন্বী ষোড়শী ছাত্রীদের নিয়ে সেলফি তোলো , প্রেমের গল্প লেখো ….
অংশূ – আর বিরহের কবিতা সে কি তোমার অজানা ? তোমার গান শুনলাম সেদিন ফেসবুক লাইভে। গোটা স্ক্রিন জুড়েই প্রজাপতির মেলায় তোমার উজ্জ্বল উপস্থিতি , কি সুন্দর গাইলে সেদিন , আমার পরান যাহা চায় তুমি তাই …
দীপা – এই একদম ফোলাবেনা। আরে মাফলারটা জড়াও গলাতে , ঠান্ডা লাগবে। মোজা পরেছো? এই আমি জানতাম স্যান্ডেল পরে থাকবে , ওঃ কি যে করি । ঠান্ডা লাগবে , বুকে সর্দি জমবে। বয়সটাতো আর কম হলো না।
অংশু – হ্যাঁ ওই বিকেলে ভোরের ফুল , মরার আগে দপ করে জ্বলে ওঠার মতো তোমাকে এই দুরন্ত ট্রেনে পাওয়া । সেই রবী বাবু মরেও মরে না।
দীপা- এই আমার প্রথম প্রেমকে নিয়ে একদম কথা বলবেনা। রবিবাবু ইজ দা বেস্ট , এভারগ্রিন লাভ।
অংশু – তা দিল্লি কি কাজে ?
দীপা – কেনো বেড়াতে , ওখানে বয়ফ্রেন্ড আছে যদিও আমার চেয়ে সে দশ বছরের ছোট।
অংশু – চোখের কোনে কালি আর রঙ করা চুল নিয়ে আর প্রেম করতে হবে না। বুড়ি কোথাকার।
দীপা- এই খবরদার , একদম বুড়ি বলবে না।
অংশু – হ্যাঁ তো বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা আর তুমি ছুঁলে ছত্রিশ ঘা , তার জীবন তেজপাতা।
দীপা – আহা রে , তাই তো কাঁচা কার্তিকের মতো সঙ সেজে নেচে বেড়াচৃছো।
অংশু – এসো না পাশাপাশি বসি , কম্পার্টমেন্ট তো ফাঁকাই।
দীপা – না বাবা , মুখোমুখি বেশ আছি। অসহায় প্রহরে অসহ্য লোকটার সাথে কয়েক ঘন্টা , কি কুক্ষনেই যে দেখা হলো …
অংশু – প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্র মাস, তোমার চোখে দেখেছিলেম আমার সর্বনাশ। সেদিন ও ছিলো চৈত্র সন্ধ্যা। এরকম সূর্যাস্তের মায়াবী আলোয় শিলাবতীর তীরে তোমাকে দেখেছিলাম।
দীপা – তারপরেই প্রবল সুনামি , ভালোবাসার কালো মেঘ ঘিরে ধরলো আমাকে। সব হিসাব ওলোটপালোট হয়ে গেলো। তুমি আর ভালোবাসার লোক পেলে না ?
অংশু – তুমি ই তো আমাকে চেনালে জীবনকে নতুন করে। তুমি পরশ পাথর। তাইতো ছেড়ে দেবার এক যুগ পরেও অভিশপ্ত জীবনের সব কটা অধ্যায় জুড়ে তোমার ভালোবাসা নিয়ে আমার বেঁচে থাকা।
দীপা – কি ভাবো আমি কি এতোই বোকা। এটুকু বুঝি তুমি আমাকে কখনও ভোলোনি। তাইতো তোমার লেখায় নিজেকে খুঁজে পাই। তরুনী দীপার আলোমাখা স্বপ্ন কে নতুন করে আবিষ্কার করি। আমার বিরহে তোমার লেখা যেনো জেগে উঠে , ইতিহাসের পাতায় সোনালী অক্ষর জুড়ে ডক্টর অংশুমান সান্যাল বেঁচে থাকবে ভালোবাসার নতুন সমীকরন নিয়ে।
অংশু – চলো না আবার শুরু করি এই পড়ন্ত বেলায় নতুনের আবাহনে নতুন করে সানাই বাজুক। আমি ক্লান্ত বিধ্বস্ত বিপর্যস্ত। আমি হেরে গেছি দীপা আমার নিজের কাছে।
দীপা – তা আর হয়না স্যার , এই দূরেই ভালো। তোমাকে যে আরও নতুন করে লিখতে হবে চেনা জীবনের অচেনা গল্প। আমাদের বারো বছর এক ছাদের নীচে কাটানোর পরের বারো বছর একাকীত্বের মধ্যে নির্জনতায় মোড়া শান্তি খুঁজেছি আমরা , তুমি কি পেমেছো জানি না , তবে আমি পেয়েছি তোমাকে , হ্যাঁ তোমাকে নতুন করে।
অংশু – সত্যিকারের প্রেম মেয়েদের কাছে এক পরম আবিষ্কার। তা সেই দুর্লভ আবিষ্কার যখন হয়ে গেছে তখন আর দেরি কেনো , এসো আমার জীবন মরুভূমির বুকে মরুদ্যান হয়ে।
দীপা- পারিনি অংশু , কিছুই তো পারিনি, তোমার জীবনে এসে তোমার স্বপ্ন গুলোই যখন পূরন করতে পারিনি সহধর্মিণী হয়ে তখন আমার থাকা আর না থাকাতে কি এসে যায় ।
অংশু – বুঝতে পারছি তোমার উপর অবিচার হয়েছে , কিন্তু আমি কি একবারও আঙ্গুল তুলেছি , বলেছি যে তোমাকে নিতে পারছি না আর। আমার উজাড় করা ভালোবাসা দেবার পরেও অভিমান নিয়ে চলে গেলে ? একবারও ভাবলে না তো কি করবো আমি , একটা অসহায় মানুষ ….
দীপা – যাক বাবা এসে তো ভালোই হয়েছে, কিছুটা স্বাবলম্বী তো হয়েছো । আর … না থাক। চলো কিছু খেয়ে নাও , খাবার আছে আমার সাথে , ট্রেনের খাবার তো শরীর খারাপ করবে তোমার।
অংশু – কয়েক ঘন্টার জন্য আর অভ্যাস বদলে কি লাভ …. জানো পুরো কম্পার্টমেন্ট জুড়েই তোমার টিফিন বক্সে রাখা বিরিয়ানির সেই গন্ধটা পাচ্ছি। রন্ধন পটীয়সী আমার বউ এর নাম্বার ওয়ান রান্না কেও একবার খেলে ভুলে না।
দীপা- প্রাক্তন বউ বলো।
অংশু- সব প্রাক্তন হয়না।
দীপা – হুম
অংশু- নিজেকে বারবার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে জানিনা কি পাও বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকা ডক্টর দীপান্বিতা সান্যাল।
দীপা- আবারও ভুল , দীপান্বিতা মুখার্জি বলো।
অংশু – যদি জোর করে বুকে মিশিয়ে নিতে চাই।
দীপা – কে আপত্তি করেছে আপনাকে? তা এই যে বীর পুরুষ বারো বছরে অনেক বীরত্ব দেখালেন , এখন এটুকু না হলেও নাটক জমবে।
অংশু – দীপা আমাদের সন্তান না হওয়া বলো, আমার পরিবারের মানসিক নির্যাতন বলো , আমার উপেক্ষিত ভালোবাসা বলো , যাই বলো, তোমার না থাকা এই বারো বছরে আমি তোমাকে প্রতি মুহূর্তে আমার অনুভবে পাই। কলেজ থেকে ফেরার সময় , সেমিনারে , লেখার টেবিলে এমনকি পুরষ্কার নেবার মুহূর্তে তোমাকে ই পাই , তাই তো সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছি….
দীপা – হ্যাঁ শুনেছি তোমার সব প্রেরনা তোমার আলো। তোমার দেওয়া ওই নামটা আমার মনের গভীরে বাজে । কতদিন কেও ডাকেনি আলো বলে।
অংশু – সে কি ডাকি তো , প্রতি মুহূর্তে আমি। তুমি শুনতে পাওনা তোমার দোষ।
দীপা – সব দোষ তো আমার। (সহসা গেয়ে ওঠে)
‘ গগনতল গিয়েছে মেঘে ভরি, বাদলজল পড়িছে ঝরি ঝরি। এ ঘোর রাতে কিসের লাগি পরান মম সহসা জাগি এমন কেন করিছে” …
অংশু- আজো মুগ্ধ বিস্ময়ে তোমার গান শুনি। কি দরদ দিয়ে গাও তুমি। দূরে যাবে তুমি নামতে হবে আমাকে পরের স্টেশনেই ,
দীপা – মুখোমুখি একখানা কবিতা শুনিয়ে যেও। এটুকুই আঁজলা ভরে তুলে রাখি না হয় বাকি দিন মাস বছরের জন্য।
অংশু – সমাজ বিজ্ঞানের এই জংলী অধ্যাপককে তুমি পরিপূর্ণ মানুষ করেছো , সফল লেখক করেছো তোমার নীরব ভালোবাসা আহুতি দিয়ে ।
আমি নিশি – নিশি কত রচিব শয়ন
আকুলনয়ন রে !
কত নিতি – নিতি বনে করিব যতনে
কুসুমচয়ন রে !
কত শারদ যামিনী হইবে বিফল ,
বসন্ত যাবে চলিয়া !
কত উদিবে তপন আশার স্বপন ,
প্রভাতে যাইবে ছলিয়া !
এই যৌবন কত রাখিব বাঁধিয়া ,
মরিব কাঁদিয়া রে !
দীপা- “বড়ো বেদনার মতো বেজেছ তুমি হে আমার প্রাণে, মন যে কেমন করে মনে মনে তাহা মনই জানে তোমারে হৃদয়ে ক’রে আছি নিশিদিন ধ’রে, চেয়ে থাকি আঁখি ভ’রে মুখের পানে॥”
অংশু – প্রবল ভালোবেসে , ভালোবাসার অভিকর্ষজ আকর্ষণ তোমাকে বিকর্ষন করলো দীপা। সব যন্ত্রণা সব কষ্ট একা নিয়ে নীলকন্ঠ হয়ে পাড়ি দিলে দ্বীপান্তরে । আর আমি তোমার চুলের গন্ধমাখা বালিশ আঁকড়ে বারো বছর ধরে খুঁজে চলেছি তোমার ভালোবাসার ফল্গুধারা।
দীপা – সেই যে বার আমরা হিমাচল প্রদেশ গিয়েছিলাম তোমার মনে আছে , ওখানে পাহাড়ের ওপরে রাজা রানীর পোশাকে যে ছবিটা তুলেছিলাম সেটা আজো আমার ড্রইং রুমে সযত্নে সাজানো।
অংশু – কতবার তোমার ফ্ল্যাট যেতে চেয়েও যাইনি। চাইনি তোমার তপস্যা ভাঙাতে। আজ যখন সহযাত্রীর লিস্টে তোমাকে পেয়েছি , দেখো তুমি চলে যাবার তিনমাস আগে বলেছিলে , পরের পৌষ মেলায় একটা বাঁশি এনো। বারোবছর পর এই নির্জন কামরায় নিস্তব্ধ আকাশ সাক্ষী রেখে দিলাম সেই বাঁশি।
দীপা – তোমার চোখের জল মোছো তো আগে। কি যে করি এই ইমোশনাল টাকে নিয়ে। কা ভাবো তুমি একাই সহযাত্রীর লিস্ট দেখো , আমি বুঝি দেখিনা , এই নাও , আট বছর আগে কাশ্মীর গিয়েছিলাম। কথা ছিলো কখনো একসাথে যাবো । হলো না , একাই গেলাম শপিং করলাম তোমাকে ছাড়াই। কি আশ্চর্য একবারো মনে হয়নি তুমি নেই। কালো বড়ো ডায়ালের ঘড়িটা তোমার ভেঙে ফেলেছিলাম আমিই । ওরকম একটা পেয়ে গেলাম। আমার ঋন শোধ , কি বলেন অধ্যাপক সাহেব।
অংশু – তোমার ঋনশোধ কি কখনো হয় বলো ?
(দীর্ঘ নিরবতা ছেয়ে যায় গোটা কামরা জুড়ে)
দীপা – এই যে মহাদেবের ধ্যান ভাঙলে খেয়ে নেবেন আর নিজের খেয়াল রাখবেন।
অংশু – এসো না এই একটা ঝড় গতির রাতের বাকি টা আমরা চোখ চোখ রেখে একটা গেম খেলি, যার চোখের পাতা আগে বন্ধ হবে সে হারবে , আর যে জিতবে সে যা চাইবে দিতে হবে।
দীপা – যাকে সঁপেছি প্রান মন তাকে আর কি দেবো এই অবেলায় ।
অংশু – তবু তোমাকে ভালোবেসে
মুহূর্তের মধ্যে ফিরে এসে
বুঝেছি অকূলে জেগে রয়
ঘড়ির সময়ে আর মহাকালে যেখানেই রাখি এ হৃদয় ।
দীপা – হেঁয়ালি রেখো না কিছু মনে;
হৃদয় রয়েছে ব’লে চাতকের মতন আবেগ
হৃদয়ের সত্য উজ্জ্বল কথা নয়,-
যদিও জেগেছে তাতে জলভারানত কোনো মেঘ;
হে প্রেমিক, আত্মরতিমদির কি তুমি?
মেঘ;মেঘ, হৃদয়ঃ হৃদয়, আর মরুভূমি শুধু মরুভূমি..
সমাপ্ত
আরও পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে
উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন