দূষণরোধে জাপানীরা সাইকেলকে যাতায়াতের বিকল্প উপায় হিসাবে নিয়েছে

জাপান সাইকেলকে যাতায়াতের বিকল্প হিসাবে নিয়েছে ছবি সৌজন্য – উত্তরাপথ

উত্তরাপথঃ জাপান বিশ্বে যেমন তার উন্নত প্রযুক্তির জন্য বিখ্যাত ,,তেমনি বিখ্যাত তাদের পরিবেশ সচেতনতার জন্য।জাপানে করোনভাইরাস মহামারীর সময় সে দেশের লোকেরা সাইকেলকে যাতায়াতের বিকল্প উপায় হিসাবে বেঁছে নেয়। জাপান সরকার যাতাযাতের এই বিকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে জনগণের সাইকেলে যাতায়াতকে সমর্থন ও উৎসাহিত করার জন্য রাস্তায় সাইক্লিং অবকাঠামো উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেছে। সারা দেশের শহরগুলিতে ডেডিকেটেড সাইক্লিং লেন, বাইক শেয়ারিং প্রোগ্রাম এবং সাইকেল পার্কিং সুবিধা বাস্তবায়ন করেছে। এই উদ্যোগগুলির লক্ষ্য সাইক্লিস্টদের জন্য নিরাপদ এবং সুবিধাজনক পরিকাঠামো প্রদান করা, যাতে সাইকেল চালকরা সাইকেলে করে যাতাযাতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে ।

মোটরচালিত পরিবহনের বিকল্প হিসাবে সাইকেলকে যাতায়াতের বিকল্প উপায় হিসেবে তুলে ধরে জাপান যানবাহন থেকে সৃষ্ট দূষণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম করতে সক্ষম হয়েছে।বর্তমানে জাপানের রাস্তায় সাইকেল চালকদের সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে জাপানে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে, সরকার সাইকেল চালক এবং সাধারণ পথচারী উভয়ের নিরাপত্তার জন্য ,নতুন ট্রাফিক আইন আনতে চলেছে ।এই নতুন আইনে বেপরোয়া সাইকেল চালিয়ে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন, ফুটপাতে রাইড করা এবং পথচারীদের সাথে সঠিক আচরণ না করে , নিয়ম ভঙ্গ করলে সাইকেল চালকদের জরিমানা করার পরিকল্পনা রয়েছে ।

জাপান সরকারের প্রস্তাবিত এই নতুন আইনের অধীনে, সাইকেল চালকদের তাদের সাইকেল নিবন্ধন করতে হবে এবং একটি অনন্য শনাক্তকরণ নম্বর পেতে হবে। এই নম্বরটি, কর্তৃপক্ষকে ট্রাফিক লঙ্ঘনের জন্য সাইকেল চালকদের সনাক্ত করতে এবং জরিমানা করতে সাহায্য করবে৷ েই ক্ষেত্রে জরিমানা মোটরচালকদের উপর আরোপিত জরিমানার অনুরূপ হবে এবং বেপরোয়া সাইকেল চালানোর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবন্ধক হিসাবে কাজ করবে।

জাপান সরকারের সাইকেল চালকদের জন্য আইন কার্যকর হলে সাইকেল চালকদের যেমন দায়িত্ব বাড়বে,তেমনি তাদের ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলতে এবং নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে উৎসাহিত করবে। এর ফলে, সাইকেল চালকদের সাথে জড়িত দুর্ঘটনার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাবে এবং সামগ্রিক সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে।

 সাইকেল চালকদের জন্য জরিমানা প্রবর্তন ট্র্যাফিক বিধি প্রয়োগের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ৷ বর্তমানে, গাড়ি চালকরা যেমন জরিমানা  এড়ানোর জন্য ট্রাফিক আইন মেনে চলেন,তেমনি সাইকেল চালকেরা জরিমানা এড়াতে ট্র্যাফিক বিধি মেনে চলতে বাধ্য হবেন। এতে সমস্ত রাস্তা ব্যবহারকারীদের মধ্যে পারস্পরিক শান্তি ও  নিরাপত্তা বজায় থাকবে।

তবে এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, যেমন সর্বক্ষণ ক্যামেরার নজরদারি এবং নিবন্ধন ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। সাইকেল চালকদের জন্য জরিমানা প্রবর্তন করার ঘটনায় কিছু লোক বিরোধিতা করতে পারে । তবে এই ব্যবস্থার  পিছনে যুক্তি এবং এর সম্ভাব্য সুবিধা সম্পর্কে জনসাধারণকে বোঝাতে হবে যাতে এই ব্যবস্থা জনগণের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা এবং সমর্থন পায় । ট্রাফিক লঙ্ঘনের জন্য সাইকেল চালকদের জরিমানা করার জন্য জাপানের প্রস্তাবিত সিস্টেম শুধুমাত্র সড়ক নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করবেনা, সেই সাথে এটি ,জাপানের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রনে এক বিকল্প অন্বেষণ হতে চলেছে ।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়

উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে।  সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top