স্বপ্ন

ডঃ জীবনকুমার সরকারঃ মালদা স্টেশন থেকে রাত দেড়টার ব্রহ্মপুত্র মেইল ধরেছে বিনয় আর তাপস। যাচ্ছে গুয়াহাটি। তারপর ওখান থেকে রাতের বাস ধরে পরের দিন সকালে গিয়ে নামবে শিলচর। ওখানে গিয়ে দু’জনে আসাম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। ওটা শিলচর শহর থেকে দূরে। আর শিলচর শহর তো এগারো শহিদের তীর্থভূমি। আসামের বরাক উপত্যকার রাজধানী বলা যায় শিলচরকে। মাতৃভাষার অধিকার আদায় করতে গিয়ে এই শহরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ যায় এগারো জন বাঙালির। এই রক্তাক্ত ইতিহাসের কথা অনেক বাঙালিই জানে না। কিন্তু এসব নিয়ে আমাদের দেশের বাঙালিরা চিন্তিত নন। বিনয় এসব খবর আগেই রাখতো।
তেইশ বছর আগের সব ঘটনা মনে রেখেছে বিনয়। একটি অপূরণীয় স্বপ্ন বিনয়ের স্মৃতি থেকে কিছুই মুছে দিতে পারেনি। সেই স্বপ্ন আজও বিনয়কে তাড়া করে। মাঝে মাঝে রাতের ঘুম কেড়ে নেয়। কাজে অস্বস্তি দেয়।
ট্রেনে বসে কত কী ভাবছে বিনয়! তার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিটা তার খুব দরকার। উচ্চ শিক্ষা তার বংশগত। সে মনে মনে আরও ভাবছে মনের মতো একটি বান্ধবী জুটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে তাকে নিয়ে বাড়ি ফেরা। এই স্বপ্ন তাকে বিভোর করে রাখে।
রাতের ঘুম শেষ হলে উঠে বসে বিনয়। ট্রেনের জানালার ধারে বসে পড়ে। দেখতে পায়, ট্রেনটি ধীরে ধীরে পাহাড়ের কোল ঘেষে গুয়াহাটি স্টেশনে ঢুকছে। পাহাড়ের অপূর্ব দৃশ্য! এর আগে কখনও এভাবে পাহাড় দেখেনি বিনয়। ফলে অভিভূত হয়ে যায় সে। এ কোন মায়ার জগৎ! পাহাড়ের কোলে দাঁড়িয়ে থাকা গাছপালা যেন বিনয়ের স্বপ্নকে আরও নাগালের মধ্যে এনে দিতে চায়।
ট্রেন গুয়াহাটি পৌঁছানোর পর তারা দু’জনে চলে যায় বাসস্ট্যান্ডে। ক্যাপিটাল ট্রাভেলসের কাউন্টারে গিয়ে অগ্রিম টিকিট কেটে বিশ্রাম নিতে থাকে আর স্বপ্নের বান্ধবীর কথা ভাবে বিনয়। দুপুরে স্নান খাওয়া-দাওয়া সেরে বিনয় আর তাপস সোজা চলে যায় কামাখ্যা মন্দির। মন্দির-মসজিদ নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই বিনয়ের। সে তো কঠোর নাস্তিক। স্কুল জীবন থেকেই সে এমনই। বাবার হাতে এই চিন্তার হাতেখড়ি। একমাত্র পাহাড়ের লোভে সে যায়।
এই তার প্রথম যাওয়া। পাহাড়ের সঙ্গে এত কাছ থেকে মাখামাখি এর আগে হয়নি। তাই বিনয় এই পাহাড়ের রূপ চেটেপুটে খায়। বিশ্ববিদ্যায়ের কোনো বান্ধবীকে খোঁজার নেশা আরও বাড়িয়ে দেয় এই পাহাড়। পাহাড় নিয়ে সে কত কথা শুনেছে। সেই পাহাড় এত কাছে, সে ভাবতেই পারছে না। সারাদিন কাটিয়ে দেয় পাহাড়ে।

পাহাড় থেকে নেমে এসে সোজা ক্যাপিটাল ট্রাভেলসের কাউন্টারে। সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে বাসে উঠে বসে তারা। বাস শিলচরের দিকে রওনা দেয় বিকেল পাঁচটায়। পৌঁছায় পরের দিন সকাল ঠিক কটায়, তা আর স্পষ্ট মনে নেই বিনয়দের। সারারাত পাহাড় ঠেলে ঠেলে বাস পৌঁছায় শিলচর। বিনয় এক বোঝা স্বপ্ন আর তাপসকে সঙ্গে নিয়ে ওঠে একটি হোটেলে। তেইশ বছর আগের দেখা হোটেলটির নাম বিনয়ের আজ আর মনে নেই। তবে সেই হোটেল আর শিলচর শহর প্রথম বিনয়কে সিলেটি ভাষা চেনায় আসামে এত বাঙালি, এটাও তার জানা ছিলো না। হোটেলে এক রাত থেকে পরের দিন যায় এক বোঝা স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ ক্লাসে ভর্তির জন্য অ্যাডমিশন টেস্ট দিতে। অ্যাডমিশন টেস্টের নেশায় প্রথম দিন ভালো করে বিশ্ববিদ্যালয়টা দেখা হয়নি বিনয়ের। দু’দিন বাদে অ্যাডমিশন টেস্টের রেজাল্ট বেরোলে বিনয় দ্বিতীয় হয়। প্রথম হয় বিনিতা দাস। ক্লাস শুরু হলেই বিনয়রা সবাইকে চিনত শুরু করে এবং বিনিতাকেও। তখন জুলাই মাস। প্রথম সপ্তাহেই ভর্তি হয় তারা। বেশ গরম । বিনয়ের ধারণা ছিলো মালদার মতো এত গরম নিশ্চয়ই শিলচরে হবে না। কিন্তু দেখা যায়, গরমে দুই জায়গার মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। প্রথম প্রথম ভালো না লাগলেও ধীরে ধীরে পড়াশুনার নেশায় এসব নিয়ে আর ভাবতে চায় না বিনয়। তার স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল ডিগ্রি আর একজন ভালো বান্ধবী। বিনিতাকে দেখলেই মনটা যেনো কেমন করে ওঠে বিনয়ের। যেনো মনে করে, সব পেয়ে গেছি। এই তো আমার স্বপ্ন। এই তো আমার আকাশ। এই তো আমার উজ্জ্বল রেজাল্টের প্রেরণা। বিনয় বিনিতাকে দেখিয়ে তাপসকে জিজ্ঞেস করে, ‘দেখতো, মালদার মাটিতে ওকে কেমন লাগবে?’

— এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিবি?
— না নিয়ে উপায় কী বল দেখি?
— এত তাড়া কীসের তোর?
— তাড়াটা আমার নয়, সময়ের।
— আমার হাতে ওতো সময় নেই। যখন শিলচর ছাড়বো, সঙ্গে বান্ধবীকে নিয়ে বাড়ি ফিরবো। এই স্বপ্ন পূরণ করতে গেলে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
— ও তো খুব গম্ভীর, তাই একটু বোঝা দরকার আগে।
— কিন্তু আমার তো মনে গুণী মেয়ে।
— তাহলে এগিয়ে যা।
— কীভাবে এগোবো?
— কথা বলা শুরু কর।
— ও তো কথাই তেমন বলতে চায় না।
— আমিও তো আর এর চেয়ে বেশি এগোতে পারছি না।
বিনিতা না এলে একদিনও ক্লাস করতে ভালো লাগে না বিনয়ের। বিশ্ববিদ্যালয় আর বিনিতা তার কাছে সমার্থক হয়ে ওঠে। তবু বিনয় বলতে পারছে না কেনো, ‘আমি তোকে ভালোবাসী’। ধীরে ধীরে দিনগুলো কেমন চলে যাচ্ছিলো। তবু যেনো বলার মতো সময় বিনয়ের হাতের মুঠোয় আসে না। প্রতিদিন সে ভাবে, আজ আইরংমারার নিবিড় সন্ধ্যায় বিনিতাকে বলে দেবে। সন্ধ্যা আসে। নিবিড়তাও আসে, কিন্তু মুখে বলাটা আর আসে না। এই না বলাটাই গ্রাস করে রাখলো বিনয়কে। আর বিনিতাও কোনোদিন জানতে পারলো না, তার জন্য কেউ এত প্রেম ঢেলে রেখে দিয়েছিলো আইরংমারার আকাশ-বাতাসে।
একটা স্বপ্ন যে কীভাবে মানুষকে বাঁচায়, আবার কীভাবে মারে তা সময় জানে। বিনিতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে যায় বিনয়। দিনের পর দিন সে অপেক্ষা করে বসে থাকে পাপলুর দোকানে। পাপলুর দোকানটা ঠিক আইরংমারা বাজারের সামনে মেইন রাস্তায়। ওখানে খাত, কলম, আর জেরক্স করতে সবাই আসে। সময় এমনই জল্লাদ, যে বিনিতাকে এটাও জানতে দেয়নি।
আজ বিনয় সব জানাতে চায়। বিনিতাকে অকপটে বলতে চায়,”আমি তোকে ভালো বাসতাম। আজও ভালোবাসী।” এভাবে বলার অনুমতি সময় তাকে আজ দিচ্ছে। অথচ একথা বললেও বিনিতাকে পাবার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। তবু সে বলতে চায়। সে মনে করে সত্যটা অন্তত বিনিতা জানুক।
হঠাৎ একদিন তাপসকে ফোন করে বিনয়।
— কী রে কেমন আছিস?
— ভালো আছি।
— একটা কথা তোকে বলতে চাই।
— বল।
— যে কথা বিনিতাকে সময় মতো বলতে পারিনি, তা আজ বলতে চাই।
— কোন কথাটা রে?
— ওই যে ‘ আমি তোকে ভালোবাসতাম বা আজও ভালোবাসী।’
— তাতে লাভ কী?
— লাভ-লোকসান জানি না। সত্যিটা ওর জানাতে ইচ্ছে করছে।
— এটা কি সত্যিটা জানানো, নাকি ওর ভেতরে একটা জ্বালা ধরিয়ে দিতে চাইছিস?
— কেনো?
— কারণ, তুই যেমন ওকে না পাবার জ্বালায় জ্বলছিস; ও তেমন আজ এই সত্যিটা জেনে আরও জ্বলবে।
— তাই?
— একটু ভাবতো, ও যদি তোর মতো গোপনে তোকে ভালোবেসে থাকে, তাহলে কি জ্বলবে না?
— ঠিকই তো। কী যন্ত্রণা বল তো!
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে শিলচর শহর, আইরংমারা,টিলা, ঝর্ণা, দরগাকোনার ক্যাম্পাস, , পোস্ট অফিস আর বিনিতাকে ফেলে সেদিন শিলচর থেকে রাতের বাসে উঠতে বিনয়ের যে কষ্ট হয়েছিলো, তা আর কে বোঝে? সেই কষ্ট আজও বুকের মধ্যে বাঁশি হয়ে বাজে। বিনয় কোনোদিন ভাবেনি পারেনি বিনিতাকে ছেড়ে একা একা মালদায় ফিরবে। জীবনটাকে নিজের মতো বাঁধার কোনো উপায় নেই মানুষের। সময় আর পরিস্থিতি সব বেঁধে দেয়। ভালোমন্দ সব ওই সুতোয় বাঁধা। মানুষ এই এক জায়গায় চরম পরাজিত।
আজ চাকরি, সংসার, লেখালেখি, নানারকম সাংস্কৃতিক কাজ এবং নিজের সম্পাদিত পত্রিকা নিয়ে বিনয় খুব ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ। তবু বিনিতাকে ভুলতে পারছে না। সেই তেইশ বছর আগের স্বপ্ন নিয়ে আজও বয়ে চলেছে এক অনিকেত জীবন। এই জীবনের শেষ কোথায়? এর বোধহয় শেষ বলে কিছু হয় না। কেবল শুরু থাকে।
একদিন ঘুমের মধ্যে একটা স্বপ্ন দেখে বিনয়। সে আসাম কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় যাচ্ছে। বাংলা নিয়ে ভর্তি হবে। আবার সেই ব্রহ্মপুত্র মেইল ধরেছে। সেই গুয়াহাটি, সেই কামাখ্যা পাহাড়, সেই ক্যাপিটাল ট্রাভেলস বাস। সেই পাহাড় আর ঝর্না। সব ডিঙিয়ে আবার শিলচর । আগের মতো সে কাঁপাচ্ছে বাংলা বিভাগ। গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। হই হই করছে বিনয়ের ভারে সাংস্কৃতিক মহল। ছুটছে সবাই। সেও। এবারে বিনিতাকে পেয়েই বলে দিয়েছে, “আই লাভ ইউ”।
কী মধুর স্বপ্ন! বিনিতাকে নিয়ে বসে থাকে ক্যান্টিনে, কখনও টিলার ওপর, কখনও বাংলা বিভাগের খোলা বারান্দায়। আর মাঝে মাঝে হেঁটে চলে আইরংমারা থেকে ডাকবাংলোর দিকে। কখনও চার হাত এক করে বসে থাকে টিলার মাথায়। সুযোগ পেলেই বিনিতার ঘন কালো চুলে মাথা গুঁজে দেয় বিনয়।
একদিন মাথার চুল থেকে ঠোঁট দু’টো নিয়ে বিনিতার শান্ত দু’টো ঠোঁটের মধ্যে গুঁজে দেয় বিনয়। বিনিতা ঝাপটে ধরে বিনয়কে। দু’জন ধীরে ধীরে হারাতে থাকে নিজেদের মধ্যে। চারদিকে জ্যোস্নার আলো ছড়িয়ে দিয়েছে সোহাগ। চাঁদের আলোয় চোখ মেলে বিনিতা বলে, বিনয়,’ চলো আজ আমরা পৃথিবীর এই এক কোণে দু’জন দু’জনের মধ্যে হারিয়ে যাই।’
— বিনয় বলে, ‘কীভাবে?’
— প্রেমে পড়লে সব জানতে হয়। আমার সমস্ত পাপড়ি আজ খুলে দাও।
— না, তুমি বরং এই জ্যোৎস্না দিয়ে আমাকে মেখে খাও।
— বিনিতা বল, ঘরের লাইট বন্ধ করে আসি। জ্যোৎস্নার আলোয় তুমি ভালো পাপড়ি ভাঙতে পারবে।
— তোমার পাপড়ি ভাঙায় যে এত সুখ, তা আমি আগেই বুঝেছিলাম।
— কথা বলে সময় নষ্ট করো না। জ্যোৎস্না ফুরিয়ে আসছে।
বিনয় আদরে আদরে জ্যোৎস্নার আলোয় পাপড়ি খুলতে থাকে হাইলাকান্দি শহরের বিনিতাকে। হঠাৎ সূর্যের আলো ঘরে ঢুকে ঘুম ভাঙিয়ে দেয় বিনয়কে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি

উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা  ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top