

ছবি – এক্স হ্যান্ডেল থেকে নেওয়া
উত্তরাপথঃ “এই যাত্রা কেবল আমার নয়, এটি ভারতের মানব মহাকাশ অভিযানের সূচনা”—এই কথাগুলো অ্যাক্সিওম-৪ (Axiom-4) মিশনের লঞ্চের ঠিক ১০ মিনিটের মধ্যেই বলেছিলেন ভারতীয় মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা।
হয়তো তাঁর বক্তব্যটি রাকেশ শর্মার ১৯৮৪ সালের ঐতিহাসিক উক্তির মতো চিরস্মরণীয় নয়—যেখানে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রশ্নে শর্মা বলেছিলেন, “সারে জাহাঁ সে অচ্ছা”—তবুও, এই নতুন ঘোষণার মাধ্যমে এক নতুন ভারতীয় মহাকাশ যুগের বার্তা নিয়ে এসেছে।
শুক্লার আইএসএস (International Space Station)-এ যাত্রা নিছক এক ব্যক্তিগত অভিযান নয়, এটি সেই যাত্রার শুরু, যা ভারতকে মানব মহাকাশ অভিযানের শীর্ষে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। এখন পর্যন্ত ISRO (Indian Space Research Organisation) বহু কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের সাফল্য অর্জন করলেও, মানব মহাকাশ অভিযান ছিল এক নতুন চ্যালেঞ্জ।
গগনযান প্রকল্পের (Gaganyaan Mission) মাধ্যমে ISRO ২০২২ সালের মধ্যে নিজস্ব ভারতীয় মহাকাশচারীদের পাঠানোর লক্ষ্য স্থির করেছিল। যদিও তা বিলম্বিত হয়েছে, এই প্রকল্প ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অভূতপূর্ব গতি দিয়েছে।
আজকের যুগে মহাকাশ অভিযানের গুরুত্ব কেবল বৈজ্ঞানিক কৌতূহলে সীমাবদ্ধ নয়—এটি একটি কৌশলগত দক্ষতা। পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে শুরু করে চাঁদ, এমনকি মঙ্গলগ্রহ পর্যন্ত এখন বানিজ্যিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে।
যে দেশগুলি নিজস্ব মানব মহাকাশ অভিযান পরিচালনা করতে পারে, তারা ভবিষ্যতের মহাকাশ দৌড়ে নেতৃত্ব দিতে পারবে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে স্পেস স্টেশন স্থাপন, চাঁদে পা রাখা, ও মহাকাশ প্রযুক্তির বাণিজ্যিকীকরণ। ভারতের লক্ষ্য ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠানো এবং নিজস্ব স্পেস স্টেশন স্থাপন করা।
অ্যাক্সিওম–৪ মিশনে ভারতের সক্রিয় অংশগ্রহণ
যদিও শুভাশ শুক্লা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাক্সিওম স্পেসের সহায়তায় মহাকাশে যাচ্ছেন, ISRO এই মিশনে একটি সমান অংশীদার। পুরো পরিকল্পনা ও কারিগরি পর্যবেক্ষণে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের অবদান চোখে পড়ার মতো। ISRO চেয়ারম্যান ভি. নারায়ণন-সহ একটি বিশেষ দল আমেরিকায় থেকেই প্রযুক্তিগত ত্রুটি নিরসন এবং উৎক্ষেপণ পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার গৌরবময় ইতিহাস
- ১৯৮০: প্রথম ভারতীয় কৃত্রিম উপগ্রহ ‘রোহিণী’ উৎক্ষেপণ
- ২০০৮: চন্দ্রযান-১, চাঁদের মাটি থেকে জল খোঁজার বৈজ্ঞানিক সফলতা
- ২০১৪: মঙ্গলযান (Mangalyaan), বিশ্বের একমাত্র সাশ্রয়ী ব্যয়ে সফল মঙ্গল অভিযান
- ২০২৩: চন্দ্রযান-৩ এর মাধ্যমে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ ভারত
আজ যখন পৃথিবীর কক্ষপথে শুভাশ শুক্লার পদচারণা হচ্ছে, তখন সেই প্রতিচ্ছবি ভারতের এক ভবিষ্যৎ, যেখানে শিশুরা “মহাকাশচারী” হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে বাস্তবতার ভিত্তিতে। আর ISRO-এর এই অভিযাত্রা জানিয়ে দেয়—ভারত কেবল পৃথিবীর নয়, মহাকাশেরও নেতৃত্ব নিতে প্রস্তুত।
“জীবন যদি আকাশ, তবে ভারত এখন তার নক্ষত্র গোনার পথে!”
আরও পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন