World Children’s Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

World Children’s Day পালন করার আদৌ কোনও যৌক্তিকতা আছে? ছবি – উত্তরাপথ

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children’s Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ?

সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে।

হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল ।

বাচ্চাটির সাথে ভালো করে আলাপ জমাতে আমি প্রথমেই তার নাম জিজ্ঞাসা করি। সে জানায় তার নাম পুস্কর,পাশেরই একটি গ্রামে সে থাকে। তার বাবা অন্য এক লোকের অটো চালায় এবং তার মা লোকের ক্ষেতে মাঝে মধ্যে কিছু কিছু কাজ করে।কিন্তু তাতে সংসার চালানোর মত অর্থ উপার্জন হয় না।তাই সে আর তার বোন কিছু রোজগারের আশায় প্রতিদিন সকাল – সন্ধ্যে এখানে বেলুন বিক্রি করতে আসে।

পুস্কর এবং তার বোন গ্রামের একটি সরকারি স্কুলে পড়াশুনা করে ,কিন্তু তারা সময়ের অভাবে স্কুল যেতে পারে না। তবে পুস্কর ষষ্ট শ্রেনীতে পড়ে। তারপর কথা প্রসঙ্গে তাকে বলি তোকে দেখেতো মনে হয় না তুই ক্লাস সিক্স-এ পরিস। উত্তরে সে যা বলল তা শুনে আমি এক কথায় অবাক হয়ে যায়,হয়ত এমন উত্তর পাব আমি আশা করিনি। সে বলে, হ্যামারা ঘর মে খানে কে কমি হে….. এই ছোট একটি শিশুর সামান্য একটি কথা আমাদের বেশ কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়ে দিল । প্রতি বছর সেই ১৯৫৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল প্রায় ৬৯ বছর UNESCO সারা বিশ্বে শিশু দিবস (World Children’s Day) পালন করার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে যাতে শিশুদের মান সম্পন্ন জীবন উপহার দেওয়া যায়।কিন্তু পথের ধারে শিশু শ্রমিকদের এই সংখ্যা শিশু দিবস পালনের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয়।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


 সম্পাদকীয়

পশ্চিমবঙ্গের ছোট-বড় যে কোনও নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক হিংসা । সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়।রাজনৈতিক হিংসা যাতে না হয় নির্বাচনে তার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও হিংসা অব্যাহত থাকল, সারা রাজ্যজুরে ঘটল তেরোটি মৃত্যুর ঘটনা ।পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে  ঘট হিংসা রাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহ নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে আমাদের সামনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যে চলতে থাকা রাজনৈতিক হিংসার পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ একাধিক কারণ থাকলেও বেকারত্ব সহ দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতি এর প্রধান কারণ । দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতির কারণে বেশীরভাগ গ্রামীন এলাকার মানুষদের অর্থনৈতিক উপার্জনের সুযোগ খুব কম। বিশেষত স্বল্প শিক্ষিত সেই সব মানুষদের যারা না পায় সরকারি চাকুরি না পারে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে, গ্রামীন অর্থনীতিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ এই শ্রেনীর অন্তর্গত .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top