অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত মমতা, ডাক পেয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত

মেধা দাসঃ এবার দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনতে চায় ইংল্যান্ডের শতাব্দীপ্রাচীন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে এই বছরের জুনে বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রো-ভিসি, জোনাথন মাইকি মঙ্গলবার বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে এই ঘোষণা করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে মুখ্যমন্ত্রী আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা এবং অনুষ্ঠানের সংগঠক অমিত মিত্র এই ঘোষণা করতে মঞ্চে ডেকেছিলেন মাইকিকে। সেখানে মাইকি বলেন, “আমরা তাকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং তার সংগ্রাম ও সাফল্য সম্পর্কে কথা বলার জন্য’।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২০ সালেও অক্সফোর্ড ইউনিয়ন থেকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ডাক পেয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে ২০১৭ সালেও অক্সফোর্ড ইউনিয়ন থেকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ডাক পেয়েছিলেন। তার আগে ২০১০ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আমন্ত্রণ পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ডাক পান। তবে এর আগে কোনও অনুষ্ঠানেই নানা কারণে যোগ দিতে পারেননি তিনি। তবে এবার তিনি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। মাঝে গোটা দেশ জুড়ে রয়েছে লোকসভা নির্বাচন। স্বাভাবিক ভাবেই, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকবেন তিনি। এরপর জুন মাসের আমন্ত্রণে তিনি যাবেন বলেও জানান।

সোমবার ভবানীপুর মডার্ন স্কুলের নতুন ভবন উদ্বোধনে গিয়ে সুখবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। ভবানীপুরের মন্মথনাথ নন্দন বয়েজ অ্যান্ড গার্লস স্কুল যেখানে একটা সময় শিক্ষকতা করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভবানীপুরের কাঁসারিপাড়া এলাকায় এই স্কুলটি পড়ে। এই স্কুলের যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রাথমিক স্কুল হিসাবে। একটা ভাড়া বাড়িতে চলত সেই স্কুল। সেখানেই পড়াতেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা ও ইংরেজির শিক্ষিকা ছিলেন তিনি। সে সময় তার বেতন ছিল মাত্র ৬০ টাকা। একটা সময় এই স্কুলের ঝাঁপ প্রায় বন্ধ হতে বসেছিল। তখনই ফিরহাদ হাকিমকে নিয়ে পুজো ভ্রমণে বেরিয়ে এই স্কুলটি বাঁচানোর পরিকল্পনা নেন তিনি। পরে পাঁচ কাঠা জমি কিনে এই স্কুলটির নবরূপ দেওয়া হয়েছে। আজ সেখানেই নবরূপে স্কুলটির উদ্বোধন করা হল। উদ্বোধন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই শেষ নয় উদ্বোধনের মঞ্চে রীতিমতো স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়লেন মুখ্যমন্ত্রী।

জানা গিয়েছে, এখন এই স্কুলে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি সেখানে দিনের বেলায় রাজ্য সরকারের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলও চালু করা হচ্ছে। নতুন স্কুলে ইতিমধ্যেই ন জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এই স্কুলকে উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসাবে তুলে ধরতে চান মমতা। তার জন্য বারোটি অত্যাধুনিক ক্লাস রুম, একটি ই-লার্নিং রুম, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, লাইব্রেরি নিয়ে স্কুল এখন টেক্কা দেবে যে কোনও ঝাঁ-চকচকে বেসরকারি স্কুলকেও।সেই স্কুলেরই আজ উদ্বোধন করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু এই দিন এই স্কুল এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট-এর রেজিস্টার্ডে পরিণত হয়েছে তাই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে সম্পূর্ণ পরিচর্যা নির্দেশ দিলেন তিনি। এদিন পাশাপাশি স্কুলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা তার অতীত স্মৃতি তিনি তুলে ধরেছেন। এখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গতকালই আমার কাছে নিমন্ত্রণ এসেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে ডেকেছে জুন মাসে। সঙ্গে লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সের ছাত্র-ছাত্রীরা আমার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। যাইহোক আমি সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রাম আমি এটাকে এড়িয়ে যেতে পারি না।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top