একাডেমিক সাফল্যের জন্য ৯ টি সুপারফুড সন্তানের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত

উত্তরাপথঃ একাডেমিক সাফল্যের জন্য শিশুদের প্রস্তুত করা শুধুমাত্র অধ্যয়নের সাথেই জড়িত নয়। অধ্যয়নের বাইরে সঠিক পুষ্টির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে যা তাদের জ্ঞানীয় স্বাস্থ্যকে লালন করার সাথে জড়িত।বর্তমানে সারা বছরই বাচ্চাদের বিভিন্ন পরীক্ষায় ব্যস্ত থাকতে হয়।তাই আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় মস্তিষ্ক-উদ্দীপক খাবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যদিও একাডেমিক সহায়তা এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা স্মৃতিশক্তি, একাগ্রতা এবং সামগ্রিক মানসিক তৎপরতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে পারে।আজ এখানে আমরা এই রকম  ৯ টি সুপারফুডের কথা আলোচনা করব যা প্রতিটি পিতামাতার উচিত তাদের সন্তানের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা।

বাদাম এবং বীজ

বাদাম এবং বীজ হল ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে সমর্থনকারী পুষ্টির চমৎকার উৎস।তাই সারা বছর আপনার শিশুকে বাদাম, কুমড়ার বীজ বা আখরোট খেতে উৎসাহিত করুন যাতে তাদের জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতা বাড়ানো যায়।

সবুজ শাক

পালং শাক এবং সুইস চার্ডের মতো সবুজ শাকসবজি ভিটামিন B-6 এবং B-12 সমৃদ্ধ, যা স্বাস্থ্যকর স্নায়ুতন্ত্র বজায় রাখতে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং সতর্কতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ। উপরন্তু, ব্রকলি এবং পালং শাকের মতো খাবারগুলি অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন, খনিজ পদার্থ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।তাই আপনার সন্তানের মস্তিস্কের কার্যকারিতা এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিভিন্ন রঙিন ফল ও সবজি খেতে উৎসাহিত করুন।

 গোটা শস্য:

সম্পূর্ণ শস্য যেমন ওটস, বাদামী চাল এবং পুরো গমের রুটি ফাইবার সমৃদ্ধ এবং সারা দিন ধরে শক্তির একটি স্থায়ী উৎস প্রদান করে। আপনার সন্তানের ডায়েটে গোটা শস্য অন্তর্ভুক্ত করা অধ্যয়ন এবং পরীক্ষার দীর্ঘ সময় ধরে তাদের মনোযোগ বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার:

প্রোটিন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং ঘনত্বের জন্য অপরিহার্য। আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় চর্বিহীন প্রোটিনের উৎসগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন যেমন মুরগি, মাছ, ডিম  যাতে তাদের মানসিক সতর্কতা এবং পরীক্ষার সময় ফোকাস থাকে।

 স্বাস্থ্যকর চর্বি:

স্যামন, আখরোট এবং ফ্ল্যাক্সসিডের মতো খাবারে পাওয়া ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য এবং জ্ঞানীয় ফাংশনের জন্য উপকারী। আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর চর্বি অন্তর্ভুক্ত করা তাদের স্মৃতিশক্তি এবং শেখার ক্ষমতাকে উন্নত করতে পারে।

জল:

হাইড্রেটেড থাকা মস্তিষ্কের সর্বোত্তম কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য। নিশ্চিত করুন যে আপনার শিশু সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করে যাতে তার ফোকাস, একাগ্রতা এবং সামগ্রিক জ্ঞানীয় কার্যক্ষমতা বজায় থাকে।

ভেষজ চা:

ভেষজ চা যেমন ক্যামোমাইল, পেপারমিন্ট বা গ্রিন টি স্ট্রেস এবং উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করতে পারে, একটি শান্ত এবং নিবদ্ধ মনের অবস্থার উন্নতি করতে পারে। অধ্যয়নের বিরতির সময় আপনার সন্তানের মানসিক সুস্থতাকে সমর্থন করার জন্য এক কাপ ভেষজ চা পান করতে উত্সাহিত করুন।

ডার্ক চকোলেট:

ডার্ক চকোলেটে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ক্যাফেইন রয়েছে যা জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বাড়াতে এবং মেজাজ উন্নত করতে পারে। ডার্ক চকলেটের একটি ছোট টুকরা পরীক্ষার সময় আপনার সন্তানের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু খাবার হতে পারে।

 সুষম খাবার:

নিশ্চিত করুন যে আপনার শিশু সুষম খাবার গ্রহণ করে যাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি এবং ফাইবারের সমন্বয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। একটি ভাল বৃত্তাকার খাদ্য পরীক্ষার সময় তাদের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করবে।

পরীক্ষার সময়কালে আপনার সন্তানের ডায়েটে এই নয়টি অপরিহার্য বিকল্প অন্তর্ভুক্ত করে, আপনি তাদের মানসিক সতর্কতা, একাগ্রতা এবং সামগ্রিক কর্মক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারেন। মনে রাখবেন যে একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য শিক্ষাগত সাফল্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাই চ্যালেঞ্জিং সময়ে সাফল্যকে সুনিশ্চিত করতে  আপনার সন্তানের পুষ্টিকে অগ্রাধিকার দিন।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


AFC এশিয়ান কাপ ২০২৩: সুনীলদের Blue Tiger অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি

উত্তরাপথ: অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান এবং সিরিয়ার পাশাপাশি এএফসি এশিয়ান কাপ ২০২৩-এর বি গ্রুপে সুনীলদের Blue টাইগাররা। Blue টাইগাররা ১৩ জানুয়ারী, ২০২৪-এ আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের তাদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে।ভারতীয় পুরুষ ফুটবল দল এএফসি এশিয়ান কাপ কাতার ২০২৩-এ ১৩ জানুয়ারি আহমদ বিন আলি স্টেডিয়ামে গ্রুপ বি-তে প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করবে। এশিয়ার শীর্ষ ২৪ টি দল দোহার কাটরা অপেরা হাউসে তাদের গ্রুপ পর্বে অংশ গ্রহণ করেছে। এএফসি এশিয়ান কাপ কাতার ১২ জানুয়ারী .....বিস্তারিত পড়ুন

মানুষে মানুষে ঐক্য কীভাবে সম্ভব

দিলীপ গায়েন: হিন্দু,মুসলমান,ব্রাহ্মণ,তফসিলি।সকলেই মানুষ।কিন্তু এদের মধ্যে যে ব্যবধান তা হলো ধর্ম ও সাংস্কৃতিক। এই ব্যবধান মুছতে পারলে একাকার হওয়া সম্ভব। যারা বলছে আর্থিক সমতা প্রতিষ্ঠা হলে ব্যবধান মুছে যাবে, তাদের কথাটি বোধ হয় সঠিক নয়।তার প্রমাণ গরিব ও শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে আর্থিক ব্যবধান নেই। অথচ জাতিভেদ রয়ে গেছে। তেমনি কিছু ব্যতিক্রমী ঘটনা ব্যতীত ধনী ও শিক্ষিত সমাজে আর্থিক সচ্ছলতা থাকলেও জাতিভেদ রয়ে গেছে। একমাত্র হাসপাতালে বা চিকিৎসা ব্যবস্থায় জাতিভেদ নেই।কারণ সেখানে তো প্রচলিত ধর্মজাত প্রভেদ বা পরিচয় নেই। আছে মেডিসিন, যা সম্পূর্ণ বিজ্ঞান। কারোর ধর্ম বা জাত দেখে প্রেসক্রিপশন হয় কি? এখানে মানুষের একমাত্র এবং শেষ পরিচয় সে মানুষ। .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়

এ যেন বহুদিন পর বিজেপির চেনা ছন্দের পতন। হিমাচল প্রদেশের পর কর্ণাটক কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপির বিজয়রথকে থামিয়ে দিল ।২০১৮ পর থেকে লাগাতার হারতে থাকা একটি দল আবার ২০২৪ সাধারণ নির্বাচনে প্রাসঙ্গিক হয়ে গেল । ২২৪ সদস্যের কর্ণাটক বিধানসভায় সরকার গঠন করতে গেলে প্রয়োজন ১১৩টি আসন সেখানে কংগ্রেস একাই পেয়েছে ১৩৬টি আসন, বিজেপি পেয়েছে ৬৫ টি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়ার জেডিএস পেয়েছে ১৯টি এবং অন্যান্য ৪ টি আসন পেয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বিজেপির ৩৯ টি আসন কমেছে এবং কংগ্রেসের বেড়েছে ৫৭টি আসন এবং জেডিএসের কমেছে ১৮ টি আসন।   কর্ণাটকে কংগ্রেসের এই সাফল্য কি রাজ্যে কংগ্রেসের শক্তিশালী সংগঠনের ফল না কি কর্ণাটকের আগের ক্ষমতাশীল বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ । কর্ণাটকে কংগ্রেসে অনেক বড় নেতা রয়েছে।  প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শিবকুমার দক্ষ সংগঠক। আগের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার ব্যাপক জনভিত্তি রয়েছে।  ভোটের আগে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সাভাড়ি কংগ্রেসে যোগ দিয়ে নির্বাচনে লড়েছেন। অন্যদিকে বিজেপির প্রচারের সবচেয়ে বড় মুখ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিজেপির প্রচারে সব নেতারাই মোদীর নাম করেই ভোট চেয়েছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা হল না ।কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের ব্যাপক দুর্নীতি সেই সাথে কংগ্রেসের লাগাতার প্রচার যা প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার সুরকে আরও তীব্র করেছে। তাই শুধুমাত্র মোদী ম্যাজিকের উপর ভর করে নির্বাচন জেতা যে  আর বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয় কর্ণাটকের জনগণ চোখে হাত দিয়ে তাই দেখিয়ে দিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top