১৫৩ যাত্রী নিয়ে মাঝআকাশে পাইলট, সহ-পাইলট ২৮ মিনিটের জন্য ঘুমিয়ে পড়েন

উত্তরাপথঃ ইন্দোনেশিয়ার বাটিক এয়ারের দুই পাইলট ২৫ জানুয়ারীতে কেন্দেরি থেকে জাকার্তা যাওয়ার সময় বাটিক এয়ারের একটি ফ্লাইটে মাঝআকাশে ২৮ মিনিটের জন্য ঘুমিয়ে পড়েন বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে ইন্দোনেশিয়ার পরিবহণ মন্ত্রণালয়।ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি কমিটি (কেএনকেটি), একটি সরকারি সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, ইন্দোনেশিয়ার একটি বিমান তার পথ থেকে দূরে সরে যায় যখন বিমানের উভয় পাইলট ২৮ মিনিটের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছিল।

ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট সেফটি কমিটির (কেএনকেটি) প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৫ জানুয়ারি উড়োজাহাজটির পাইলট এবং কো পাইলট দুজনই ফ্লাইট চলাকালীন প্রায় ২৮ মিনিট ঘুমিয়ে পড়েন। এর ফলে উড়োজাহাজটি তার নির্দিষ্ট যাত্রাপথে থাকতে ব্যর্থ হয়। অবশ্য এ ঘটনায় ফ্লাইটের চার ক্রু ও ১৫৩ যাত্রীর কেউই আহত হননি। উড়োজাহাজেরও কোনো ক্ষতি হয়নি। বাটিক এয়ারের ফ্লাইট বিটিকে৬৭২৩ প্রায় দুই ঘণ্টা ৩৫ মিনিট উড়াল শেষে সফলভাবেই জাকার্তায় অবতরণ করে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফাস্ট অফিসার ক্যাপ্টেনকে ফ্লাইটের আগে জানিয়েছিলেন তিনি পর্যাপ্ত বিশ্রাম না করেই ফ্লাইটে এসেছেন।কেন্দারি থেকে ফ্লাইটটি ৩৬,০০০ ফুট উচ্চতায় আকাশে ওড়ার পর ফাস্ট অফিসার ৩০ মিনিটের জন্য ঘুমান। পরে নির্দিষ্ট উচ্চতায় যাওয়ার পর ক্যাপ্টেন ফ্লাইট অফিসারকে উড়োজাহাজের দায়িত্ব দিয়ে বিশ্রাম নেন। ৯০ মিনিট ওড়ার পর ফাস্ট অফিসার অসচেতনভাবে ঘুমিয়ে পড়েন। সময় জাকার্তা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ প্রায় ১২ মিনিট উড়োজাহাজটির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে সবশেষ যোগাযোগের প্রায় ২৮ মিনিট পর ফ্লাইট ক্যাপ্টেনের ঘুম ভাঙে এবং তিনি বুঝতে পারেন যে এটি তার নির্দিষ্ট যাত্রাপথে নেই। এ পর্যায়ে তিনি ফাস্ট অফিসারকে ঘুম থেকে তোলেন এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইট ক্যাপ্টেন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কাছে দাবি করেন উড়োজাহাজটির রেডিও সিগন্যাল ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা গেছে। প্রতিবেদনে পাইলটদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে দুজনই ইন্দোনেশিয়ান। ক্যাপ্টেনের বয়স ৩২ আর ফাস্ট অফিসারের ২৮।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, সেই ফাস্ট অফিসারের দুটি জমজ শিশু আছে এবং তাদের যত্ন নিতে স্ত্রীকে সহযোগীতার জন্য রাতে তাকে বেশ কয়েকবার ঘুম থেকে উঠতে হয়েছিল। ফ্লাইট বিটিকে ৬৭২৩ এর সব ক্রুকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাউন্ডেড করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচলের মহাপরিচালক ও ইন্দোনেশিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্ত করবে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন  

উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর  অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top