জিপিএস অনুসরণ করতে গিয়ে সাগরে গাড়ি নামিয়ে দিলেন মহিলা

জিপিএস প্রযুক্তি ছবি – উত্তরাপথ

উত্তরাপথঃ ধরুন আপনি কোথাও যাবেন অথচ রাস্তা চেনেন না ,এই সমস্যা বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কমবেশি সকলের।এই সময়ে আমাদের অনেকেই কাজের জন্য নতুন নতুন জায়গায় হামেশায় যেতে হয়। সেই সময় আমাদের একমাত্র ভরসা জিপিএস।সম্প্রতি জিপিএস নির্দেশ অনুযায়ী গাড়ি চালানোর সময় এমন এক উদ্ভট ঘটনা ঘটল দুই মহিলা পর্যটকের সাথে। তারা জিপিএস অনুসরণ করতে গিয়ে সাগরে গাড়ি নামিয়ে দিলেন। এই ভিডিও এখন ভাইরাল হচ্ছে,তবে ভিডিওতে জায়গা স্পষ্ট নয়।   

পর্যটকরা একটি ট্যুর কোম্পানী খোঁজার চেষ্টা করছিলেন এবং জিপিএস নির্দেশনা অনুসরণ করছিলেন এরপর তারা একটি ভুল বাঁক নিয়ে সাগরে গাড়ি নামিয়ে দেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শীর শেয়ার করা ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে লোকেরা সমুদ্রে ঝাঁপ দিচ্ছে এবং দুই পর্যটককে উদ্ধার করার চেষ্টা করছে।সৌভাগ্যক্রমে, গাড়িটি সাগরে তলিয়ে যাওয়ার আগেই উভয় পর্যটককে গাড়ির জানালা দিয়ে টেনে বের করা হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী ক্রিস্টি হাচিনসন পুরো ভিডিওটি রেকর্ড করেছেন যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে।  ভিডিওটি শেয়ার করে, ক্রিস্টি লিখেছেন, “আমি সেখানে বসে বৃষ্টি থেকে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম, এবং তারপর আমি দেখতে পেলাম একটি গাড়ি সরাসরি আমাদের নৌকার পাশ দিয়ে বেশ দ্রুত গতিতে বন্দরের মধ্যে চলে গেল।

ভিডিওটি জিপিএস নির্দেশের ব্যবহার নিয়ে সামাজিকভাবে বিতর্ক শুরু করেছে ৷এই বিষয়ে আমরা এক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সোমনাথ সরকারের সাথে কথা বলি, তার বক্তব্য, জিপিএস প্রযুক্তি সব সময় ১০০ শতাংশ সঠিক ভাবা  ভুল এটিও কখনও কখনও ভুল-ত্রুটি অনুভব করতে পারে যার ফলে রাস্তার ভুল ইঙ্গিত হতে পারে। জিপিএস সর্বদা সঠিক তথ্য না দিতে পারার একাধিক বিভিন্ন কারণ রয়েছে।যেমন-

১। লম্বা দালান, টানেল, ঘন বন, এমনকি আবহাওয়ার অবস্থা যেমন ভারী বৃষ্টি বা তুষার জিপিএস সংকেতগুলিতে হস্তক্ষেপ করতে পারে, যার ফলে অবস্থান ট্র্যাকিংয়ে ভুল হতে পারে।

২। জিপিএস রিসিভার তার অবস্থান সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে একাধিক উপগ্রহের সংকেতের উপর নির্ভর করে। রিসিভার যদি পর্যাপ্ত উপগ্রহ থেকে সংকেত গ্রহণ করতে না পারে বা যদি উপগ্রহগুলি একটি সর্বোত্তম অবস্থানে না থাকে, তাহলে এটি পজিশনিং ত্রুটির কারণ হতে পারে।

৩। GPS ডিভাইসগুলি পূর্ব-লোড করা মানচিত্র বা অনলাইন মানচিত্র ব্যবহার করে। এই মানচিত্রগুলি সর্বদা আপ টু ডেট নাও হতে পারে বা ভুল রাস্তার নাম, অনুপস্থিত রাস্তা বা পুরানো তথ্যের মতো ত্রুটি থাকতে পারে।

৪। জিপিএস ডিভাইস বা অ্যাপে মাঝে মাঝে সফ্টওয়্যার বাগ বা হার্ডওয়্যার ত্রুটি থাকতে পারে যা তাদের সঠিকতাকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনার কাছে সর্বশেষ সংশোধন এবং উন্নতি আছে তা নিশ্চিত করতে আপনার GPS ডিভাইস বা অ্যাপ আপডেট রাখা অপরিহার্য।

যেহেতু আমাদের এই ব্যস্ততার জিপিএস এর ব্যবহার অপরিহার্য তাই এই সমস্যাগুলি কমাতে, নিম্নলিখিতগুলির প্রতি আমাদের লক্ষ্য রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

১। আপনি যে সঠিক পথে আছেন তা নিশ্চিত করতে অন্যান্য নেভিগেশন সরঞ্জাম যেমন রাস্তার চিহ্ন, ল্যান্ডমার্ক বা কাগজের মানচিত্র সহ ক্রস-রেফারেন্স জিপিএস ডেটা ব্যবহার করুন।

২। আপনার GPS ডিভাইস বা অ্যাপটিকে সাম্প্রতিক মানচিত্র এবং সফ্টওয়্যার আপডেটের সাথে আপ টু ডেট রাখুন বাগ ফিক্স  করুন  নির্ভুল তথ্য পেতে ৷

সমস্ত সতর্কতা নেওয়ার পরও মনে রাখবেন যে জিপিএস প্রযুক্তি সর্বদা ১০০% সঠিক হবে না , মাঝে মাঝে ত্রুটি ঘটতে পারে। যারা নিত্যদিন জিপিএস ব্যবহার করে এই অভিজ্ঞতা কমবেশি তাদের সবার আছে। তাই এটিকে একটি সহায়ক টুল হিসাবে ব্যবহার করুন তবে কোথাও যাবার সময় সর্বদা সতর্কতা এবং সাধারণ জ্ঞান প্রয়োগ করুন।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top