৫০৫ মিলিয়ন বছর পুরানো জেলিফিশের জীবাশ্মাবশেষ আবিষ্কার

জেলিফিশের জীবাশ্মাবশেষ আবিষ্কার জেলিফিশের ৫০৫ মিলিয়ন বছর অস্তিত্ব সম্পর্কে আভাষ দেয় (প্রতীকী) ছবি সৌজন্য – উত্তরাপথ

উত্তরাপথঃ একটি যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে, গবেষকরা প্রাচীনতম একটি সাঁতার কাটা জেলিফিশের জীবাশ্মাবশেষ আবিষ্কার করেছেন।বিজ্ঞানীদের ধারনা এই জীবাশ্মটি আনুমানিক ৫০৫ মিলিয়ন বছর পুরানো।এটি মধ্যপ্রদেশে একটি পাললিক শিলায় কুম্বাটিকা নামের প্রাচীনতম সাঁতার কাটা জেলিফিশের জীবাশ্মের অবশেষ পাওয়া গেছে। এই জীবাশ্ম জেলিফিশের প্রারম্ভিক বিবর্তনীয় পর্যায়ের একটি বিরল পরিচয় দেয়। সেই সাথে এটি আভাস দেয় যে একটি প্রাণী কয়েক মিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীতে বিদ্যমান।

কুম্বাটিকার জেলিফিশের জীবাশ্মাবশেষ আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের জেলিফিশের প্রারম্ভিক পর্যায়ের শরীরের গঠন ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য প্রদান করে। নমুনাটিতে জেলিফিশের শরীরের গঠন একটি ঘণ্টা-আকৃতির ,যা আধুনিক দিনের জেলিফিশের মতো। কুম্বাটিকার জীবাশ্মাবশেষ একটি বিষয় যা আমাদের সামনে তুলে ধরে তা হল লক্ষ লক্ষ বছর ধরে  জেলিফিশের এই শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলি তুলনামূলকভাবে অপরিবর্তিত রয়েছে। আবিষ্কারটি জীববিজ্ঞানের এই গুরুত্বপূর্ণ বিবর্তনীয় বিকাশের উপর আলোকপাত করেছে।

জেলিফিশটি ফিলাম সিনিডারিয়ার অন্তর্গত, যার মধ্যে সামুদ্রিক অ্যানিমোন এবং প্রবালও রয়েছে। কুম্বাটিকার আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের জেলিফিশের প্রাথমিক বিবর্তনীয় ইতিহাস এবং অন্যান্য সিনিডারিয়ান প্রজাতির সাথে তাদের সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারনা করার সুযোগ দেয়। জীবাশ্মের গঠন কাঠামো বিশ্লেষণ করে এবং বর্তমান জেলিফিশ প্রজাতির সাথে তুলনা করে, গবেষকেরা এর বিবর্তন সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্যের সন্ধান করতে পারে।সেই সঙ্গে সময়ের সাথে সাথে এই রহস্যময় প্রাণীর বৈচিত্র্য এবং অভিযোজন সম্পর্কে একটি বিস্তৃত করতে পারে।

পৃথিবীর প্রাচীন মহাসাগরে জেলিফিশের উপস্থিতি প্রারম্ভিক সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রাচীনতম পরিচিত প্রাণী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি হিসাবে, জেলিফিশ সম্ভবত সামুদ্রিক পরিবেশ গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাদের বিভিন্ন পরিবেশগত অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার এবং উন্নতি করার ক্ষমতা পৃথিবীর ইতিহাস জুড়ে তাদের স্থিতিস্থাপকতা এবং পরিবেশ সংরক্ষণে তাদের গুরুত্ব তুলে ধরেছে।

জেলিফিশ তাদের অবিশ্বাস্য অভিযোজন ক্ষমতার জন্য বিখ্যাত, যা তাদের বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সামুদ্রিক আবাসস্থলে বসবাস করার উপযুক্ত করে তুলেছে। তারা উষ্ণ এবং ঠান্ডা উভয় জলেই  বসবাসের জন্য উপযুক্ত এছাড়াও এদের কিছু প্রজাতি লোনা এবং স্বাদু উভয় জলের পরিবেশ সহ্য করতে পারে। কুম্বাটিকার আবিষ্কার এই ধারণাটিকে শক্তিশালী করে যে জেলিফিশ তাদের প্রাথমিক বিবর্তনীয় সূচনা থেকেই  যে কোনও পরিবেশে  অভিযোজিত হতে পারে এই গুণাবলীর অধিকারী।

কুম্বাটিকার মতো জীবাশ্মের আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের অতীতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অমূল্য ঝলক প্রদান করে, যা পৃথিবীতে জীবনের বিবর্তন এবং বৈচিত্র্য সম্পর্কে মুল্যবান তথ্য প্রদান করে। এই প্রাচীন প্রাণীদের অধ্যয়ন করে, গবেষকরা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে কীভাবে আমাদের গ্রহের জীবন বিকশিত এবং অভিযোজিত হয়েছে তার রহস্য উন্মোচন করতে পারে।

বিস্তারিত জানতেঃ Proc. R. Soc. B. 2023, 290, 20222490.

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


 সম্পাদকীয়

পশ্চিমবঙ্গের ছোট-বড় যে কোনও নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক হিংসা । সদ্য অনুষ্ঠিত পঞ্চায়েত নির্বাচনও তার ব্যতিক্রম নয়।রাজনৈতিক হিংসা যাতে না হয় নির্বাচনে তার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার পরও হিংসা অব্যাহত থাকল, সারা রাজ্যজুরে ঘটল তেরোটি মৃত্যুর ঘটনা ।পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে  ঘট হিংসা রাজ্যের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহ নাগরিকদের ভোটাধিকার নিয়ে আমাদের সামনে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যে চলতে থাকা রাজনৈতিক হিংসার পেছনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ একাধিক কারণ থাকলেও বেকারত্ব সহ দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতি এর প্রধান কারণ । দুর্বল গ্রামীন অর্থনীতির কারণে বেশীরভাগ গ্রামীন এলাকার মানুষদের অর্থনৈতিক উপার্জনের সুযোগ খুব কম। বিশেষত স্বল্প শিক্ষিত সেই সব মানুষদের যারা না পায় সরকারি চাকুরি না পারে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতে, গ্রামীন অর্থনীতিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ এই শ্রেনীর অন্তর্গত .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top