সমীক্ষায় প্রকাশ ভারতে ডায়াবেটিস ছাড়াও এই ব্যাধিগুলি বিস্ফোরক গতিতে বাড়ছে

উত্তরাপথঃ ICMR সমীক্ষা অনুসারে, ডায়াবেটিস ছাড়াও এই বিপাকীয় ব্যাধিগুলি ভারত এবং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং মানুষকে প্রভাবিত করছে।ভারতে ডায়াবেটিস রোগ এত দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে যে ভারতকে ডায়াবেটিসের হাব বলা হয়। কিন্তু, ICMR সমীক্ষা অনুসারে শুধু ডায়াবেটিসই নয়, ভারতের জনগণের উপর আরও অনেক বিপাকীয় রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।ICMR (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ) এর গবেষকদের একটি দল দ্বারা পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে যে ভারতের অনেক রাজ্যে অসংক্রামক বিপাকীয় রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। এই গবেষণাটি দ্য ল্যানসেট ডায়াবেটিস অ্যান্ড এন্ডোক্রিনোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে।

ICMR সমীক্ষা অনুসারে ডায়াবেটিস ছাড়াও ভারতে যে সমস্ত রোগের ঘটনা দ্রুত গতিতে বাড়ছে সেগুলি হল উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এবং ডিসলিপিডেমিয়া। গবেষকদের মতে, এই বিপাকীয় ব্যাধিগুলি ভারত এবং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং মানুষকে প্রভাবিত করছে। এর আগেও অনেক গবেষণায় বলা হয়েছিল যে ভারতে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডিসলিপিডেমিয়া রোগীদের সংখ্যা অনেক বেশি।

আইসিএম-এর এই গবেষণায়, ভারতে এই বিপাকীয় ব্যাধিগুলির সমস্যা বোঝার জন্য ২৮টি রাজ্য, ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। শহর ও গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় ১ লাখ ১৩ হাজার মানুষকে সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাদের সকলের বয়স ২০ বছরের বেশি ছিল।এই সমীক্ষাটি ২০০৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে করা হয়েছিল।

সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ভারতে ১১.৪% লোক ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছে ।শহুরে এলাকার মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি ছিল এবং মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি দেখা গেছে।প্রিডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৫.৩% এবং ডিসগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি ২৬.৬% মানুষের মধ্যে দেখা গেছে।উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৫.৫%। এখানেও শহরাঞ্চলের পুরুষদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেশি ছিল।স্থূলত্বের ঝুঁকি ২৮.৬% মানুষের মধ্যে দেখা গেছে । শুধুমাত্র পেটের স্থূলতার ঝুঁকি ৩৯.৫% মানুষের মধ্যে দেখা গেছে।

বিপাকীয় রোগ প্রতিরোধের উপায় কি?

#সক্রিয় থাকুন, প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।

#৮ ঘন্টা ঘুমাতে ভুলবেন না।

#গ্যাজেট, মোবাইল ফোন এবং দীর্ঘক্ষণ বসে টিভি দেখার অভ্যাস এড়িয়ে চলুন।

#ধূমপান এবং অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলুন।

#মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন। এই জন্য, আপনার শখের জন্য সময় দিন, প্রাণায়াম করুন এবং যোগ অনুশীলন করুন।

#একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন। মৌসুমী ফল, শাকসবজি এবং শস্য সমৃদ্ধ তাজা এবং সাধারণ খাবার খান।

#মিহি আটা বা গমের আটার পরিবর্তে মোটা দানা বা বাজরা দিয়ে তৈরি ফাইবার সমৃদ্ধ রুটি খান।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top