অসীম পাঠক


ছবি সৌজন্য: অসীম পাঠক
পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ডক্টর ধীরাজ বিশ্বাসের মন ভালো নেই, স্টেটবাসের জানালায় মুখ রেখে পেরিয়ে চলেছেন একের পর এক শহর গ্রাম। হাইওয়ে ধরে ছুটছে এসি গাড়ি, গন্তব্য তাঁর নর্থ বেঙ্গলের একটি কলেজ। পূজোর কটা দিন তিনি গ্রামের বাড়িতে কাটান, এ বছর পূজো হলো শরৎ পেরিয়ে হেমন্তে। পড়ন্ত রোদ্দুর খোলস খসা সাপের মতো নিস্তেজ। পঞ্চাশোর্ধ অধ্যাপক বিশ্বাস যেনো জীবনের কঠিন সত্য কে বিশ্বাস করতে চাইছেননা মানতে পারছেন না মহাকালের অমোঘ নির্দেশ। জীবনের জলছবি তে তিনিযে পিছিয়ে গেছেন একুশ বছর।
অষ্টাদশীর সেই পূর্ণচন্দ্র আজ যে কালো মেঘে ঢাকা, স্ত্রী চন্দ্রিমা আর একমাত্র ছেলে অনিকেতকে নিয়ে তিনি ফিরছেন। পূজোর সময় একরাশ খুশী আর উদ্দীপনা নিয়ে যখন শাল পিয়ালে ঢাকা জঙ্গল মহলের গ্রামের বাড়ি এসেছিলেন তখনো ভাবতে পারেননি তাঁর জন্য এতো বিস্ময় অপেক্ষা করে আছে। বয়স্ক বৃদ্ধ বাবা হঠাৎই চলে গেলেন। বাড়ি আসার তাগিদ যেনো হারিয়ে গেলো অধ্যাপকের, একটা থ্রি সিটে জানালার ধারে মুখ রেখে অধ্যাপক যেনো সুদূর অতীতে। স্ত্রী চন্দ্রিমার কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, নিজের সাজগোজ, মার্কেটিং, আড্ডা এসব নিয়েই সে ব্যাস্ত। একাধিক অসুখে ভুগতে থাকা অধ্যাপকের খেয়াল রাখাল সদিচ্ছাটুকুও তার নেই। স্বার্থপর এক মহিলা। ছেলে অনিকেত পড়াশোনায় ভালো, হায়ার সেকেন্ডারী পরীক্ষা দেবে এবছর। কোভিডের জন্য পড়াশোনার বারোটা বেজে গেলো সবার। শিক্ষা ব্যাবস্থার এক অপূরণীয় ক্ষতি। সভ্যতার সেরা জীব মানুষ আমরা একটা অনুজীবের কাছে কতো অসহায় আত্মসমর্পণ করলাম কতো তাজা প্রানের বিনিময়ে। আধ্যপক ভাবেন ওষুধ তো শরীরের অসুখের হয়, মনের অসুখের ওষুধ আবিষ্কার হয়নি এখনো। যার ছায়ায় তিনি মন শান্ত করতে চেয়েছিলেন সে তো তাঁর ভালোবাসা সেদিন বোঝেনি , আর বুঝলেও সামাজিক অনুশাসনে তার সম্ভব হয়ে ওঠেনি চিকিৎসক বাবার কথার অবাধ্য হবার।
“দূর্গা ” – একটা বিদ্যুৎ তরঙ্গের মতো নামটা খেলে যায় … ৫২ বছরের অধ্যাপক যেনো সজীব হয়ে ওঠেন। মনের বাগিচায় প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে সবকটা শাখা প্রশাখা। যদিও দূর্গাকে এভাবে দেখতে তিনি চাননি, তাঁর জীবনের স্বপ্ন কন্যা ভালোবাসার মর্ত্য প্রতিমা প্রাণোচ্ছল দূর্গা আজ যেনো জীবন যুদ্ধে ম্লাণ, ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত। তার অসামান্য জীবনী শক্তি দুরন্ত সাইক্লোনের দাপাদাপিতেও উপড়ে যায়নি, বিধ্বস্ত হয়েছে তার অবসন্ন জীবন।
মিনারেল ওয়াটারের বোতলটা খুলে এক ঢোক জল খেয়ে যেনো একটু দম নেন অধ্যপক। তাঁর পনেরো দিনের ছুটিতে বেদনাদায়ক বাবার মৃত্যুর পাশাপাশি একটু স্বস্তি দূর্গার সাথে আকস্মিক সাক্ষাৎ …..
একদিন অধ্যাপক বিশ্বাস ব্যাংকে গেছেন, গ্রামীণ ব্যাংক। প্রচণ্ড ভিড় , পূজোর কদিন ছুটি থাকবে তাই এতো মানুষের সমাগম। পিতৃ শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের কাজ সামনেই। ব্যাংক থেকে নেমেই গলির মুখে একটা মিষ্টির দোকান তার সামনে দাঁড়িয়ে এক মহিলা, চমকে ওঠেন ডক্টর ধীরাজ বিশ্বাস। কেমন যেনো চেনা চেনা ….. মুখে যেনো জীবন সংগ্রামের ক্ষতচিহ্ন। অবিন্যস্ত খোলা চুল, কয়েক মুহূর্ত মুখোমুখি দুজনেই। না না তার মনের ভুল, পাশ কেটে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করেণ। হঠাৎই সেই মেয়েলী কন্ঠ যেনো ডাক দেয়, ধীরাজ দা চিনতে পারলে না, কেমন যেনো চেনা গলা, ভাবতে পারেণ না ধীরাজ …. পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যপক বুঝে উঠতে পারেননা জীবনের অভিকর্ষ। প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত মুখী প্রতিক্রিয়ার কথা। জীবনের চেনা ছন্দে যেনো টান পড়ে, হৃদয় বীনায় ঝংকৃত হয় ভালোবাসার মর্ম বেদনা। মেয়েটি সামনে এসে বলে, বড়ো বড়ো চোখে কি দেখছো, আমাকে কি মনে নেই ? চমকে ওঠে ধীরাজ, সোল্লাসে মনের গভীরে বলে ওঠে, ইউরেকা ….. তারপর বলে, তোমাকে ভুলে যাবো তা কি হতে পারে কখনো ? তুমি যে আমার প্রথম প্রেম, মনের বাগিচায় আজও সজীব ও প্রানবন্ত। কতো না বলা কথা, এবার দূর্গা বলে ওঠে , থাক আর বাহাদুরি দেখিয়ে কাজ নেই, খবর পেয়েছি তোমার বাবা মারা গেছেন। ধীরাজ দা চলো না ওই বটতলায় বাঁশের মাচায় একটু বসি। কোলাহলময় কালো পিচ রাস্তা পেরিয়ে তারা হাঁটে সাত পা না হোক, সাত জন্ম না হোক অন্তত মহাকালের খাতায় উঠুক এই কয়েক পা পথ। ধীরাজ চমকে ওঠে এ কোন দূর্গা, এ তো ছিলো লজ্জাবতী লতার মতো, আজ হঠাৎ এতো বাঁধনহারা। মন্ত্রমুগ্ধের মতো দূর্গার পেছনে হাঁটে ধীরাজ।
পাশাপাশি দুই গ্রামের দুজন । অধ্যাপক হবার আগে কঠোর পরিশ্রমী ধীরাজ টিউশনি করতো প্রচুর, বেশ নাম ডাক হয়েছিলো এলাকায়। দূর্গা তার কাছে অঙ্ক আর ফিজিক্স পড়তে যেতো। পড়াশোনায় ভালোই ছিলো দূর্গা, স্বচ্ছল পরিবারের একমাত্র মেয়ে। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। পাতলা ছিপছিপে চেহারাকে আকর্ষণীয় করেছিলো কাজল কালো দুটো চোখ। ধীরাজ মনে মনে ডাকতো মৃগনয়না। ষোড়শী দূর্গার প্রেমে ধীরাজ মগ্ন হয়ে পড়েছিলো। এসব ভাবতে ভাবতেই বাঁশের মাচায় এসে বসে দুজনে। জায়গাটা সকালে বেশ ভিড় থাকে, এখন মধ্যাহ্ন বেলা ,কোভিড বিধি মেনে পূজো প্যান্ডেলে সীমিত মানুষ রয়েছেন, বাকীরা উৎসবের মেজাজে গৃহবন্দী। দূর্গার দিকে তাকিয়ে ধীরাজ বলে , খুব সাহস তো, দূর্গা বলে কে কি ভাবলো তা নিয়ে আর ভাবিনা। তা ছাড়া তুমি আমার টীচার, আর বুড়ো বয়সে তোমাকে কেও প্রেম করতে যাবে না। ধীরাজের মনে পড়ে যেদিন দূর্গার অংকের খাতায় শুধু একটি কথা লিখেছিলো, ভালোলাগে তোমায়। পরদিন সেই খাতা দেখতে গিয়ে লজ্জায় রাঙা দুজনেই। কাঁপা কাঁপা হাতে খাতা নিয়ে দেখে লেখার নীচে একটা লাভ সিম্বল, দূর্গা র কাজ। দুজনই দুজনের মনের মনিকোঠায় ছিলো বন্দী। শুরু হয়েছিলো টুকরো টুকরো কিছু কথা, রাত্রে পড়ার পর বাড়ি পৌঁছে দেওয়া। একদিন নির্জন সন্ধ্যায় হাল্কা বৃষ্টিতে একই ছাতার নীচে দুজনে আসছিলো, পড়া শেষে ধীরাজ পৌঁছে দিতো দূর্গাকে। হঠাৎই ধীরাজ দূর্গার হাতে হাত রেখেছিলো, হাত সরিয়ে নেয় নি দূর্গা। পাঁচ মিনিটের পথ যেনো কতো না বলা কথার স্বাক্ষী, ভালোবাসলে চোখ কথা বলে, এ তো ঈশ্বরের দান। বাস্তবে ফিরে আসে ধীরাজ, দূর্গার দিকে তাকিয়ে কি যেনো খুঁজে বেড়ায়, শরীরে মেদ জমেছে, কথার গতিও বেড়েছে। দূর্গাই এবার বলে ওঠে, কি দেখছো গো ধীরাজ দা? আমার জীবনে ঝড় বয়ে গেছে। সেই ঝড় আমার সিঁথি সাদা করে দিয়েছে, চমকে ওঠে ধীরাজ দেখে দূর্গার চোখে জল। হাত বাড়িয়ে সেই মুক্তোর মতো অশ্রুবিন্দূ মুছে দেয় ধীরাজ।
দূর্গার এক ছেলে , উচ্চ মাধ্যমিক দেবে এ বছর। সাত বছর আগে হঠাৎই তাদের ছেড়ে চলে যায় দূর্গার স্বামী কৈলাশ এক কঠিন জ্বরে। সবার সব রকম প্রচেষ্টা ব্যার্থ করে সবাইকে কাঁদিয়ে কৈলাশ আকাশের তারা হয়ে যায়। খুব ভালোবাসতো দূর্গা কে,ভীষণ খেয়াল রাখতো। ভালো চাকরী করতো, বেশ মজাদার মানুষ ছিলো। দূর্গা ছিলো তার প্রথম ও শেষ প্রেম। কৈলাশের ভালোবাসার মধ্যে একটা বণ্যতা ছিলো, উদ্দাম বাঁধনহারা। সাহসী সুপুরুষ সুদর্শন কৈলাশের কোলে মাথা রেখে কতোকাল ঘুমোয়নি দূর্গা। সাত বছর যেনো কয়েক আলোকবর্ষ।
হঠাৎই দূর্গা বলে তোমার কথা বলো, ধীরাজ বলে কি আর বলি, চলছে, সেমিনার, ছাত্র পড়ানো, রিসার্চের কাজ, এসব নিয়েই আছি। দাম্পত্য শান্তি খোঁজার বৃথা চেষ্টা না করে সব ভূলে থাকি। কতো রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে, কবে শুনবে আমি নেই, চলে গেছি অজানা ঠিকানায়। হঠাৎই দূর্গা হাত বাড়িয়ে ধীরাজের মুখ চাপা দেয়, বলো না গো এ কথা। একটা মৃদু হাসির রেখা অধ্যাপকের ঠোঁটে, ভালোবাসা কি জিনিস উপলব্ধি করা এ জীবনে হয়তো হলো না। তবুও জীবন মরুভূমিতে এটটুকুই বা কম কিসের? দুজনেই দুজনার দূরভাষ বিনিময় করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরকে এতো দিন খোঁজ করলেও পায় নি। আসলে কখন কাকে কি অবস্থায় পাওয়া যাবে এটা তো স্বয়ং ঈশ্বরের পরিকল্পনা। তুচ্ছ মানব মানবীর দল নিমিত্ত মাত্র। এবার ওঠার পালা, দু জনার দুটি পথ দুটি দিকে গেছে গো বাঁকিয়া। তারপর এই কয়েকদিন ফোনে কথা, ভিডিও কল হয়েছে একাধিক বার। দুজনেরই মনে হয়েছে এ সম্পর্ক অবৈধ নয়, এ তো মনের আবেগ ভরা ভালোবাসার উচ্ছসিত বহিঃপ্রকাশ। তারা ভরা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে দুজনের ই মনে পড়েছে একা অপরের জীবনসঙ্গী হতে না পারার সেই ব্যার্থতার কথা। ধীরাজের এক বন্ধু দূর্গার বাবাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলো দূর্গার বাবা রাজি হননি, কেননা ধীরাজ তখন অধ্যাপক হয়নি। বাবা চেয়েছিলেন একমাত্র মেয়ে একটু সুখে থাকবে, ভালো ছেলের সাথে বিয়ে দিতে হবে। দূর্গারও সম্ভব ছিলো না বাড়ির অমতে কিছু করার। পৃথিবীর সব অসফল প্রেমই বিরহের আগুনে নির্মল পরিশুদ্ধ হয়ে ওঠে। বিয়োগাত্মক জীবনের গল্পই তো প্রেমের অনুপ্রেরণা।
দূর্গাও আজ ফিরে যাচ্ছে আসানশোল। তার মনেও ধীরাজের ছবি, সেদিন গাছতলায় বসে সেলফি নিয়েছিলো, যা কখনো প্রকাশ হবেনা কোথাও, না সোশ্যাল মিডিয়ায়, না কোনো লোক চক্ষুর সামনে। যা শুধু বন্দী মুঠোফোনেরগ্যালারিতে সিকিউরিটি কোডের বেড়াজালে।
অধ্যাপক বিশ্বাসের চিন্তায় ছেদ পড়ে, ছেলে চেঁচিয়ে ওঠে, বাপী এসে গেছি, এই তো শিলিগুড়ি। চেনা শহর চেনা মানুষ আজ যেনো বড্ড অচেনার ভিড়ে শুধু একটি মুখই চেনা দূর্গা।
ধীরাজ ও দূর্গা দুজনের মনের বাঁধ ভেঙে গেছে। তীর ভাঙা ঢেউ যেনো ছাপিয়ে যাচ্ছে মনের সীমানা ….. দূরে থেকেও দুজন দুজনের ভালোবাসার বৃত্তে আটকে। সীমাহীন উচ্ছাসের ঢেউয়ে একরাশ পরিতৃপ্তি। আগামীর স্বপ্ন, বেঁচে থাকার আনন্দ স্পর্শে নয় স্পন্দনে বেঁচে থাক অনাবিল আনন্দ ঘন এই ভালোবাসা।
এই লেখকের অন্যান্য ছোটগল্প: যন্ত্রনার নীল গভীরতা থেকে প্রাপ্তির সবুজ দ্বীপ 🌼 প্রগতির পথে আন্দোলনের পথে নারী, এক বৈশাখে দেখা হলো দুজনায়, ঘুড়ি, সীমানা ।
আরও পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন