দক্ষিণ আফ্রিকায় জ্যোতির্বিজ্ঞানের আসর

নাব্তা প্লাইয়াতে অবস্থিত ৭,০০০ বছর পুরনো পাথরের বৃত্তটি গ্রীষ্মকালীন অয়নান্ত (Summer solstice) এবং বার্ষিক মৌসুমি বায়ুর আগমনকে অনুসরণ করত। এটি পৃথিবীর প্রাচীনতম পরিচিত জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত স্থান। ছবিটি Discovery Magazine-এর X হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত| 

ড. সায়ন বসুঃ অলিম্পিক, ক্রিকেট – ফুটবলের বিশ্বকাপ যেমন প্রতি চার বছর অন্তর এক একটি দেশে হয়, ঠিক তেমনই আরোও একটি আসর বসে প্রতি তিন বছর অন্তর| এ হলো জ্যোতির্বিজ্ঞানের আসর যার নাম ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (International Astronomical Union বা IAU) জেনারেল অ্যাসেম্বলি| এটিকে সংক্ষেপে IAU-GA বলা হয়ে থাকে| দু’সপ্তাহ ব্যাপী এই আসর এবার বসেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউন শহরে | ভারতে IAU-GA আয়োজিত হয় প্রায় ৪০ বছর আগে ১৯৮৫ আগে নতুন দিল্লীতে| কোভিড অতিমারির পরে ২০২২ সালে IAU-GA অনুষ্ঠিত হয় কোরিয়ার বুসান শহরে এবং সেখানেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বেছে নেওয়া হয় ২০২৪ সালের আয়োজক হিসেবে| 

IAU এর ইতিহাস প্রায় একশো বছরের পুরনো |  IAU-এর পথচলা শুরু ১৯১৯ এর ২৮ জুলাই বেলজিয়ামের ব্রাসেলস শহরে, যদিও ফ্রান্সের প্যারিস শহরে এর মূল কার্যদপ্তর| ১৯১৯ এ IAU প্রতিষ্ঠার সময় হাতে গোনা কয়েকটি দেশ এর সদস্য ছিল| সেগুলি হলো বেলজিয়াম, ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন, আমেরিকা, ইতালি, জাপান, কানাডা এবং হল্যান্ড |   বর্তমানে IAU এর সদস্য ৯০টি দেশ | যে সমস্ত প্রথিতযশা বিজ্ঞানীরা যুক্ত ছিলেন IAU এর জন্মলগ্ন থেকে তাঁরা হলেন – George Ellery Hale (আমেরিকা), Benjamin Baillaud (ফ্রান্স), Arthur Eddington এবং Frank Dyson (গ্রেট ব্রিটেন)| এঁরা সবাই নিজের নিজের গবেষণা ক্ষেত্রে স্বনামধন্য | 

অনেকেই ভাবতে পারেন যে এতো মহাদেশ এবং দেশ থাকতে শেষে আফ্রিকা মহাদেশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা কেন ? এখানে বলে রাখা ভালো যে, আফ্রিকায় জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাস প্রায় ৭,০০০ বছর আগের থেকে শুরু হয় বলে ধারণা করা হয়। এই সময়ের মধ্যে দক্ষিণ মিশরের নাব্তা প্লাইয়া (Nabta Playa) নামক স্থানে মানুষ আকাশ পর্যবেক্ষণ শুরু করেছিল। নাব্তা প্লাইয়ার প্রস্তর স্থাপনা, যা ৭,০০০ থেকে ৬,০০০ বছর পুরনো, সূর্যের গতি এবং নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হতো। এটিকে প্রাচীন আফ্রিকার প্রথম জ্যোতির্বিজ্ঞানের উদাহরণ হিসেবে ধরা হয়।এখানে প্রস্তর স্থাপনা এবং স্তম্ভগুলির একটি বিশেষ বিন্যাস পাওয়া গেছে, যা সূর্যের এবং নক্ষত্রমণ্ডলের গতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য তৈরি বলে মনে করা হয়। এই স্থানটি আফ্রিকার প্রাচীনতম জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি Stonehenge-এর মতো প্রাচীন জ্যোতির্বিদ্যাগত স্মৃতিস্তম্ভগুলির সাথে তুলনা করা হয়।

এরপর আসে প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা, প্রায় ৫,০০০ বছর আগে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। মিশরীয়রা নক্ষত্র, সূর্য এবং চন্দ্র পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ক্যালেন্ডার এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের জন্য জ্যোতির্বিদ্যার ব্যবহার শুরু করে। সেই সময়, প্রাচীন মিশরীয়রা আকাশ পর্যবেক্ষণ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানকে ধর্মীয় ও দৈনন্দিন জীবনের সাথে গভীরভাবে সংযুক্ত করেছিল। তারা খেয়াল করেছিল নক্ষত্রমণ্ডল, চন্দ্র চক্র এবং সূর্যের গতি। মিশরের গিজার পিরামিড এবং কার্নাক মন্দিরের নকশায় জ্যোতির্বিজ্ঞানিক ধারণা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যেমন তারা সূর্য ও নক্ষত্রের স্থান অনুযায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছিল। সিরিয়াস (Sirius) তারার উদয় এবং নীল নদের বার্ষিক বন্যার মধ্যে সম্পর্কটি মিশরীয়দের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মিশরীয়রা সৌর ক্যালেন্ডার ব্যবহার করে ৩৬৫ দিনের বর্ষপঞ্জি তৈরি করেছিল, যা আধুনিক ক্যালেন্ডারের ভিত্তি।

ইসলামিক স্বর্ণযুগে, বিশেষ করে ৮ম থেকে ১৪শ শতাব্দীর মধ্যে, উত্তর আফ্রিকা জ্যোতির্বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মরক্কো এবং আলজেরিয়ার মতো দেশগুলোতে অনেক বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং গণিতবিদরা কাজ করেছিলেন। যেমন আল-বাত্তানি (জন্ম ৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে হাররানে যেটি বর্তমান তুরস্ক), যিনি তাঁর বেশিরভাগ সময় আলজেরিয়ায় কাটিয়েছেন।আল-বাত্তানি একজন অসাধারণ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ যিনি সূর্য বছরের সঠিক হিসাব ৩৬৫ দিন, ৫ ঘণ্টা, ৪৬ মিনিট, এবং ২৪ সেকেন্ড হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন। ইবনে ইউনুস (জন্ম ৯৫০ খ্রিস্টাব্দে কায়রোতে), তাঁর কাজ মরক্কো ও আলজেরিয়ার শিক্ষাবিদদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। এছাড়াও ছিলেন ইবনে আল-জারকালী, আল-কাবিসী, আল-ইদ্রিসি| 

তৎকালীন বাগদাদ, দামেস্ক এবং কায়রোতে অবস্থিত জ্ঞানকেন্দ্রগুলোর সাথে তাদের নিবিড় যোগাযোগ ছিল। মরক্কোর বিখ্যাত শহর ফেস এবং মারাকেশ-এ জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্র ছিল। সেখানে জ্যোতির্বিদ্যাগত যন্ত্র, যেমন অ্যাস্ট্রোলেব এবং সান-ডায়াল (সূর্য ঘড়ি) তৈরি করা হয়েছিল। এই সময়ে মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা গ্রিক এবং ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের কাজ অনুবাদ ও ব্যাখ্যা করেন এবং সেই জ্ঞানের প্রসার ঘটান।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক যুগের শুরুর দিকে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার সূচনা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকান অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরি (South African Astronomical Osbervatory), যা SAAO নামে পরিচিত, এটির ইতিহাস Cape of Good Hope (উত্তমাশা অন্তরীপ)-এ  ১৮২০ সালে প্রতিষ্ঠিত রয়্যাল অবজারভেটরি এর সাথে শুরু হয়, যা আফ্রিকার প্রথম বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান| ১৮২৯ সালে এটির মূল ভবনগুলি তৈরি করতে খরচ হয় আনুমানিক ৩০,০০০ পাউন্ড যার আজকের বাজার মূল্য ৩.৩ মিলিয়ন পাউন্ডের সমান | থমাস ম্যাকলিয়ার ১৮৬৯ সালে কেপ অফ গুড হোপ এ মেরিডিয়ানের একটি বর্গমিটার পরিমাপের জন্য রয়্যাল মেডেল লাভ করেন এবং ডেভিড গিল ১৯০৩ সালে সৌর ও নক্ষত্রের পারাল্যাক্স নিয়ে গবেষণার জন্য এবং কেপ অফ গুড হোপের রয়্যাল অবজারভেটরির সক্রিয় পরিচালনার জন্য দ্বিতীয়বারের মতো এই মেডেল পান। রিপাবলিক অবজারভেটরি, জোহানেসবার্গ, ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে প্রাচীন রয়্যাল অবজারভেটরি, কেপ অফ গুড হোপ এর সাথে একত্রিত হয়ে SAAO গঠন করে। ১৯৭৪ সালে রাডক্লিফ অবজারভেটরি এর টেলিস্কোপটি কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (CSIR) দ্বারা ক্রয় করা হয় এবং সাদারল্যান্ড এ স্থানান্তর করা হয়, যেখানে এটি ১৯৭৬ সালে পুনরায় কাজ শুরু করে। SAAO ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা দক্ষিণ আফ্রিকার CSIR এবং যুক্তরাজ্যের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ কাউন্সিল (SERC) এর মধ্যে একটি যৌথ চুক্তির ফলস্বরূপ। এর সদর দপ্তর পুরনো রয়্যাল অবজারভেটরির স্থানেই অবস্থিত, যেখানে প্রধান ভবন, অফিস, জাতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান গ্রন্থাগার এবং কম্পিউটার সুবিধা রয়েছে। বর্তমানে SAAO ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন (NRF) এর ব্যবস্থাপনার অধীনে রয়েছে, যা পূর্বে ফাউন্ডেশন ফর রিসার্চ ডেভেলপমেন্ট (FRD) নামে পরিচিত ছিল। ১৯৭৪ সালে প্রিটোরিয়ার রাডক্লিফ অবজারভেটরি বন্ধ হলে, CSIR ১.৯-মিটার রাডক্লিফ টেলিস্কোপ ক্রয় করে এবং এটি সাদারল্যান্ড-এ স্থানান্তর করে। সাদারল্যান্ডে আফ্রিকান মহাদেশের সবথেকে বড় মাপের অপ্টিকাল টেলিস্কোপও আছে| জ্যোতির্বিজ্ঞানের এতো ইতিহাস যে দেশ এবং মহাদেশের সাথে জড়িয়ে সেখানে IAU জেনারাল অ্যাসেম্বলি শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৬ বছর লেগে গেলো প্রথমবার এই কনফারেন্স আয়োজন করতে সেটাই বড় আশ্চর্যের! 

যাই হোক এবারের এই আসর বসেছিল কেপটাউন-এর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (ICC)| এই সেন্টারটি প্রায় ৫ লক্ষ স্কোয়ার ফুট জায়গার ওপর নির্মিত এবং এর মধ্যে অবস্থিত এক একটি অডিটোরিয়ামে প্রায় ১,৩০০ জনের বসার জায়গা আছে| এবারের IAU-GA এর আসর বসেছিল ৬-১৫ অগাস্ট| পৃথিবীর ১০০টিরও বেশী দেশ থেকে প্রায় ২,৫০০ জন জ্যোতির্বিজ্ঞানী অংশগ্রহণ করেছিলেন এবারের এই কনফারেন্সে| 

IAU-GA এর ইতিহাসে এই প্রথমবার শুধুমাত্র সারসংক্ষেপ (abstract) জমা পড়েছিল ৩,০০০ এর বেশী! এই সারসংক্ষেপগুলিকে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দু’ভাগে ভাগ করা হয় – মৌখিক বক্তৃতা এবং পোস্টার প্রেজেন্টেশান| আমার গবেষণাটি মৌখিক বক্তৃতার জন্যে নির্বাচিত হয়েছিল যেটি মূলত কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে| বক্তৃতায় আমি দেখিয়েছিলাম, কি ভাবে অত্যন্ত কাছাকাছি থাকা দুটি কৃষ্ণগহ্বর মহাকর্ষীয় তরঙ্গ বিচ্ছুরণ করতে পারে| এরই মধ্যে একদিন নোবেলজয়ী অধ্যাপক Brian Schmidt এর সাথে একান্ত আলাপচারিতার সুযোগও এলো! এখানে বলে রাখা ভালো যে ভারতের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে গবেষকরা এসেছিলেন তাদের কাজ সবার সামনে তুলে ধরতে এবং তাদের মধ্যে বাঙালীদের সংখ্যাটা বেশ বড় যেটা বাঙালী হিসেবে আমার কাছে বেশ গর্বের| প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কনভেনশন সেন্টারের বিভিন্ন কনফারেন্স রুমে চলছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের নানান গবেষণার ওপর বক্তৃতা| সাথে প্রায় সন্ধ্যায় থাকতো বিভিন্ন Public Outreach বা জনসচেতন কার্যক্রম যেখানে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রের সাথে জড়িত প্রখ্যাত মানুষরা এসে জনসাধারণের সামনে তুলে ধরতেন তাঁদের কাজ কর্মের কথা সরল ভাষায়| তেমনই এক সন্ধ্যায় অধ্যাপক Schmidt-এর কথা থেকে জানতে পারলাম যে তিনি নাকি জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণাই করতে চাননি একটা সময় ! এসবের মাঝেই ১২ই অগাস্ট আয়োজন করা হয়েছিল Gala dinner| প্রায় ২,৫০০ জ্যোতির্বিজ্ঞানী একসাথে বসে রাতের খাবার খাচ্ছেন, একে অন্যের সাথে নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, সে এক অসাধারণ দৃশ্য|  শেষে দেখা গেলো আরও এক অভূতপূর্ব দৃশ্য| বিশ্বের নানান দেশের বিজ্ঞানীরা একসাথে নাচেও অংশ নিলেন! তাঁদের মধ্যে ছিলেন ৭২ বছর বয়সী জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডেব্রা এলমগ্রিন, যিনি ২০২১ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত IAU-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।তিনি IAU-এর ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে এই পদে অধিষ্ঠিত হন। ডেব্রা এলমগ্রিন একজন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী, যিনি ছায়াপথের গঠন এবং বিকাশ সম্পর্কিত গবেষণার জন্য পরিচিত। 

নোবেলজয়ী অধ্যাপক Brian Schmidt এর সাথে লেখক|

সব মিলিয়ে এবারের কনফারেন্স ছিল ভিন্ন স্বাদের| ১৫ই অগাস্ট, IAU-GA এর শেষ দিন সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ঘোষণা করা হয় যে, পরবর্তী আসর বসবে গ্যালেলিও গ্যালিলির দেশ ইতালিতে ২০২৭ সালের অগাস্ট মাসে |

কেপটাউন ICC কনভেনশন সেন্টারে তোলা লেখকের ছবি |

** লেখক বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার University of Witwatersrand বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে কর্মরত |

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে

উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top