

অসীম পাঠকঃ ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে অন্ধ সে-জন মারে আর শুধু মরে । নাস্তিক সেও পায় বিধাতার বর, ধাৰ্মিকতার করে না আড়ম্বর।Religion অর্থ উপসনা ধর্ম। শব্দটির উৎপত্তি ফরাসি religion থেকে, যেমন, “religious community” অর্থ ধর্মীয় সম্প্রদায়। আবার এটি এসেছে লাতিন religionem থেকে nom. religio. যার অর্থ “পবিত্র বিষয়ের প্রতি শ্রদ্ধা, ঈশ্বরদের প্রতি নিষ্ঠা” “respect for what is sacred, reverence for the gods”এবং “বাধ্যতা, যা মানুষ ও ঈশ্বরদের মধ্যে সেতুবন্ধনস্বরূপ” “obligation, the bond between man and the gods” যেটি আবার লাতিন religiō থেকে পাওয়া।
রবীন্দ্রনাথ ‘ধর্মমোহ’ নামক অবিস্মরণীয় কবিতায় লিখেছিলেন, ‘ধর্মের বেশে মোহ যারে এসে ধরে/অন্ধ সে জন শুধু মারে আর মরে।’ লালমনিরহাটে ‘ধর্মের অবমাননার অভিযোগে’ এক ব্যক্তিকে দলবদ্ধভাবে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করার ঘটনার দিকে তাকালে রবীন্দ্রনাথের কথার সারবত্তাই প্রমাণিত হয়।শুধু হত্যা নয়, বিগত কয়েক বছরে এ ধরনের গুজব রটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দলবদ্ধ সহিংসতা ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটেছে। যারা এ ধরনের বর্বরোচিত ঘটনায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি তাদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষ ও বিকৃতি ছড়িয়ে আত্মসুখ লাভ করেছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, সমগ্র বিশ্বেই এখন ধর্মমোহের জয়জয়কার। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা- কোথায় নেই ধর্মমোহ? বলা বাহুল্য, ধর্মমোহের অবশ্যম্ভাবী পরিণতি উগ্রবাদ ও সহিংসতা।
ধর্মমোহের অপর পিঠে রয়েছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা তথা পরধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধা। অন্যের মতামতকে মূল্য দেয়া, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে গণতান্ত্রিক চেতনা এবং যুক্তিবাদী মানসিকতা। ফরাসি দার্শনিক ভলতেয়ারের অমর বাণী উত্তরোত্তর প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে- ‘তোমার মতের সঙ্গে আমি একমত না হতে পারি, কিন্তু তোমার মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিতে পারি।’ অন্যের মতামতকে মূল্য দেয়ারই অপর নাম পরমতসহিষ্ণুতা। আজকের সভ্যতার সংকটের মূলে রয়েছে পরমতসহিষ্ণুতা তথা ধর্মীয় সহিষ্ণুতার অভাব।
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা অর্থাৎ পরধর্মের প্রতি অশ্রদ্ধার মনোভাব তৈরি হয় ধর্মের প্রকৃত মর্ম উপলব্ধি করতে না পারার কারণে। বিশ্বখ্যাত ঔপন্যাসিক টলস্টয় ধর্মের তিনটি দিকের কথা বলেছিলেন- Essentials of Religion (ধর্মের মূল মর্ম), Philosophy of Religion (ধর্মের দর্শন) এবং Rituals of Religion (ধর্মের আচার)। তিনি দেখিয়েছিলেন প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের মর্ম অভিন্ন। পার্থক্য শুধু দর্শনে ও আচারে। মর্মের অভিন্নতা সত্ত্বেও যুগে যুগে একদল মানুষ অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেছে, অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রাণ হরণ ও সম্পদ বিনষ্ট করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে নিউজিল্যান্ডে, শ্রীলংকায় ও ফ্রান্সে এমন সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।
ধর্মীয় উৎসবগুলো ইতোমধ্যে সম্প্রদায়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে সার্বজনীন রূপ লাভ করেছে। ঈদ, দুর্গাপূজা, বড়দিন, বৌদ্ধপূর্ণিমার মতো উৎসবগুলো রঙিন হয়ে ওঠে সব ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণে। দর্শনে ও আচারে পার্থক্য থাকলেও উৎসবমুখরতা এ পার্থক্য ঘুচিয়ে দিয়ে সব মানুষকে এক কাতারে শামিল করে। কিন্তু ধর্মীয় উগ্রবাদীদের হামলা এ উৎসবগুলোয়ও বিষণ্নতার কালিমা লেপে দিয়েছে। যে কোনো ধর্মীয় উৎসবের আগেই রাষ্ট্রকে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়। এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশে নয়। বিশ্বের বহু দেশেই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করার জন্য এ ধরনের ব্যবস্থা বর্তমানে দৃশ্যমান।
ধর্মের নামে যারা বর্বরোচিত ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে তারা বয়সে তরুণ। কেন তরুণরা এমন আত্মঘাতী কর্মে লিপ্ত হচ্ছে, তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী গবেষণা হচ্ছে। পারিবারিক বন্ধনের শৈথিল্য, হতাশা, দারিদ্র্য, প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষার অভাব, আনন্দময় শৈশবের অনুপস্থিতি বিভিন্ন কারণে তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে উগ্রবাদী তৎপরতায়। যে নেতিবাচক মতাদর্শ তাদের উগ্রবাদী হতে উদ্বুদ্ধ করছে, এর বিপরীত ইতিবাচক মতাদর্শের শক্তিশালী অবস্থানের অনুপস্থিতিও একটি বড় কারণ। তরুণদের মধ্যে ইতিবাচক জীবনবোধ তৈরি করাটাই এ সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে প্রধান করণীয়। এ দেশের শিক্ষার্থীরা মেধাবী ও প্রতিভাবান। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রির মধ্যে এ মেধা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়লে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হবে। পরীক্ষার পড়াশোনার পাশাপাশি যদি শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, ক্রীড়ার বর্ণিল জগতের সঙ্গে তাদের পরিচয় ঘটে, তবে তাদের হৃদয় মনুষ্যত্বের দীপ্তিতে ভাস্বর হবে। সুকুমারবৃত্তির অনুশীলন মানুষকে সৃষ্টিশীল ও মননশীল হতে উদ্বুদ্ধ করে। এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। এ দায়িত্ব আমরা কতটুকু পালন করছি?
ধর্মীয় ভেদাভেদের প্রাথমিক শিক্ষা শিশুরা পরিবার থেকে লাভ করে। এ শিক্ষায় পরধর্মকে সম্মান করার বার্তা অনেক ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মনের অজান্তে অনেক অভিভাবক শিশুমনে অন্য ধর্মকে অবজ্ঞার বীজ রোপণ করেন, যা পরবর্তী সময়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষে রূপান্তরিত হয়। পরোক্ষভাবে এ ভেদবুদ্ধিকে পরিপুষ্ট করে তোলে কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ প্রবণতা অত্যন্ত বিপজ্জনক। ধার্মিকতা ও ধর্মমোহের পার্থক্যকে স্পষ্ট করে তুলতে হবে শুরুতেই। ধর্মীয় সম্প্রীতির শিক্ষা যদি শৈশবে একজন শিক্ষার্থী না পায়, তবে তার মানসিক গড়ন একপেশে ও সাম্প্রদায়িক হতে বাধ্য। যে পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়া হয়, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’- এ চেতনাকে উচ্চকিত করে তোলা হয় সেই পরিবারে ও প্রতিষ্ঠানে ধর্মান্ধ উগ্রবাদীর জন্ম হয় না।
মানবপ্রীতি ও সামাজিক সম্প্রীতি গড়তে সংস্কৃতিচর্চার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ধর্মভিত্তিক দ্বিজাতিতত্ত্বের বিপরীতে ভাষাভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা ঘটেছিল। ভাষা আন্দোলনের পথ পেরিয়ে ষাটের দশকে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে বাঙালির সাংস্কৃতিক জাগরণ অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল। উগ্রবাদ বিস্তার লাভ করে ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে।ধর্মের অপব্যবহার আগেও ছিল। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময়ও ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ও তাদের এ দেশীয় দোসর মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়েছিল। তাদের এ অপতৎপরতা সফল হতে পারেনি আমাদের শক্তিশালী সাংস্কৃতিক চেতনার কারণে। সেই চেতনার মূলমন্ত্র ছিল অসাম্প্রদায়িকতা তথা ধর্মীয় সম্প্রীতি। ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার মুসলমান, আমরা সবাই বাঙালি’- সাড়ে সাত কোটি বাঙালি এ সত্যকে ধারণ করেই স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটিয়েছিল।
সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে রাষ্ট্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ধর্মীয় উগ্রবাদকে কত ভয়ংকর জায়গায় নিয়ে যেতে পারে, এর জ্বলন্ত উদাহরণ পাকিস্তান। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আমাদের ঋণ অন্তহীন। সবচেয়ে বড় ঋণ এই যে, পাকিস্তানের মতো একটি বর্বর রাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার অভিশাপ থেকে তারা আমাদের মুক্ত করেছেন। ধর্মান্ধতার ভিত্তিতে রচিত রাষ্ট্র পাকিস্তানকে প্রত্যাখ্যান করে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। সেই বাংলাদেশে ধর্মমোহে ও উগ্রবাদের বিস্তার কোনোভাবেই কাম্য নয়।
‘মালিনী’ নাটকে উগ্রবাদীদের মনস্তত্ত্ব নিপুণভাবে উপস্থাপন করেছেন রবীন্দ্রনাথ। ধর্মমোহে আচ্ছন্ন ক্ষেমঙ্করের উদ্দেশে সুপ্রিয় বলেছে- ‘ধর্মাধর্ম সত্যাসত্য/কে করে বিচার! আপন বিশ্বাসে মত্ত/করিয়াছে স্থির, শুধু দল বেঁধে সবে/সত্যের মীমাংসা হবে, শুধু উচ্চরবে?/ যুক্তি কিছু নহে?’ উগ্রবাদী এবং উগ্রবাদের পৃষ্ঠপোষক উভয়েই যুক্তিবিরোধী। যুক্তিবাদিতা ও পরমতসহিষ্ণুতাকে যদি সমাজ গ্রহণ করে, তবেই ধর্মীয় সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পাবে। সহিষ্ণুতাই সভ্যতার আত্মরক্ষার পথ। এছাড়া ধর্মমোহের আত্মঘাতী পরিণতি থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় নেই।
একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র যেখানে তার জনগণ তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ধর্ম অনুসরণ করতে পারে, কিন্তু দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ধর্মকে সমর্থন বা বিরোধিতা করে না। এটি এমন একটি পরিবেশ যেখানে মানুষ তাদের জাতি, ধর্ম এবং সংস্কৃতি নির্বিশেষে একসাথে বসবাস করতে পারে। ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হওয়ার অর্থ এই নয় যে একটি রাষ্ট্র সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ।খ্রিস্টান এবং কিছু অ-খ্রিস্টান ধর্ম ঐতিহাসিকভাবে বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলির সাথে ভালভাবে একত্রিত হয়েছে , যেমন প্রাচীন মিশরীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা একেশ্বরবাদী প্রান্তে প্রয়োগ করা হয়েছিল, অটোমান সাম্রাজ্যের সময় মুসলিম পণ্ডিতদের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এবং হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের অধীনে গণিত।
বিজ্ঞান এবং ধর্মের মধ্যে সম্পর্ককে সাধারণত একটি দ্বন্দ্ব হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, বিশেষ করে উৎপত্তির ইস্যুতে (সৃষ্টিবাদ বনাম বিবর্তন) । ঐতিহাসিক বাস্তবতা হল যে বিজ্ঞান এবং ধর্ম প্রায়ই একে অপরের পরিপূরক হয়েছে, এবং সম্পর্কযুক্ত।কেউ ধর্মে জন্মায় না, কিন্তু প্রত্যেকেই একটি ধর্মের জন্য জন্মগ্রহণ করে। কোন দুই ব্যক্তির একই ধর্ম নেই। এক ধর্ম সবার সাথে মানানসই হতে পারে না। ধর্ম খুব কম মানুষের কাছে একটি প্রয়োজনীয় জিনিস এবং মানবজাতির বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে এটি একটি বিলাসিতা। স্বামীজীর কথার তাৎপর্য আমাদের বুঝতে হবে, আজকের দিনে ভীষন প্রাসঙ্গিক এটা …..সবচেয়ে বড় ধর্ম হল নিজের স্বভাবের প্রতি সত্য থাকা …. একমাত্র নিজের প্রতি বিশ্বাস বদলাতে পারে আমাদের ভ্রান্ত জীবনদর্শন।
আরও পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন