সরকার নেপাল থেকে টমেটো আমদানি শুরু করেছে

উত্তরাপথঃ দেশজুড়ে টমেটোর দাম বৃদ্ধির মধ্যে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সংসদে ঘোষণা করেছেন যে সরকার দাম নিয়ন্ত্রনে নেপাল থেকে টমেটো আমদানি শুরু করেছে।দেশজুড়ে টমেটোর দাম বৃদ্ধির মধ্যে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্থি দিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।প্রসঙ্গত জুলাই মাসে টমেটো বাজারে প্রতি কেজি ২৫০ টাকা পর্যন্ত  বিক্রি হয়েছে।

এবার কেন্দ্র সরকার আমদানি নিষেধাজ্ঞাগুলি সরিয়ে নেপাল থেকে টমেটো আমদানি শুরু করেছে।নেপাল থেকে প্রথম প্রচুর টমেটো শুক্রবারের মধ্যেই বারাণসী, লখনউ এবং কানপুরে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।গত তিন মাসে পাইকারি বাজারে টমেটোর দাম ছিল ১৪০ টাকা।ভারতবর্ষে সবচেয়ে বেশী টমেটো উৎপাদনকারী রাজ্য হিসাবে পরিচিত কর্ণাটকের কৃষকদের মতে এই বছর টমেটোর দাম বৃদ্ধির কারণ হিসাবে খারাপ বৃষ্টিপাত,অতিরিক্ত তাপমাত্রা এবং ফসলে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব । যার ফলে টমেটোর চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বাজারে দাম বেড়েছে অনেকটা ।

জুন ও জুলাই মাসে টমেটো সহ বেশ কিছু খাদ্যশস্যের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে উল্লেখযোগ্য মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। সাধারণত আগস্ট মাস থেকে প্রতিবছর বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমতে থাকে, তবে এই বছর ফসলের দাম কমতে কমতে অক্টোবর হয়ে যাবে বলে ব্যবসায়ীরা মনে করছেন।  

অন্যদিকে নেপালের শিল্প, বাণিজ্য ও সরবরাহ মন্ত্রকের আধিকারিকরা ভারতের কাছে ১ মিলিয়ন টন ধান, ১০০,০০০ টন চাল এবং ৫০,০০০ টন চিনি টমেটোর বিনিময়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।অন্যদিকে ২০ জুলাই থেকে, ভারত সম্ভাব্য এল নিনোর আবহাওয়ার বিঘ্নের কারণে খাদ্যের মজুদ অক্ষুণ্ণ রাখতে নন-বাসমতি চালের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।এই প্রসঙ্গে নেপাল আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত সরকারকে আসন্ন উৎসবের মরসুমকে সামনে রেখে নেপালে শস্য ও চিনির চালান বন্ধ করতে বলেছে।

ভারত সরকারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ২০২১ – ২২ ভারতীয় অর্থবছরে, যা ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয় এবং ৩১ মার্চ শেষ হয়, নেপাল ভারত থেকে ১.৪ মিলিয়ন টন চাল , যারমধ্যে ১.৩৮ মিলিয়ন টন নন-বাসমতি এবং ১৯,০০০টন বাসমতি চাল আমদানি করেছে – যা সর্বোচ্চ আমদানি। মূল্যের দিক থেকে, চাল আমদানি হয়েছে $৪৭৩.৪৩ মিলিয়ন বা ৬০ বিলিয়ন টাকার বেশি। অন্যদিকে নেপালি ব্যবসায়ীরা বলছেন যে ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ করার পরপরই, খুচরা মূল্য প্রতি ২৫ কেজি ব্যাগে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে।

ভারত জুড়ে এই অসম বৃষ্টিপাতের প্রভাব পড়েছে আখ চাষেও।পুনে, মহারাষ্ট্রের যা চিনি উৎপাদনের কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত কম বৃষ্টিপাতের কারণে আখ চাষও ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজ্য সরকারের ডেটায় প্রকাশ  স্থানীয় বাঁধগুলিতে মাত্র ১৯% জল রেখে বাকি জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছে । জলের এই স্বল্পতা শুধু আখের বৃদ্ধিকেই প্রভাবিত করছে না,এটি চিনির উৎপাদনকেও  প্রভাবিত করছে

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


রাজা মহম্মদ ও সি সেল মিউজিয়াম

প্রিয়াঙ্কা দত্তঃ রাজা মহম্মদ, এমন একজন মানুষের নাম, যার ব্যাক্তিগত ইচ্ছার কাছে হেরে যায় সব বাধা। ইচ্ছার চেয়ে বলা ভালো নেশা। সামুদ্রিক প্রাণীদের খোল সংগ্রহের নেশা। যা তাঁকে ছোটবেলা থেকেই ছুটিয়ে নিয়ে বেরিয়েছে প্রায় তিরিশ বছর ধরে। আর সেই দীর্ঘ পথের শেষে , তিনি সম্পূর্ন ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন এশিয়ার বৃহত্তম ও পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাক্তিগত সংগ্রহশালা। তাঁর প্রতিষ্ঠিত সি সেল মিউজিয়ামটি বর্তমানে চেন্নাইয়ের মহাবলিপূরম মন্দিরের সন্নিকটে অবস্থিত একটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট স্পট। রাজা মহম্মদ ছোট্ট বেলা থেকেই  সমুদ্র তট থেকে সংগ্রহ করতেন বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর দেহাংশ। কুড্ডালোর থেকে রামেশ্বরম এর সমুদ্রতট, সেখান থেকে জাপান, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপিন্স প্রভৃতি দেশে গিয়েছেন ব্যাক্তিগত উদ্যোগে। সংগ্রহ করেছেন অসাধারণ সব সামুদ্রিক .....বিস্তারিত পড়ুন

আবার জেগে উঠবে চন্দ্রযান-৩-এর বিক্রম ল্যান্ডার,আশাবাদী ISRO

উত্তরাপথঃ চন্দ্রযান-৩-এর বিক্রম ল্যান্ডার বর্তমানে চাঁদে ঘুমিয়ে পড়েছে। অন্ধকার চাঁদে বিক্রম ল্যান্ডার দেখতে কেমন?  এটি জানতে চন্দ্রযান-২ অরবিটার পাঠানো হয়েছিল।চন্দ্রযান-২ অরবিটার বিক্রম ল্যান্ডারের একটি ছবি তোলেন।ISRO সেই ছবিটি প্রকাশ করেছে, যা রাতে চন্দ্রযান-3 ল্যান্ডার দেখায়।ISRO টুইট করে জানায় রোভার প্রজ্ঞানের পরে, এখন ল্যান্ডার বিক্রমও ঘুমিয়ে পড়েছে। ISRO প্রধান এস সোমনাথ এর আগে বলেছিলেন যে চন্দ্র মিশনের রোভার এবং ল্যান্ডার চান্দ্র রাতে নিষ্ক্রিয় করা হবে।  তারা ১৪ দিন পরে আবার সক্রিয় হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে যখন সেখানে ভোর হবে। 23 আগস্ট চাঁদের দক্ষিণ পৃষ্ঠে অবতরণের পরে, ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান উভয় ডিভাইস তাদের কাজ খুব ভাল .....বিস্তারিত পড়ুন

ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বাড়ছে বাংলাদেশে ইলিশের দাম, প্রভাব রাজ্যেও

উত্তরাপথঃ বাংলাদেশ ও ইলিশ এই দুটি নাম একে অপরের পরিপূরক মনে হলেও বাস্তব কিন্তু বলছে অন্য কথা। সূত্র মাধ্যমে পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে  প্রকৃতির অপার দান হলেও শিকার থেকে শুরু করে বাজারজাত হওয়া পর্যন্ত ব্যয় বৃদ্ধির কারণেই বাড়ছে বাংলাদেশে ইলিশের দাম। এর সঙ্গে মধ্যস্বত্বভোগীদের লাভের অঙ্ক যোগ হয়ে তা চলে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।পরিস্থিতি এমন যে গরিব তো দূর থাক মধ্যবিত্তের পাতেও এখন আর জুটছে না ইলিশ। বুধবার বরিশালের পাইকারি বাজারে এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হয় ৬০ হাজার টাকা মন দরে। ৪২ কেজিতে মন হিসাবে প্রতি কেজির দাম পড়ে প্রায় সাড়ে ১৪শ টাকা। খুচরা বাজারে গিয়ে যা বিক্রি হয় ১৬ থেকে ১৮শ টাকা। যে কারণে জাতীয় এই মাছ এখন শুধু বিত্তশালীদের খাদ্যে পরিণত হয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

লোকসংস্কৃতির আলোকে মালদার শতাব্দী প্রাচীন গম্ভীরা  

মৈত্রেয়ী চৌধুরীঃ পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের একটি জেলা মালদা। আমের জন্য এই জেলাটি পরিচিতি লাভ করলেও এই জেলা আর ও একটি কারণে বিখ্যাত, তা হল গম্ভীরা । মালদার নিজস্ব লোকসংস্কৃতি।গম্ভীরা শব্দটি প্রকোষ্ট, গৃহ বা মন্দির অর্থের সঙ্গে আভিধানিক মিল থাকলেও এই অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত আকাশের নিচে বা কোথাও চাঁদোয়া বা ত্রিপল  দিয়ে ঢেকে অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলেন স্বয়ং দেবাদিদেব। এই উৎসবের তিনি 'নানা' নামে পরিচিত।একজন শিবের সাজে থাকেন, আর দেবাদিদেবের চেলার মতো কিছু সংখ্যক সেই নানার ভক্ত হয়ে খোল, করতাল হাতে উনার সঙ্গী হন। বাস্তব জগতের এবং পারিপার্শ্বিক যা মা সমস্যা থাকে তা  চেলার নানার কাছে অভিযোগ জানান, যেন নানা সেই অভিযোগ শুনে তার সমাধান করেন।শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই ভিড় করে জমায়েত .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top