প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অযোধ্যা পাহাড়

উত্তরাপথ

ছবি: লোয়ার ডেম

একদিকে কাজের চাপ অন্যদিকে প্রচণ্ড গরম, সব সামলে ঘুরতে যাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়ে অনেকের কাছে। তবে এবার যেন মেঘ না চাইতেই জল, রাজ্যসরকারের হঠাৎ ঘোষণা স্কুল বন্ধ থাকবে প্রায় এক সপ্তাহ। তাই আর সময় নষ্ট না করে বন্ধুদের ফোন করে সবাই মিলে এক সাথে বেরিয়ে পড়লুম কলকাতা থেকে পুরুলিয়ার উদ্দেশ্যে। আমাদের প্রথম গন্তব্য হাওড়া ষ্টেশন। সেখানে রাতের ট্রেনে চেপে পরদিন সকালে আমারা সবাই পৌঁছে গেলাম বরাভুম ষ্টেশনে। সেখান থেকে গাড়ি চেপে শাল ,পলাশ  ও সেগুন ঘেরা রাস্তা দিয়ে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে আমরা পৌঁছে গেলুম অযোধ্যা পাহাড়ে অবস্থিত একটি রিসোর্টে। সেখানে খানিক ফ্রেশ হয়ে আবার গাডি নিয়ে বেরিয়ে পড়লুম পাহাড়ের  উদ্দেশ্যে।

প্রথমে আমরা গেলাম সুবর্ণরেখা নদীর উপর তৈরী হওয়া লোয়ার ড্যাম দেখতে। এই ড্যামে যাওয়ার রাস্তাতেই পড়ে মার্বেল লেক। চারধারে উঁচু পাহাড় তার ঠিক মাঝখানে টলটলে জলের লেক এক কথায় অনবদ্য ।

এরপর আমরা গেলাম বামনী জলপ্রপাতটি দেখতে। এই জল্প্রপাতের দৃশ্য সত্যই মনোমুগ্ধকর এর স্ফটিক স্বচ্ছ শীতল জল এবং জল্প্রপাতের চার ধারের ট্র্যাকিং এরিয়া এক কথায় অনবদ্য । এটি অযোধ্যা পাহাড়ের অন্যতম সেরা আকর্ষণ।জলপ্রপাতের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমরা প্রায় ১০০০ কংক্রিটের  সিঁড়ি দিয়ে পাহাড়ের নীচে গেলাম । এই সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় চারিধারে প্রকৃতির অপরূপ সুন্দর দৃশ্য। এছাড়াও এটি একটি পিকনিক এবং  জঙ্গল ট্রেকিংয়ের জন্য আদর্শ স্থান । এর নির্মল এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আপনাকে এক অন্য জগতে পৌঁছে দেবে । স্থানীয় লোকেদের মতে বামনি জলপ্রপাত দেখার সর্বোত্তম সময় হল বর্ষা ঋতুতে, যা জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, তখন  জলপ্রপাতটিতে জল অনেক বেশী  প্রবাহ হয় এবং আশেপাশের পরিবেশও আরও সবুজ থাকে। তবে ভারী  বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যার সম্ভাবনার কারণে বর্ষা মৌসুমে জলপ্রপাতটি  পরিদর্শন করার সময় দর্শকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয় । এরপর আমাদের গাড়ির মৃদু সর্পিল রাস্তা দিয়ে ১৮ কিমি উপরে উঠে এল তুরগা জলপ্রপাত, মুরগুমা বাঁধ এবং আপার ড্যাম হয়ে জঙ্গল এর রাস্তা হয়ে রিসোর্টে ফিরে এল। সারাদিনের এক দারুন  অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা পরদিন কলকাতা  ফিরে এলাম ।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে

উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি।  ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে।  আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি।  এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।  সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে।  এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top