

বাংলাদেশে আন্দোলনের এই ছবি এক্স হ্যান্ডেল থেকে নেওয়া
জীবনকুমার সরকার: আগস্ট মাসে বাংলাদেশের কোটা আন্দোলনের সেই বীভৎস রূপ দেখে আমরা তখনই পরিষ্কার অনুমান করেছিলাম, এই আন্দোলন বাহ্যত কোটা সংস্কারের আন্দোলন হলেও এর অভ্যন্তরীণ রূপরেখা কিন্তু ভালো হবে না। মুক্তচিন্তার মানুষ হওয়া সত্ত্বেও সে–সময় অনেকেই আমাদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেননি। আশাকরি এখন তারা ভালো করেই বুঝে গেছেন যে, বাংলাদেশের ইতিহাস ও রাজনীতি তারা কমই বোঝেন। আগস্ট মাসের কোটা আন্দোলনের মধ্যে স্পটভাবে নেপথ্যে ছিলো ইসলামী মৌলবাদী নেতাদের অন্তর্ভুক্তি। আমাদের এখানে অনেকেই মনে করলেন এটা স্বৈরাচারিতার বিপক্ষে প্রগতি ও স্বাধীনতার পক্ষে গণ–অভ্যুত্থান। এইভাবে দেখাটা মারাত্মক ভুল ছিলো। সময় এসে সেটা বুঝিয়ে দিলো।
শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের যে কোনোকিছু ভুল ছিলো না, তা আমরা বলছি না। আওয়ামী লীগ সরকারের দুটো চরম দিক ছিলো। একটি দিক ছিলো কঠোরভাবে বিরোধীদের দমন করার দিক। অন্যটি হলো, উগ্র ইসলামী শক্তির সঙ্গে নানাভাবে আপস করে দমিয়ে রাখার দিক। সব মিলিয়ে তাঁর সময়েও সে–দেশের সংখ্যালঘুরা যে খুব ভালো ছিলো, তা কিন্তু নয়। ফলে হাসিনার আমলেও সংখ্যালঘুরা বিপন্নতা সবসময়ই বোধ করেছেন। আসলে আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা সারা বছরই একটা উদ্বেগের মধ্যে বাস করে, যা হাসিনার সময়ও পরিলক্ষিত হয়। তবু একথা স্বীকার করতেই হবে, হাসিনা বাংলাদেশের ইসলামী উগ্রপন্থীদের একটা বেড়াজালে কঠোর হাতে আটকে রেখেছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সেইসব পাকিস্তানপন্থী মৌলবাদী শক্তির সামনে আজ আর কোনো বেড়া নেই। সীমাহীন উল্লাসে তারা আজ বাংলাদেশের রাস্তায়। বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার সে রাস্তাকে আরও সুগম করে দিচ্ছে। তাই নব্য ’রাজনৈতিক ইসলাম’ জেগে উঠেছে এই সুযোগে যাতে, একটি আরব ভূখণ্ডের ন্যায় বাংলাদেশ তৈরি করা যায়। যে ভূখণ্ডে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্য থাকবে না। থাকবে না লালন–রবীন্দ্র–নজরুল– রোকেয়ার উপাসক। এবং গণতন্ত্র, যুক্তিবাদ,দীপায়ন, মুক্তচিন্তা, স্বাধীনতার মতো নান্দনিক জিনিসগুলো সব ধুয়েমুছে যাবে।
এখন বাংলাদেশে মানুষের ওপর যে পীড়ন হচ্ছে, তা কেবল হিন্দুদের ওপর হচ্ছে না। বাঙালির অবিভাজ্য জাতিসত্তা বিরোধী উগ্র ইসলামী মৌলবাদী শক্তি হিন্দু ছাড়াও আক্রমণ নির্বিচারে আক্রমণ করছে বৌদ্ধ–খ্রিস্টান–সুফি ও ধর্ম নিরপেক্ষ মুসলমানদেরও। আমরা জানি, বাংলাদেশের সব মুসলমান সমান নয়। এখনও উদার সংস্কৃতিমনা ও মুক্তচিন্তার মানুষ আছেন। সব মানুষ ধর্মের অন্ধকারে নিঃশেষ হয়ে যায়নি, কিন্তু সাম্প্রতিক উগ্র ইসলামপন্থীদের বেপরোয়া চাপে তারাও আজ সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে বাংলাদেশে। ধর্মের বিষাক্ত কোলাহলে তাঁদের কথা আর কে শোনে? ঠিক যেনো আমাদের দেশের উত্তর ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদের মতো।
রাজনৈতিক ইসলাম আর রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদ — দুটোই বড়ো ভয়ঙ্কর। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলাম মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আর রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদ এপারে সাম্প্রদায়িকতা উসকে দিয়ে আগামীর ফসল তুলতে চাইছে। যে কোনো একদিকে একটা মাথাচাড়া দিলে অন্যদিকে আরেকটা মাথাচাড়া দেয়। আমরা যারা ধর্মের ধার ধারি না। ভয় করি ভগবান বা আল্লার বিধানকে। মাথা নোয়াই না ধর্মান্ধদের কাছে, ধর্ম বলতে শুধু মানুষ বুঝি; তারা আজ এপারে ওপারে — দুপারেই অতি সংখ্যালঘু। খেয়াল করুন, এই অতি সংখ্যালঘুরা কোথাও সাধারণ মানুষের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায় না। বরং, পরকাললোভী ধার্মিকরা আমাদের ভারত উপমহাদেশ ছিঁড়ে ছিঁড়ে টুকরো করে খেয়েছে এবং আগামীতে আরও টুকরো করে খাবার অভিলাষে ধর্মান্ধতাকে কাজে লাগাচ্ছে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুত্ববাদ আর উগ্র ইসলামী জেহাদীবাদ। প্রতিনিয়ত সোস্যাল মিডিয়ায় এই মুহূর্তে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু নেতা আর ইসলামী মৌলবাদী নেতাদের বক্তৃতা শুনলে কি মনে হয় এরা সত্যিকারের ধার্মিক? একবারের জন্যও মনে হয় না ধর্মের জন্য এসব বলছে। এদের শেষ কথা রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, ধর্ম নিছক হাতিয়ার। কারণ, মানুষকে খ্যাপানোর সবচেয়ে ভালো হাতিয়ার হলো ধর্ম। রাজনীতিতে অত্যন্ত সস্তার পুষ্টিকর খাবার হচ্ছে ধর্ম আর ধর্ম থেকে সৃষ্ট যাবতীয় কুসংস্কার।
দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সাতচল্লিশের দেশভাগ যে কত বড়ো মিথ্যে আকাঙ্ক্ষা ছিলো, তা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনায় আবার প্রমাণ হলো। উত্তর ভারতের ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু নেতারা দিল্লির মসনদে বসে রাজক্ষমতা বংশ পরম্পরায় আজীবন ভোগ করবেন বলে বিপ্লবী বাংলাকে ভেঙে দিলেন। যাতে ঐক্যবদ্ধ বাঙালি দিল্লির মসনদে না আসতে পারে। তাই বৃহৎ বাংলাকে ভেঙে তছনছ করা হলো। স্বাধীন ভারত আর পাকিস্তানে যারা হয়ে গেলো সংখ্যালঘু, তাদের ভবিষৎ কী হবে, তা একবারও ভেবে দেখেননি দেশভাগের খল নায়কেরা। ফলে আজও দেশভাগের বিষময় ফল ভোগ করতে হচ্ছে দুই পারের সংখ্যালঘুদের। লাভবান হচ্ছে ধর্মের করবারীরা। রাষ্ট্র ধর্মগুলোকে ইন্ধন দেয় বলে ধর্ম তার যাবতীয় কুসংস্কার নিয়ে টিকে আছে। আজ এই চিত্র ভারত,পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে একই ভাবে প্রবল বহমান। সুযোগ পেলেই ’রাজনৈতিক ধর্ম’ ধর্মান্ধদের সঙ্গে নিয়ে সব শক্তি দিয়ে তীব্র ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেশ–কাল–সময় দখলের কাজে। বর্তমান বাংলাদেশে তাই হচ্ছে।
বাংলাদেশের এই সাম্প্রদায়িক উত্থানের শেষ কোথায়? এটা এক কথায় বলা মুশকিল। এটা বুঝতে হলে ভারতভাগের ভাগের নামে বাংলা ভাগের গভীর ষড়যন্ত্র এবং ১৯৭৫ সালে মুজিব হত্যাকারীদের গভীর ষড়যন্ত্র। একটার পেছনে ছিলো ব্রাহ্মণ্যবাদী ষড়যন্ত্র আর একটার পেছনে ছিলো উগ্র ইসলামী মৌলবাদী শক্তি। আজ এক দশক ধরে ওপরে ভারতের কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে উগ্র ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু সরকার, যারা স্বধর্মের মধ্যে বর্ণঘৃণা, উঁচু–নিচু ভেদাভেদ বজায় রেখে ব্রাত্য শূদ্রদের মুসলমান বিদ্বেষী হতে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। ভারতের বহুত্ববাদকে নস্যাৎ করা হচ্ছে। এই কৌশল দেখতে দেখতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের ওৎ পেতে থাকা বাংলাভাষা ও সংস্কৃতি বিরোধী, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী সাম্প্রদায়িক উগ্র ইসলামী মৌলবাদী জঙ্গীরা জমি তৈরির ফন্দি আঁটতে শুরু করে। তারপর সময় বুঝে ভারত বিরোধী জিগির তুলে হাসিনাকে উৎখাত করতে তারা সফল হয় । এখন প্রয়োজন অনুসারে তারা শুরু করেছে সংখ্যালঘু নিপীড়ন। তাদের শেষ লক্ষ্য একটি ভারত বিরোধী তালিবানী রাষ্ট্র তৈরি করা। এইভাবে বাঙালির গর্বের দেশ, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সোনালি চেতনা, শত শত বাঙালি শহিদদের আত্মবলিদান আর হাজার হাজার বাঙালির রক্তে স্নাত উজ্জ্বল বাংলাদেশ নষ্টদের অধিকারে চলে যাচ্ছে।
গত কয়েক মাস যাবৎ বৌদ্ধ আর সমতলের হিন্দুরা নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। কোনো কোনো জায়গায় চাকরি থেকে বলপূর্বক সংখ্যালঘুদের চাকরি থেকে বরখাস্ত পর্যন্ত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে সারা বাংলাদেশ জুড়ে চলছে দোকানপাট লুট করার হিড়িক। মন্দির ধ্বংস করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে শোনা যাচ্ছে — “ যাদের হাতে লাল তাগা সাদা শাখা;/ তাদের ধরে ভারতে পাঠা।” এটাও শোনা যাচ্ছে, রাস্তায় যখন তখন সংখ্যালঘুদের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে চেক করা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে ভারতের কোন্ কোন্ নাগরিকের কথা হচ্ছে? ফলে বাঙালির এই দুঃসময়ে দুই পারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে কথা বলাও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছুটা। সংশয় দানা বেঁধেছে এই ভেবে যে, মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে কখন কার বিপদ কীভাবে আসে কে বলতে পারে। ইসলামী মৌলবাদীদের আক্রমণের মাত্রা একেবারে সামনে চলে এসেছে। বাঙালির অবিভাজ্য জাতিসত্তার কথা তারা আর মাথায় আনতে চাইছে না। তাই বাংলাদেশ থেকে ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’র মতো জাতীয় সঙ্গীত বাদ দেবার হুমকি দিচ্ছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা ভেঙে ফেলছে পাঁচশো আগের সুফি মাজারগুলো। কণ্ঠশিল্পী রাহুল আনন্দের এক হাজারের মতো বাদ্যযন্ত্র ভেঙে ফেলা হলো।
ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ভারত বিরোধিতার মাত্রা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এই বিদ্বেষের অতি সাম্প্রতিক শিকার হলেন এই সময়ের অনন্য অভিনেতা এবং গায়ক চঞ্চল চৌধুরী। ভারতের সিনেমায় অভিনয় করার জন্য তিনি উগ্র ইসলামী মৌলবাদ আশ্রিত ইউনুস সরকারের রোষে পড়লেন। তাই নিউইয়র্ক যাবার পথে বিএনপি’র লোকজন আর পুলিশ তাকে মিলেমিশে ফ্লাইট থেকে নামিয়ে নিয়ে এসে এখন গৃহবন্দি করে রেখেছে। তাহলে ভাবুন, ধর্মান্ধ শক্তি কোথায় নিয়ে চলে যাচ্ছে বাংলাদেশকে! একাত্তরের পরে এমন বাংলাদেশ কেউ দেখেননি। এমনকি এপারে যখন হিন্দু মৌলবাদীরা বাবরি মসজিদ ভেঙে দেয় তখনও ভাবা যায়নি, এসব হতে পারে। এবং তখন কোনোকিছু হয়ওনি। আজকে হঠাৎ ভারত বিরোধিতায় তারা রাস্তায় নেমে উল্লাস করছে। এমনও শোনা যাচ্ছে, পাকিস্তান নাকি তাদের বন্ধু দেশ। শত্রুদেশ এখন বন্ধুদেশের মর্যাদা পেতে চলেছে।
বাংলাদেশর এই ডামাডোল পরিস্থিতিকে সর্বশক্তি দিয়ে এপারে কাজে লাগাতে ময়দানে নেমে পড়েছে হিন্দু মৌলবাদী শক্তি। আপাতভাবে দেখে মনে হয়, এদেশের হিন্দুত্ববাদীরা বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের মারাত্মক কষ্ট পাচ্ছে। হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যাচ্ছে তাদের। এ আসলে কুম্ভিরাশ্র। না বুঝে এই ফাঁদে পা গলানোও ভয়ংকর বিপদ। প্রকৃত বিচারে ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ধর্মান্ধ সরকার বরং উদ্বাস্তু হিন্দু বিরোধী, বাঙালি বিরোধী। ইতিমধ্যে সকলেই জানেন, ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন তৈরি করে তার ২(১)বি ধারা ও ৩(সি) ধারা অনুসারে বাঙালি উদ্বাস্তুদের বিপদ বাড়িয়ে তুলেছে। তারাই আবার ওপারের হিন্দুদের জন্য মায়াকান্না কাঁদছে। দুই পারের ধর্মীয় মৌলবাদী শক্তি মিলেমিশে পরিবেশ উত্তাল করে তুলেছে। এ সময় বারবার করে মনে পড়ছে রবীন্দ্রনাথের ’রবিবার’ গল্পের নায়ক অভিকের কথা, যার মুখ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ গল্পের নায়িকাকে বলাচ্ছেন —”দেখো, তুমি প্রচণ্ড ন্যাশনালিস্ট। ভারতবর্ষে ঐক্য স্থাপনের স্বপ্ন দেখো। কিন্তু যে দেশে দিনরাত্রি ধর্ম নিয়ে খুনোখুনি সে দেশে সব ধর্মকে মেলাবার পুণ্যব্রত আমার মতো নাস্তিকেরই। আমিই ভারতবর্ষের ত্রাণকর্তা।” পক্ষান্তরে যে বাংলাদেশ নজরুলকে শ্রদ্ধা সহকারে তুলে নিয়ে সযত্নে রেখে জাতীয় কবির মর্যাদা দিলো, সেই বাংলাদেশও নজরুলের মতো কবি– মনীষীর কথা শুনলো না — “ মসজিদ আর মন্দির ঐ শয়তানদের মন্ত্রণাগার” ( পথের দিশা)। রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের মতো দুই মহীরুহের কথা আমরা আজও কর্ণপাত করছি না। ধর্মের মাদকতায় নষ্ট করছি দেশের মহান ঐতিহ্য ও গণতান্ত্রিক রূপ।
সুতরাং, আর দেরি না করে দু’পারের মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে মুক্তচিন্তার মানুষকে নাস্তিক্যবাদ, গণতন্ত্র, যুক্তিবাদ ও অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতি চর্চাকে সঙ্গী করে পথে নামা অত্যন্ত জরুরি। নজরুলের কণ্ঠে আওয়াজ উঠুক — “ হিন্দু না ওরা মুসলিম? ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?/ কান্ডারী! বলো ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র।”( কান্ডারী হুঁশিয়ার) ধর্ম বিযুক্ত মুক্তচিন্তার সকল মানুষ বাঙালির অবিভাজ্য জাতিসত্তা রক্ষা করতে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে জোট বাঁধুন। কোনো দিকের ধর্মান্ধদের আর বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় নয়। বাঙালি জাতির সামনে ভয়াবহ দুর্দিন। তাই ধর্ম কারার প্রাচীরে বজ্র হানাই আমাদের কাজ হোক।
আরও পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
Fried rice syndrome: আগের দিনের রান্না করা ভাত খেলে হতে পারে এই বিশেষ অসুখটি
উত্তরাপথঃ আপনার কি বাসী ভাত বা পান্তা খাওয়ার অভ্যেস আছে? সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম (Fried rice syndrome) নিয়ে আমরা প্রায়ই অবশিষ্ট খাবার গরম করে আবার খাই। কিন্তু জানেন কি এই অভ্যাস আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। অনেক সময় পর আগের রান্না করা ভাত খাওয়ার ফলে পেট সংক্রান্ত সমস্যা হয়। কেউ কেউ মনে করেন যে খাবার পুনরায় গরম করলে এতে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, কিন্তু তা নয়। যে খাবারেই স্টার্চ থাকে না কেন, এতে উপস্থিত টক্সিন তাপ প্রতিরোধী। অর্থাৎ খাবার গরম করার পরও ব্যাকটেরিয়া নষ্ট হয় না। ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম নামে এই সমস্যা সম্পর্কিত একটি অবস্থা রয়েছে। আজ আমরা এই ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম অবস্থার লক্ষণ, কারণ এবং প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। ভাত রান্না করার পর, যখন অবশিষ্ট ভাত কয়েক ঘন্টা বা সারারাত ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয় এবং তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে শুরু করে, তখন এই অবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ফ্রাইড রাইস সিনড্রোম। .....বিস্তারিত পড়ুন
PAN-Aadhar link: কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে নিষ্ক্রিয় করেছে
উত্তরাপথ : আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link)করার সময়সীমা শেষ হওয়ার পরে কেন্দ্রীয় সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ড নিষ্ক্রিয় করেছে৷ আপনি যদি এখনও প্যান কার্ডের সাথে আধার কার্ড লিঙ্ক না করে থাকেন, তাহলে আপনি সরকারের এই কঠোর পদক্ষেপের আওতায় এসেছেন। আপনি যদি আপনার আধার কার্ডকে প্যানের সাথে লিঙ্ক করতে চান তবে আপনি জরিমানা দিয়ে এটি সক্রিয় করতে পারেন। কেন্দ্র সরকার ১১.৫ কোটি প্যান কার্ডকে আধারের সাথে লিঙ্ক না করার কারণে নিষ্ক্রিয় করেছে। একটি আরটিআই-এর জবাবে, সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস জানিয়েছে যে আধার কার্ডের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক (PAN-Aadhar link) করার সময়সীমা ৩০ জুন শেষ হয়েছে। যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড লিঙ্ক করেননি তাদের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশে ৭০ কোটি প্যান কার্ড বর্তমানে ভারতে প্যান কার্ডের সংখ্যা ৭০.২ কোটিতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৭.২৫ কোটি মানুষ আধারের সাথে প্যান কার্ড লিঙ্ক করেছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন