বিজ্ঞান বলছে ,পুরুষ ও মহিলাদের সাফল্য অর্জনের পথ ভিন্ন কিন্তু কিভাবে

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক গবেষণায় পুরুষ এবং মহিলারা কীভাবে সাফল্য অর্জন করেন তার মধ্যে মূল পার্থক্য তুলে ধরা হয়েছে। পুরুষরা প্রায়শই তাদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য বেশি আবেগ প্রবন হয়, অন্যদিকে মহিলাদের মধ্যে নিজের লক্ষ্য অর্জন সম্পর্কে এক দৃঢ় প্রবণতা দেখা যায়। বস্তুত আমরা যা চাই তা অর্জনের জন্য আমাদের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করার পেছনে এমন বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। গবেষকরা আবেগ, আগ্রহ এবং “গতির” ধারণাটি অন্বেষণ করেছেন, যা কোনও ।

“এই প্রথম গবেষণা যেখানে এই বিষয়গুলি একসাথে দেখা হয়েছে,” নরওয়েজিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (NTNU) এর মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক হারমুন্ডুর সিগমুন্ডসন বলেছেন।

গবেষণা থেকে মূল ফলাফল

গবেষণায় পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পাওয়া গেছে, যা আমাদের দেখায় যে সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে প্রতিটি লিঙ্গের অনন্য ক্ষমতা রয়েছে।সিগমুন্ডসন এবং তার সহকর্মী, জোনাস এস.আর. লেভারসেন, ৫২৯ জন অংশগ্রহণকারীর উপর সমীক্ষা করেছেন। যাদের মধ্যে ৩২৩ জন মহিলা এবং ২০৪ জন পুরুষ, এবং তাদের গড় বয়স ২৮ বছর।সমীক্ষায় গবেষকরা একটি আকর্ষণীয় যোগসূত্র আবিষ্কার করেছেন: ইচ্ছাশক্তি এবং দ্রুত গতির মধ্যে একটি শক্তিশালী সংযোগ রয়েছে।

“এটা আশ্চর্যজনক মনে হতে পারে যে পুরুষরা প্রায়শই কোনও কাজ অত্যন্ত দ্রুত করেন অন্যদিকে মহিলাদের মধ্যে কোনও কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সাধারণত বেশি ইচ্ছাশক্তি থাকে,” সিগমুন্ডসন ব্যাখ্যা করেন। “তবে, এগুলি কেবল গড়পড়তা, এবং অনেক ব্যক্তির উভয় গুণই থাকে, লিঙ্গ নির্বিশেষে।”

‘’অধিক ইচ্ছাশক্তি অনেক্ষেত্রে কাজের গতি বাড়াতে সাহায্য করে,আবার অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত কাজ সম্পন্ন হওয়ার  অভিজ্ঞতাও ইচ্ছাশক্তিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে,” সিগমুন্ডসন আরও যোগ করেন।

যদিও আবেগগুলি কাজের গতি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তবে এগুলি ইচ্ছাশক্তির মতো তাৎপর্যপূর্ণ নয়।

“আবেগের চেয়ে ইচ্ছাশক্তি কাজের গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ বলে মনে হয়,” তিনি উল্লেখ করেন।

গবেষণাটি আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা এবং সময় বিনিয়োগের গুরুত্বের উপর জোর দেয়। এটি এমন অভ্যাস গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উপরও আলোকপাত করে যা স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করে।

“এই পদ্ধতিটি দ্রুত কোনও কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জনের উপর জোড় দেয়, যার ফলস্বরূপ এটি আমাদের লক্ষ্য অর্জনকে সহজ করে তোলে,” লেভারসেন বলেন।

সামগ্রিকভাবে, এই ফলাফলগুলি আমাদের আবেগ, স্থিতিস্থাপকতা এবং কাজের গতি কীভাবে আমাদের জীবন, অনুভূতি, শেখা এবং সাফল্যকে প্রভাবিত করে সে সম্পর্কে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?

উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন  দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI  এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে।   বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না।  নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা  ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী?  আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত?  পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না?  এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top