

মৈত্রেয়ী চৌধুরী (আগের সংখ্যার পরবর্তী অংশ)
মৃত্যুর অধিপতি যমরাজ সানন্দে রাজি হয়ে যান যে , আজ থেকে নচিকেতা অগ্নিবিদ্যা নামে ই এই অগ্নিবিদ্যা স্বর্গ লোকে ও মর্ত্যলোকে প্রচলিত থাকবে।এরপর পালা আসে তৃতীয় বরের প্রসঙ্গ।
যমরাজ নচিকেতা কে বলেন, বালক তুমি তৃতীয় বর কি নেব ? নচিকেতা জানান, হে প্রভূ মৃত্যুর পর আত্মার কি হয়? কেউ বলেন আত্মার অস্তিত্ব থাকে, কেউ বলেন থাকে না। আমি আপনার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাই।
নচিকেতার এই প্রশ্নে যমরাজ বিব্রত হন, তিনি বালককে ইহজগতের যত সুখ রয়েছে, প্রত্যেকটি এক এক করে দিতে চান। নচিকেতা জানান ,প্রভূ এই সবকিছু ই তো ক্ষণস্থায়ী, আমি এইসব কিছু ই চাই না। শুধু মাত্র মৃত্যুর অমোঘ সত্য কি রয়েছে সেই প্রসঙ্গে স্বয়ং আপনার থেকেই চিরস্থায়ী জ্ঞান লাভে আগ্রহী।
অবশেষে যমরাজ বলেন, মৃত্যু তার হয় যার জন্ম আছে, আত্মা জন্ম- মৃত্যু রহিত ,অপরিবর্তনীয় সদা বিরাজমান। দেহের নাশ হয়, কিন্তু আত্মা অবিনাশী।
হত্যাকারী যদি কাউকে হত্যা করবে বলে মনে করে এবং হত ব্যক্তি যদি নিজের মৃত্যুর ভয়ে অতঙ্কিত হন তবে বলতে হয় উভয়েই আত্মার স্বরূপ জানেন না। এই মৃত্যু নিছকই দেহের মৃত্যু।
আত্মা অতি সুক্ষ্ম। যে ব্যক্তি ইন্দ্রিয় সুখভোগে মগ্ন, আত্মা নিজেকে সেইসব মানুষের কাছ থেকে আড়াল করে রাখে, আবার যে ব্যক্তির মন শান্ত, কেবলমাত্র সেইসব ব্যক্তই আত্মার স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারে। চঞ্চল মন তরঙ্গায়িত হ্রদের মতো, হ্রদের জলে তরঙ্গ থাকলে যেমন তার তলের নাগাল পাওয়া সম্ভব নয়, আবার তরঙ্গহীন হ্রদের শান্ত জলে একটি মুদ্রা পড়লে স্পষ্ট ই তা দেখা যায়, আত্মার বিষয়টি ও অনেকটা তাই।
আত্মা নিরাকার হয়েও সকার, ইহ জগতের সব অনিত্য বস্তুর মধ্যে একমাত্র আত্মা ই নিত্য। যে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি এর স্বরূপ ও নিজের সাথে একাত্মতা অনুভব করতে পারেন একমাত্র সে ব্যক্ত শোক দুঃখ অতিক্রম করতে পারেন।
আত্মার স্বরূপ কে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে।জীবাত্মা ও পরমাত্মা। জীবাত্মা রূপে আত্মা নিজের ভূমিকা পালন করেন। তিনি কর্ম করেন আর সেই কারণে তিনি কর্মফল ও ভোগ করেন।আর পরমাত্মা আছেন বলেই জীবাত্মার পক্ষে কর্ম করা সম্ভব হয়। জীবাত্মা ও পরমাত্মা আলো ছায়ার মতো অবস্থান করেন, তবে পরমাত্মা কোন কর্ম করেন না।
জীবাত্মা কে রথের সারথি বলা হয়। দেহ, মন, বুদ্ধি র সঙ্গে সম্পর্ক বোঝাতে এই উপমা। পরমাত্মা বলতে শরীর, যা রথ।সারথী যদি সুশিক্ষিত হন তবেই রথে থাকে ইন্দ্রিয় সংযম ।তাতে আত্মজ্ঞান লাভ করা সম্ভব হয়।
অপরপক্ষে যিনি উচিত অনুচিতের বিচার করে কাজ করতে পারেন না, তাঁর বুদ্ধি অপরিণত, মনকেও সংযত করতে তিনি ব্যর্থ। তিনি তাঁর নিজের প্রভু নন, মনের ক্রীতদাস।ফলে তিনি এমন সব বস্তুর দিকে ছোটেন যা আধ্যাত্মিক উন্নতির পক্ষে ক্ষতিকর। ইন্দ্রিয়সুখের বাসনা তাঁকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করেছে। অতএব জন্মমৃত্যুর চক্রে বদ্ধ হওয়ায় তার নিয়তি।
আত্মতত্ত্ব জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তির আত্মা জন্মমৃত্যু রহিত হয়ে ব্রহ্মলোকে অবস্থান করেন আর ইন্দ্রিয় সুখ ভোগে তৃপ্ত আত্মা বারবার দেহের গুহায় অবস্থান করে।পৌরাণিক গল্প: দর্শন মাত্রই উপেক্ষা করা উচিত নয় ………
আরও পড়ুন
১ কোটি টাকার মানহানির মামলা প্রাক্তন CJI রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে
উত্তরাপথ: গুয়াহাটির একটি স্থানীয় আদালতে আসাম পাবলিক ওয়ার্কসের (এপিডব্লিউ) সভাপতি অভিজিৎ শর্মার রাজ্যসভার সাংসদ এবং ভারতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে ১কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছে। অভিজিৎ শর্মার অভিযোগ রঞ্জন গগৈ তার আত্মজীবনী জাস্টিস ফর এ জাজে তার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর এবং মানহানিকর বিবৃতি প্রকাশ করেছে । তাই তিনি প্রকাশক গগৈ এবং রুপা পাবলিকেশন্সের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন এবং কোনও বই প্রকাশ, বিতরণ বা বিক্রি করা থেকে বিরত রাখার জন্য অন্তবর্তী .....বিস্তারিত পড়ুন
পরম সুন্দরী
মৈত্রেয়ী চৌধুরী: চাকরির বাজার ভীষণ মন্দা। পাত্র সৃজিত এম. এস.সি পাশ করেও কোনো চাকরি পাচ্ছে না। অগত্যা পরিবারের ব্যাবসার হাল ধরেছে। পারিবারিক সূত্রে তাদের মিষ্টির বেশ বড় দোকান রয়েছে। সৃজিত পড়াশোনা তে বেশ ভালো ছাত্র ছিল। প্রতিদিন সকালে পেপারে চাকরির বিজ্ঞাপন খোঁজা তার একটি কাজ। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান, বয়স তো থেমে থাকবে না। বাবা মা ছেলের বিয়ে নিয়ে বেশ চিন্তিত। তারা কিছু দিনের মধ্যেই ছেলের বিয়ে দেবেন এরকম স্থির করেন। মোনালিসা ভূগোলে সদ্য এম.এ, পি. এইচ. ডি করে একই ভাবেই চাকরির খোঁজ করে যাচ্ছে। বাবা সুভাষ বাবু সরকারি .....বিস্তারিত পড়ুন
হয়ে গেল পরিণীতি ও রাঘবের এনগেজমেন্টে
উত্তরাপথ: আংটি বদলের মাধ্যমে হয়ে গেল পরিণীতি চোপড়া ও রাঘব চাড্ডার এনগেজমেন্টে । পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে একে-অপরকে আংটি পরিয়ে দিলেন রাঘব-পরিণীতি। শনিবারের মায়াবী সন্ধ্যায় রাঘব ও পরিণীতির জুটি থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছিল না। এনগেজমেন্টে পরিণীতি পরেছিলেন ক্রিম রঙের সালোয়ার স্যুট। অপরদিকে রাঘব পরেছিলেন সাদা রঙের কুর্তা-পায়জামা। পরিণীতি ও রাঘবের এনগেজমেন্টে তাদের গোটা পরিবারকে দেখা গেল আনন্দ করতে। .....বিস্তারিত পড়ুন
ওসাকা ক্যাসেল – ঐতিহাসিক এক দুর্গ ভ্রমণ
ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী, টোকিও, জাপান: কেল্লা বা দুর্গ এই নাম শুনলেই কল্পনায় ঐতিহাসিক ঘটনায় মোড়া রোমাঞ্চকর এক ভ্রমণক্ষেত্রের দৃশ্য ভেসে ওঠে। জাপানে এমন শতাধিক দুর্গ আছে যার সৌন্দর্য আজও যেমন বিমুগ্ধকর ঠিক তেমনি তার অতীতের সাদা কালো দিনের গল্প দর্শনার্থীকে অবাক করে। প্রাচীনকাল থেকেই জাপানে দুর্গ তৈরি হয়ে আসছে, তবে ইতিহাস বলছে দেশের রাজনৈতিক টানাপড়েন ও গৃহ যুদ্ধের কারণে ১৫ শতকের গোড়া থেকে দুর্গের বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়। সামন্ত যুগে, জাপান বেশ কিছু ছোট ছোট স্বাধীন রাষ্ট্রে বিভক্ত ছিল, যারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রায়ই যুদ্ধ ঘোষণা করত এবং .....বিস্তারিত পড়ুন