

আপাত বা গভীর কোনও স্তরেই তেমন কিছু তফাৎ পরিলক্ষিত না হলেও, বর্ণবাদী সমাজে একই পাড়ায় একেবারে প্রায় পাশাপাশি কেবল বিশেষ বিশেষ ঘরে জন্মানোর নিমিত্ত – শিক্ষাদীক্ষা পরের কথা – ভূমিষ্ঠ হওয়া থেকেই আজীবন একজন শ্রদ্ধা-ভক্তি-প্রণাম পাওয়ার অদৃশ্য শংসাপত্রের অধিকারী আর অন্যজনের সেবা-শ্রদ্ধা-ভক্তির অদৃশ্য দাসখতের দায়বদ্ধতা! কেন-না সৃষ্টিলগ্নেই একজন প্রজাপতি ব্রহ্মার মুখনিসৃত আর অন্যজন পদজ যে! সুতরাং মুখ থাকবে সবার উপরে, সবার নিচে পা – এতে অস্বাভাবিকতা বা আশ্চর্যের তো কিছু নেই! কিন্তু কেবল সেবা-শ্রদ্ধাতেই সব মিটে যায় না। তাই তোমাকে আমি বাহু থেকে সৃষ্টি করলুম – তোমায় দেখতে হবে নিরাপত্তা। আর তোমাকে সৃজন করলাম আমার ঊরু থেকে – তুমি বিনিময়-বাণিজ্যের দিকটা দেখো। কোনও নির্দিষ্ট জীবন বা যুগসাপেক্ষ নয়, এ এক্কেবারে সর্বযুগের নিমিত্ত পাক্কা বন্দোবস্ত! তা তুমি সবার নিচে, তোমাকেই তো দেখতে হবে উপরওলাদের! এ তো দেববিধান, আমরা ক্ষুদ্র নর কীই বা করতে পারি এই অমোঘ দেব-বন্দোবস্তাধীন হয়ে চলা ছাড়া! তা তুমি করবে সেবা-শ্রদ্ধা, তোমার আবার শাস্ত্রপাঠের কীই-বা দরকার! শাস্ত্রে যা-ই সংজ্ঞা থাক, আমি উপবীত ধারণ করলেই দ্বিজ কিন্তু শত শাস্ত্রপাঠেও তোমার কোনওদিন দ্বিজের মর্যাদা মিলবে কি! তাও সম্ভব বলে কেউ কেউ কোনও কোনও সময়ে আমতা-আমতা করে বলতে চেয়েছেন অবশ্য। এই মাত্র পাঁচ শতাধিক বৎসর পূর্বে ধরাধামে আগত কান্তিময় যুগন্ধর এক পুরুষকে কেন্দ্র করেও প্রশ্রয় পেয়েছিল তেমন মত। তো দ্বিজত্ব দূরের কথা, যুগের পরে যুগ কেটে গেল, সামান্য তার অক্ষরজ্ঞানটুকুর ব্যবস্থার তেমন উদ্যোগ দেখা গেল না! উদ্যোগ তো দূরের কথা, নিজেদের প্রতিষ্ঠানে নিজেদের পঙ্ক্তিতে বসতেও দেওয়া গেল না তাদের!
নাক-উঁচু গর্বিত-বর্ণদের পঙ্ক্তিতে স্থান-না-পাওয়া আঠারো শতকের শুরুর দিকে জাত তেমনই এক তথাকথিত অন্ত্যজ দূরদর্শী পুরুষ সমস্ত রকম অবহেলা, দারিদ্র্য, প্রতিকূলতার বিপরীতে নিজের স্বল্পপুঁজির জীবনে দেখতে এবং দেখাতে পেরেছিলেন সুদূরপ্রসারী সহজ সুন্দর এক স্বপ্ন! তিনি হরিচাঁদ ঠাকুর (১৮১২ – ১৮৭৮), যাঁর মহান উত্তরাধিকার অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে বহন ও সমৃদ্ধ করে গেছেন পুত্র গুরুচাঁদও (১৮৪৬ – ১৯৩৭)। দেব-দ্বিজে অন্ধ পূজা-প্রণিপাতহীন, যুগ-যুগচর্চিত গুরুবাদের বিপরীতে, জাতপাতের প্রাধান্যহীন সহজ-সরল মতুয়া ধর্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাঁরা দেখালেন নমঃশূদ্র তথা সমস্ত পিছিয়ে-পড়া নিম্নবর্গের মানুষের শিক্ষা-স্বাস্থ্য-মর্যাদার উন্নতির সহজ-সুন্দর পথ। খাওয়া হোক-না হোক শিক্ষা যেন অধরা না থাকে এই নীতিতে একান্ত ভাবে জোর-দেওয়া যে জীবন তথা সমাজদর্শনে এক নারী নিয়ে সুস্থ গার্হস্থ্য জীবনের সঙ্গে সঙ্গে সংঘশক্তি তথা সংগঠনকে গুরুত্ব দেওয়া, নারীকে মর্যাদা দেওয়া, পরকালের বদলে ইহবাদী ভাবনাকে গুরুত্ব, ধর্ম ও কর্মকে একীভূত দৃষ্টিতে দেখার উদার দৃষ্টিভঙ্গি, বর্ণবাদিতা বা সাম্প্রদায়িকাতার বিরুদ্ধে মুক্ত ভাবনার প্রাধান্য, আর্থ-সামাজিক সংস্কার তথা সার্বিক ভাবে সামাজিক ও আর্থিক ভাবে বঞ্চিত-উপেক্ষিত-দলিত শ্রেণির উন্নতি, আত্মজাগরণ ও প্রতিষ্ঠার বার্তা ইত্যাদি বলিষ্ঠ ভাবে গুরুত্ব পেল। মূঢ়, মূক, মলিন নতমুখ অজস্র মানুষ আত্মশক্তির উদ্বোধনে পেল উৎসাহ-উদ্দীপনা, আবিষ্কার করল আপন কণ্ঠকে!
এই মতুয়া ধর্ম তথা আন্দোলন নিয়ে এক সংস্কারমুক্ত স্বচ্ছ ভাবনার সাক্ষী হলাম আমরা ড. জীবনকুমার সরকারের ‘মতুয়া : মননে ও সাহিত্যে’ পুস্তকটিতে (শিল্পনগরী প্রকাশনী, বহরমপুর, ২৩ মে ২০১৫)। লেখক ছাত্রাবস্থায় মতুয়াদের অনেক কর্মকাণ্ড দেখেছেন, দেখেছেন ‘মাতাম’-এর উন্মাদনা। কিন্তু ছাত্রাবস্থায় প্রচলিত ইতিহাসের বইগুলোতে দেখেছেন এ বিষয়ে এক অদ্ভুত নীরবতা! ইচ্ছাকৃত বা পরিকল্পিত উপেক্ষা। কয়েক বছর ধরে মতুয়া-প্রসঙ্গ নিয়ে রাজনীতি তোলপাড় হওয়ায় শ্রী সরকার সে-বিষয়ে জানতে পড়াশুনা শুরু করেন। সেই অনুসন্ধানের পথে, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত নয়টি নিবন্ধ নিয়ে এই পুস্তক। পুস্তকটিতে আলোচ্য বিষয়ে একটি সামগ্রিক চিত্র উঠে এসেছে। সে চিত্রে আমরা যেমন দেখতে পাই সামাজিক ন্যায় ও সাম্যের আন্দোলন হিসাবে, একটি সাম্যবাদী ধর্মবিপ্লব হিসাবে, শিক্ষা বা নারীভাবনার দিক দিয়ে মতুয়া আন্দোলনের অবদান; তেমনই দেখতে পাই বাংলা সাহিত্যে মতুয়া আন্দোলনের প্রভাব, হরিচাঁদের মানুষের পাশে-থাকা, কবি মহানন্দ হালদারের সাহিত্যকৃতি। বিশেষত প্রথম দিকের ক্লান্তিকর খানিক পুনরাবৃত্তি পেরিয়ে যত এগিয়ে যাওয়া যায় লেখকের যুক্তি তথা দৃষ্টির বলিষ্ঠতা দেখতে পাই আমরা। ইতিহাসের উত্তরাধিকারকে কখনও অবহেলা করেননি শ্রী সরকার, কিন্তু প্রয়োজনে নিজস্ব যুক্তি-বিচারের আলোকে সমালোচনা করতেও পিছপা হননি এমনকি খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদেরও। কেবল ভক্তিসর্বস্ব হওয়া বা একইসঙ্গে নিজেদেরকে হিন্দু ও মতুয়া ভেবে আত্মপ্রসাদলাভ করার বিরুদ্ধে তাঁর বক্তব্য অত্যন্ত যুক্তিসিদ্ধ এবং বলিষ্ঠ। এই বলিষ্ঠতা একান্তই দরকারি কেন-না হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের ভাবনা ও আন্দোলনের মূল উপজীব্যকে উপেক্ষা করে তাঁদেরকে দেবতা বানিয়ে, তাঁদের ‘পূজাবিধি’ রচনা ও প্রচার করে দূরে সরিয়ে রাখার আত্মক্ষয়কারী প্রবণতা নিতান্ত কম পরিলক্ষিত হচ্ছে না যে!
‘হরিনাম মহামন্ত্র জান সর্বজন’ পঙ্ক্তিটির উল্লেখে শ্রী সরকার বলেছেন, ‘তা সম্ভবত হরিচাঁদ ঠাকুরকেই নির্দেশ করছে; হরিনামের আলাদা কোনো ঈশ্বর নয়।’ অর্থাৎ এ-ব্যাপারে তিনিও সংশয়ী। আমাদের অবশ্য এটি হরিচাঁদ ঠাকুরকেই নির্দেশ করছে বলে মনে হয় না। কিন্তু সেটা বড় কথা নয়, আমাদের বুঝতে হবে এ আন্দোলনের স্রষ্টারা সর্বোপরি কী চেয়েছিলেন, কী ছিল উদ্দেশ্য – কোন কল্যাণের পথে ছিল তাঁদের শুভ অগ্রগমন। তা ঠিক ঠিক ভাবে বুঝতে চাইলে, কার্যকর ভাবে প্রয়োগ করতে চাইলে, যুগোপযোগী সুযোগ্য ভাষ্য কি কোনও ভাবেই অনাকাঙ্ক্ষিত থাকতে পারে! তাঁরা যা যা বলেছেন সে-সব বর্ণ-শব্দ-বাক্য-চিহ্ন ধরে ধরে কঠোর-কঠিন প্রহরার বন্দোবস্ত করা, যাতে পান থেকে কোনোভাবেই চুনটি না খসে – এমনটি হলে সেই নিশ্ছিদ্র প্রহরা অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত কল্যাণ স্বয়ং প্রবেশ করতে পারবে তো! ইতিহাস সাক্ষী, এর ফল অনেকসময়ই ভালো হয়নি। তাই এ বিষয়ে শ্রী সরকার যে হরিচাঁদ ঠাকুরকেই বোঝাতে চেয়েছেন সেটাতেই জোর দেওয়া হোক না – হোক না কল্পিত দেবতার চেয়ে সার্বিক ভাবে অবহেলিত-পদদলিত জনসমাজের কল্যাণকামী রক্তমাংসের ঐতিহাসিক সেই মানুষটিকেই প্রাধান্য দেওয়া। আর সেটা করতে গিয়ে লিখিত দুই পঙ্ক্তির মধ্যেকার বক্তব্যের যেমন খোঁজ করতে হবে তেমনই তাঁদের বাণীর যুগোপযোগী উপযুক্ত ভাষ্য নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনে কোনও কিছুকে যুক্তিযুক্ত বিবেচনা না করলে চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে সে-সবকে এড়িয়ে চলা বা বাতিল গণ্য করা খুব কি অযৌক্তিক বা অমঙ্গলকর হবে! এতে তাঁদের মহিমা ক্ষুণ্ণ হওয়ার কথা নয়, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে গ্রহণযোগ্য থাকার সম্ভাবনাই বরং থাকে বেশি। একই ভাবে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদদের সম্বন্ধে শব্দপ্রয়োগেও লেখকদের সতর্ক থাকা দরকার যাতে কোনোভাবেই দেবমহিমা বড়-হয়ে-উঠে তাঁদের মহান মানুষী সত্তাকে ঢেকে না দেয়।
লেখক পত্রপত্রিকায় কয়েকটি প্রবন্ধ-নিবন্ধ বা একটি বই লিখেই ক্ষান্ত দেননি, এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধানে নিযুক্ত রেখেছেন নিজেকে সেটা অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য। তাঁর অনুসন্ধান অক্ষুণ্ণ থাক। ভবিষ্যতে আরও বিশদ ও কার্যকর ভাবনার ফসল উপহার দিক তাঁর সাহসী দায়িত্বশীল কলম। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
অরবিন্দ পুরকাইত
৭ আশ্বিন ১৪২৫
পুস্তকের নাম : মতুয়া : মননে ও সাহিত্যে
লেখকের নাম : ড. জীবনকুমার সরকার
প্রকাশক : শিল্পনগরী প্রকাশনী, বহরমপুর
প্রকাশকাল : ২৩ মে ২০১৫
মূল্য : আশি টাকা
[৭ আশ্বিন ১৪২৫ (২৪-৯-১৮), সোমবার, অফিস]
আরও পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
সম্পাদকীয়- রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র
সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন। আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল। আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন