মালদায় পালিত হলো কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৯৭তম জন্মজয়ন্তী

বিশেষ সংবাদদাতা, মালদা: পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্গের মালদা শহর আঞ্চলিক কমিটির উদ্যোগে ১৫ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টায় মালদা শহরের পিরোজপুরে সুশান্ত সাহার বাড়িতে উদযাপিত হলো কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৯৭তম জন্মজয়ন্তী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন রণজিৎ চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা। তারপরই মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঞ্চিতা দাশগুপ্ত। স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশ নেন সুপ্রিয়া সাহা, সুভাষ প্রামাণিক, শিবম দাস, মিনতি দত্ত মিশ্র, মহীতোষ দাস, কার্তিক সাহা, রাহুলরঞ্জন দাস, জীবনকুমার সরকার, নির্মাল্য দাস ও রবীন পাণ্ডে। আবৃত্তি পরিবেশন করেন অনুষ্কা দাশশর্মা, রথীন্দ্রনাথ চৌধুরী, রুমকি মিশ্র, নন্দিতা রায় ও সুশান্ত সাহা। সঙ্গীত পরিবেশন করেন রিনিকুমার মজুমদার, সুদীপ মুখোপাধ্যায়, শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী ও দীপক মণ্ডল। অমর মণ্ডল গম্ভীরার আদলে পরিবেশন করেন বিশেষ একটি কবিতা। কবিতাটি বেশ সচেতনতামূলক। তাছাড়া তিনি এখন গম্ভীরা শিল্পী হিসেবেও বেশ পরিচিত। এদিনের অনুষ্ঠানে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ওপর আলোচনা করেন রণজিৎ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ধর্মান্ধ শক্তি যেভাবে আম্বেদকরের সমাজতান্ত্রিক সংবিধান আর সাংস্কৃতিক পরিবেশ নষ্ট করছে; তাতে আমাদের বেশি করে কবি সুকান্তকে স্মরণ করতে হবে। তাঁর রচিত মহৎ সাহিত্য আমাদের বাঁচার হাতিয়ার। এই দিনের অনুষ্ঠানে আরও একটি বিশেষ দিক ছিলো। তা হলো জীবনকুমার সরকার সম্পাদিত ‘ শব্দভাষ’ পত্রিকার অণুগল্প সংখ্যার আনুষ্ঠানিক প্রকাশ। ১৪ বর্ষ ৩য় সংখ্যা, আগস্ট ২০২৩ – এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন রণজিৎ চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন পত্রিকার সভাপতি সুচিত্রা কর্মকার, সম্পাদক জীবনকুমার সরকার, বাচিক শিল্পী সুশান্ত সাহা, দীপক মণ্ডল, রবীন পাণ্ডে প্রমুখ। শব্দভাষ পত্রিকাটি মূলত মাতৃভাষা ও মাতৃসংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলনে নিরলসভাবে কাজ করে যায়। শব্দভাষ পরিবার মনে করে, ভারতে বাঙালিরা আজ অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে আছে। বাংলার বাইরে বাঙালিদের ওপর ধারাবাহিক নির্যাতন চলে নানা ইস্যুতে। যেমন আসামে আছে বাঙাল খেদাও কর্মসূচি। অন্যান্য রাজ্যে বাঙালিদের বাংলাদেশী বলে হেনস্থা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গও আজ অবাঙালিদের ভারে ভারাক্রান্ত। ফলে বাংলা ভাষা চর্চার সংকট দেখা দিয়েছে। বাধ্য হয়ে প. ব. রাজ্য সরকার এখন থেকে রাজ্যের যে কোনো ধরনের বিদ্যালয়গুলোতে বাংলা পড়া বাধ্যতামূলক করলো। দলিত সাহিত্য চর্চায়ও তাঁর পত্রিকার অবদান অনস্বীকার্য। সব শেষে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের লেখক শিল্পী সংঘের মালদা জেলা কমিটির সভাপতি সুশান্ত সাহা ব্যক্তব্য রাখেন। সংগঠনকে আরও সক্রিয় হতে সকলকে আহ্বান জানিয়েছেন। এই দুঃসময়ে লেখক শিল্পীরাই পথ দেখতে পারেন মানুষকে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্মজয়ন্তী জেলার অনেক লেখক শিল্পীরাই সেদিন উপস্থিত ছিলেন। সমগ্র অনুষ্ঠান সুচারু রূপে সঞ্চালনা করেন রবীন পাণ্ডে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


কানারা ব্যাঙ্কের উপর ২.৯২ কোটি জরিমানা করল আরবিআই

উত্তরাপথ: সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বিভিন্ন নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য কানারা ব্যাঙ্কের উপর ২.৯২ কোটি টাকা জরিমানা করেছে। ২০২০ সালের জুলাই মাসে আরবিআই দ্বারা ব্যাঙ্কের একটি স্ক্রুটিনি করা হয়েছিল,তাতে যাচাই-বাছাইয়ের পরে, আরবিআই দেখতে পেয়েছে যে ব্যাঙ্ক ফ্লোটিং রেট খুচরা ঋণ এবং এমএসএমই-কে ঋণের সুদকে একটি বাহ্যিক বেঞ্চমার্কের সাথে সংযুক্ত করতে কানারা ব্যাঙ্ক ব্যর্থ হয়েছে এবং ২০২০-২১ আর্থিক বছরে অনুমোদিত ও পুনর্নবীকরণকৃত ফ্লোটিং রেট রুপি ঋণের সুদকে তার প্রান্তিক খরচের সাথে সংযুক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।আরবিআই বলেছে, অযোগ্য সংস্থার নামে বেশ .....বিস্তারিত পড়ুন

রাহুলের ভারতজোড় সাফল্য পেলেও, অভিষেক কি পারবে ?

উত্তরাপথ: রাহুল গান্ধীর ১৪৬ দিনের প্রায় ৩৮৫০ কিলোমিটার ভারতজোড় যাত্রার সাফল্য কংগ্রেস ঘরে তুলতেই তৃনমূলের নতুন উদ্যোগ জনসংযোগ যাত্রা।এই যাত্রায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৬০ দিনে ৩,৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ " জনসংযোগ " করবেন। উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটা থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রা রাজ্যের সবচেয়ে দক্ষিণ প্রান্ত দক্ষিণ ২৪ পরগণার কাকদ্বীপে শেষ হবে। এই পুরো যাত্রায় অভিষেক মোট ২৫০টি সমাবেশে ভাষণ দেবেন। এখন প্রশ্ন তৃণমূল তথা অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে। কংগ্রেস তথা রাহুল গান্ধীর ভারতজোড় যাত্রার উদ্দেশ্য .....বিস্তারিত পড়ুন

পশ্চিমবঙ্গে 'দ্য কেরালা স্টোরি'সিনেমাটির ভাগ্য সুপ্রিম কোর্টের হাতে

উত্তরাপথ: 'দ্য কেরালা স্টোরি' সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ হওয়ায় সিনেমাটির সিনেমার নির্মাতারা বাংলার নিষেধাজ্ঞাকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তাদের দাবী ছিল নিষেধাজ্ঞার ফলে প্রতিদিন তাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে । নির্মাতাদের আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট আজ 'দ্য কেরালা স্টোরি' সিনেমাটি পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধ হওয়ার পিছনে যুক্তি জানতে চেয়েছে । প্রধান বিচারপতির একটি বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছে, যখন এটি কোনও সমস্যা ছাড়াই সারা দেশে চলছে।পশ্চিমবঙ্গের সিনেমাটি কেন নিষিদ্ধ করা উচিত? এটি একই রকম জনসংখ্যার সংমিশ্রণ রয়েছে এম .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top