মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি উত্তরবঙ্গের বন্যার জন্য ফারাক্কা ব্যারেজের উপর দোষ চাপিয়েছেন

উত্তরাপথঃ দক্ষিণবঙ্গের ৭ জেলার বন্যা পরিস্থিতি ইতিমধ্যে ঘুরে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবার পূজার আগে উত্তরবঙ্গ সফরে মমতা। প্রায় দেড় মাস ধরে গঙ্গার জলে প্লাবিত হয়ে রয়েছেন মালদার ভুতনির চরের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় দেড় লক্ষেরও বেশি বাসিন্দা।এই মুহূর্তে তাদের বাঁচার একমাত্র সম্বল সরকারি সাহায্য।এদিকে বিহারে ভারী বৃষ্টির কারণে জল আরও বাড়তে চলেছে গঙ্গায়। গঙ্গার অববাহিকা দিয়ে ২৬ লক্ষ কিউসেক জল প্রবাহিত হবে বলে জানিয়েছে সেচ দফতর। ফলে গঙ্গা নদীর জলস্তর এক মিটারের বেশি বৃদ্ধি পেতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এলাকাবাসীকে তৈরি থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। গভীর রাতে পরিস্থিতির কথা জেনে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও।এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসাবে ন’জন জলে তলিয়ে গিয়েছেন।

এদিকে রবিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্র সরকারকে বন্যা প্রতিরোধ এবং ত্রাণ প্রচেষ্টার জন্য তার রাজ্যকে কোনো সহায়তা না দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। উত্তরবঙ্গের কিছু অংশে বন্যার জন্য তিনি ফারাক্কা ব্যারেজের উপর দোষ চাপিয়েছেন।তিনি সাংবাদিকদের বলেন “দুর্গা পূজা ঘনিয়ে আসছে, অন্যদিকে বন্যা। আমাদের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে এবং বন্যার ত্রাণ ও পুনর্বাসনকে উপেক্ষা করলে হবে না,”

মুখ্যমন্ত্রী, যিনি বর্তমানে উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন,তিনি  সতর্ক করে বলেন যে নেপালে ভারী বৃষ্টিপাত  হচ্ছে এবং কোশী নদীর জল নেপাল ছেড়েছে৷ সেই জল বিহার হয়ে বাংলায় আসছে। মালদা, মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুরে এর প্রভাব পড়বে। বিহারও ভাসবে৷ বাংলাও ভাসবে৷ ফারক্কায় ড্রেজিং হয় না। ফলে তারাও জল ধরে রাখতে পারে না। ফারাক্কা ব্যারেজ কেন্দ্র দেখে।”

সেই সঙ্গে টানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গেও। মমতা ব্যানার্জি রাজ্যকে দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ার জন্যও অভিযুক্ত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, পশ্চিমবঙ্গে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮।প্রসঙ্গত ফারাক্কা ব্যারাজকে ঘিরে বিতর্ক এই অঞ্চলে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, যার জল ব্যবস্থাপনা এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণে এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার

উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে।  কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে।  যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে।  অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়।  এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি  যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে।  পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে।  এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই  সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন

প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে

উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর  প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top