সম্পাদকীয় – নদীর পরিচ্ছন্নতা কি শুধুই দেখানো একটা ব্যাপার?

উত্তরাপথঃ আজ নদী দূষণ আমাদের দেশের এক বড় সমস্যা । গঙ্গা ও যমুনা সহ দেশের প্রধান নদীগুলি এই  ভয়ংকর দূষণের স্বীকার। সম্প্রতি ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) পর্যবেক্ষণ করেছে যে উত্তরপ্রদেশে গঙ্গার জলের গুণমান খারাপ হচ্ছে কারণ নদীতে প্রতিদিন পয়ঃনিষ্কাশনের জল মিশছে।এনজিটি চেয়ারপার্সন বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের একটি বেঞ্চ ৬ নভেম্বর তারিখের একটি আদেশে বলেছে যে উত্তরপ্রদেশের, প্রয়াগরাজ জেলায় পয়ঃনিষ্কাশন প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন ১২৮ মিলিয়ন লিটার জল গঙ্গায় মিশছে।

গঙ্গার পর এবার আসা যাক দিল্লির লাইফলাইন নামে পরিচিত যমুনার কথায়,এটিও ক্রমাগত দূষিত হচ্ছে।  রাজধানীতে বাইশ কিলোমিটার বিস্তৃত এ নদীতে প্রতিদিন ছোট-বড় ড্রেনের দূষিত জল শোধন ছাড়াই মিশে যাচ্ছে।  যমুনা পরিষ্কারের নামে দিল্লি সরকার গত কয়েক বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে।  তারপরও যমুনার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি , তাহলে এর জন্য দায়ী কে?  সত্য হলো নদী পরিষ্কারের জন্য পর্যায়ক্রমে সঠিক কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। যার ফলে যমুনায় কখনও অ্যামোনিয়ার মাত্রা বাড়ে আবার কখনও সাদা ফেনা ভেসে উঠতে থাকে। যার ফলে এতদিন ধরে নেওয়া দূষণ কমানোর জন্য সরকারের সব ব্যবস্থাই ব্যর্থ হয়েছে।  এবারও একই ঘটনা ঘটেছে।

 প্রকৃতপক্ষে, এর সবচেয়ে বড় কারণ বিভিন্ন ড্রেনের মাধ্যমে অনাবরত মিশতে থাকা অপরিশোধিত রাসায়নিক এবং দূষিত জল।  যমুনা যখন দিল্লীতে প্রবেশ করে ততই এটি ধীরে ধীরে দূষিত হতে থাকে।  এবার পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে দিল্লি হাইকোর্ট ছট উপাসনা করতে ভক্তদের যমুনাতে নামতে অনুমতি দিতে অস্বীকার করল।  এমনকি আদালতকে বলতে হয় যে এই সময়ে ভক্তরা যমুনাতে ডুব দিলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

সরকার কেন এই বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি নেয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।  প্রতি বছর ছটের আগে যমুনায় সাদা ফেনার চাদর ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় এ ধরনের ছবি আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি করলেও নদীর পরিচ্ছন্নতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা উদাসীন।১৯৯৩ সালে আনা যমুনা অ্যাকশন প্ল্যানের বাস্তবিকতা আজ  সবার সামনে।  এই প্রকল্পের অধীনে বরাদ্দকৃত তহবিল দিয়ে য

প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের ছবি আতঙ্কি ও উদ্বেগ সৃষ্টি করলেও নদীর পরিচ্ছন্নতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা উদাসীন।১৯৯৩ সালে আনা যমুনা অ্যাকশন প্ল্যানের বাস্তবিকতা আজ  সবার সামনে।  এই প্রকল্পের অধীনে বরাদ্দকৃত তহবিল দিয়ে যমুনা কতদূর পরিষ্কার করা হয়েছে তা আজ একটি সুপরিচিত সত্য।যমুনা  পরের বছর পরিষ্কার করা হবে বলে প্রতিবারই  এর পরিষ্কার এড়িয়ে যাওয়া হয়।আজ যমুনার এই দুর্দশার জন্য কে দায়ী এবং কে তার শিকার তা সবাইকে ভাবতে হবে!

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে

উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে   ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি  গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ  ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন

Side effects of vitamin: ভিটামিনের আধিক্য আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে

উত্তরাপথঃ ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা আমরা সবাই নিশ্চয়ই ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি যে সুস্থ থাকতে হলে শরীরে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন থাকা খুবই জরুরি।  ভিটামিন আমাদের সুস্থ করার পাশাপাশি আমাদের সমগ্র শরীরের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  যাইহোক, এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া আমাদের জন্য ক্ষতিকারকও হতে পারে।  আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত ভিটামিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (Side effects of vitamin)সুস্থ থাকার জন্য শরীরে সব ধরনের পুষ্টি থাকা খুবই জরুরি।  এ কারণেই বয়স্ক থেকে শুরু করে চিকিৎসক, সবাই আমাদেরকে সুষম ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।  সমস্ত পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে সুস্থ করে তোলে।  এর মধ্যে ভিটামিন একটি, যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়

উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে।  সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top