

উত্তরাপথঃ বিশাল সাহারা মরুভূমি থেকে প্রতি বছর যে পরিমাণ ধুলোর মেঘ উড়ে যায়, তা শুধু মরুভূমির চিহ্ন নয়, বরং পৃথিবীর অন্য প্রান্তে প্রাণের সঞ্চার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এই ধুলোর মেঘ আটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে অ্যামাজন বনাঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
আয়রন বা লোহা উদ্ভিদ ও প্রাণীর জন্য অত্যন্ত দরকারি একটি পুষ্টি উপাদান। আটলান্টিক মহাসাগরের অনেক অঞ্চলে এই আয়রনের মূল উৎস হলো সাহারা মরুভূমি। তবে আয়রন সব জায়গায় একরকম কাজ করে না – এর কিছু রূপ জীবের শরীরে সহজে শোষিত হয়, আবার কিছু রূপ হয় নিষ্ক্রিয়।
গবেষণার পেছনের গল্প
ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেরেমি ওউয়েন্স বলেন, “আগের গবেষণাগুলো সাধারণত মোট কতটা আয়রন আছে তা দেখতো। আমরা এবার খেয়াল করেছি, কতটা আয়রন আসলেই সাগরের জীবেরা ব্যবহার করতে পারে।”
গবেষকরা আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশ থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছেন – কেউ কেউ মরক্কোর উপকূল থেকে ২০০ কিমি দূরে, আবার কেউ কেউ ফ্লোরিডা উপকূল থেকে ৫০০ কিমি দূরের জায়গা থেকে। এই নমুনাগুলো ছিল প্রায় ১,২০,০০০ বছরের পুরনো, এবং সেগুলোর মধ্যে ছিল নানা ধরনের আয়রনের খনিজ – যেমন গোয়েথাইট, ম্যাগনেটাইট, পাইরাইট ইত্যাদি।
কি দেখা গেল গবেষণায়?
আফ্রিকার কাছের নমুনাগুলোতে বেশি পরিমাণে ‘বায়োরিঅ্যাকটিভ’ আয়রন পাওয়া গেছে – অর্থাৎ এমন আয়রন যা জীবরা সহজে শোষণ করতে পারে। কিন্তু যত দূরে গেছে, তত এই আয়রনের পরিমাণ কমে গেছে। কারণ, আয়রনের অনেকটাই সাগরের জীবেরা আগেই ব্যবহার করে ফেলে।
তবে গবেষণায় একটা চমকপ্রদ তথ্যও মিলেছে। সাহারা থেকে যত দূরে ধুলো যায়, বাতাসে সূর্যরশ্মি আর রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সেই ধুলোর মধ্যে থাকা আয়রন ধীরে ধীরে আরও বেশি সহজপাচ্য হয়ে ওঠে। এর ফলে, দূরবর্তী জায়গার সামুদ্রিক শৈবাল বা ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন এগুলো শোষণ করে জীবন চালাতে পারে।
নতুন ধারণা জন্ম নিলো
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিমোথি লায়ন্স বলেন, “আমরা দেখেছি, সাহারা থেকে উড়ে আসা আয়রন যত দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়, ততই সেটা আরও বেশি জীবের জন্য ব্যবহারযোগ্য হয়ে ওঠে।”
এই গবেষণার মাধ্যমে বোঝা গেল, সাহারা মরুভূমির ধুলোর মেঘ শুধু পেছনে ফেলে আসা এক নিষ্প্রাণ ভূমির চিহ্ন নয় – বরং এটি পৃথিবীর আরেক প্রান্তে প্রাণের সঞ্চার তৈরি করতে পারে। অ্যামাজন বনাঞ্চল থেকে শুরু করে বাহামা পর্যন্ত, সাহারার ধুলো হাজার হাজার কিমি পাড়ি দিয়ে প্রাণ জোগাচ্ছে প্রকৃতিতে।
আরও পড়ুন
বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
ফ্লিম রিভিউ -ওপেনহাইমার
উত্তরাপথ: বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্রিস্টোফার নোলান দ্বারা পরিচালিত”ওপেনহাইমার” একটি মাস্টারপিস মুভি। ছবিতে জে. রবার্ট ওপেনহেইমার, এক নামকরা পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পারমাণবিক বোমার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।এই সিনেমায় ওপেনহাইমার এর জটিল জীবনকে বর্ণনা করা হয়েছে। সেই হিসেবে 'ওপেনহাইমার'কে বায়োপিক বলা যেতে পারে। কারণ এটি একজন মানুষের গল্প। এই ছবির গল্প তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত।ছবির শুরুতে পারমাণবিক বোমা তৈরির আবেগের কথা বলা হয়েছে। যেখানে নায়ক কিছু না ভেবে নিবেদিতপ্রাণভাবে এমন একটি অস্ত্র তৈরিতে নিয়োজিত থাকে যা বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। অস্ত্র তৈরি হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে নায়ক তার কাজের ফলাফল দেখে অপরাধবোধে পূর্ণ হয়। এবং তৃতীয় পর্যায়টি হল রাজনীতি যা ওপেনহাইমারকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। পুরো সিনেমাটি রঙিন হলেও রাজনৈতিক অংশ সাদা-কালো রাখা হয়েছে। এই তিনটি সময়কালে যা কিছু ঘটছে, তা সবই একে অপরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত। .....বিস্তারিত পড়ুন
Fructose: নতুন গবেষণায় ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার কারণ বলা হয়েছে
উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জোরালো প্রমাণ দেওয়া হয়েছে যে ফ্রুক্টোজ (Fructose), সাধারণত প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং পানীয়গুলিতে থাকা এক ধরনের চিনি, যা স্থূলতার প্রাথমিক চালক। বছরের পর বছর ধরে, পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা , পাশ্চাত্য খাদ্যে, স্থূলতার মূল কারণ নিয়ে বিতর্ক করেছেন, কেউ কেউ অত্যধিক ক্যালোরি গ্রহণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন, অন্যরা কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবারকে দায়ী করেছেন। Obesity জার্নালে সাম্প্রতিক একটি গবেষণাপত্রে ফ্রুক্টোজকে স্থূলতার প্রকৃত চালক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।The University of Colorado Anschutz Medical Campus এর Dr. Richard Johnson এবং তার দলের মতে, ফ্রুক্টোজ হল একটি সাধারণ চিনি যা ফল এবং মধুর প্রাথমিক পুষ্টি। .....বিস্তারিত পড়ুন