

2024 YR4 গ্রহাণুর পৃথিবীর দিকে আসার একটি চিত্রকল্প। এটি প্রখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী Neil deGrasse Tyson এর এক্স হ্যান্ডল থেকে গৃহীত।
ডঃ সায়ন বসুঃ পৃথিবীর ইতিহাসে গ্রহাণুর আঘাতের ঘটনা বিরল। সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, যখন রাশিয়ার চেলিয়াবিনস্ক শহরের আকাশে একটি প্রায় ২০ মিটার ব্যাসের গ্রহাণু বিস্ফোরিত হয়। এটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় বিস্ফোরিত হয়ে প্রায় ৫০০ কিলোটন টিএনটি (ট্রাই নাইট্রো টলুইন একটি রাসায়নিক যৌগ যা বিস্ফোরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়) সমতুল্য শক্তি মুক্ত করে, যা হিরোশিমা পারমাণবিক বোমার প্রায় ৩০ গুণ। এই বিস্ফোরণে প্রায় ১,৫০০ মানুষ আহত হয় এবং বহু ক্ষতি হয়, তবে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। এর আগে, ১৯০৮ সালে সাইবেরিয়ার তুঙ্গুস্কা অঞ্চলে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে, যেখানে একটি প্রায় ৫০ মিটার ব্যাসের গ্রহাণু বা ধূমকেতু বিস্ফোরিত হয়ে প্রায় ২,০০০ বর্গকিলোমিটার বনভূমি ধ্বংস করে। বড় আকারের গ্রহাণুর আঘাতের ঘটনা আরও প্রাচীন, যেমন ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে একটি বিশাল গ্রহাণুর আঘাতে ডাইনোসরসহ পৃথিবীর বহু প্রাণী বিলুপ্ত হয় বলে মনে করেন বিজ্ঞানীদের একাংশ।
এবার আসা যাক ২০২৫ সালের একটি খবরে। একটি গ্রহাণু নাকি ২০৩২ সাল নাগাদ পৃথিবীতে আছড়ে পরবে! 2024 YR4 গ্রহাণুটি ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে চিলির রিও হার্তাদোতে অবস্থিত ATLAS (Asteroid Terrestrial-impact Last Alert System) টেলিস্কোপ দ্বারা প্রথম শনাক্ত করা হয়। এটি একটি Near Earth Object (NEO)। NEO বলতে সেই সব ছোট সৌরজগতীয় বস্তু বোঝায়, যাদের সূর্যের সাথে সর্বনিম্ন দূরত্ব ১.৩ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট (AU) বা প্রায় ১৯৪.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার। NEO-গুলি প্রধানত গ্রহাণু এবং ধূমকেতু নিয়ে গঠিত। এদের কক্ষপথ পৃথিবীর কক্ষপথের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে, যা তাদেরকে পৃথিবীর জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিকারক করে তোলে।
2024 YR4 সূর্যের চারপাশে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পরিভ্রমণ করে, যা পৃথিবীর কক্ষপথকে অতিক্রম করে; ফলে এটি অ্যাপোলো-শ্রেণীর গ্রহাণু হিসেবে পরিচিত। এর কক্ষপথের সময়কাল প্রায় ৩.৯৯ বছর এবং পৃথিবীর কক্ষপথের সাথে এর প্রবণতা ৩.৪১ ডিগ্রি। আবিষ্কারের দুই দিন আগে, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে, এটি পৃথিবীর প্রায় ৮২৮,৮০০ কিলোমিটার (৫১৪,৯০০ মাইল) দূর দিয়ে অতিক্রম করেছে। পরবর্তী পর্যবেক্ষণগুলি জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত চালানো হয়, তবে এপ্রিল ২০২৫ থেকে জুন ২০২৮ পর্যন্ত এটি পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে না। তখন সে থাকবে রামায়ণের মেঘনাদের মতো, চোখের আড়ালে। তবে, মহাকাশ-ভিত্তিক ইনফ্রারেড টেলিস্কোপ, যেমন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ, এই সময়ের মধ্যে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যেতে সক্ষম হবে। পরবর্তী ঘনিষ্ঠ সংযোগটি ১৭ ডিসেম্বর ২০২৮ সালে ঘটবে, যখন এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার (৯৩০,০০০ মাইল) দূর দিয়ে অতিক্রম করবে।
আবিষ্কারের পরপরই, স্বয়ংক্রিয় গ্রহাণু সতর্কতা সিস্টেমগুলি ২২ ডিসেম্বর ২০৩২ তারিখে পৃথিবীর সাথে সংঘর্ষের একটি সম্ভাবনা চিহ্নিত করে। গ্রহাণুটির আকার আনুমানিক ৪০ থেকে ৯০ মিটার (১৩০ থেকে ৩০০ ফুট) ব্যাসের মধ্যে, যা এটিকে “শহর-বিধ্বংসী” সম্ভাব্যতার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী, ২০৩২ সালে সংঘর্ষের সম্ভাবনা প্রায় ২.৩%, যা টোরিনো স্কেলে ৩ রেটিং পেয়েছে। এই স্কেলটি ০ থেকে ১০ পর্যন্ত মান নির্ধারণ করে, যেখানে ৩ মানে “স্থানীয় ক্ষতির হুমকি সহ সম্ভাব্য সংঘর্ষ”। গ্রহাণুটির সম্ভাব্য প্রভাব অঞ্চল প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাংশ থেকে শুরু করে দক্ষিণ আমেরিকা, আটলান্টিক মহাসাগর, আফ্রিকা, আরব সাগর এবং দক্ষিণ এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে প্রায় ৮ মেগাটন টিএনটি সমতুল্য শক্তির বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে, যা হিরোশিমায় ফেলা পারমাণবিক বোমার প্রায় ৫০০ গুণ শক্তিশালী। এমন একটি বিস্ফোরণ প্রায় ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করতে সক্ষম। এই সমস্ত তথ্য মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে| গ্রহাণুটির আকার, গতিপথ এবং গতি তাৎক্ষণিকভাবে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। এটি চেলিয়াবিনস্কের আঘাত হানা গ্রহাণুটির চেয়ে বড় এবং সম্ভবত পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে। নাসার হিসাব অনুযায়ী এর গতিবেগ প্রায় ৩৮,০০০ মাইল প্রতি ঘণ্টা, যা পৃথিবী-অরবিটিং স্যাটেলাইটের গতির চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এই তীব্র গতিই একটি আপেক্ষিকভাবে ছোট গ্রহাণুকেও এত বিধ্বংসী শক্তি প্রদান করে, কারণ একটি বস্তু যত দ্রুত চলে, তত বেশি শক্তি বহন করে—যে শক্তি একটি গ্রহের সাথে সংঘর্ষের সময় নির্গত হয়।
2024 YR4কে NEO হিসেবে চিহ্নিত করার পর ATLAS জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দ্রুত পদক্ষেপ নেন, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীতি অফিস এবং জাতিসংঘকেই নয়, বরং ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ESA), নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির নিকটবর্তী পৃথিবী বস্তু অধ্যয়ন কেন্দ্র (CNEOS), এবং সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আন্তর্জাতিক অ্যাস্টেরয়েড সতর্কতা নেটওয়ার্ক (IAWN)কেও সতর্ক করেন। IAWN একটি কনসোর্টিয়াম, যা কমপক্ষে ৫৯টি সরকার, জাতীয় মহাকাশ প্রোগ্রাম এবং পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র নিয়ে গঠিত, যারা আকাশে নজর রাখে, শত শত হাজার অ্যাস্টেরয়েডের উড়ালপথের তালিকা তৈরি করে এবং NEO-গুলোর উপর বিশেষ মনোযোগ দেয়। বর্তমানে, নাসা, IAWN এবং অন্যান্য আকাশ-পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলি প্রায় ৩৮,০০০ NEO পর্যবেক্ষণ করছে, তাদের গতিপথের উপর নিয়মিত নজরদারি করে, যাতে কোনো পরিবর্তন ঘটলে তা টোরিনো স্কেলে তাদের অবস্থান পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় কিনা নির্ধারণ করা যায়। বর্তমানে, 2024 YR4 পৃথিবীর কাছে এতটা নিকটবর্তী যে এটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে সহজেই দৃশ্যমান। গ্রহাণুটির কক্ষপথ এবং আকার সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্য, আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থাগুলি নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ মার্চ এবং মে ২০২৫ সালে 2024 YR4-এর আরও বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করবে, যা এর গঠন এবং কক্ষপথ সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য প্রদান করবে। এই তথ্যগুলি ভবিষ্যতে সম্ভাব্য প্রভাব এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নির্ধারণে সহায়তা করবে।
এখন দেখা যাক আমাদের মানবসভ্যতার ইতিহাসে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দিয়ে আমরা 2024 YR4 এর কবল থেকে বাঁচতে পারি নাকি আরও একবার আমাদের হারিয়ে দিয়ে একটি গ্রহাণু আমাদের আঘাত করে।


2024 YR4 গ্রহাণুর অবস্থান। এটি 2024 YR4 Asteroid নামক এক্স হ্যান্ডল থেকে গৃহীত।
*লেখক বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার University of Witwatersrand-এ পদার্থবিদ্যা বিভাগে গবেষক হিসেবে কর্মরত।
আরও পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
রাতের ঘামের সমস্যা এবং এ সম্পর্কে আপনি কি করতে পারেন
উত্তরাপথঃ রাতের ঘামের সমস্যা শরীরের কুলিং সিস্টেমের একটি স্বাভাবিক অংশ, তাপ মুক্তি এবং সর্বোত্তম শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।তবে রাতের ঘাম একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে।এর অস্বস্তিকর অনুভূতির জন্য ঘুম ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি রাতে অতিরিক্ত ঘাম অনুভব করেন, তাহলে তার অন্তর্নিহিত কারণটি চিহ্নিত করা এবং এটি মোকাবেলার জন্য কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাতের ঘামের কিছু সম্ভাব্য কারণ নিয়ে আলোচনা করা হল।মেনোপজ: যে কেউ, বয়স বা লিঙ্গ নির্বিশেষে, রাতের ঘাম অনুভব করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে
বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন