ড. জীবনকুমার সরকার


ভারতীয় প্রেক্ষাপটে দলিত সাহিত্যের নান্দনিকতা বুঝতে হলে অতি অবশ্যই ‘হিন্দুত্ববাদ’কে আগে বুঝতে হবে। যথাযথ ভাবে হিন্দুত্ববাদ বা ব্রাহ্মণ্যবাদকে না বুঝলে কোনোভাবেই দলিত সাহিত্য আন্দোলনের নন্দনতত্ত্ব স্পর্শ করা যাবে না।
আমরা যে হিন্দু ধর্মের কথা বলে থাকি, তা আসলে ব্রাহ্মণ্য ধর্ম। আর্য আগমনের পর ভারতের মাটিতে আর্য আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার জন্য আর্যদের একটি নিজস্ব ধর্মের প্রয়োজন হয়েছিলো। কারণ, ধর্মকে হাতিয়ার করেই প্রাচীন ভারতের অনার্য মানুষদের দখলে আনতে চেয়েছিলেন। এই কাজকে সফল করার জন্য তারা মাঠে নামলেন। তৈরি করলেন কাল্পনিক ঈশ্বর এবং নানা কাল্পনিক দেব-দেবতা, স্বর্গ-নরক, ভূত-প্রেত-পরী-রাক্ষস-খোক্কস আরও কত কী! গোলমালটা শুরু হলো এখান থেকেই। এইসব কাল্পনিকতাকে এবং আর্যদের জীবনসংস্কৃতিকে মানতে চাইতো না অনার্য তথা আদি ভারতীয়রা। সেক্ষেত্রে আর্যদের দরকার পড়লো আরও চাতুর্যতার। ফলে, তারা একে একে তৈরি করতে লাগলেন নানা গল্পের ছলে ঈশ্বরের নামে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের কথা। সেই কাল্পনিক গল্পগাথাকে মূল ভারতীয় মানুষদের মধ্যে প্রবিষ্ট করতে তৈরি হতে লাগলো একে একে বেদ-উপনিষদ-পুরাণ-রামায়ণ-মহাভারত সহ নানা গ্রন্থ। এইসব গ্রন্থের মূল উপজীব্য হলো যে কোনো প্রকারে ব্রাহ্মণদের জয় জয়কার ঘোষণা করা। আর যাদের পরাজয় ঘোষণা করা হয়েছে, তারা হলেন ওই রাক্ষস-খোক্কস-দৈত্য-দানব তথা হিন্দু ধর্মের মনুসংহিতা অনুসারে শূদ্র। হিন্দু ধর্মে উল্লিখিত শূদ্রদের দমন-পীড়নের জন্য ব্রাহ্মণ্যবাদ তাদের অস্পৃশ্য ঘোষণ করেছিলো।
ভারতের মাটিতে এইসব মূল মানবসন্তানদের এমন করে অস্পৃশ্য করা হলো ——যা পৃথিবীতে একটা বিরল ঘটনা। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে খাইবার-বোলান গিরিপথ দিয়ে ভারতের মাটিতে প্রবেশ করা বহিরাগত দস্যুরাই আজকে ভারতের মালিক। প্রকৃত ভারতের মাটির মানুষেরা আজও পরাজয়ের গ্লানি টেনে চলেছে। এই পরাজিত শূদ্ররা পরাজয়ের গ্লানি সাড়ে তিন হাজার বছর ধরে টানতে টানতে অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। ভুলে গেছে হিন্দু পরিচয়ের আগে তাদের একটি স্বতন্ত্র পরিচিতি ছিলো, স্বতন্ত্র ধর্ম ছিলো। ছিলো অত্যন্ত উন্নত মানের সভ্যতা। বহিরাগত আর্যসৃষ্ট হিন্দুধর্মের দাসত্ব বরণ করার পর নিম্নবর্গের মানুষেরা ভুলে গেছে তাদের পিতৃমাতৃ ঐতিহ্য। ব্রাহ্মণ্যবাদে পরিপূর্ণ হিন্দুধর্মের চিরদাসত্বের থেকে মুক্তির জন্য ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ধর্ম আন্দোলন হয়েছে । যেমন : বৌদ্ধ, জৈন, লিঙ্গায়েত, সারনা, রবিদাসিয়া, মতুয়া, শিখ ইত্যাদি। এরপরেও শূদ্রদের মুক্তি ঘটেনি। কারণ, দেশের সমস্ত ক্ষমতার অলিন্দে বসে আছে ব্রাহ্মণ এবং তার দোসর ক্ষত্রিয় ও বৈশরা। আর কোটি কোটি শূদ্ররা তাদের উপাসক। শূদ্রদের যাতে কোনোদিনই মুক্তি না ঘটে, তার জন্য ব্রাহ্মণ্যবাদীরা দিনরাত হিন্দু হিন্দু করছে। হিন্দুধর্মের নিপীড়িত, অসহায় অস্পৃশ্য শূদ্ররাই আজকের ভাষায় দলিত।
দলিত সাহিত্যের নান্দনিকতা বুঝতে হলে’ হিন্দুত্ববাদ’ বা ‘ব্রাহ্মণ্যবাদ’ শব্দ দুটিকে পাশাপাশি রেখে আর একটু ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। হিন্দুত্ববাদ জোরালো ভাবে দাঁড়িয়ে আছে তিনটি অবৈজ্ঞানিক ব্যবস্থার ওপর। এক : বর্ণবৈষম্য, দুই : পুরোহিততন্ত্র এবং তিন : নিঃশর্ত ভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস। আসলে আর্যরা নিজেদের ব্রাহ্মণ পরিচয় দিয়ে বর্ণাশ্রম ব্যবস্থাকে স্থায়ী করেছে। বৈদিক যুগ থেকে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা মূল ভারতীয়দের দাস বানিয়ে রাখার জন্য সামাজিক ও রাজনৈতিক কৌশলের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কৌশলও অবলম্বন করেন। যার ফলে পুরো সংস্কৃত সাহিত্যের আকাশ জুড়ে রয়েছে ব্রাহ্মণ্য আধিপত্যবাদ। আর মূল ভারতীয়দের চিহ্নিত করেছে ‘রাক্ষস’, ‘দৈত্য’, ‘বানার’, ‘কিরাত’, ‘নিষাদ’, ‘দানব’ ইত্যাদি। আর্য বা ব্রাহ্মণের দ্বারা রচিত সবচেয়ে প্রাচীন গ্রন্থ ‘ঋগ্বেদ’-এর দশম মণ্ডলের ‘পুরুষসুক্ত’-এ উল্লেখ আছে ———ব্রহ্মার মুখ থেকে ব্রাহ্মণ, বাহু থেকে ক্ষত্রিয়, ঊরু থেকে বৈশ্য এবং পা থেকে শূদ্রদের উৎপত্তি। এতে সহজেই অনুমেয় ব্রাহ্মণ্য ধর্মে শূদ্রদের মর্যাদা কতটুকু। ব্রাহ্মণ্য আধিপত্যবাদী বৈদিক ও ব্রাহ্মণ্য ধর্মই মুসলিম শাসনামলে হিন্দুধর্ম নামকরণের মাধ্যমে আত্মগোপন করে কৌশলে। সুতরাং, শূদ্রদের নতুন করে ধোঁকা দেবার জন্য হিন্দু ফোল্ডারে ব্রাহ্মণ্যবাদ ঢুকে পড়ে। তাই, লক্ষ করলে দেখা যায়, হিন্দু হিন্দু চারদিক আকাশ বাতাস মুখরিত করলেও কাস্টইজম ভাঙার কথা বলেন না ব্রাহ্মণ্যবাদীরা।
যুগ বদলেছে। সাহিত্যও ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে। আধুনিক সাহিত্য বিচিত্র আঙ্গিকে রচিত হলেও ভারতের মাটিতে যে মূল ধারার সাহিত্য লিখিত বা চর্চিত হচ্ছে, তা মূলত ব্রাহ্মণ্যবাদী ধারাই উপাসক। ব্রাহ্মণ্যবাদী সাহিত্য ধারায় দলিতদের কথা থাকলেও সার্বিক ভাবে দলিত মুক্তির কথা নেই। দলিত মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থেকেই দলিত সাহিত্যের জন্ম।
দলিত সাহিত্য আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্য হলো ———-(১) হাজার হাজার বছর ধরে লালিত বর্ণ বৈষম্যেকে ভেঙে ফেলা, (২) জাতপাতের নামে বিভাজনকে অগ্রাহ্য করা, (৩) দেব-দেবতার মাহাত্ম্যসূচক সাহিত্যের বদলে সরাসরি নিপীড়িত মানুষের জীবনযন্ত্রণা নিয়ে সাহিত্য সৃজন করা, (৪) ঈশ্বর নয়, মানুষ থাকবে লেখার কেন্দ্রে, (৫) পরকাল নয়, ইহকাল হবে কলমের বিচরণভূমি, (৬) প্রাতিষ্ঠানিক যে কোনো ধর্মচেতনার সঙ্গে আপসহীন হবে দলিত সাহিত্য, (৭) দলিত সাহিত্যের স্রষ্টারা হবেন অকুতোভয়, (৮) ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির বদলে লোকায়ত সংস্কৃতি ধারকবাহক হবে দলিত সাহিত্য, (৯) দলিত সাহিত্যের উপন্যাস-গল্পের নায়ক নায়িকারা হবেন দলিত সমাজের নরনারী, (১০) দলিত মনীষীদের পুজো দেবার পরিবর্তে তাঁদের জীবন, সংগ্রাম ও আদর্শ থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উৎসাহ দেবে দলিত সাহিত্য। কারণ, ব্রাহ্মণ্যবাদী সাহিত্য বিভাজনের সাহিত্য আর দলিত সাহিত্য সব বিভাজনকে ভেঙে সকলকে একাসনে বসানোর সাহিত্য। ইত্যাদি এইসব বৈশিষ্ট্যজনিত কারণেই দলিত সাহিত্যের নান্দনিকতা সর্বজনবিদিত। দেশের গণ্ডী অতিক্রমণ করে বহির্বিশ্বেও দলিত সাহিত্য তার নান্দনিকতার জন্য যথেষ্ট সমাদৃত।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, দলিত সাহিত্যকে মান্যতা দিতে চাইছেন না অনেকেই। এদের মধ্যে দুটো ভাগ। প্রথম ভাগে অবশ্যই রয়েছেন প্রচলিত ধারার সাহিত্যিকরা। এঁরা বিরোধিতা করবেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। কারণ, শ্রেণিগত অবস্থানে তাঁরা ব্রাহ্মণ্যবাদী। তাঁরা মনে করেন, নিম্নবর্গের মানুষের সাহিত্য সৃজন করার মেধা নেই। তাছাড়া তাঁরা ভীতসন্ত্রস্ত এই ভেবে যে, দলিত সাহিত্য যেহেতু বর্ণবাদ ধ্বংস করতে চায়, সুতরাং, আমাদের একাধিপত্য কমে যাবে। সামাজিক মর্যাদা কমে যাবে। ফলে লক্ষ করা যায়, হিন্দুধর্মের উঁচু বর্ণের লেখকেরা কলমে মানবিক হলেও বাস্তব জীবনাচরণে এঁরা ঘোরতর দলিত বিরোধী। তাই, বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে উচ্চ বর্ণের লেখকদের প্রকাশ্যে কোনো আন্দোলন নেই। আছে কেবল দলিতদের প্রতি করুণা। কিন্তু তাঁরা বুঝতে চান না যে, দলিতরা করুণা চায় না। দলিতরা চায় অধিকার, আত্মসম্মান, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়। এটা তাঁরা লড়াই করেই আদায় করতে চায়। সমতাবিধানকে আটকে রাখতেই মনুবাদীরা দলিত সাহিত্যের বিরোধী। দ্বিতীয় ভাগে আছেন দলিতদের একাংশ। তাঁদের ব্রাহ্মণ্যবাদ বিরোধিতা নিয়ে প্রশ্ন নেই। অভিযোগ হচ্ছে ‘ দলিত’ শব্দটি গ্রহণ করায়। অর্থাৎ, তাঁরা বলতে চান——–আমরা দলিত হতে যাবো কেন? বরং,দলিত শব্দের পরিবর্তে অন্য একটি নাম ব্যবহার করলে ভালো হতো। দলিতবন্ধুরা বুঝতে চান না যে, দলিত কোনো জাতিবাচক শব্দ নয়। এটা একটি প্রতীকী শব্দ। এটি একটি আন্দোলনের নাম। তাছাড়া ‘দলিত’ শব্দ ব্যবহার বাতিল করে অন্য শব্দবন্ধে বিষয়টি আবদ্ধ করলেই কি দলিতগন্ধ নির্মূল হবে? দলিত নামে আপত্তি থাকলেও অনেক হীনবাচক শব্দ ও অভিধায় বিশেষ আপত্তি নেই নিম্নবর্গীয়দের। আসল সত্য হচ্ছে, দলিত সাহিত্যকে অগ্রসর হতে না দেবার জন্য মনুবাদীরা দলিতদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে চায়। এবং এই কারণে দলিতদের উসকে দিচ্ছে নামকরণের কোষ্ঠকাঠিন্যতায়। যাতে আন্দোলনটি পথ হারায়।
দলিত সাহিত্য নিয়ে আপত্তি থাকলে, আপত্তি থাকার কথা এইসব সাহিত্য নিয়েও ———–
‘প্রাচীন সাহিত্য’, ‘মধ্যযুগের সাহিত্য’, ‘আধুনিক সাহিত্য’, আনুনিকোত্তর সাহিত্য, মঙ্গল সাহিত্য, বৈষ্ণব সাহিত্য, পদাবলী সাহিত্য, চৈতন্যপূর্ব সাহিত্য, চৈতন্যত্তোর সাহিত্য, রবীন্দ্র সাহিত্য, প্রগতি সাহিত্য, মার্কসবাদী সাহিত্য, কৃষ্ণ সাহিত্য, বিজ্ঞান সাহিত্য, বাংলাদেশের বাংলা সাহিত্য, পশ্চিমবঙ্গের বাংলা সাহিত্য, প্রতিবেশী বাংলা সাহিত্য, দেশভাগের সাহিত্য, রোসাঙ রাজসভার সাহিত্য, উত্তরবঙ্গের সাহিত্য ইত্যাদি। এরপর আছে কবিতা -উপন্যাস-গল্পের কতরকম ভাগ। তাহলে এত ভাগাভাগি করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য পড়াবার দরকার কী? এককথায় সবকিছু বাদ দিয়ে ‘সাহিত্য’ পদবাচ্য বলে পড়ালেই তো চলে। এইসব নিয়ে তো কেউ কোনো কথা বলেন না। আসলে এসব ভাগ বাটোয়ারা বা নামকরণগুলো উচ্চ বর্ণের গবেষকদের দেওয়া, তাই আপত্তি ওঠেনি। পক্ষান্তরে দলিত সাহিত্য নামকরণ দলিতদের দেওয়া এবং দলিতরা নিজেদের কলমে নিজেদের কথা বলছেন বলে যতসব আপত্তির কারণ।
তাহলে দলিত সাহিত্যের নান্দনিকতার গুরুত্ব মেইন স্ট্রীমের সাহিত্য থেকে ঠিক কোথায়? মেইন স্ট্রীমের লেখকেরা প্রায় সবাই যেহেতু উচ্চ বর্ণের, তাই দলিতদের কথা তাদের কলমে থাকলেও এই গোত্রের লেখকদের বর্ণ নির্যাতনের শিকার হতে হয় না বলে গভীর অভিজ্ঞতা কম। অন্যদিকে যেসব লেখকেরা বর্ণ বৈষম্যের গ্লানি নিয়ে জন্মান প্রতি মুহূর্তে তাদের জীবন অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণই আলাদা। ফলে দলিত লেখকেরা যেভাবে তাঁদের কথা তাঁদের কলমে ব্যক্ত করতে পারবেন, তা অন্যেরা কী করে পারবেন? এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় প্রগতি সাহিত্যের কথা। এত উন্নত যার আদর্শ, তবু প্রগতি সাহিত্য তেমন কোনো কাজে এলো না এই ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারতে। প্রগতি সাহিত্য তার দায় মেটালে আজ দলিত সাহিত্যের জন্মই হয়তো হতো না হয়তো। অত্যন্ত বেদনার প্রগতি সাহিত্যও ব্যর্থ। কারণ, এই সাহিত্যের উপাসকরা ধর্মান্ধ ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু ভেতরে ভেতরে উচ্চ বর্ণের লেখকেরা ছিলেন বর্ণান্ধ। আর দলিত সাহিত্য যে কোনোরকম ধর্মান্ধতা, বর্ণান্ধতা, কুসংস্কার, জাতের নামে বজ্জাতি ইত্যাদি কিছুর ঊর্ধ্বে। দলিত সাহিত্যের নান্দনিকতা এখানেই। এ সাহিত্য দুর্বার ও মানবিক। এ সাহিত্য জাতপাতের সমর্থক নয়, বরং জাতপাতকে সমূলে উৎপাটন করতে বদ্ধপরিকর। আমাদের এখন ভেবে দেখা উচিত নামকরণ নিয়ে নয়, আসলে দলিত সাহিত্য কী বলতে চায়।
আরও পড়ুন
সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন
Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি
উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে বিতর্কে এ আর রহমান
উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন