ব্রিজভূষন সরণ সিং ও মোদী ইমেজ

উত্তরাপথ

ছবি: সংগৃহীত

কে এই ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং ? কি করে তিনি হঠাৎ খবরের শিরোনামে ? তার বিরুদ্ধে ভারতীয় রেসলারদের অভিযোগ সত্বেও কেন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছেনা ? বিরোধী দলগুলি এই ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করছে তবু সরকার চুপ ?  এটা কি মোদী ইমেজে ধাক্কা নয় ? না কি ২০২৪ এর রাজনীতির বাধ্য বাধ্যকতা ?

প্রথমে আসা যাক ব্রিজভূষন সরণ সিং প্রসঙ্গে। উত্তরপ্রদেশের বিজেপির বাহুবলী নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা, কায়সারগঞ্জ এবং বলরামপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে ছয়বারের সাংসদ সিং বর্তমানে কায়সারগঞ্জ থেকে সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সেইসাথে ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (ডব্লিউএফআই) প্রধান এই ব্রিজ ভূষণ। তিনি রাজপুত সম্প্রদায়ের লোক। উত্তর প্রদেশের গোন্ডা, কায়সারগঞ্জ, বলরামপুর, বস্তী, শ্রাবন্তী, অযোধ্যা সহ প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকায় তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী । উত্তর প্রদেশে তার ৫০ টি স্কুল রয়েছে। আঞ্চলিক দাপটের কারণে ব্রজভূষণ রাজনৈতিকভাবে খুবই শক্তিশালী।

তার বিরুদ্ধে এদেশের মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন হয়রানির অভিযোগ  সহ পকসো আইনের ১০ ধারার অধীনে মামলা করা হয়েছে। দিল্লি পুলিশ তার বিরুদ্ধে দুটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।তাকে গ্রেপ্তারের দাবীতে ভিনেশ ফোগাট এবং সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়া সহ ভারতের শীর্ষ কুস্তিগীরদের প্রতিবাদ অব্যাহত দিল্লীর যন্তর–মন্তরে। কুস্তিগীরদের অভিযোগ ব্রিজ ভূষণকে গ্রেপ্তারের কোনও পদক্ষেপ সরকার গ্রহণ করছেনা উপরন্তু দিল্লী পুলিশ তাদের উপর অত্যাচার করছে। অন্যদিকে ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং, তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বিষয়টিকে একটি “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা” বলেছেন। ছাত্রনেতা হিসেবে রাজনীতি শুরু করা ব্রিজভূষণ শরণ সিং ৮০ দশকের শেষের দিকে বিজেপির সংস্পর্শে আসেন। এই একই সময়ে দেশে রামমন্দির আন্দোলন জোরদার হচ্ছিল।  দুই-তিন বছরের মধ্যে, সিং নিজেকে বিজেপিতে রাম ভক্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ১৯৯২ সালে বাবরি ধ্বংস মামলায় সিবিআই কর্তৃক গ্রেফতারকৃত ৪০ জন নেতার মধ্যে  এল কে আদবানি, মুরলি মনোহর যোশী সাথে ব্রিজভূষণও ছিলেন । পরে ২০২০ সালে, বিশেষ সিবিআই আদালত ব্রিজ ভূষণ সহ ৪০জন অভিযুক্তকে মুক্ত করে দেয়।এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আইপিসির চারটি গুরুতর এবং সাতটি কম গুরুতর ধারার অধীনে মামলা নথিভুক্ত রয়েছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


ছোট গল্প - অসমাপ্ত

অসীম পাঠকঃ প্রথম পর্ব- লাল মাটির রাস্তা পেরিয়ে , এবড়ো খেবড়ো  কালো পিচ ঢাকা রাস্তার পাশেই শিরীষ সেগুন আর পাইন গাছে ঢাকা বাঁকুড়া জেলার ঐতিহ্য মন্ডিত শালডিহা কলেজ । পাশাপাশি বেশ কয়কটা গ্রাম । ছায়া সুশীতল কলেজ বিল্ডিং পেরিয়ে তিনটে বয়েজ হোষ্টেলে। দিনরাত হৈ হুল্লোড় লেগেই থাকে সেখানে।  টিনের চালের কলেজ ক্যান্টিনকে বাঁদিকে রেখে তিনটি হোষ্টেলকে সারিবদ্ধভাবে দুপাশে রেখে বিরাট এক খেলার মাঠ। এক পাশে পুকুর , অন্য পাশে অড়র কলাই চাষের জমি , তারি মাঝে সরু মেঠো রাস্তা চলে গেছে একটি গ্রামের দিকে। নয় এর শেষ দশকের এক আলোকোজ্জ্বল সকাল। কলেজ ময়দানে সকাল থেকেই মাইকে বাজছে সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত "কুছকুছ হোতা হ্যায় " মুভির হিট গান .....  সবুজ মাঠের বুক চিরে সাদা লাইনের পাশে রঙ বেরঙের পতাকা ।  চারপাশে কৌতুহলী  জনতা । ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি , হাল্কা শীত থেকে গেছে, এলাকার গর্বের প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা । মাইকে ঘোষণা হলো , পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সাদা পায়রা উড়িয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন।  টেন্টের পাশে বেশ কিছু  চেয়ার পাতা । উঠে দাঁড়ালেন সাদা ধুতি পাঞ্জাবী পরিহিত কালো ফ্রেমের চশমায় সৌম্যকান্তি অধ্যক্ষ মহাশয় । পাশে সাদা টিশার্টের উপর উলেন শার্ট কালো প্যান্ট স্কাই কালারের কেডস পরা কালো সানগ্লাস চোখে পাতলা ছিপছিপে কোঁকড়া চুলের শ্যামবর্ণ তরুণ তুর্কী ছাত্র নেতা , কলেজের জি এস  সুব্রত .... অধ্যক্ষ আর জি এস এমনিতে আদায়  কাঁচকলায়, সুব্রত বোঝে আন্দোলন আর বিপ্লব। বাংলায় তখন বাম জমানা । বাম বিরোধী আন্দোলনের এক দৃপ্ত প্রতিবাদ সুব্রতর চোখে মুখে। তার আগুন ঝরা বক্তৃতায়  শাসক দলের ঘুম উড়ে যাওয়া অবস্থা। কলেজের সবার কাছে প্রিয়পাত্র এবং  রাজ্যের সাংস্কৃতি অঙ্গনে পরিচিত মুখ। অভিজাত জমিদার  বাড়ির ছেলে। .....বিস্তারিত পড়ুন

এক নজরে অতীত ও বর্তমানের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়

উত্তরাপথঃ নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, বর্তমান ভারতের বিহারে অবস্থিত, খ্রিস্টীয় ৫ ম থেকে ১২ শতক পর্যন্ত বৌদ্ধ শিক্ষা ও বৃত্তির একটি বিখ্যাত কেন্দ্র ছিল। ৪৫০ খ্রিস্টাব্দে গুপ্ত সম্রাট কুমার গুপ্ত প্রথম দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।  পরবর্তীতে এটি হর্ষবর্ধন ও পাল শাসকদেরও পৃষ্ঠপোষকতা পায়।নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল এশিয়ার উচ্চশিক্ষার প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি।গত ১৯ জুন রাজগীরে অবস্থিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।আজও নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়কে, ভারত এবং বিশ্বের জন্য একটি ঐতিহ্য বলে মনে করা হয়। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল খ্রিস্টীয় ৫ম শতাব্দীতে, একজন ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ রাজা কুমারগুপ্ত প্রথমের রাজত্বকালে। বিশ্ববিদ্যালয়টি বৌদ্ধধর্মের অধ্যয়ন ও প্রসারের পাশাপাশি যুক্তিবিদ্যা, ব্যাকরণ এবং ওষুধের মতো অন্যান্য বিষয়ের চর্চার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় চীন, তিব্বত, শ্রীলঙ্কা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সহ সমগ্র এশিয়া থেকে ছাত্র এবং পণ্ডিতদের আকর্ষণ করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ বিশিষ্ট পণ্ডিতদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল যারা বৌদ্ধ দর্শন, ধ্যান এবং যোগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। পূর্বের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বৌদ্ধিক কার্যকলাপের একটি কেন্দ্র, যেখানে পণ্ডিতরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে বৌদ্ধধর্ম, জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত, চিকিৎসা এবং দর্শন সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর ৯ মিলিয়নেরও বেশি পাণ্ডুলিপি ছিল বলে ঐতিহাসিক বিবরণ থেকে জানা যায়।সেইসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পণ্ডিতরা বৌদ্ধ দর্শনের বিকাশে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন ,বিশেষ করে মধ্যমাকা (মধ্যম পথ) এবং জ্ঞানবাদ (শুধুমাত্র-চেতনা) তত্ত্ব প্রচারের ক্ষেত্রে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সংক্রামক রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার সহজ অথচ কার্যকর কৌশল

উত্তরাপথঃ সংক্রামক রোগগুলি বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিদের জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয়, যা অপরিমেয় দুর্ভোগ, অক্ষমতা এবং এমনকি মৃত্যু ঘটায়। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (WHO) অনুসারে, সংক্রামক রোগ প্রতি বছর ১৩ মিলিয়নেরও বেশি মৃত্যুর জন্য দায়ী, যা সমস্ত বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর প্রায় ২২%। ভাল খবর হল সংক্রামক রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার সহজ এবং কার্যকর উপায় রয়েছে। এই নিবন্ধে, আমরা আপনাকে সংক্রামক রোগ থেকে নিরাপদ রাখতে টিকা, স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন এবং জীবনধারা পরিবর্তনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করব। টিকাকরণ: প্রতিরক্ষার প্রথম ধাপ টিকা সংক্রামক রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়গুলির মধ্যে একটি। ভ্যাকসিনগুলি আপনার শরীরে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার একটি ছোট, ক্ষতিকারক অংশ প্রবর্তন করে কাজ করে, যা আপনার  ইমিউন সিস্টেমকে আরও উন্নত করে, যা ভবিষ্যতে আপনি এর সংস্পর্শে এলে আপনার শরীরকে রোগ চিনতে এবং প্রতিরোধ করতে দেয়। সবচেয়ে সাধারণ কিছু টিকা অন্তর্ভুক্ত:  ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন: মৌসুমী ফ্লু থেকে রক্ষা করে  হাম, মাম্পস এবং রুবেলা (এমএমআর) টিকা: হাম, মাম্পস এবং রুবেলা থেকে রক্ষা করে  হেপাটাইটিস এ এবং বি ভ্যাকসিন: হেপাটাইটিস এ এবং বি থেকে রক্ষা করেএইচপিভি ভ্যাকসিন: হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) থেকে রক্ষা করে, যা যৌনাঙ্গে আঁচিল এবং সার্ভিকাল ক্যান্সারের কারণ হতে পারে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর দ্বারা নির্ধারিত প্রস্তাবিত সময়সূচী অনুযায়ী টিকা নেওয়া অপরিহার্য। ভ্যাকসিনগুলি কেবল ব্যক্তিদের অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষা করে না, তবে তারা সম্প্রদায়ে রোগের বিস্তার রোধ করতেও সহায়তা করে। স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন: রোগের বিস্তার রোধ করার মূল চাবিকাঠি সংক্রামক রোগের বিস্তার রোধে ভাল স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকরী অভ্যাস গ্রহণ করা হল: .....বিস্তারিত পড়ুন

খাদ্য প্যাকেজিং উপকরণে Per - এবং polyfluoroalkyl সাবস্ট্যান্সের উদ্বেগজনক উপস্থিতি

উত্তরাপথঃ Per- এবং polyfluoroalkyl (পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল ) সাবস্ট্যান্স (PFAS), যা ("forever chemicals") বা "চিরকালের রাসায়নিক" নামেও পরিচিত।এটি পরিবেশে তাদের অবস্থান এবং সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বজুড়ে খাদ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহৃত ৬৮টি ("forever chemicals")'চিরকালের রাসায়নিক' উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন। এই বিষয়ে, জুরিখ-ভিত্তিক ফুড প্যাকেজিং ফোরাম ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত পরিবেশ বিজ্ঞানীদের দ্বারা একটি নতুন সমীক্ষা চালানো হয়েছে, যার ফলাফল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (Environmental Science & Technology, )জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। প্রসঙ্গত পার(Per)এন্ডেড পলি-ফ্লুরো অ্যালকাইল(polyfluoroalkyl )সাবস্টেন্সেস (PFAS) মানবসৃষ্ট রাসায়নিক যৌগগুলির একটি গ্রুপ, যা পরিবেশে খুব ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। এই কারণে, এই রাসায়নিকগুলি খুব দীর্ঘ সময় ধরে পরিবেশে থাকে এই কারণে এই কেমিক্যালটি 'ফরএভার কেমিক্যালস' নামেও পরিচিত। আজ অবধি,১২,০০০ টিরও বেশি বিভিন্ন ধরণের PFAS এর অস্তিত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। এই রাসায়নিকগুলি পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি দীর্ঘ সময় ধরে এগুলির সংস্পর্শে থাকলে ক্যান্সার হতে পারে। PFAS হল কৃত্রিম রাসায়নিকের একটি গ্রুপ যার মধ্যে জল প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যার কারণে এর ব্যবহার কয়েক দশক আগে শুরু হয়েছিল। এগুলি সাধারণত ননস্টিক কুকওয়্যার, খাদ্য প্যাকেজিং, ইলেকট্রনিক্স, অগ্নিনির্বাপক ফোম, কার্পেট, পোশাক, প্রসাধনীর মতো পণ্যগুলিতে ব্যবহৃত হয়।সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, খাদ্য প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে PFAS-এর ব্যবহার বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে, .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top