সময়

অনসূয়া পাঠক

একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের জেনারেল ম্যানেজার সবুজ বোস। রাজারহাট নিউটাউনের একটি বহুতল আবাসনে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সুখী জীবন তার। কাজের বাইরে উনার নেশা বলতে নামীদামী পুরানো মডেলের হাত ঘড়ি কালেকশন। এই বিষয়ে তাঁর সংগ্রহশালাটি রীতিমতো চমকে দেবার মতো। তিনি যে বিদেশী মডেলের রিস্ট ওয়াচটি সবচেয়ে বেশী ব্যাবহার করেন সেটা হঠাৎই একদিন খারাপ হয়ে যাওয়াতে পার্শ্ববর্তী করিম চাচার ঘড়ির দোকানে তিনি যান। এবং আশ্চর্যজনক ভাবে দোকানের শো কেসে তাঁর নজর আটকে যায় জার্মানি মডেলের একটি পুরানো ঘড়ির দিকে। এই ঘড়ি দেখে সবুজ বোসের অনেক পুরানো স্মৃতি মাথাচাড়া দেয়।
ছোটোবেলায় একটা ম্যাগাজিনে এরকম একটা ঘড়ির ছবি দেখে তার এক বন্ধু তাকে বলেছিলো যে বড়ো হলে এরকমই একটা ঘড়ি সে তাকে উপহার দেবে। দোকানে ঘড়িটা দেখার পর সবুজের ইচ্ছা হলো সেটা কিনে ফেলতে এবং করিম চাচাকে সে দুম করে জিজ্ঞেস করেই ফেললো ঘড়িটার দাম কতো? করিম চাচা বললেন, কতো আর দাম বলবো, বছর দশেক আগে এক ভদ্রলোক ঘড়িটা সারার জন্য দিয়েছিলেন তারপর সে আর ফিরেও এমুখো হয়নি, তবে এন্টিক ঘড়ি পাঁচ হাজার পেলে দিয়ে দেবো। কথা না বাড়িয়ে ঘড়িটা কিনে সবুজ বাড়ি আসে।
বাড়ি ফিরে ডিনার সেরে স্টাডিরুমে বসতেই সবুজের মোবোইলে গ্রামের বাড়ি থেকে সবুজের কাকার ফোন আসে। একটা হাইওয়ে রাস্তা হচ্ছে, যে কারনে রাস্তার পার্শ্ববর্তী সব জমি সরকার কিনতে চাইছে। অতয়েব সবুজকে গ্রামের বাড়ি আসতে হবে কয়েকদিনের জন্য। গ্রামের বাড়ির কথা শুনতেই নস্টালজিক হয়ে ওঠে সবুজ বোস। কতোবছর সেখানে যাওয়া হয়নি। বাবার বদলীর চাকরি প্রমোশন পেয়ে শহর কোলকাতায় আসার পর আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। পড়াশোনা চাকরি বিয়ে সংসার সব সামলাতে সামলাতে সময় পেরিয়েছে কুড়ি বছর। ইতিমধ্যে বাবা মা ও চলে গেছেন পরপারে।

সবুজ স্ত্রী রাইমাকে খবরটা দিয়েই ব্যাগ গোছাতে শুরু করে। আলমারি থেকে জমির দলিল গুলো বের করার সময় সবুজ তার ছোটবেলার নীল ডাইরিটা খুঁজে পায়। অনেক স্মৃতিমাখা সময়ের ধূলো জমে যাওয়া একটা ডাইরি। ডাইরিটা খুলতেই সে তার ভেতরে অনেক পুরানো ছবি খুঁজে পায়। একটা ছবির দিকে দীর্ঘসময় তাকিয়ে থাকে সবুজ। হাফপ্যান্ট পরা দুই কিশোর, সে আর তার প্রিয় বন্ধু আকাশ। কে জানে আকাশ আজ কোথায়। আর একটা ছবিতে দেখে রেলস্টেশন থেকে তার গ্রামে মাওয়ার লালমাটির রাস্তা, এটা তার বাবার তোলা। গ্রামের বাড়ি থেকে আসার আগের দিন তারা খুব ঘুরেছিলো, সেদিনের তোলা। ছবির উল্টোপিঠে জ্বলজ্বল করছে ছবির তারিখ ডিসেম্বর বাইশ দু হাজার দুই সাল।
পরদিন ভোরের ট্রেনে গ্রামের বাড়ি রওনা দেয় সবুজ। ট্রেনে বসে এলোমেলো ভাবনার মাঝে কালকের কেনা পুরানো জার্মান ঘড়িটা দেখতে থাকে সবুজ। ঘড়ির সময় তারিখ ঘোরাতে ঘোরাতে তার হঠাৎই সেট হয়ে যায়, বাইশ বারো দুহাজার দুই। চমকে ওঠে সবুজ, ঘড়ির ডায়াল থেকে এক ধরনের চোখ ধাঁধানো বেগুনি রশ্মি বেরিয়ে আসে।
এরপর যখন সবুজ চোখ খোলে অবাক হয়ে দেখে সে দাঁড়িয়ে আছে সেই রেলস্টেশনের পাশে লাল রাস্তায়। আকস্মিক এই ঘটনায় সবুজ কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কিছু বুঝতে না পেরে হাঁটতে শুরু করে গ্রামের দিকে। সবুজ অবাক হয়ে যায় যেনো কুড়ি বছরে একটুও বদলায়নি তার গ্রামের রাস্তা। পুরানো লোকদের সবাই যেনো তার নজরে আসে, এমনকি গঞ্জের খাঁদু খুড়োর খড়ের চাল দেওয়া মুদির দোকানও সে দেখতে পায়। পাশেই হরি মোড়ল চা বিক্রি করছে, অবাক হয় সবুজ। খাঁদু খুড়ো হরি মোড়ল এরা তো বহুদিন আগেই মারা গেছে। আর একটু গিয়ে দেখে ঝাঁকড়া মাথাওয়ালা তেঁতুল গাছের নীচে এক চিলতে খেলার মাঠের পাশে বড়ো পাথরের উপর বসে দুই কিশোর গল্প করছে। কেমন যেনো চেনা মনে হয় দুজনকে। কাছে এসে দেখে একি তার কৈশোরের বন্ধু আকাশ আর তার নিজের ছেলেবেলা। চমকে ওঠে সবুজ তাহলে কি সে টাইম মেশিনে সময়ের পেছনে চলে এসেছে। আরে তাইতো কালকের কেনা সেই জার্মান ঘড়িটা কি আসলেই জাদু ঘড়ি? সবুজ শিউরে ওঠে। সেই সাথে তার সামনে এক নতুন রহস্য উন্মোচনের নেশা জাগে কুড়ি বছর আগের এক অজানা অধ্যায় জানতে উদগ্রীব হয় সবুজ।
মনে পড়ে কুড়ি বছর আগে তার মামা যিনি জার্মানে ঘড়ি কোম্পানীতে কাজ করতেন তিনি সবুজের জন্যে সিলভার চেইন দেওয়া একটা ঘড়ি আর একটা বিদেশী দামী ঘড়ির ক্যাটালগ গিফট করেছিলেন। কোলকাতা যাবার আগের দিন আকাশ সবুজের হাত থেকে ঘড়িটা দেখতে দেখতে হঠাৎই হাত ফসকে ঘড়িটা নীচে পড়ে যায়, আর সুন্দর স্বচ্ছ কাঁচের ডায়ালটা ভেঙে যায়। সবুজের খুব মন খারাপ হয়, কিন্তু আকাশ বলে ভাবিস না বন্ধু, কাল ট্রেনে ওঠার আগে আমি ঠিক ঘড়িটা সারিয়ে তোর হাতে পরিয়ে দেবো।

কিন্তু সেদিন ট্রেন আসার আগে প্লাটফর্মে অনেক্ষন অপেক্ষা করেও যখন আকাশের দেখা পায়নি সবুজ তখন একপ্রকার হতাশ হয়ে মিথ্যে ভাবনা নিয়ে ট্রেনে ওঠে যে আকাশ বোধহয় ঘড়িটা তাকে দিতে চায়নি বলেই এলোনা। আজ তার জানতে ইচ্ছে হলো যে সত্যিই কি আকাশ ঘড়িটা নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলো ? এসব ভাবতে ভাবতেই গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে যায় আকাশ। দরজা খুলতেই দেখে সব আগের মতো পরিপাটি, বাবা মা মামা সবাই গল্পে মশগুল।
কয়েকফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে আকাশের চোখে। কতোবছরের ফেলে আসা সোনালী অতীত তার চোখের সামনে। ঝাপসা চোখে নিজের ছোট্ট রুমটাতে যায় , দেখে দুই কিশোর সেখানে গল্প করছে। তার চোখের সামনেই কুড়ি বছর আগের দৃশ্য।
ঘড়িটা পড়ে যায় আকাশের হাত থেকে। এরপর সবুজ জানতে চায় সত্যিই কি আকাশ ঘড়িটা সারতে দিয়েছিলো, এবং স্টেশনে গিয়েছিলো কিনা। আকাশ সবুজের বাড়ি থেকে বেরুলে তাকে অনুসরন করে সবুজ। দেখে আকাশ সাইকেলে দ্রুত প্যাডেল করে গঞ্জের সঝল সাহার দোকানে যায়। সজল সাহা আকাশকে বলে কাল সকালে পাবে, সময় লাগবে সারতে এসব বিদেশী ঘড়ি। আকাশ বলে আমি ভোরে আসবো কাকা, একদম ভোরেই আমার চাই। সজল সাহা বলে আচ্ছা।
পরদিন খুব ভোরে আকাশ সজল সাহার দোকানে হাজির। সবুজ ও কি হয় দেখার অপেক্ষায় দোকোনের অদূরে বকুল গাছের নীচ থেকে দেখতে থাকে।
দেখে আকাশ হাজির অথচ সজল সাহার পাত্তা নেই। অনেক ডাকাডাকি করে আকাশ দোকান খোলায় ততক্ষণে ট্রেন ছাড়বার সময় হয়ে গেছে। আকাশ যখন ঘড়ি নিয়ে স্টেশনে পৌঁছায় তখন ট্রেন কোলকাতার পথে পাড়ি দিয়েছে। সবুজ যেনো আকাশকে কিছু বলতে চায়, এমন সময়ে ট্রেনের হুইসেল যাত্রীদের কোলাহলে সে সম্বিত ফিরে পায়। এই তো সে ট্রেনের কামরায় বসে আছে। তার গ্রাম সংলগ্ন স্টেশনে ট্রেন থেমেছে। এবার নামতে হবে , কেমন যেনো আচ্ছন্নতা। সবুজ বুঝতে পারেনা যা সে দেখলো তাকি নিছকই কল্পনা ?
স্টেশনের বাইরে এসে সবুজ দেখে গ্রামে যাবার রাস্তা এখন কালো পিচ। অনেক দোকান বড়ো বাজার বসে গেছে। সময়ের প্রবাহে পরিবর্তন ঘটেছে সবকিছুর। একটু এগিয়ে তার নজরে আসে আকাশের কাকা ট্রাক্টর নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে, বোধহয় জমিতে ধান লাগানোর কাজ চলছে। আকাশের কাকাকে দেখে থমকে দাঁড়ায় সবুজ, বলে হরেন কাকা কেমন আছো? আমি সবুজ। হরেন কাকা একটু তাকায় সবুজের দিকে তারপর বলে কতোদিন পর এলিরে তুই, অনেক বদলে গেছিস। সবুজ প্রনাম করে হরেন কাকাকে। হরেন কাকা বলে চল আগে আমাদের বাড়িতে তোর পছন্দের দই মুড়ি খেয়ে তারপর নিজের বাড়িতে যাবি।

ট্রাক্টরে উঠে বসে দুজনে। সবুজ দূরে মাঠের দিকে তাকায়, দেখে নীশ আকাশ আর সবুজ মাঠ এক হয়ে দিগন্ত রেখায় মিশেছে। সবুজ বলে , এখন আকাশ কোথায় আছে হরেন কাকা। হরেন কাকার চোখের কোনে জল। নিজেকে সামলে তিনি বলেন, আকাশ অনেকদিন ই নিরুদ্দেশ তা প্রায় দশবছর , তার বাবাও গত হয়েছেন বছর পাঁচেক, ওর মা ছোটবোন রমার কাছে বর্ধমানের মেমারিতে থাকেন।
দুজনেই বেশ কিছু সময় চুপচাপ। সবুজ মনের কষ্ট নিয়ে বলে, নিরুদ্দেশ কি করে হলো আকাশ? হরেন কাকা বলেন, দশ বছর আগে একটা বড়ো কোম্পানতে ভালো চাকরি পেয়ে সেই যে গেলো আর কোন খবর নেই। শুধু প্রথম দুমাসের বেতনের টাকার মানি অর্ডার এসেছিলো বাড়িতে সাথে চিঠি সে বেশ ভালো আছে। আর কোন খবর নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আর কোন খবর মেলেনি।
কথা বলতে বলতেই হরেন কাকার বাড়িতে এসে যায় তারা। চোখে জলের ঝাপটা নিয়ে সবুজ বলে হরেন কাকা আকাশের রুমটা একটু দেখাবে? হরেন কাকা বলে হ্যাঁ অবশ্যই চলো চাবি তো আমার কাছেই। চাবি খুলতেই আকাশের রুমে ঢোকে সবুজ, দেখে চারদিকে পুরু ধূলোর আস্তরন। অথচ তার পড়ার টেবিলের উপর কাঠের বাক্সটা কেমন যেনো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। সবুজ এগিয়ে যায় কাঠের বাক্সটার দিকে, বাক্সটা খুলতেই তার নজরে আসে একটা চিঠি আর তার নীচে সবুজ রঙের কাপড়ে মোড়া তার সেই জার্মান মডেলের সিলভার চেইন দেওয়া ঘড়িটা। এরপর চিঠিটা খোলে সবুজ, তাতে লেখা ….

প্রিয় সবুজ,
জানিনা তুই কোনোদিন এ চিঠি পাবি কিনা, বলেছিলি কোলকাতায় যাচ্ছিস, কোথায় তা তো জানতাম না। তাই তোকে আর চিঠি লেখা হয়নি। দেখ তোর ঘড়িটা আমি ঠিক করে দিয়েছি। আর আর তোর মামার আনা ক্যাটালগে তোর স্বপ্নের যে ঘড়িটার ছবি আমাকে দেখিয়েছিলি আমি একদিন ঠিক ওরকম ই একটা ঘড়ি তোর কাছে পৌছে দেবো ।
ভালো থাকিস।
ইতি
আকাশ

চিঠিটা পড়ার পর সবুজের পরে থাকা সেই জাদু হাতঘড়ির উপর দু ফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ে। সবুজ ঘড়িটা খুলে রুমাল দিয়ে মুছতে চায়, দেখে উল্টোপিঠে সরু করে লেখা সবুজ আকাশ। চমকে আঠে আবার ও সবুজ। একি তাহলে এই ঘড়ি করিম চাচার কাছে সারতে্ দিয়েছিলো আকাশ নিজে …. ঘড়ি আর চিঠিটা নিয়ে ঝাপসা চোখে বাইরে আসে সবুজ। সূর্য তখন মধ্য গগনে। দূরে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখে নীল আকাশ আর সবুজ মাটির মিতালিতে আনন্দ বিষাদে রাগে অভিমানে ভালোবাসা খুনসুটিতে ভরা তাদের বন্ধুত্বের গল্প যার কোন শেষ নেই। যা সময়ের কাল স্রোতে অমলিন।।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top