জাপান যোগে তিন বাঙালি বীর

ঋতুপর্ণা চক্রবর্তী, টোকিও, জাপান:

তামা সমাধিক্ষেত্রে রাসবিহারী বসুর স্মৃতিসৌধ, জাপান

দৃশ্য ১ঃ

২৩ ডিসেম্বর, ১৯১২ সাল

দিল্লির চাঁদনিচক এলাকার জনবহুল পথ সেজে উঠেছে ভারতের রাজধানী কোলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত হওয়ার আনন্দে। পথের দু-ধারে মানুষ জড়ো হয়ে সবিস্ময়ে দেখছে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা চলেছে তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জকে স্বাগত জানাতে। এমন সময় ভাইসরয়ের হাওদা লক্ষ্য করে উড়ে গেল এক বোমা। বোমায় শুধু জখম হলেন না তৎকালীন সস্ত্রীক ভাইসরয় সেই সাথে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত নড়ে উঠল এক ক্ষুরধার বুদ্ধিসম্পন্ন বাঙালির নেতৃত্বে ঘটে যাওয়া বহুচর্চিত দিল্লি-লাহোর ষড়যন্ত্রের ঘটনায়।

যার মাথার দাম সেই সময়ে উঠেছিল লাখ টাকা, যাকে তিন বছর তন্ন তন্ন করে হন্যে হয়ে খুঁজেছে পুলিশ, কিন্তু সেই দামাল বিপ্লবীই ছদ্মবেশ ধরে এক চিফ পুলিশ কমিশনারের ঠিক উল্টো দিকে বসে রেলপথে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গা ঢাকা দেন।

১২ই মে, ১৯১৫ সাল

গদর বিপ্লবের মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটিশদের আরও বিপাকে ফেলতে ভারতের এই মুক্তি সংগ্রামী বাঘা যতীন সহ আরও অনেক বীর সংগ্রামীদের সাথে একযোগে চেষ্টা করলেন । বিপ্লব ব্যর্থ হলেও এই বিপ্লবী হয়ে উঠল ইংরেজদের ভয়ের কারন । তবু শত চেষ্টার পরও ধরা দিলেন না তিনি, ১২ই মে লুকিয়ে পৌঁছে গেলেন ভারত থেকে অনেক দূরের দেশ জাপানে ।

কিন্তু তার প্রভাব এতটাই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের উপর পড়েছিল যে তারা সুদূর জাপানে তাকে ট্র্যাক করার জন্য একটি বেসরকারি জাপানি গোয়েন্দা সংস্থাকে নিয়োগ করেছিল। সেই কারণে জাপানেও তাকে গা ঢাকা দিয়ে থাকতে হয়েছে বহুদিন। কিন্তু নতুন দেশে নতুন সংগ্রামের সম্মুখীন হয়েও তিনি নিজের দেশের জন্য লড়াই ছাড়েন নি।

দৃশ্য ২ঃ

১৭ই জানুয়ারী, ১৯৪১ সাল

ঝাড়খণ্ডের গোমো স্টেশনের তিন নম্বর প্লাটফর্ম থেকে রাত ১ টার কালকা মেল ধরে একজন পাঠান পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

২৬ শে জানুয়ারী, ১৯৪১ সাল

কলকাতার এলগিন রোডের বাড়ি তল্লাসি করে পুলিশ জানতে পারল তাদের নজরবন্দী আসামী দিন দশেক আগেই তাদের চোখের ধুলো দিয়ে সামনে থেকে পালিয়ে যান তার প্রিয় গাড়িতে চড়ে। আজও ভারতবর্ষের ইতিহাসের পাতায় যা ‘দি গ্রেট এস্কেপ’ নামে পরিচিত।

ভারতের এই মহান বিপ্লবী দেশকে বিদেশী শাসকের হাত থেকে মুক্ত করতে সেই রাতে মহম্মদ জিয়াউদ্দিন ছদ্মবেশে পেশোয়ার থেকে আফগানিস্থান হয়ে দেশের বাইরে থেকে সাহায্য জোগাড় করতে মস্কো, জার্মানি হয়ে অবশেষে এসে পৌঁছান জাপান।

ভারতবর্ষের অন্যতম বীর সন্তান এখান থেকেই আন্দোলনের এক নতুন পর্ব শুরু করেন ।

রেনকোজি মন্দিরে নেতাজীর আবক্ষ মূর্তি, জাপান

দৃশ্য ৩ঃ

নভেম্বর, ১৯৪৮ সাল

নুরেমবার্গ ট্রায়ালের ধারাবাহিকতা অনুসরণ করেই টোকিও শহরে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ফার ইস্ট, যেখানে পরাজিত জাপানের বিচারসভা বসেছিল। রায়দানের দিন ১১ জন বিচারপতির মধ্যে যখন ১০জনই এক প্রকার জাপানকে শান্তিবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছেন, এবং কঠোরতম শাস্তির দাবী জানাতে প্রস্তুত, মাত্র একজন ভারতীয় তথা বাঙালি বিচারপতি সেই বিচারসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন “আমার বিদ্বান ভাইদের বিচার ও সিদ্ধান্তে একমত হতে না পারার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত!”

ইয়াসুকুনি মন্দিরে স্মৃতিসৌধে রাধা বিনোদ পালের স্মরণ স্তম্ভ, জাপান

***

দৃশ্যগুলোর কিছু আমাদের চেনা কিছু অচেনা। আজ আমরা স্বাধীন ভারতের নাগরিক কিন্তু এই স্বাধীনতা অর্জনের রক্তক্ষয়ী লড়াই কিংবা স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিকের মেরুদণ্ডের জোর কেমন হওয়া উচিত সেটা বুঝিয়ে দিয়ে গেছিলেন অবিস্মরণীয় কিছু ব্যক্তিত্বরা যাদের অন্যতম এই তিনজন।

তিন ভিন্ন সময়কাল, তিন ভিন্ন বাঙালি এবং তিনজনই জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছুটা সময় কাটিয়েছিলেন জাপানে। প্রথম ও দ্বিতীয় দৃশ্যের দুই বঙ্গ সন্তান যথাক্রমে রাসবিহারী বসু এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, যাদের বাংলার মানুষ তথা দেশের মানুষকে হয়তো নতুন করে চিনিয়ে দিতে হয় না । বিশেষত নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুকে, যার কর্মকাণ্ড শুনে শৈশব থেকে বড় হয়েছি আমরা সকলে।

কিন্তু রাসবিহারী বসুকে খুব কম ভারতবাসীই হয়তো চেনেন অথচ দৃশ্য ১ পাঠ করলে তার কর্ম কাণ্ডের যে সামান্য ঝলক আমরা পাই তাতে বোঝাই যাচ্ছে কি অসীম সাহসের অধিকারী ছিলেন তিনি। দেশের প্রতি নিয়জিত এই মহান সংগ্রামী পরবর্তীকালেও সুদূর জাপানে বসে চালিয়ে গিয়েছিলেন তার কাজ। পূর্ব প্রাচ্যের শক্তিশালী নেতাদের সঙ্গে যোগ স্থাপন করা থেকে শুরু করে ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেনডেন্স লিগ গঠন করা সবটুকুই করেছিলেন মনপ্রান দিয়ে। তার পরামর্শেই পরবর্তীকালে ভারতের বীরপুত্র নেতাজীকে ইন্ডিয়ান ইনডিপেনডেন্স লীগের সভাপতি এবং একইসাথে ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’ এর নেতা করা হয়। শুধু এভাবেই নয় রাসবিহারী দেশের স্বাদকে জাপানের অন্দরমহলে পৌঁছে দিয়েছিলেন। আজও তার বানানো বাঙালি কায়দায় করা আলু দিয়ে মুরগির ঝোল প্রতিদিন পরিবেশন করা হচ্ছে টোকিয়োর জনপ্রিয় নাকামুরায়া রেস্তোরাঁয় ।

নাকামুরায়া রেস্তোরাঁর মেনু, জাপান

অপরদিকে নেতাজী ভারতকে স্বাধীন করার এক নতুন দিশা ও উদ্যোগ পান এই জাপান থেকেই। বিশ্বযুদ্ধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জাপানের সাথে হাত মিলিয়ে তিনি ব্রিটেনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করতে লাগলেন । নেতাজি টোকিও থেকেই দেশবাসীর উদ্দেশ্যে রেডিও সম্প্রচারের বক্তৃতা দিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

তৃতীয় দৃশ্যে যে মানুষটির জীবনের একটি মুহূর্ত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি তাঁকে সম্ভবত খুব বেশি ভারতীয়ই চেনে না। বিস্মৃত বাঙালি বিচারক রাধা বিনোদ পালকে আমরা মনে না রাখলেও 1966 সালে জাপানের সম্রাট কর্তৃক ‘অর্ডার অফ দ্য সেক্রেড ট্রেজার ফার্স্ট ক্লাসে’ ভূষিত করা হয় তাঁকে, যা জাপানের সর্বোচ্চ সম্মানগুলির মধ্যে একটি।

১৯৪৬ সালে টোকিয়ো ট্রাইব্যুনালে রাধা বিনোদ পালকে ব্রিটিশ অধ্যুষিত ভারতের সদস্য হিসেবে পাঠানো হলেও তিনি সেখানে সব রকম ঔপনিবেশিক চাপ উপেক্ষা করে একজন বিচারক হিসেবে নিজের কাজ করেছিলেন। এই নির্ভীক মানুষটি ভালো করেই জানতেন মিত্রপক্ষের বিরুদ্ধে মতামত দিলে ফলাফল কি হতে পারে! তবু যখন বাকি দশ বিচারপতি জাপানের সেনাবাহিনী ও নেতাদের সব রকমভাবে দোষী সাব্যস্ত করে, তিনি ভিন্নমত পোষণ করেন এবং নিজের মতামতকে যুক্তিসম্মতভাবে প্রায় ১২৩৫ পাতার দলিলস্বরূপ জমা করেন।

তার বিরোধিতার মূল বক্তব্য ছিল বিজয়ীদের বিজিতের উপর রায় দেওয়া উচিত নয়। যে মিত্রপক্ষ নিজেরাই যুদ্ধাপরাধে দোষী, যুগ যুগ ধরে অন্য দেশকে উপনিবেশ বানিয়ে শোষণ করছে, অত্যাচার করছে, তারা কেমন করে জাপানের শাস্তি নির্ধারণ করতে পারে?  যুদ্ধে জাপানের জন্য বহু দেশের মানব সম্পদের ক্ষতি স্বীকার করে নিয়েও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও একই দোষে দুষ্ট বলে শাস্তির দাবি করেছিলেন, বিশেষত হিরোশিমা এবং নাগাসাকি ধ্বংসের জন্য। এই দুটি জাপানি শহরে পারমাণবিক বোমা হামলাকে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে জঘন্য অপরাধমূলক কর্মগুলির মধ্যে বিবেচনা করেছিলেন।

ভারতীয়দের ইচ্ছের বিরুদ্ধেই ভারতকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অংশ করে নিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার এবং বিনা দোষে বহু ভারতীয়দের প্রান গেছে সেই যুদ্ধে, সেরকমই পালকে পরাধীন ভারতের এক সেনার মতই এক অসম বিচারসভায় পাঠানো হয়েছিল কেবলমাত্র লোক দেখানো অশ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ এশিয়ার মুখপাত্র হিসেবে কিন্তু এসব শর্তেও তিনি নিজের কাজ নিষ্ঠার সঙ্গে করেছিলেন । তার যুক্তিসঙ্গত মতামতের জেরে ঐ ট্রায়ালের কয়েকজন বিচারক প্রভাবিত হয়ে তাদের রায় কিছুটা নমনীয় করেছিলেন যার ফলস্বরূপ জাপান কঠোরতম শাস্তির হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পায়।

আজ আমাদের দেশ এমনই বহু বীর ও সাহসী মানুষদের জন্য সারা বিশ্বের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তাই যখনই তামা সমাধিক্ষেত্রে রাসবিহারী বসুর স্মৃতিসৌধ দেখেছি কিংবা রেনকোজি মন্দিরে নেতাজীর আবক্ষ মূর্তির সম্মুখে অথবা ইয়াসুকুনি স্মৃতিসৌধে রাধা বিনোদ পালের স্মরণ স্তম্ভের সম্মুখে গিয়ে দাঁড়িয়েছি ভারতবাসী হিসেবে গর্বিত হয়েছি ।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সহযাত্রী

দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন

Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ

উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্বকাপ ২০২৩: পাকিস্তানকে হারিয়ে Afghanistan এ ঈদের মতো পরিস্থিতি

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর ২২ তম ম্যাচে আফগানিস্তান পাকিস্তানকে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করেছে। সেই ম্যাচে পাকিস্তানকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে আফগানিস্তান। এই প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে হারাল আফগানিস্তান আর এই পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানিস্থানে(Afghanistan)এখন ঈদের মতো পরিস্থিতি।এক আফগানিস্থানি সমর্থকের মতে এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এবং নিজেদের মত করে তারা তাদের এই খুশী উদযাপন করেছেন। এক্স হ্যান্ডেলে এক সমর্থকের মতে, সেদিন উদযাপন ছিল, পার্টি ছিল। এটি ছিল আমাদের ইতিহাসের একটি বিরল মুহূর্ত যখন পুরো জাতি খুশি ছিল এছাড়াও, এটি ছিল ২০২৩ বিশ্বকাপের তৃতীয় বড় আপসেট । টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাবর আজমের দল। প্রথমে ব্যাট করে পাকিস্তান দল ২৮২ রান করে। জবাবে আফগানিস্তান দল ২৮৩ রান তাড়া করে ৪৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য অর্জন করে। এই ম্যাচে হারের পর বেশ ক্ষুব্ধ দেখাচ্ছিল অধিনায়ক বাবর আজমকে। ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনার সময়, তিনি দলের ত্রুটিগুলি তালিকাভুক্ত করেছিলেন এবং পরাজয়ের জন্য নিজেদের দায়ী করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

সম্পাদকীয়-  রাজনৈতিক সহিংসতা ও আমাদের গণতন্ত্র

সেই দিনগুলো চলে গেছে যখন নেতারা তাদের প্রতিপক্ষকেও সম্মান করতেন। শাসক দলের নেতারা তাদের বিরোধী দলের নেতাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতেন এবং তাদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।  আজ রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে।  কেউ কারো কথা শুনতে প্রস্তুত নয়।  আগ্রাসন যেন রাজনীতির অঙ্গ হয়ে গেছে।  রাজনৈতিক কর্মীরা ছোটখাটো বিষয় নিয়ে খুন বা মানুষ মারার মত অবস্থার দিকে ঝুঁকছে। আমাদের দেশে যেন রাজনৈতিক সহিংসতা কিছুতেই শেষ হচ্ছে না।আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার চেয়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে বেশি মানুষ নিহত হচ্ছেন।  ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) অনুসারে, ২০১৪ সালে, রাজনৈতিক সহিংসতায় ২৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছিল এবং সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ২০০০ জন মারা গিয়েছিল।  আমরা পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের জন্য গর্বিত হতে পারি, কিন্তু এটা সত্য যে আমাদের সিস্টেমে অনেক মৌলিক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের গণতন্ত্রের শিকড়কে গ্রাস করছে, যার জন্য সময়মতো সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top