

পার্থেনিয়াম গাছ । ছবি সৌজন্য – উত্তরাপথ
উত্তরাপথঃ পার্থেনিয়াম সাধারণত “কংগ্রেস ঘাস” বা “গাজর আগাছা” নামে পরিচিত ।এটি একটি আক্রমণাত্মক এবং ক্ষতিকারক আগাছা যা ভারত সহ বিশ্বের অনেক অঞ্চলে একটি উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। যদিও কৃষি এবং পরিবেশের উপর এর প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়েছে,কিন্তু মানব স্বাস্থ্যের উপর পার্থেনিয়ামের প্রভাবগুলি প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়।
পার্থেনিয়ামের সাথে যুক্ত সবচেয়ে সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যাগুলির মধ্যে একটি হল অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া। উদ্ভিদের পরাগ বা এর পাতার পৃষ্ঠের সাথে যোগাযোগের ফলে ত্বকের অ্যালার্জি হতে পারে, যার মধ্যে ডার্মাটাইটিস, চুলকানি এবং ফুসকুড়ি রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে, ফোস্কা এবং একজিমার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। পার্থেনিয়ামের পরাগ বায়ুবাহিত হয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে হাঁপানি, হাঁচি, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেয়, বিশেষ করে যাদের ইতিমধ্যেই অ্যালার্জির প্রবণতা রয়েছে তাদের মধ্যে।
পার্থেনিয়াম কৃষি, ল্যান্ডস্কেপিং এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে কর্মরত ব্যক্তিদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করে, কারণ তাদের এই উদ্ভিদের সাথে সরাসরি যোগাযোগে আসার সম্ভাবনা বেশি। পার্থেনিয়ামের দীর্ঘায়িত এক্সপোজারের ফলে ডার্মাটাইটিস সমস্যা সহ দীর্ঘস্থায়ী ত্বকের অন্যান্য অসুবিধা হতে পারে।তাই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ যেমন প্রতিরক্ষামূলক পোশাক এবং গ্লাভস পরা যাতে সরাসরি পার্থেনিয়াম গাছের সাথে যোগাযোগ কম হয়।
পার্থেনিয়াম গবাদি পশু এবং অন্য পশু স্বাস্থ্যের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। পার্থেনিয়াম-দূষিত পশু খাওয়ার ফলে ডার্মাটাইটিস, শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতে পারে ।পার্থেনিয়াম গবাদিপশুর দুধের উৎপাদন হ্রাস সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
বাস্তুতন্ত্রের দ্রুত বিস্তার ও আধিপত্য বিস্তার করার পার্থেনিয়ামের ক্ষমতা পরোক্ষ স্বাস্থ্যগত প্রভাব ফেলতে পারে। পার্থেনিয়ামের দ্রুত বৃদ্ধি স্থানীয় গাছপালার বিস্তারকে হ্রাস করতে পারে, জীববৈচিত্র্য হ্রাস করতে পারে এবং ইকোসিস্টেম পরিষেবাগুলিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এরফলে মাটির ক্ষয় বৃদ্ধি সহ বায়ুর গুণমান বিঘ্নিত হতে পারে। এই ধরনের পরিবেশগত পরিবর্তন পরোক্ষভাবে মানুষের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি এবং অন্যান্য সমস্যাগুলিকে সৃষ্টি করতে পারে।
পার্থেনিয়ামের সাথে যুক্ত স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানোর জন্য দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণ কৌশল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশেষভাবে পার্থেনিয়াম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে। পার্থেনিয়ামের বিপদ এবং প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও নির্মূলের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক প্রচার এর বিস্তার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন
Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন
উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক
উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক। প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন। ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন
Electoral Bond এর গোপনীয়তা সরিয়ে রাজনৈতিক দলগুলিকে, জানাতে হবে প্রাপ্ত অনুদানের পরিমাণ
উত্তরাপথঃ বুধবার, নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bond)প্রকল্পের আইনি বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের শুনানি হয়। শীর্ষ আদালত তার মন্তব্যে বলেছে, 'নির্বাচনী বন্ডগুলি রাজনৈতিক দলগুলিকে বেনামী অর্থ প্রদান করে, কারণ তাদের কেনাকাটা সম্পর্কিত রেকর্ডগুলি স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার কাছে উপলব্ধ যা শুধুমাত্র তদন্তকারী সংস্থাগুলি অ্যাক্সেস করতে পারে৷ এর আগে নির্বাচনী বন্ড’ (Electoral Bond) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) কেন্দ্র দাবি করেছিল, রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের উৎস জানার অধিকার নেই জনতার।এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৎপর হল নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India)।বুধবার বিকেল ৫টার মধ্যে যাবতীয় হিসেব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কমিশনের তরফে।নির্বাচনী বন্ডের (Electoral Bond)মামলায় কেন্দ্রের আর্জি সত্বেও সুপ্রিম কোর্ট রাজনৈতিক দলগুলিকে আয়ের উৎস জানাতে বলেছিল। আদলত নির্দেশ দিয়েছিল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল কত অনুদান মিলেছে, সেই তথ্য বন্ধ খামে জানাতে হবে।এর আগেও নির্বাচনী বন্ডের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিক মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। মামলাকারীরা অভিযোগ করেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলি এই নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ বিদেশ থেকে পেতে পারে এর ফলে গণতন্ত্র ধ্বংস হবে। যদিও কোনও রাজনৈতিক দলই এই দাবি মানতে চায়নি। ৩ অক্টোবর মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব তথ্য দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এই রায়ের পরেই তৎপর হল কমিশন। .....বিস্তারিত পড়ুন