

উত্তরাপথ; শ্যামলা বর্ণের ব্যক্তিদের বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে স্কিন-লাইটনিং এক প্রবণতা রয়েছে ।Northwestern Medicine Study অনুসারে বেশির ভাগ ব্যবহারকারী এই পণ্যগুলির ঝুঁকি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন না হয়ে এগুলি ব্যবহার করে।সমীক্ষাটি আরও প্রকাশ করে যে এই অভ্যাসগুলি প্রায় বর্ণবাদের দ্বারা উজ্জীবিত । অনেক সংস্কৃতিতে, ফর্সা ত্বক দীর্ঘকাল ধরে সৌন্দর্য এবং সামাজিক মর্যাদার সাথে জড়িত, যা হালকা ত্বকের টোনের জন্য ব্যাপক আকাঙ্ক্ষার দিকে মানুষকে পরিচালিত করে। মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা ত্বক-উজ্জ্বল করার পণ্যগুলির জনপ্রিয়তাকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে কাউন্টারে ক্রয় করা পণ্যগুলির উপাদানগুলি সম্পর্কে এবং তাদের সম্ভাব্য ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে ব্যবহারকারীদের মধ্যে। ডাঃ রূপল কুন্ডু , নর্থ ওয়েস্টার্ন মেডিসিন সেন্টার ফর এথনিক স্কিন অ্যান্ড হেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক এর মতে,এই পণ্যগুলি মুদি দোকান, সম্প্রদায়-ভিত্তিক স্টোর বা এমনকি অনলাইন থেকে কেনা হয় এবং একটি বড়-চেইন স্টোর বা প্রেসক্রিপশন পণ্যগুলির মতো একই ধরণের নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে যায় না।“
এবার দেখাযাক স্কিন-লাইটেনিং এর দ্রব্যগুলি কিভাবে আমাদের ক্ষতি করে।
অনেক স্কিন-লাইটনিং পণ্যে ঘন করা রাসায়নিক থাকে যা ত্বকের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষামূলক বাধাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ফলে ত্বক পাতলা হতে পারে, সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি পায় যার ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি, লালভাব বা জ্বালা হতে পারে।
স্কিন-লাইটনিং পণ্যগুলিতে পাওয়া কিছু উপাদান, যেমন হাইড্রোকুইনোন এবং পারদ, ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এই পদার্থগুলির দীর্ঘায়িত এক্সপোজার ডিএনএকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে সেই সাথে এটি ম্যালিগন্যান্ট কোষের বিকাশ ঘটায়।
হাস্যকর হলেও এটি সত্যি,যে কিছু কিছু স্কিন-লাইটিং প্রোডাক্টের অত্যধিক এবং দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার বিপরীত প্রভাবের দিকে নিয়ে যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার রিবাউন্ড হাইপারপিগমেন্টেশনের কারণ হতে পারে,যা ত্বককে কালো করে তোলে এবং ত্বকে একটি অসম রঙ্গের স্তর স্তৈরি করে।
কিছু স্কিন-লাইটেনিং পণ্যে পারদের মতো বিষাক্ত পদার্থ থাকে, যা রক্ত প্রবাহে শোষিত হতে পারে এবং লিভার এবং কিডনির মতো অঙ্গগুলিতে জমা হতে পারে। এছাড়াও ফর্সা ত্বকের আকাঙ্খা একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে ।
স্কিন-লাইটেনিং পণ্যগুলির সাথে সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলির কথা মাথায় রেখে, বেশ কয়েকটি দেশ ক্ষতিকারক উপাদানগুলির ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার জন্য বেশ কিছু পণ্যকে অবৈধ ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু আজও অনেক পণ্য অবৈধভাবে বা যথাযথ লেবেল ছাড়াই বাজারে বিক্রি করা অব্যাহত রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে একমাত্র শিক্ষায় পারে মানুষের মনে সত্যিকারের সৌন্দর্য ,স্বাস্থ্য এবং আত্মবিশ্বাসের ধারনা তৈরি করতে।যা একজন ব্যক্তির স্ব-গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন
ওজন হ্রাস (weight loss) মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে
উত্তরাপথঃ এপ্রিলে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, শাকসবজি, সামুদ্রিক খাবার এবং গোটা শস্য সমৃদ্ধ একটি ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য খাওয়া - এমনকি শুধুমাত্র খাদ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করে ওজন হ্রাস (weight loss)মস্তিষ্কের বার্ধক্যের লক্ষণগুলিকে ধীর করে বলে মনে করা হয়।সাম্প্রতি ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিজ্ঞানীদের দ্বারা পরিচালিত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওজন হ্রাস মস্তিষ্কে বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ৯ মাস পর্যন্ত ধীর করে (aging process) দিতে পারে। গবেষণায় ৬০ থেকে ৭৮ বছর বয়সের মধ্যে ৪৭ জন অংশগ্রহণকারীকে জড়িত করা হয়েছিল, যাদের প্রত্যেকেরই ওজন বেশি বা স্থূল ছিল এবং তাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যগ্রহণ ছিল। তাদের এলোমেলোভাবে একটি ক্যালোরি-সীমাবদ্ধ গ্রুপ বা একটি নিয়ন্ত্রণ গ্রুপে বরাদ্দ করা হয়েছিল।ক্যালোরি-সীমাবদ্ধতা গোষ্ঠীর সদস্যদের একটি খাদ্য পরিকল্পনা অনুসরণ করে, যার লক্ষ্য ছিল তাদের আনুমানিক প্রয়োজনের চেয়ে ১০ – ১৫% কম ক্যালোরি গ্রহণ করা। অন্যদিকে, নিয়ন্ত্রণ গ্রুপ তাদের খাদ্য পরিবর্তন করেনি .....বিস্তারিত পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন