উত্তরাপথঃ ঘটনার সূত্রপাত শুরু হয়েছিল সাতাশ বছর আগে যখন একজন প্রাক্তন সশস্ত্র বাহিনীর অফিসার,বর্তমানে যিনি ৮৯ বছর বয়সী, তার ৮২ বছর বয়সী স্ত্রীর থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের এর জন্য আবেদন করেছিলেন। এই দম্পতি ১৯৬৩ সালের মার্চ মাসে বিয়ে করেছিলেন এবং দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে একসঙ্গে বড় করেছিলেন।
১৯৮৪ সালের জানুয়ারিতে অফিসারকে অমৃতসর থেকে মাদ্রাজে বদলি করা হলে সমস্যা দেখা দেয় সেই সময় স্ত্রী পরঞ্জিত স্বামীর সঙ্গে তাঁর কর্মস্থলে যেতে রাজি না হওয়ার তাঁদের মধ্য় সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। নির্মল তাঁর মামলায় উল্লেখ করেছেন, দীর্ঘ বছর স্ত্রীয়ের সঙ্গে সহবাসে ছিলেন না তিনি।একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ মীমাংসা করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, স্বামী নিষ্ঠুরতা এবং পরিত্যাগের কারণ উল্লেখ করে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে হার্ট অ্যাটাকের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সময় তার স্ত্রী তাকে দেখতে যাননি এবং তিনি তার খ্যাতি নষ্ট করার জন্য তার উর্ধ্বতনদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন।
১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে তাদের বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হয় যখন তিনি একটি ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ডিভোর্সের জন্য আবেদন দাখিল করেন। চণ্ডীগড় জেলা আদালত ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে। তবুও, স্ত্রীর আপিলের ভিত্তিতে, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের একক বিচারকের বেঞ্চ ডিসেম্বর ২০০০-এ সিদ্ধান্তটি ফিরিয়ে দেয়। হাইকোর্টে জেলা আদালতের আদেশ বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের নির্দেশ দেয় ।
সুপ্রিম কোর্ট দুই পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে জানায়, ১৯৬৩ সাল থেকে স্ত্রী তাঁদের তিন সন্তানকে লালন-পালনে কোনও খামতি রাখেননি। সকলকে যত্নে বড় করে তুলেছেন। বিবাহের পবিত্র সম্পর্ক রক্ষা করেছেন তিনি। কিন্তু তাদের প্রতি স্বামী নির্মলের এই আচরণ সঠিক ছিল না। তা সত্ত্বেও স্ত্রী বাকি জীবন তাঁর স্বামীর সেবাই করে যেতে চেয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় অনুমতি দিলে তা মহিলার প্রতি অবিচারের সামিল হবে। তাই এক্ষেত্রে বৃদ্ধের আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত।বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু ও বিচারপতি বেলা এম ত্রিবেদীর ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটির গুরুত্ব বিচার করে এই রায় দিয়েছেন।আদালতের পর্যবেক্ষণ, ভারতীয় সমাজে বিবাহকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। এক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদের অযোগ্যতার ভিত্তিতে বিবাহ বিচ্ছেদের আদেশ সর্বদা ন্যায়সঙ্গত হয় না। বিবাহের অপূরণীয় ভাঙন সব সময় বিবাহ বিচ্ছেদের অনুমতি দেয় না।
নির্মল সিং পানেসার ও পরঞ্জিত কৌন পানেসারের মামলায় এই রায় দান করে দেশের শীর্ষ আদালত। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য, ভারতে বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা বাড়লেও, এখনও দেশে বিবাহকে পবিত্র বিষয় বলে মান্যতা দেওয়া হয়। ভারতীয় সমাজের বিবাহের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আবেগ। আদালতের আরও উল্লেখ, নির্মল সিং পানেসার ও পরঞ্জিত কৌন পানেসারের বিবাহ বিচ্ছেদ মামলায় দেখা গিয়েছে, স্ত্রী পরঞ্জিত তাঁর স্বামীর দেখাশোনা করতে ইচ্ছুক। তিনি স্বামী নির্মলকে ছেড়ে যেতে চান না। এই অবস্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ হলে একজন স্ত্রীয়ের সঙ্গে অবিচার করা হবে।
আরও পড়ুন
Diabetes রাখুন খুব সহজেই নিয়ন্ত্রনে
উত্তরাপথ: ডায়াবেটিসের (Diabetes) সমস্যা সারা বিশ্বের লোকেদের এক প্রধান সমস্যা । ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ এর একটি রিপোর্ট অনুসারে ২০১৯ সালের ভারতে ৭৭ মিলিয়ন ব্যক্তির ডায়াবেটিস ছিল, যা ২০৪৫ সালের মধ্যে ১৩৪ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা এই ব্যক্তিদের প্রায় ৫৭% জানতেননা তাদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে । একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা ডায়াবেটিসে (Diabetes )আক্রান্ত ব্যক্তিদের গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন সেই সাথে সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত .....বিস্তারিত পড়ুন
Political Violence: রাজনৈতিক সন্ত্রাস করে এতবড় জয় অর্জন করা সম্ভব ?
উত্তরাপথ: পশ্চিমবঙ্গে ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন ও Political Violence যেন একে অপরের পরিপূরক হয়ে গেছে । এবারের নির্বাচনে ব্যাপক ভাবে জয়লাভ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস ,বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, এবং বাম দল এবং কংগ্রেসের জোট সবচেয়ে কম আসন পেলেও ভোটের হার আগের বারের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের এই জয় আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে তাদের দলের কর্মীদের বাড়তি উৎসাহ দেবে সন্দেহ নাই। .....বিস্তারিত পড়ুন
Gond Tribe: মধ্য প্রদেশে গোন্ড উপজাতির সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ
গার্গী আগরওয়ালা মাহাতো: গোন্ড উপজাতি(Gond tribe) বিশ্বের বৃহত্তম উপজাতি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে একটি। এটি ভারতের বৃহত্তম উপজাতি । এদের গায়ের রং কালো, চুল কালো, ঠোঁট মোটা, নাক বড় ও ছড়ানো। তারা অলিখিত ভাষা গোন্ডি ভাষাতে কথা বলে, যা দ্রাবিড় ভাষার সাথে সম্পর্কিত। গোন্ড উপজাতির একটি দীর্ঘ এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, বিশ্বাস করা হয় যে তাদের শিকড় প্রাক-আর্য যুগে্র । গোন্ডদের সবচেয়ে গৌরবময় রাজা ছিলেন সংগ্রাম শাহ এবং দলগত শাহ, যারা ম্ধ্যপ্রদেশের গন্ডয়ানা রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় অনেকগুলি দুর্গ তৈরি করেছিলেন। মাত্র ৩০ বছর বয়সে দলগত .....বিস্তারিত পড়ুন
UCC: Uniform Civil Code এবারও অভিন্ন হবে না
উত্তরাপথ: Uniform Civil Code (ইউসিসি) এ বারও ইউনিফর্ম হবে না। গত ৩রা জুলাই সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ ইঙ্গিত দেওয়া হয়। কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রবীণ বিজেপি নেতা সুশীল কুমার মোদি পরামর্শ দিয়েছেন যে উপজাতি সমাজ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে বিজেপির এক দিল্লীর নেতার বক্তব্য , তফসিলি উপজাতিরা তাদের নিজস্ব নিয়ম-কানুন তৈরি করে এবং সেগুলি অনুসরণ করে। এই ধরনের লোকেরা সাধারণত বন এবং পাহাড়ে বাস করে।তাদের আদিমতা, ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা, সামাজিক, শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক পশ্চাদপদতা .....বিস্তারিত পড়ুন