জাপানে Genetic Screening প্রকল্পের উত্থান ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ভবিষ্যতের জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ

উত্তরাপথঃ জেনেটিক স্ক্রীনিং (Genetic screening )প্রকল্পগুলি সম্ভাব্য জেনেটিক ব্যাধি বা নির্দিষ্ট কিছু রোগের প্রবণতা সনাক্ত করতে একজন ব্যক্তির জেনেটিক গঠনের বিশ্লেষণ এর সাথে জড়িত। নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং (NGS) এবং মাল্টিপ্লেক্স পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (PCR) এর মতো জেনেটিক অ্যানালাইটিক প্রযুক্তির সাম্প্রতিক অগ্রগতি জিন মিউটেশন শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ এবং সময় উভয়ই কমিয়েছে এবং এর ফলাফলের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতকৃত ক্যান্সারের চিকিৎসার বিকাশ করাও সম্ভব করেছে।প্রতিটি  রোগীর জিনোমিক বিশ্লেষণের সুযোগ নিয়ে জাপানের সবচেয়ে বড় ফার্মাসিউটিক্যাল কন্ট্রাক্ট রিসার্চ অর্গানাইজেশন CRO, CMIC, দুটি গুরুত্বপূর্ণ জেনেটিক স্ক্রিনিং প্রকল্পে অংশগ্রহণ করছে।

জেনেটিক স্ক্রীনিং (Genetic screening) প্রকল্পগুলির লক্ষ্য রোগীদের জন্য প্রাথমিক রোগ সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ এবং ব্যক্তিগতকৃত চিকিৎসার বিকল্পগুলি উন্নত করা। চলমান জেনেটিক স্ক্রীনিং উদ্যোগের সাথে জাপান এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে।জাপানের এরকম একটি প্রকল্প হল জাপান এজেন্সি ফর মেডিকেল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (AMED) “ক্লিনিক্যাল এবং জিনোমিক তথ্যের সমন্বিত ডেটাবেস।” এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল বিপুল সংখ্যক রোগীর কাছ থেকে জিনোমিক ডেটা সংগ্রহ করা এবং বিশ্লেষণ করা যা গবেষকদের বিভিন্ন রোগের সাথে সম্পর্কিত জেনেটিক বৈচিত্র সনাক্ত করতে সক্ষম করে।বর্তমানে ডাটাবেসটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে কাজ করছে, যা গবেষকদের জাপানের জেনেটিক ল্যান্ডস্কেপ সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা প্রদান করছে।

প্রথম এই Genetic screening প্রকল্পটি, এইচএম-স্ক্রিন-জাপান, ২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল । জাপানে পরিকাঠামোগত বিভিন্ন সুবিধার কারণে বর্তমানে এই প্রকল্পটি ক্লিনিকাল ট্রায়েলের পর্যায়ে রয়েছে।

১। জাপানের জনসংখ্যা ১২৬ মিলিয়নেরও বেশি, যা গবেষণার ক্ষেত্রে একটি বৈচিত্র্যময় জেনেটিক বৈশিষ্ট প্রদান করে। এই জেনেটিক বৈচিত্র্য এবং রোগের সংবেদনশীলতা এবং চিকিৎসা পদ্ধতির উপর তাদের প্রভাবের আরও ব্যাপক বিশ্লেষণের অনুমতি দেয়।

২। জাপান অত্যাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা এবং উন্নত প্রযুক্তি সহ একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা নিয়ে গর্ব করে। এই পরিকাঠামো ক্লিনিকাল ট্রায়াল মসৃণ ভাবে পরিচালন করতে সাহায্য করে,সেই সাথে সঠিক তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ নিশ্চিত করে।

৩। ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য জাপানে একটি সু-প্রতিষ্ঠিত নিয়ন্ত্রক কাঠামো রয়েছে, যা রোগীর নিরাপত্তা এবং নৈতিক মান নিশ্চিত করে। ফার্মাসিউটিক্যালস এবং মেডিকেল ডিভাইস এজেন্সি (PMDA) অনুমোদন প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করে, নিশ্চিত করে যে পরীক্ষাগুলি কঠোর নির্দেশিকা মেনে চলছে।

৪। জাপান একাডেমিয়া, শিল্প এবং সরকারি সংস্থার মধ্যে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করে। এই সহযোগিতামূলক পদ্ধতি উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এবং ক্লিনিকাল অনুশীলনে গবেষণার ফলাফলকে ত্বরান্বিত করে।

জাপানে জেনেটিক স্ক্রীনিং (Genetic screening) প্রকল্পের উত্থান ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ভবিষ্যতের জন্য উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে সংগৃহীত বিপুল পরিমাণ জিনোমিক ডেটা ব্যবহার করে, গবেষকরা অভিনব থেরাপিউটিক লক্ষ্যগুলি সনাক্ত করতে পারেন, ব্যক্তিগতকৃত চিকিৎসা পদ্ধতির বিকাশ করতে পারেন এবং রোগীর রোগ নির্ণয়কে উন্নত করতে পারেন।এছাড়াও, ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিতে জেনেটিক স্ক্রীনিংয়ের কারণে ওষুধ বিকাশের প্রক্রিয়াগুলির দক্ষতা এবং কার্যকারিতা বাড়ানো সম্ভব হয়। এর ফলে, বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগতকৃত ওষুধ এবং উন্নত রোগীর যত্নের অগ্রগতি হতে পারে।

সূত্র ; White Paper, Evolving Trends of Decentralized Clinical Trials in Japan, December 2020.

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


আগামী ৩ বছরে শূন্য বর্জ্য হওয়ার পথে রাজস্থানের প্রথম গ্রাম

উত্তরাপথঃ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের একটি প্রকল্পের আওতায় আঁধি গ্রামে এই পরিবর্তন করা হচ্ছে।জয়পুর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আন্ধি গ্রাম।আগামী তিন বছরে এই গ্রাম শূন্য বর্জ্য হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে ।আন্ধি গ্রামের এই সম্পূর্ণ রূপান্তরটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের একটি প্রকল্পের অধীনে করা হচ্ছে।  এই প্রকল্পটি সবুজ প্রযুক্তির হস্তক্ষেপ ব্যবহার করে আন্ধি গ্রামকে জিরো ওয়েস্ট মডেলে রূপান্তরিত করার কাজ চলছে ।  এই প্রকল্পটি ২১ মার্চ ২০২২ এ শুরু হয়েছে,  প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ গ্রামের অবস্থা আগে খুবই খারাপ ছিল।আগে এই গ্রামের লোকেদের কঠিন বর্জ্য আলাদা করার কোনও ধারনা ছিল না । .....বিস্তারিত পড়ুন

লোকসংস্কৃতির আলোকে মালদার শতাব্দী প্রাচীন গম্ভীরা  

মৈত্রেয়ী চৌধুরীঃ পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের একটি জেলা মালদা। আমের জন্য এই জেলাটি পরিচিতি লাভ করলেও এই জেলা আর ও একটি কারণে বিখ্যাত, তা হল গম্ভীরা । মালদার নিজস্ব লোকসংস্কৃতি।গম্ভীরা শব্দটি প্রকোষ্ট, গৃহ বা মন্দির অর্থের সঙ্গে আভিধানিক মিল থাকলেও এই অনুষ্ঠানটি উন্মুক্ত আকাশের নিচে বা কোথাও চাঁদোয়া বা ত্রিপল  দিয়ে ঢেকে অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলেন স্বয়ং দেবাদিদেব। এই উৎসবের তিনি 'নানা' নামে পরিচিত।একজন শিবের সাজে থাকেন, আর দেবাদিদেবের চেলার মতো কিছু সংখ্যক সেই নানার ভক্ত হয়ে খোল, করতাল হাতে উনার সঙ্গী হন। বাস্তব জগতের এবং পারিপার্শ্বিক যা মা সমস্যা থাকে তা  চেলার নানার কাছে অভিযোগ জানান, যেন নানা সেই অভিযোগ শুনে তার সমাধান করেন।শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই ভিড় করে জমায়েত .....বিস্তারিত পড়ুন

গ্লোবাল ওয়ার্মিং রিপোর্ট: ২০২৩ বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে উদ্বেগজনক প্রতিবেদন

উত্তরাপথঃ সারা বিশ্ব যখন বিশ্ব উষ্ণায়নের কেন্দ্র করে শুরু হওয়া জলবায়ু সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সেই সময়, ২০২৩ বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে একটি উদ্বেগজনক প্রতিবেদন আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ৮ আগস্ট যে পরিসংখ্যান আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন,তাতে আগামী দিনের ভয়াবহ পরিণতির জন্য বিশ্ববাসীকে সতর্কবাণী শুনিয়েছেন।এখনও পর্যন্ত সারা বিশ্বে তাপ তরঙ্গ এবং দাবানলের জন্য ২০১৯ সালের জুলাই মাসটিকে চিহ্নিত করা হত । কিন্তু এবছর জুলাই মাসের তাপমাত্রা গত ২০১৯ সালের থেকেও ০.৩৩ সেন্টিগ্রেড বেশি ছিল EU-এর কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের ডেপুটি ডিরেক্টর সামান্থা বার্গেস বলেছেন, "গত ১২০,০০০ বছর ধরে পর্যবেক্ষণমূলক রেকর্ড এবং প্যালিওক্লাইমেট রেকর্ড এক সাথে সমন্বয় করে বিশ্লেষণ করলেও এত গরম ছিল না।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top