

জাপান তার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গ্লোবাল র্যাঙ্কিং এগিয়ে আনতে চেষ্টা করছে। ছবি – উত্তরাপথ
উত্তরাপথঃ সাংহাই র্যাঙ্কিং কনসালটেন্সির একটি বার্ষিক সংকলন অনুসারে, বিশ বছর আগে, জাপানের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের সেরা ১০০টির মধ্যে ছিল। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় ১৯তম স্থানে, কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় ৩০তম স্থানে ছিল । কিন্তু এই বছর নাগাদ, টোকিও ২৭ তম এবং কিয়োটো ৩৯ তম স্থানে চলে গেছে,বাকি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণভাবে শীর্ষ ১০০ থেকে বাদ পড়েছে। এই উদ্বেগজনক প্রবণতার মুখোমুখি হয়ে, জাপান সরকার তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিশ্বব্যাপী র্যাঙ্কিং ধারাবাহিক পতন রোধ করার এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে তার অবস্থান পুনরুদ্ধার করার প্রচেষ্টা জোরদার করছে৷
জাপান সরকার ব্যাপকভাবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পতনকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে বেশ কিছু প্রচেষ্টা শুরু করেছে। এই মাসে, আইন প্রণেতারা আইন অনুমোদন করেছেন যাতে ছয়টি শীর্ষ-র্যাঙ্কযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ম্যানেজমেন্ট পলিসি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেছে।এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বাইরের বিশেষজ্ঞদের তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের গবেষণার মান বৃদ্ধিতে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নেওয়া সহ বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত শিক্ষাবিদ এবং গবেষকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিদেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলির সাথে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলছে, একাডেমিক আদান-প্রদান, যৌথ গবেষণা প্রকল্প এবং উদ্ভাবনী প্রোগ্রামগুলি সহজতর করছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে, জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অত্যাধুনিক গবেষণার সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কিন্তু সমালোচকরা আশঙ্কা করছেন যে কাউন্সিলগুলি শুধুমাত্র ইতিমধ্যেই নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমলাতন্ত্রগুলিকে যুক্ত করবে এবং তাদের প্রয়োগিত গবেষণার উপর জোর দেওয়ার জন্য একাডেমিক বিজ্ঞানীদের চাপ দেবে। সেই সাথে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে নতুন আইনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন নষ্ট করবে এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের দরজা খুলে দেবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ক্রমবর্ধমান জটিল এবং রহস্যময় সিদ্ধান্ত গ্রহণের” দিকে পরিচালিত করবে৷
NISTEP-এর বিজ্ঞান নীতি গবেষক মাসাতসুরা ইগামির মতে , জাপানের র্যাঙ্কিংয়ে পতনের অনেক কারণ রয়েছে ৷ কিন্তু “গুরুত্বপূর্ণ কারণ,” হল, গবেষণা ব্যয়ে “স্থবিরতা” এবং অন্যান্য জাতির তুলনায় দেশের বৈজ্ঞানিক কর্মশক্তির আকার হ্রাস পাওয়া। আবার টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভূ-পদার্থবিদ এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক রবার্ট গেলার বলেছেন, “কম বেতনের, অনিরাপদ চাকরির ক্যারিয়ারের সিঁড়ি তৈরি করা মেধাবী তরুণ গবেষকদের একাডেমিয়া থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।”
তবে অধিকাংশ ব্যক্তির মতে , খরচ কমানোর ফলে এন্ট্রি-লেভেল গবেষণা কাজের অভাব দেখা দিয়েছে এবং পিএইচডিতে তালিকাভুক্তি প্রোগ্রামগুলিও হ্রাস পেয়েছে।তবে সকল পক্ষই একমত যে সরকার অবিচ্ছিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য অপারেটিং তহবিল কমিয়েছে, যার মধ্যে গবেষণার জন্য কিছু সমর্থন অন্তর্ভুক্ত ছিল। যদিও প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রামগুলি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে সাহায্য করেছে, তবুও তারা সরকারি তহবিল হ্রাসের পরিমাণ পূরণ করতে সক্ষম হতে এখনও অনেক দূরে।
এই অবস্থায়, একটি শক্তিশালী ও গতিশীল উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার তাৎপর্যকে স্বীকৃতি দেওয়া কেবল সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই দায়িত্ব নয়, সামগ্রিকভাবে সমাজেরও দায়িত্ব। সম্মিলিতভাবে সংস্কারে বিনিয়োগ করে এবং উদ্ভাবনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে, জাপান তার একাডেমিক ল্যান্ডস্কেপকে আবার নতুন আকার দিতে পারে এবং আবারও শিক্ষার ক্ষেত্রে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে পারবে।
আরও পড়ুন
টাইফুন ইউন-ইউং এর আজ জাপানের টোকাই অঞ্চলে প্রত্যাশিত ল্যান্ডফল
উত্তরাপথঃ জাপানের জনগণ টাইফুন নং ১৩ যা ইউন-ইউং নামে পরিচিত যা শুক্রবার বিকেলের দিকে টোকাই অঞ্চলে ল্যান্ডফল করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যেখানে নাগোয়া অবস্থিত। জাপান ইতিমধ্যে এর আগমনের জন্য নিজেদের আগাম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। প্রসঙ্গত গত কয়েকদিন ধরে ক্রমশ তীব্রতর হচ্ছিল টাইফুন ১৩। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার টোকাই এবং কান্টো অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করছে, যা পরিবহন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারে।আবহাওয়া দপ্তরের মতে শুক্রবার সকাল ৬ টা নাগাদ ২৪ঘন্টা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ইজু দ্বীপপুঞ্জে ২৫০ মিলিমিটার, টোকাই অঞ্চলে ১৫০ মিলিমিটার এবং কান্টো-কোশিন অঞ্চলে ১০০ মিলিমিটার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) .....বিস্তারিত পড়ুন
মহারানী পদ্মাবতী এবং জোহরের ঐতিহ্য: সাহস ও আত্মত্যাগের এক গল্প
উত্তরাপথঃ ভারতের ইতিহাসে, এমন অনেক গল্প রয়েছে যা সময়কে অতিক্রম করে আমাদের সম্মিলিত চেতনায় এক অমোঘ চিহ্ন রেখে যায়। তেমনই একটি গল্প মহারানী পদ্মাবতী ও জোহরের ঐতিহ্য। সাহস, সম্মান এবং ত্যাগের এই গল্প প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে এবং আমাদের কল্পনাকে মুগ্ধ করে চলেছে।ভারতীয় ইতিহাসের পাতায় অত্যন্ত সুন্দরী ও সাহসী মহারানী পদ্মাবতী'র উল্লেখ আছে। রানী পদ্মাবতী রানী পদ্মিনী নামেও পরিচিত। রানী পদ্মাবতীর পিতা ছিলেন সিংহল প্রদেশের (শ্রীলঙ্কা) রাজা গন্ধর্বসেন।ইতিহাসে রানী পদ্মিনী তার ব্যতিক্রমী সৌন্দর্য, বুদ্ধিমত্তা এবং বীরত্বের জন্য পরিচিত হলেও, তিনি করুণা এবং শক্তির প্রতীক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। দিল্লির শক্তিশালী শাসক আলাউদ্দিন খিলজি তার অতুলনীয় সৌন্দর্যের কথা শুনে তাকে অধিকার করার সংকল্প করেছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন
এক নজরে টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার যাদব
উত্তরাপথঃ টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান সূর্যকুমার যাদব আজ তার ৩৩তম জন্মদিন উদযাপন করছেন। তিনি বর্তমানে টিম ইন্ডিয়ার সাথে শ্রীলঙ্কায় রয়েছেন এবং এশিয়া কাপ খেলছেন। সূর্য, যাকে ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান বলা হয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেরিতে প্রবেশ করেছিলেন, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি এমন সব কিছু অর্জন করেছিলেন যা অনেক ক্রিকেটার দীর্ঘ সময় ধরে খেলেও স্বপ্নেও দেখতে পারেন না। চলুন জেনে নেওয়া যাক তার সবচেয়ে বিশেষ ৫টি রেকর্ড সম্পর্কে- T-20 আন্তর্জাতিকে দ্রুততম ১২টি ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার সূর্যকুমার যাদবকে টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একই বলে অনেক শট খেলতে পারেন তিনি। তাঁর ৫৩ টি ম্যাচে .....বিস্তারিত পড়ুন
জানুন ২০২৩ সালের জাতীয় শিক্ষক পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক ডঃ শীলা অসোপা'র কথা
ত্তরাপথঃ ডঃ শীলা অসোপা, সরকারি বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শ্যাম সদন, যোধপুরের অধ্যক্ষা, তিনি ১৭ বছর ধরে স্কুলের বাচ্চাদের পড়াচ্ছেন।তাঁকে শিশুদের শেখানোর নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন, স্কুলের অবকাঠামো শক্তিশালীকরণ এবং উদ্ভাবনের জন্য ২০২৩ সালের জাতীয় শিক্ষক পুরস্কারে পুরুস্কৃত করা হয়। ডঃ অসোপাকে, যোধপুরে শ্যাম সদন, সরকারি বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে, ১০ মাস আগে বদলি করা হয় । সেই সময় দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত বিদ্যালয়ে মাত্র দুটি কক্ষ ছিল।মেয়েরা টিনের চালা দিয়ে তৈরি ঘরে পড়াশোনা করত। ঘর কম থাকায় গাছের নিচেও ক্লাস হত । তার কথায় ,সেই সময়টা বাচ্চাদের পড়াশুনা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় কেটেছে । এরপর টিনের চালা দিয়ে তৈরি কক্ষে কাঠের পার্টিশন দিয়ে ৬টি কক্ষ তৈরি করা হয়। .....বিস্তারিত পড়ুন