কুড়মি সমাজ-এর জনসভায় অজিত প্রসাদ মাহাত ।
বলরাম মাহাতোঃ কুরমিদের সমর্থন পেয়ে গত লোকসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরের মতো আসনগুলিতে বড় জয় পেয়েছিল পদ্ম শিবির। তবে এবারের ২০২৪ সালের নির্বাচনে পশ্চিমের ৪টি আসনে বিজেপির সামনে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে এই কুড়মি সমাজ। বিগত বহু বছর ধরে তাঁদের আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে কুড়মি সমাজ। তাঁদের সে দাবি পূরণ হয়নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে একই দাবিতে একাধিকবার রেল এবং সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করতে দেখা গিয়েছে এই কুড়মিদের।
এই আবহে গত পঞ্চায়েত ভোটে তাঁরা নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিলেন। আর এবার লোকসভা নির্বাচনে বাংলার চার আসনে প্রার্থী দিতে চলেছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। রবিবার ছররা এলাকায় কুড়মিদের একটি জনসভা ছিল। সেখানে থেকে একথা ঘোষণা করেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাত। এর মধ্যে থেকে পুরুলিয়া আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই জঙ্গলমহলের আরও তিনটি আসনে আদিবাসী সংগঠন প্রার্থী দেবে বলে জানা গিয়েছে। ফলে চিন্তায় পড়েছে বিজেপির দলীয় কর্মীরা।প্রসঙ্গত এর আগে কুরমি সমাজের দাবি,আদায়ের জন্য কোনো দলই বিশেষ ভূমিকা নেয়নি।
দাবি আদায়ের জন্য এর আগে একাধিকবার পথে নেমেছেন কুড়মি সম্প্রদায়। রেল অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন তাঁরা। এর জেরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা-চান্ডিল শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে বারংবার। দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। তাতে লোকসান হয়েছে রেলের। এরপর কলকাতায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও দেখাও করেছেন তাঁরা। তবে তাতেও কোনো সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। তৃণমূল এই ইস্যুকে লক্ষ্য করেই আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রের দিকে। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের ওপর ভরসা না রেখে নিজেদের ভোটের ময়দানে হাজির করিয়েছে কুড়মি সমাজ।
রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরুলিয়ায় কুড়মি প্রার্থী হবেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল নেতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। বুধবার পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে আদিবাসী কুড়মি সমাজ -এর রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়েছিল। সেখানেই সর্বসম্মতিক্রমে পুরুলিয়া আসনের জন্য অজিতপ্রসাদের নাম বেছে নেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই কুড়মি সমাজ ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ার প্রার্থীর নামও ঘোষণা করে দেবে ।এই পরিস্থিতিতে যদি তারা বিজেপির ভোটে ভাগ বাসায় তাহলে সুবিধা হবে তৃণমূলের – অনেকেই এমন ধারণা করছে। এতে তৃণমূল কিছুটা স্বস্থিও অনুভব করছে। অন্যদিকে কুরমি সমাজের একটা বড় অংশ মনে করছে সরাসরি ভোটে দাঁড়ানোই কি একমাত্র পথ ছিল? জাতিসত্তার আবেগে নির্বাচনী বৈতরণী পার হয়ে গেলে ভালো কিন্তু তা না হলে সমাজের আন্দোলন এখানেই শেষ।
আরও পড়ুন
দীপাবলির সময় কেন পটকা ফোটানো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা যায় না ?
উত্তরাপথঃ দীপাবলির পরের দিন, যখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (CPCB) শহরের বায়ু মানের সূচকের তালিকা প্রকাশ করে,তখন দেখা যায় রাজধানী দিল্লি বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের প্রথমেই রয়েছে। CPCB-এর মতে, ১২ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় দিল্লির বায়ু মানের সূচক ছিল ২১৮ যা ভোরের দিকে বেড়ে ৪০৭ এ পৌঁছায় । ৪০০ – ৫০০ AQI এর স্তর সুস্থ ব্যক্তিদের প্রভাবিত করে। দীপাবলির সারা রাত, লোকেরা পটকা ফাটিয়ে দীপাবলি উদযাপন করে। ১৩ নভেম্বর বিকেল ৪ টায় কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবার তথ্য প্রকাশ করে এই তালিকায়, দিল্লির গড় বায়ু মানের সূচক ছিল ৩৫৮ যা 'খুব খারাপ' বিভাগে পড়ে। বায়ু দূষণের এই পরিস্থিতি শুধু দিল্লিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নয়ডার বায়ু মানের সূচক ১৮৯ থেকে ৩৬৩ এ এবং রোহতক, হরিয়ানার ১৩৭ থেকে বেড়ে ৩৮৩ হয়েছে। দীপাবলির দুই দিন দিল্লি ,নয়ডা ,কলকাতা, মুম্বাই সহ দেশের অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। এই দিনগুলিতে মানুষ বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে বাধ্য হয়েছে। ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জাতীয় রাজধানী দিল্লি এবং নয়ডায় সবুজ পটকা ছাড়া যে কোনও ধরণের আতশবাজি ফাটান সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ। আদালত সবুজ পটকা পোড়ানোর সময়ও নির্ধারণ করে দিয়েছে রাত ৮টা থেকে ১০টা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশের মানে কী? আদালতের এই আদেশ কি এখন প্রত্যাহার করা উচিত? পুলিশ কেন এই আদেশ কার্যকর করতে পারছে না? এর জন্য কি পুলিশ দায়ী নাকি সরকারের উদাসীনতা রয়েছে এর পেছনে? .....বিস্তারিত পড়ুন
প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক
উত্তরাপথঃ সারা বিশ্বের জনসংখ্যার বয়স বৃদ্ধির সাথে স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনা হ্রাস এবং ডিমেনশিয়ার মতো নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের প্রকোপ বাড়ছে৷ তাদের এই সমস্যাগুলি যে কেবল তাদের একার সমস্যা তা নয় ,এটি ধীরে ধীরে পুরো পারিবারিক সমস্যার আকার নেয়।সম্প্রতি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য গবেষকদের মধ্যে কার্যকর কৌশল খোঁজার আগ্রহ বাড়ছে।বর্তমানে বেশীরভাগ গবেষক মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । এখন খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি প্রশ্ন আসে প্রোবায়োটিক কি? কেনই বা গবেষকরা মস্তিস্কের স্বাস্থ্য উদ্ধারের ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিকের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করছেন । .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন