তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে তাপের বিশ্বরেকর্ড তৈরি হয়েছে রাজস্থানে

নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, রাজস্থানঃ-গত কয়েকদিন ধরে উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যে তাপপ্রবাহ শুরু হলেও, তাপের বিশ্বরেকর্ড তৈরি হয়েছে রাজস্থানে ইতিমধ্যেই রাজস্থানের তাপমাত্রা   ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁচেছে। শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণ ১০টি শহরের মধ্যে রয়েছে রাজস্থানের ৭টি শহর। প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি পুরো রাজস্থানে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তীব্র তাপদাহ ও তাপপ্রবাহে মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। শোনা যাচ্ছে যে গত শুক্র ও শনিবার মাত্র দুই দিনে রাজ্যে তাপের কারণে ২০ জন মারা গেছে। এই ব্যাপারে একটি বেসরকারি পরিসংখ্যান বলছে গত ২৪মে শুক্রবার তাপজনিত কারণে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার যে আটটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে একটিও মৃত্যুকে তাপজনিত কারণে মৃত্যু বলে স্বীকার করেনি সরকার।দেশের সবচেয়ে উষ্ণতম দশটি শহরের মধ্যে আটটিই বর্তমানে মরুধারায় রয়েছে। ফলোদিতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর সাথে, জয়পুর আবহাওয়া কেন্দ্রের সর্বশেষ সতর্কতা অনুসারে, আগামী্ল৩ দিনের মধ্যে রাজ্যের বেশিরভাগ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি বাড়বে এবং ৩ দিন ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ থাকবে। রাজস্থানে ৪ দিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আপাতত তিন-চার দিনে প্রচণ্ড গরম থেকে রেহাই পাওয়ার আশা নেই।

সম্প্রতি, শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল থেকেই প্রচণ্ড গরমে মানুষজন দুর্ভোগে পড়েন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আবহাওয়া প্রচন্ড গরম হয়ে ওঠে। ক্রমাগত গরমের কারণে দিনের বেলায় ঘর থেকে বের হতে হিমশিম খেতে শুরু করেছে মানুষ।   আগামী তিন-চার দিনে প্রচণ্ড গরম থেকে স্বস্তি পাওয়ার আশা নেই। বর্ষা সংক্রান্ত ভারতীয় আবহাওয়া দফতরের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ১ জুনের মধ্যে কেরালায় পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে রাজস্থানে বৃষ্টি কবে হবে সেই বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানা যায় নি,তবে আপাতত যা খবর তাতে এখনও রাজস্থানকে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে।আবহাওয়া কেন্দ্র জয়পুর জানাচ্ছে জুনের আগে ত্রাণ পাওয়া যাবে না

 আমরা যদি গত বছরের দিকে তাকাই, তাহলে আরও প্রায় ২০ দিন গরম আবহাওয়া এবং তাপপ্রবাহ থেকে মানুষ স্বস্তি পাচ্ছে না। গত বছরের মতো এবারও যদি বর্ষা সঠিক সময়ে রাজস্থানে আঘাত হানে, তবে শুধুমাত্র মাঝে মাঝে বর্ষার বৃষ্টিই রাজস্থানীদের সাময়িক স্বস্তি দেবে। একই সময়ে, অনুমান করা হচ্ছে যে জুনের শেষের আগে বর্ষা পূর্ণ শক্তিতে না আসা পর্যন্ত তাপ থেকে প্রকৃত স্বস্তি পাওয়া যাবে না।

কয়েকদিন আগে পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তাপপ্রবাহের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এখন রাজ্যের সব জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের জারি করা বুলেটিন অনুসারে, কয়েকটি বাদে রাজ্যের সমস্ত জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য কমলা ও লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মানুষকে গরম থেকে বাঁচতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সেই সাথে প্রশাসন থেকে অনুরোধ করা হয়েছে যাতে পাখিদের জল ও খাবার দেওয়া হয় সেই সাথে রাস্তার গরু ও কুকুরকেও জল ও খাবার দেওয়া হয়।  রাজ্য সরকার সতর্কতা হিসাবে সমস্ত জেলা কালেক্টরদের নির্দেশিকা জারি করেছে।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Free Gift in Politics: ভারতের নির্বাচন ও ফ্রি গিফট সংস্কৃতি

উত্তরাপথঃ ফ্রি গিফট (Free gift in politics)এর রাজনীতি সম্প্রতি ভারতের নির্বাচনী রাজনীতিতে একটি বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করছে। বিনামূল্যে কোটি কোটি জনগণকে উপহার প্রদান যা রাজকোষের উপর অতিরিক্ত বোঝা ফেলবে এই সত্যটি জানা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলি ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য ফ্রি গিফট (Free gift in politics) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনের দৌড়ে একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে।এক সময় প্রয়াত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা বিনামূল্যে শাড়ি, প্রেসার কুকার, ওয়াশিং মেশিন, টেলিভিশন সেট ইত্যাদির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটের আগে যে বিনামূল্যের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন তা পরবর্তী কালে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি দ্রুত অনুসরণ করেছিল। এরপর ২০১৫ সালে আম আদমি পার্টি নেতৃত্ব দিল্লির ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, জল, বাস ভ্রমণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Roop Kishor Soni: একটি আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য তুলে ধরেছেন

উত্তরাপথঃ রাজস্থান মানেই ওজনদার রূপার গহনা ,আর তার উপর কারুকাজ। প্রচলিত এই ধারনা ভেঙ্গে আজ রূপোর গহনাকে আধুনিকতার সাথে শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন যে ব্যক্তি তিনি হলেন রূপ কিশোরী সোনী(Roop Kishor Soni)।তিনি ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে তার অসাধারণ শিল্প কর্মের জন্য জাতীয় পুরুস্কার পান। রাজস্থানের জয়সলমেরের শহরের এই শিল্পী ৩.৮ গ্রাম ওজনের ০.৯ সেমি চওড়া রৌপ্য আংটিতে বিশ্বের আটটি আশ্চর্য খোদাই করেছেন।এই ছোট রূপার আংটিতে শিল্পী তাজমহল, সিডনি অপেরা হাউস, স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, চীনের গ্রেট ওয়াল, আইফেল টাওয়ার, বিগ বেন, পিসার হেলানো টাওয়ার এবং মিশরীয় পিরামিডের চিত্র এক সাথে ফুটিয়ে তুলেছেন।এছাড়াও তিনি আরও দুটি পৃথক ডিজাইনের অত্যাশ্চর্য আংটি  তৈরি করেছেন।৮.৬ গ্রাম ওজনের একটি রিংয়ে তিনি সূর্যাস্তের সময় ভারতীয় উট সাফারি সহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন ভারতীয় বিশেষত্ব ফুটিয়ে তুলেছেন,এবং অন্যটিতে বিভিন্ন হিন্দু দেব-দেবী ছবি এবং মন্দির খোদাই করেছিলেন। শিল্পী বলেছেন যে তিনি তার বাবার কাছ থেকে তার শৈল্পিক দক্ষতা উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছেন। সেই সাথে তিনি বলেন "আমার বাবাও একজন জাতীয় পুরুস্কার প্রাপ্ত শিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে শিল্পের এই দক্ষতা শিখিয়েছিলেন কারণ তিনি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে শিল্পের ফর্মটিকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন।" .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top