পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সরকারী পদক্ষেপ কি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আস্থা ফেরাতে যথেষ্ট?

উত্তরাপথঃ পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নতুন করে প্রকাশিত হল নিট-ইউজি-র ফল। গত, বৃহস্পতিবার সংশোধিত রেজাল্ট প্রকাশ করেছে পরীক্ষার নিয়ামক সংস্থা ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)। চলতি মাসের ২৩ তারিখ শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল নতুন করে নিট পরীক্ষা আর নেওয়া হবে না। তার পরেই কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান জানিয়ে দেন, সংশোধন করে দুদিনের মাথায় নতুন স্কোরকার্ড বের করা হবে।তারপর সেই ফলাফলই প্রকাশ করা হয়।

প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অনিয়ম ও জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসায়, পরীক্ষা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে।  বিশেষ করে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (NEET-UG) ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি অর্থাৎ NTA দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষায় জালিয়াতি দেশের লক্ষ লক্ষ ছাত্রদের আস্থা নাড়িয়ে দিয়েছে।  কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিও পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে উদ্বিগ্ন।  এর পরিপ্রেক্ষিতে, কেন্দ্রীয় সরকার পাবলিক পরীক্ষা (অন্যায্য উপায় প্রতিরোধ) আইন ২০২৪ কার্যকর করেছে, যার বিজ্ঞপ্তি গত মাসে জারি করা হয়েছিল।উত্তরপ্রদেশ সরকার সম্প্রতি পরীক্ষায় অনিয়ম ও জালিয়াতি রোধে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেছে।এখন বিহার সরকার বিধানসভায় রাজ্য পাবলিক পরীক্ষা (পিই) অন্যায় অর্থ প্রতিরোধ বিল, ২০২৪ পাস করেছে।  প্রকৃতপক্ষে, বিহার সরকার তার তাৎক্ষণিক প্রয়োজন বুঝতে পেরে এই সিদ্ধন্ত নিয়েছে।

 কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তৈরি আইনে পরীক্ষায় অনিয়ম ও জালিয়াতির দোষীদের শাস্তির জন্য কঠোর বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল প্রতিটি রাজ্যে আলাদা আলাদা আইন করে এই ধরনের মামলা দমন করা যাবে কি না? NEET-UG জালিয়াতির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার কিছু তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়েছে। নতুন আইন কার্যকর হওয়ার সাথে সাথে এই মামলার তদন্তভার সিবিআই-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। কিন্তু, এই পদক্ষেপগুলো কি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আস্থা ফেরাতে যথেষ্ট? এটি শুধুমাত্র রোগের উপসর্গের চিকিৎসা মাত্র। অন্তর্নিহিত সমস্যা অনেক গভীর এটি পুরোপুরি প্রতিকার করতে এর শিকড়ে আক্রমণ করা প্রয়োজন। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় দক্ষ মেধাবীদের বাছাই করা তখনই সম্ভব হবে যখন সব পরীক্ষার পবিত্রতা বজায় থাকবে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কাজ তখনই ভালো মানের হবে যখন যোগ্য ব্যক্তিদের তাদের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। এছাড়াও, পরীক্ষায় অনিয়ম রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা জরুরি।

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


সেলফির উচ্চ রেটিং কি আপনাকে আরওপাতলা হতে উৎসাহিত করছে ?

উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সেলফি তোলা এবং নিজেকে পাতলা হিসাবে দেখানোর মধ্যে একটি সম্পর্ক থাকতে পারে। যুক্তরাজ্যের ইয়র্ক সেন্ট জন ইউনিভার্সিটির রুথ নাইট এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইয়র্কের ক্যাথরিন প্রেস্টন সম্প্রতি PLOS ONE জার্নালে তাদের ফলাফল প্রকাশ করেছেন।সেখানে সেলফির উচ্চ রেটিং এবং আমাদের শরীরের গঠনের মধ্যে যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।    বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ায় সেলফি হল এক জনপ্রিয় ছবি দেওয়ার ধরন। যিনি সেলফি তোলেন তিনি ক্যামেরাকে তাদের শরীর থেকে দূরে রেখে নিজেই নিজের ছবি তোলে। আগের গবেষণায় বলা হয়েছে সেলফিগুলি দেখার ফলে ছবির বিষয়গুলি সম্পর্কে দর্শকদের সিদ্ধান্ত প্রভাবিত হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

Karar Oi Lauh Kapat: কাজী নজরুলের এই গানকে ঘিরে  বিতর্কে এ আর রহমান

উত্তরাপথঃ বিতর্কে 'পিপ্পা' ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান।সম্প্রতি কবি কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার একটি হিন্দি ছবিতে কবির জনপ্রিয় গান 'করার ঐ লৌহ কাপাত...' (Karar Oi Lauh Kapat )।কিন্তু এ আর রহমানের সঙ্গীত পরিচালনায় ওই গানটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে আপত্তি জানিয়েছে নজরুল পরিবার।বিতর্কের পর যে চুক্তির আওতায় ওই গানটি ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে তা প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছে কবির পরিবার।'পিপ্পা' শিরোনামের হিন্দি চলচ্চিত্রটি যেখানে (Karar Oi Lauh Kapat )গানটি ব্যবহার করা হয়েছে তা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন ভারতীয় সেনা সৈনিককে কেন্দ্র করে একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত। ছবির সঙ্গীত পরিচালক অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। গানের কথা ঠিক রেখেও সুর পাল্টানোর অভিযোগে ভারত ও বাংলাদেশে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।কবির পরিবারের অভিযোগ, গানটি ব্যবহারের অনুমতি দিলেও সুর পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হয়নি।পরিবারের সদস্যরাও ছবিটি থেকে গানটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top