দ্বিতীয় পাতা


পার্কিনসন সম্পর্কিত ডিমেনশিয়ার চিকিৎসায়:কাশির ওষুধ 'অ্যামব্রোক্সল'-এর বিস্ময়কর সাফল্য

উত্তরাপথঃ আমরা জানি, ডিমেনশিয়া একটি ভয়ঙ্কর ও অপ্রতিরোধ্য রোগ, যা মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করে স্মৃতি এবং চিন্তাশক্তি ধীরে ধীরে নষ্ট করে দেয়। আর যদি এই রোগ পার্কিনসনের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে রোগীর অবস্থা আরও করুণ হয়। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ কাশির ওষুধ 'অ্যামব্রোক্সল' এই পার্কিনসন-সম্পর্কিত ডিমেনশিয়ার ধ্বংসাত্মক প্রভাবকে থামাতে পারে — এবং এই খবর চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন আশার আলো উন্মোচন করেছে। কানাডার লন্ডনের Lawson Health Research Institute-এর একদল গবেষক, JAMA Neurology পত্রিকায় প্রকাশিত একটি বছরব্যাপী ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে, পার্কিনসনের সঙ্গে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ৫৫ জন রোগীর উপর পরীক্ষা চালান। তাঁদের দু’টি ভাগে ভাগ করা হয় — একদলকে প্রতিদিন অ্যামব্রোক্সল ও অন্যদলকে প্লেসেবো (ভুয়া ওষুধ) দেওয়া হয়। ফলাফল চমকে দেওয়ার মতো: অ্যামব্রোক্সল সুরক্ষিত, সহনীয় এবং কার্যকরভাবে মস্তিষ্কে পৌঁছায়। যাঁরা অ্যামব্রোক্সল নিয়েছেন, তাঁদের মানসিক ও স্মৃতিশক্তি স্থিতিশীল থাকে, কিন্তু প্লেসেবো নেওয়া রোগীদের ,মধ্যে অবস্থার অবনতি দেখা যায়। বিশেষ এক ধরনের উচ্চঝুঁকির জিন (GBA1) থাকা রোগীদের মধ্যে অ্যামব্রোক্সল ব্যবহারে স্মৃতিশক্তিতে উন্নতি দেখা যায়। মস্তিষ্কের কোষ ক্ষয় হওয়ার একটি চিহ্ন (GFAP) প্লেসেবো গ্রুপে বেড়েছে, অথচ অ্যামব্রোক্সল গ্রুপে স্থির থেকেছে —  যা এটা দেখায়, অ্যামব্রোক্সল হয়তো মস্তিষ্কের কোষকে রক্ষা করতে পারে। অ্যামব্রোক্সল আসলে একটি পুরনো ও বহুল ব্যবহৃত কাশির সিরাপ, যা ইউরোপে বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যার চিকিৎসায়। কিন্তু এর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে — এটি GCase নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ এনজাইমকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে। এই এনজাইমটি GBA1 নামক জিন দ্বারা তৈরি হয় এবং পার্কিনসন রোগে সাধারণত এর মাত্রা কম থাকে। যখন GCase সঠিকভাবে কাজ না করে, তখন মস্তিষ্কে টক্সিক পদার্থ জমতে থাকে, যা কোষ ধ্বংস করে দেয়। অ্যামব্রোক্সল এই এনজাইমকে সক্রিয় করে সেই কোষ-ধ্বংসের প্রক্রিয়া থামাতে পারে। এই গবেষণার প্রধান গবেষক, স্নায়ুবিজ্ঞানী ড. স্টিফেন পাস্টারনাক বলেন, “আমরা কেবল রোগের লক্ষণ কমাতে নয়, বরং রোগের গতিপথই বদলাতে চেয়েছিলাম। এই গবেষণার প্রাথমিক ফল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক এবং আরও বড় পরিসরের গবেষণার ভিত্তি গড়ে তুলেছে।” .....বিস্তারিত পড়ুন

সকালে বসে কাজের সময় ঘুম পায়? কিন্তু কেন?

উত্তরাপথঃ সকালে কাজে বসার সময় ঘুমিয়ে পড়া একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকের উৎপাদনশীলতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। এই নিবন্ধে, আমরা এই সমস্যার পিছনে থাকা বিজ্ঞানীয় কারণগুলো বিশ্লেষণ করব এবং সমাধানের জন্য বৈজ্ঞানিকভাবে সমর্থিত পরামর্শ দেব। আমরা ঘুমের চক্র, জৈবিক ঘড়ি, জীবনযাত্রার প্রভাব, ঘুমের ব্যাধি, চিকিৎসা সংক্রান্ত অবস্থা, এবং কাজ সংক্রান্ত কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করব। ঘুমের চক্র এবং জৈবিক ঘড়ি মানুষের শরীর একটি সার্কাডিয়ান রিদম বা জৈবিক ঘড়ি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা প্রায় ২৪ ঘণ্টার চক্রে কাজ করে। এই ঘড়ি আমাদের ঘুম এবং জেগে থাকার সময় নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণা বলছে, সকালে ঘুমিয়ে পড়ার একটি প্রধান কারণ হতে পারে এই সার্কাডিয়ান রিদমের সাথে আমাদের জীবনযাত্রার অমিল। উদাহরণ হিসেবে, শিফট কাজ বা অসমান ঘুমের সময়সূচী এই চক্রকে ব্যাহত করতে পারে, যা সকালে ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে। এটি বিশেষ করে শিফট কাজকারীদের মধ্যে সাধারণ এক সমস্যা, যেখানে তাদের ঘুমের প্যাটার্ন বিঘ্নিত হয়। ঘুমের বিভিন্ন পর্যায়, যেমন REM (র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট) এবং নন-REM ঘুম, আমাদের মানসিক এবং শারীরিক সতেজতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অপর্যাপ্ত ঘুম বা ব্যাহত ঘুমের চক্র এই পর্যায়গুলোকে প্রভাবিত করে, যা সকালে ঘুমের ভাব সৃষ্টি করতে পারে। জীবনযাত্রার প্রভাব জীবনযাত্রার কিছু অভ্যাস সকালের ঘুমের ভাবকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। নিচের তালিকায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ দেওয়া হল। কারণ বিস্তারিত অনিয়মিত ঘুমের সময়সূচী প্রতিদিন ভিন্ন সময়ে ঘুমানো এবং জাগা জৈবিক ঘড়িকে বিঘ্নিত করে। অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম রাতে নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করে, যা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ (Chang et al., 2015, https://www.pnas.org/doi/10.1073/pnas.1418490112). অপুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা চিনি শরীরের শক্তির মাত্রাকে অস্থির করে। শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা ব্যায়ামের অভাবে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে, যা ক্লান্তি সৃষ্টি করে। ঘুমের ব্যাধি এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত অবস্থা কিছু ঘুমের ব্যাধি এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত অবস্থা সকালে ঘুমের ভাব সৃষ্টি করতে পারে। নিচের তালিকায় কিছু উদাহরণ রয়েছে: ঘুমের ব্যাধি এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত অবস্থা কিছু ঘুমের ব্যাধি এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত অবস্থা সকালে ঘুমের ভাব সৃষ্টি করতে পারে। নিচের তালিকায় কিছু উদাহরণ রয়েছে: ঘুমাপনা (স্লিপ অ্যাপনিয়া) রাতে শ্বাসরোধের কারণে ঘুম বিঘ্নিত হয়, যা দিনের বেলায় ক্লান্তি সৃষ্টি করে (Medical News Today, 2024, .....বিস্তারিত পড়ুন

মানব পাচনতন্ত্রে কীটনাশকের ক্ষতি মোকাবিলায় নতুন গবেষণা

উত্তরাপথঃ একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রোবায়োটিক চিকিৎসার সম্ভাবনা। আমেরিকার ওহাইও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখিয়েছেন, কিছু নির্দিষ্ট প্রজাতির অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া কীভাবে মানব পাচনতন্ত্রের উপর কীটনাশকের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে এবং শরীরকে বিষক্রিয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। গবেষকরা দেখেছেন যে, কীটনাশকের সংস্পর্শে মানবদেহের অন্ত্রে থাকা নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়। গবেষকরা ১৮টি বহুল ব্যবহৃত কৃষিজ কীটনাশক ও ১৭টি মানব অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির ওপর ল্যাবরেটরি ও পশু পরীক্ষায় প্রভাব বিশ্লেষণ করেন। ফলাফলে দেখা গেছে, বেশিরভাগ কীটনাশক ব্যাকটেরিয়ার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত করে, পুষ্টি শোষণ প্রক্রিয়ায় গোলযোগ সৃষ্টি করে এবং কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া কোষে জমা হতে শুরু করে।এই আণবিক মিথস্ক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য সংবলিত একটি "অ্যাটলাস" তৈরি করা হয়েছে, যা ভবিষ্যৎ রোগ প্রক্রিয়া এবং সম্ভাব্য চিকিৎসা গবেষণায় সহায়ক হবে। ইঁদুরের উপর পরীক্ষায় দেখা গেছে, নির্দিষ্ট ধরনের পাচনতন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া কীটনাশকের বিষাক্ত প্রভাব কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে প্রদাহ হ্রাস করে। এই আবিষ্কার কীটনাশকের সংস্পর্শে আসার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রোবায়োটিক থেরাপির সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। কীটনাশক ডিটক্সিফিকেশনে পাচনতন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে গবেষণার প্রধান লেখক ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির হিউম্যান সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক জিয়াংজিয়াং ঝু বলেন, "আমরা কীটনাশক বা পরিবেশ দূষণকারী পদার্থ মানব স্বাস্থ্যের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলে তা আরও গভীরভাবে বুঝতে পেরেছি। আমরা এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া চিহ্নিত করেছি যা কীটনাশককে ভেঙে ফেলতে, অপসারণ করতে বা জৈবিক সিস্টেম থেকে পরিষ্কার করতে পারে। এটি ভবিষ্যতে খাদ্য ও জলের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করা বিষাক্ত পদার্থ পরিষ্কারে সহায়ক হতে পারে।" গবেষণাটি সম্প্রতি নেচার কমিউনিকেশনস-এ প্রকাশিত হয়েছে।গবেষকরা ১৮টি কৃষিতে ব্যবহৃত কীটনাশক এবং ১৭টি পাচনতন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির মধ্যে মিথস্ক্রিয়া পরীক্ষা করেছেন। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো মানব পাচনতন্ত্রে সাধারণত পাওয়া চারটি প্রধান গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করে এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে বা রোগের কারণ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পরীক্ষায় ব্যবহৃত কীটনাশকের মধ্যে রয়েছে ডিডিটি, অ্যাট্রাজিন, পারমেথ্রিন .....বিস্তারিত পড়ুন

সমুদ্রতট থেকে শহরের নদী পর্যন্ত কমছে প্লাস্টিক ব্যাগের আবর্জনা

উত্তরাপথঃ প্লাস্টিক দূষণ আজকের দিনে আমাদের পরিবেশের সবচেয়ে বিপজ্জনক ও বাড়তে থাকা হুমকিগুলোর একটি। বন্যপ্রাণীর দেহে আটকে পড়া থেকে শুরু করে আমাদের শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিক ঢুকে পড়ছে—এ দৃশ্যই প্রমাণ করে, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের প্রতি আমাদের নির্ভরতাই এখন বড় বিপর্যয়ের কারণ। কিন্তু যখন প্লাস্টিক সর্বত্র, তখন আসলে সমাধানটা কী?এই প্রশ্নের উত্তরে আশার আলো দেখিয়েছে একটি নতুন গবেষণা। ১৯ জুন Science জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি জানাচ্ছে, আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্য ও শহরে প্লাস্টিক ব্যাগ নিষিদ্ধ করার পর প্লাস্টিক ব্যাগের আবর্জনা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে সমুদ্রতট, নদী ও হ্রদে। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ৪৫,০০০টির বেশি উপকূল পরিষ্কার অভিযানের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যেখানে ব্যাগ নিষেধাজ্ঞা বা ফি আরোপ ছিল, সেখানে ব্যাগ-সম্পর্কিত বর্জ্য ২৫% থেকে ৪৭% পর্যন্ত কমেছে।MIT-এর পরিবেশ অর্থনীতিবিদ ও গবেষণার সহলেখক আনা প্যাপ বলেন, “এই গবেষণার মূল ফলাফল হলো—প্লাস্টিক ব্যাগ নিষেধাজ্ঞা পরিবেশে এর আবর্জনা সীমিত করতে কার্যকর। যদিও পুরোপুরি নির্মূল নয়।”আগেও কিছু গবেষণায় প্রমাণ হয়েছে যে নিষেধাজ্ঞা ও কর ভোক্তাদের অভ্যাস বদলায়, ফলে দোকানে কম প্লাস্টিক ব্যাগ বিতরণ হয়। তবে পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে এতদিন পর্যন্ত বিস্তৃত পরিসরে পরিসংখ্যানভিত্তিক বিশ্লেষণ ছিল না। নতুন এই গবেষণাই প্রথমবার এত বড় আকারে জাতীয় স্তরে এর প্রভাবকে মূল্যায়ন করল। গবেষণার সহলেখক কিম্বারলি ওরেমাস জানান, এত ভিন্ন ভিন্ন নীতিমালা ও ভৌগলিক বৈচিত্র্যের মধ্যে থেকেও স্পষ্ট ফলাফল পাওয়া বিস্ময়কর। কিছু এলাকায় আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল, যেখানে ভারী প্লাস্টিক ব্যাগ চালু ছিল—সেখানে প্রভাব তুলনামূলকভাবে কম। পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা বা কর আরোপ ছিল সবচেয়ে কার্যকর। রাজ্য-ভিত্তিক নিষেধাজ্ঞা ছিল শহরভিত্তিক নিষেধাজ্ঞার তুলনায় বেশি প্রভাবশালী।তাঁরা নিয়ন্ত্রণমূলক নানা বিশ্লেষণ চালিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন যে, আশেপাশের এলাকায় “স্পিলওভার ইফেক্ট” বা নিষিদ্ধ এলাকার বাইরে অতিরিক্ত ব্যাগ ব্যবহারের প্রবণতাও ছিল না। এমনকি, কয়েক বছরের ব্যবধানে কোনো “রিবাউন্ড ইফেক্ট” বা ব্যবহারের পুনরুত্থানও দেখা যায়নি। গবেষণায় আরও দেখা যায়, যেখানে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল, সেখানে বন্যপ্রাণীর ফাঁসানোর ঘটনাও কম হয়েছে। যদিও পরিসংখ্যান যথেষ্ট নয়, তবে গবেষকরা এটিকে “ইঙ্গিতপূর্ণ ফলাফল” হিসেবে দেখছেন।তবে একটা বড় সতর্কবার্তাও দিচ্ছে গবেষণা—নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ২০১৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বেশিরভাগ এলাকাতেই প্লাস্টিক .....বিস্তারিত পড়ুন

২০২৪ সি বি এস সি উচ্চ মাধ্যমিকপরীক্ষারফলাফলে মেয়েদের বড় চমক

উত্তরাপথঃ২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক বোর্ড (সি বি এস সি)পরীক্ষার ফলাফল বলছে এক নতুন কথা। এবার মেয়েরা প্রমাণ করে দিয়েছে, বিজ্ঞান আর কেবল ‘ছেলেদের বিষয়’ নয়। শিক্ষা মন্ত্রকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ২৭.২৪ লক্ষ ছাত্রী বিজ্ঞান বিভাগে পাশ করেছে। গত এক দশকের মধ্যে প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটল। এই পরিবর্তন শুধু একখানা সংখ্যাই নয়, এটি এক বিশাল সামাজিক বদলের ইঙ্গিত। ২০১০ সালে বিজ্ঞান বিভাগে পাশ করা ছাত্রীর সংখ্যা ছিল মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৩৮.২ শতাংশ। ২০২৩ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫.৫ শতাংশে। আর ২০২৪ সালে মেয়েরা যেন সেই ধারাকেই ছাপিয়ে গেল—একেবারে চূড়ায় উঠে এল। বিজ্ঞান বিভাগে মেয়েদের অগ্রগতি: রাজ্যভিত্তিক নজর তামিলনাড়ুতে এ বছর বিজ্ঞান বিভাগে মেয়েদের পাশের হার ৯৬.৩৫ শতাংশ—অসাধারণ। ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং ওড়িশার মতো রাজ্যেও ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রকল্প—যেমন ‘বিজ্ঞান জ্যোতি স্কলারশিপ স্কিম’, যা আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের বিজ্ঞান শিক্ষায় উৎসাহ জোগায়। এছাড়া CBSE-র ‘উদান প্রকল্প’ মেয়েদের ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল প্রবেশিকা পরীক্ষার জন্য মেন্টরিং এবং আর্থিক সহায়তা দেয়। উচ্চশিক্ষাতেও মেয়েরা এগিয়ে ভারত সরকারের "All India Survey on Higher Education 2021-22" অনুসারে, বিজ্ঞান বিভাগে এখন উচ্চশিক্ষার (UG, PG, MPhil, PhD) মোট ৫২.১ শতাংশ ছাত্রছাত্রীই মহিলা। শুধু স্নাতক স্তরে ৫১ শতাংশের বেশি ছাত্রী বিজ্ঞান বিভাগে পড়ছে। মেডিসিনে ছেলেমেয়ে সমান সংখ্যায় আছে, আর ইঞ্জিনিয়ারিং ও টেকনোলজিতেও মেয়েদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পরিবর্তনের বাস্তবতা এই সংখ্যাগুলি আশা জাগায়, কিন্তু বাস্তব চ্যালেঞ্জগুলো অস্বীকার করা যায় না।বিশেষ করে গ্রামীণ ও দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া মেয়েরা এখনো নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ে— এখনও আমাদের গ্রামের স্কুলগুলিতে ল্যাব বা সরঞ্জামের অভাব, একান্ত পড়াশোনার জায়গার অভাব, এমনকি স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অধিকারও অনিশ্চিত। এই সাফল্য যেন অর্ধেক পথেই থেমে না যায়, তার জন্য চাই— আরও বেশি সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ নিরাপদ আবাসন ও পড়াশোনার পরিবেশ অভিজ্ঞ শিক্ষকদের দ্বারা মেন্টরিং মেয়েদের জন্য বিশেষ কর্মসংস্থানের সুযোগ বিজ্ঞান নিয়ে মেয়েদের এই এগিয়ে আসা নিঃসন্দেহে একটি বিপ্লবের সূচনা। একটি দেশের অর্ধেক জনগণ যদি বিজ্ঞান শিক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তবে সেই দেশের জ্ঞান-অর্থনীতির ভবিষ্যৎ যে উজ্জ্বল হবে, তা বলাই বাহুল্য। .....বিস্তারিত পড়ুন

সহানুভূতির পাঠ: বাংলার স্কুলগুলিকে রাস্তার কুকুরদের খাওয়ানো ও টিকা দেওয়ার নির্দেশ

উত্তরাপথঃ বাংলার স্কুলগুলি এখন শুধু ছাত্রছাত্রীদের জন্য পুষ্টিকর খাবারই নয়, স্কুলের আশপাশের রাস্তার কুকুরদের পেটও ভরাবে। রাজ্য সরকার সমস্ত সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলকে নির্দেশ দিয়েছে, একজন কর্মী নিয়োগ করে দুপুরে এই প্রাণীদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে এবং তাদের টিকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে। এই উদ্যোগ ছাত্রছাত্রীদের মনে সহানুভূতির বীজ বপন করবে এবং প্রাণীদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার শিক্ষা দেবে, এমনটাই বিশ্বাস রাজ্য সরকারের। গত সপ্তাহে সমগ্র শিক্ষা মিশনের জারি করা এই নির্দেশে বলা হয়েছে, কুকুরদের নির্বীজন ও টিকাকরণের জন্য জেলা স্তরে পশু সম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় স্থাপন করতে হবে। এই উদ্যোগের পিছনে প্রেরণা এসেছে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মানেকা গান্ধীর এপ্রিল মাসে বাংলা সরকারকে লেখা একটি চিঠি থেকে, যেখানে তিনি স্কুলে মানুষ ও রাস্তার কুকুরদের মধ্যে বন্ধন গড়ে তোলার উদ্যোগের পরামর্শ দিয়েছিলেন। স্কুল শিক্ষা দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “এই ধরনের অভ্যাস ছাত্রছাত্রীদের রাস্তার প্রাণীদের প্রতি যত্নশীল হতে শেখায়। অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা কুকুরদের উত্ত্যক্ত করে, ফলে শিশু বা প্রাণীদের আঘাত লাগতে পারে। যখন তারা শিক্ষক ও স্কুলের কর্মীদের রাস্তার কুকুরদের যত্ন নিতে দেখবে, তখন তাদের মনে প্রাণীদের প্রতি সংবেদনশীলতা জাগবে। এই অভ্যাস তাদের আরও ভালো মানুষ হতে সাহায্য করবে।” অনেক স্কুল প্রধান এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন। কেউ কেউ বলেছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই এই দিকে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই ব্যাপারে ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলের বাইরে রাস্তার কুকুর ও বিড়ালদের যত্ন নিতে শুরু করেছেন। তাদের খাওয়ানোর পাশাপাশি, গরমের সময় তাদের জন্য জলের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।সেই সাথে স্কুলের দেওয়ালে প্রাণীদের প্রতি সদয় হওয়ার বার্তা লিখে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিভিন্ন স্কুল। তবে, কিছু স্কুল প্রধান সীমিত সম্পদের কারণে প্রতিদিন কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য একজন কর্মী নিয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উত্তর কলকাতার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “সম্প্রতি কুকুরের কামড় নিয়ে সচেতনতার নির্দেশ জারি হয়েছিল। এখন এই নির্দেশ ছাত্রছাত্রীদের রাস্তার কুকুরের সঙ্গে বন্ধন গড়তে বলছে। সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হলেও, সীমিত সময়ে এটি বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জিং। সরকার যদি এই ধরনের উদ্যোগ চালাতে চায়, তবে একাধিক কর্মশালা ও কর্মসূচির আয়োজন করা উচিত।” .....বিস্তারিত পড়ুন

গাছপালা এখন আপনাকে বলতে পারবে কখন তারা চাপে থাকে

উত্তরাপথঃ কল্পনা করুন, আপনার গাছপালা কি কথা বলতে পারে এবং অসুস্থ বোধ করলে আপনাকে বলতে পারে। আচ্ছা, এখন তারা পারে, একটি নতুন পরিধেয় ডিভাইসের জন্য ধন্যবাদ যা তাদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। এই সহজ কিন্তু চতুর ডিভাইসটি উদ্ভিদের চাপের প্রাথমিক লক্ষণগুলি সনাক্ত করতে পারে, যাতে আপনি খুব দেরি হওয়ার আগেই পদক্ষেপ নিতে পারেন। এই নতুন ডিভাইসটি কী? আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির গবেষকরা একটি ছোট, কাঁটাযুক্ত, বহনযোগ্য সেন্সর তৈরি করেছেন যা একটি গাছের পাতার সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি দেখতে কিছুটা ছোট, কাঁটাযুক্ত স্টিকারের মতো। সেন্সরটি একটি বিশেষ জেল দিয়ে লেপা নমনীয় বেসের উপর ছোট প্লাস্টিকের সূঁচ দিয়ে তৈরি। এই জেল হাইড্রোজেন পারক্সাইড নামক একটি রাসায়নিক অনুভব করতে পারে, যা গাছপালা খরা, ঠান্ডা, পোকামাকড় বা রোগের মতো জিনিসের চাপে থাকলে উৎপন্ন হয়। এটি কীভাবে কাজ করে? যখন একটি উদ্ভিদ চাপে থাকে, তখন এটি হাইড্রোজেন পারক্সাইড নির্গত করে। সেন্সরের মাইক্রোনিডলগুলি উদ্ভিদের ক্ষতি না করেই এই রাসায়নিকের সামান্য পরিমাণও সনাক্ত করতে পারে। যদি হাইড্রোজেন পারক্সাইড উপস্থিত থাকে, তাহলে সেন্সরটি একটি ক্ষুদ্র বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি করে। এই সংকেতটি সহজেই এবং দ্রুত পড়া যায়, সাধারণত এক মিনিটেরও কম সময়ে। পুরো প্রক্রিয়াটি সস্তা - প্রতি পরীক্ষায় এক ডলারেরও কম খরচ হয় - এবং সেন্সরগুলি একাধিকবার পুনঃব্যবহার করা যেতে পারে। এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ? অতীতে, চাষীদের পাতা বাদামী হয়ে যাওয়া বা কুঁচকে যাওয়ার মতো দৃশ্যমান লক্ষণগুলি খুঁজতে হত, যা ইতিমধ্যেই অনেক দেরি হয়ে গেলে ঘটতে পারে। কখনও কখনও, তাদের পাতা থেকে নমুনা নিতে হত, যা গাছের ক্ষতি করতে পারে। নতুন সেন্সরটি একটি প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা প্রদান করে - দৃশ্যমান ক্ষতি হওয়ার আগে চাষীরা তাদের গাছের স্বাস্থ্য জানাতে পারবে। গবেষকরা তামাক এবং সয়াবিন গাছের উপর এই সেন্সরগুলি পরীক্ষা করেছিলেন। সেন্সরগুলি ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে আসা গাছগুলিতে দ্রুত চাপ সনাক্ত করে, যা দেখায় যে তারা কার্যকরভাবে কাজ করতে সক্ষম। এই ডিভাইসটি সমস্যাগুলি প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করতে সাহায্য করে, যাতে কৃষক এবং উদ্যানপালকরা তাদের গাছপালা বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারে। বড় চিত্রটি কী? এই প্রযুক্তি কৃষিতে স্মার্ট সরঞ্জাম ব্যবহারের দিকে একটি বৃহত্তর প্রবণতার অংশ। এই ধরণের সেন্সর ছাড়াও, .....বিস্তারিত পড়ুন

12 3 4 5 6 7 8
Scroll to Top