slider


# বাংলার রথযাত্রা
প্রীতি গুপ্তাঃ বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম, শ্যামপুর। সবুজ ধানখেত আর নদীর কোল ঘেঁষে এই গ্রাম যেন এক টুকরো স্বর্গ। বছরের বেশিরভাগ সময় এখানে শান্তি আর সরলতার রাজত্ব। কিন্তু আষাঢ় মাস এলেই শ্যামপুরের মানুষের মনে এক অন্যরকম উৎসাহ জাগে। কারণ, এ সময় এখানে পালিত হয় জগন্নাথের রথযাত্রা। এই উৎসব শুধু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এ যেন গ্রামের প্রাণের মেলা, একতার উৎসব। গ্রামের মাঝখানে রয়েছে এক প্রাচীন জগন্নাথ মন্দির। মন্দিরের চারপাশে বিশাল আমবাগান আর একটা পুকুর, যার জলে সারা বছর পদ্মফুল ফোটে। মন্দিরের পুরোহিত, গোপাল দাস, বয়সে প্রৌঢ় হলেও তাঁর উৎসাহে যেন কোনও কমতি নেই। তিনি বলেন, “জগন্নাথ আমাদের সকলের। তিনি গ্রামের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে বাস করেন। রথযাত্রার এই সময় আমাদের একসঙ্গে আনন্দ করার এক সুযোগ।” এবারের রথযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল এক মাস আগে। গ্রামের যুবকরা মিলে রথ তৈরির কাজে লেগে পড়েছিল। কাঠের গাড়ি, রঙিন কাপড় আর ফুলের মালায় সাজানো রথ যেন এক স্বপ্নের ছোঁয়া। রথের চাকা তৈরি করেছিলেন গ্রামের বুড়ো কাঠমিস্ত্রি রামধন। তিনি বলেন, “আমার বাবা, তার বাবা—সবাই এই রথের চাকা বানিয়েছেন। এই কাজে আমার প্রাণ আটকে আছে।” গ্রামের মেয়েরা রথের জন্য ফুলের মালা গাঁথছিল। তারা গান গাইছিল, হাসছিল, আর একে অপরের সঙ্গে গল্প করছিল। মাঝে মাঝে তাদের হাসির শব্দে পাখিরা উড়ে যাচ্ছিল। ছোট্ট মেয়ে রাধা, যার বয়স মাত্র দশ, তার হাতে তৈরি একটা ছোট্ট মালা দেখে সবাই মুগ্ধ। রাধা লাজুক হেসে বলল, “আমার মালাটা জগন্নাথের গলায় পরাব। তিনি আমার দিদির অসুখ সারিয়ে দেবেন।” রথযাত্রার দিন ভোর থেকেই গ্রামের মানুষ ব্যস্ত। মন্দিরে ভক্তদের ভিড়, ধূপের গন্ধ, শঙ্খধ্বনি আর মন্ত্রোচ্চারণে চারদিক মুখরিত। গ্রামের প্রতিটি ঘর থেকে মানুষ এসে জড়ো হয়েছিল। কেউ পুজোর থালা হাতে, কেউ ফুলের ঝুড়ি নিয়ে, আর কেউ শুধু হৃদয় ভরা ভক্তি নিয়ে। দুপুরের দিকে রথযাত্রা শুরু হল। জগন্নাথ, বলরাম আর সুভদ্রার মূর্তি রথে বসানো হল। গ্রামের যুবকরা দড়ি টানতে শুরু করল। তাদের মুখে হাসি, কপালে ঘাম। বুড়ো রামধন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন, তার চোখে গর্বের চমক। গ্রামের মেয়েরা রথের পাশে পাশে হাঁটছিল, হাতে ফুল ছড়াচ্ছিল। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা দৌড়ে রথের পিছু পিছু যাচ্ছিল, তাদের হাসির শব্দ যেন সব দুঃখ ভুলিয়ে দিচ্ছিল। রথ যখন গ্রামের মাঝখানে এসে পৌঁছল, তখন এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। গ্রামের কুখ্যাত মানুষ, যদু, যে কখনও কারও সঙ্গে ভালো করে কথা বলত না, সে হঠাৎ রথের দড়ি ধরে টানতে শুরু করল। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। যদুর চোখে জল, মুখে এক অদ্ভুত শান্তি। পরে সে বলল, “জগন্নাথ আমাকে ডাকছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন


আইনস্টাইনের পারমাণবিক বোমা সম্পর্কিত চিঠি জাপানে নিলামে বিক্রি হল না
উত্তরাপথঃ এক সময়ের পরমাণু যুগের ‘ঈশ্বর’ হিসেবে বিবেচিত আলবার্ট আইনস্টাইনের পারমাণবিক বোমার ভয়াবহ শক্তি এবং তার সৃষ্টিতে তাঁর ভূমিকা নিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশ্য চিন্তাভাবনা সম্বলিত একটি ঐতিহাসিক চিঠি সম্প্রতি জাপানের একটি নিলামে বিক্রির জন্য তোলা হলেও, শেষ পর্যন্ত তার কোনো ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। বনহ্যামসের তালিকা অনুযায়ী, এই পাঁচ-অনুচ্ছেদের টাইপ করা চিঠির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০,০০০ থেকে ১৫০,০০০ মার্কিন ডলার। এই চিঠিটি এক সময়কার জাপানি জনপ্রিয় ম্যাগাজিন Kaijo-তে ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটিই ছিল আইনস্টাইনের সবচেয়ে বিশদ ও খোলামেলা প্রতিক্রিয়া তার পরমাণু বোমা সংক্রান্ত ভূমিকা নিয়ে। পারমাণবিক বোমার ছায়ায় আইনস্টাইনের জীবন আইনস্টাইন কখনোই সরাসরি পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজে অংশ নেননি, তবে তাঁর পদার্থবিজ্ঞানের বিপ্লবী আবিষ্কারগুলি পারমাণবিক শক্তির প্রযুক্তি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তিনি জানতেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জয়ী হতে হলে নাজি জার্মানির আগে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির দৌড়ে এগিয়ে থাকতে হবে। এই জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ১৯৩৯ সালে তাঁর সহকর্মী পদার্থবিজ্ঞানী লিও সিলার্ডের লেখা একটি চিঠিতে আইনস্টাইন স্বাক্ষর করেন, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, “পরিস্থিতির কিছু দিক সতর্কতা এবং প্রয়োজনে প্রশাসনের তরফে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি রাখে। তাই আমি এই তথ্য এবং সুপারিশগুলি আপনার নজরে আনাকে আমার কর্তব্য মনে করছি।” এই চিঠি রুজভেল্টকে পারমাণবিক কর্মসূচি অনুমোদনের জন্য প্ররোচিত করেছিল, যার ফল ছয় বছর পর হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে দেখা গিয়েছিল। এই ট্র্যাজিক ফলাফল আইনস্টাইনকে তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাড়িত করেছিল। ১৯৪৬ সালে টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে তাঁকে একটি মাশরুম ক্লাউডের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়, যার উপরে লেখা ছিল “E=MC²”। পরের বছর নিউজউইক তাঁকে “পারমাণবিক যুগের জনক” হিসেবে আখ্যায়িত করে। তবে আইনস্টাইন বারবার এই অস্ত্র তৈরিতে তাঁর ভূমিকা থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক ও কাইজো পত্রিকার প্রশ্ন .....বিস্তারিত পড়ুন


গাজায় 'হাঙ্গার গেমস' বাস্তবতা: একটি মানবিক বিপর্যয়ের কাহিনী
প্রীতি গুপ্তাঃ যখন সুজান কলিন্সের লেখা "দ্য হাঙ্গার গেমস" বইগুলো প্রকাশ পেয়েছিল, তখনকার পাঠকরা হয়তো ভাবতেও পারেননি যে, বইয়ের সেই বিভীষিকাময় দৃশ্যগুলো বাস্তবের পৃথিবীতেও একদিন ঘটবে। কিন্তু আজ গাজার মাটিতে, এই ভয়াবহতা প্রতিদিন ঘটছে – এবং বিশ্বের চোখ যেন এই নরককেও দেখতে ব্যর্থ। গাজা উপত্যকা মার্চ মাস থেকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ। প্রতিটি পরিবার এখন একবেলা খাবারের জন্য লড়াই করছে – কেউ কেউ তো দিনের পর দিন না খেয়ে কাটাচ্ছেন। মানবিক বিপর্যয় এখন আর একটিমাত্র ‘সংকট’ নয়, বরং তা এক নির্মম অস্ত্র হয়ে উঠেছে। ত্রাণ নয়, মৃত্যুর ফাঁদ মে মাসের শেষ দিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত Gaza Humanitarian Foundation (GHF) সীমিত কিছু ত্রাণ বিতরণ শুরু করে। কিন্তু সেগুলো ছিল পরিকল্পিতভাবে বিশৃঙ্খল এবং প্রাণঘাতী। গাজাবাসীদের জন্য এটি যেন একটি মরন-খেলা – খাদ্যের জন্য জীবন বাজি রাখার খেলা। ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত “নেটজারিম করিডোর”– একে স্থানীয়রা বলেন “মৃত্যুর করিডোর”। এই জায়গা ঘিরে আছে বালু, সৈন্য, বিদেশি মিলিশিয়া এবং ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক। কোনও নির্দিষ্ট সময়সূচি নেই – কখনো ভোর ৪টায়, কখনো আরও দেরিতে গেট খোলা হয়। লোকজন আগের রাত থেকেই অপেক্ষা করতে থাকেন। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই শত শত ক্ষুধার্ত মানুষ ছুটে যান একটি খাদ্যের বাক্সের আশায়। কোনও সারি নেই, নেই নিয়ন্ত্রণ, নেই নিরাপত্তা। চারপাশে শুধু ধুলো, আর্তনাদ, আতঙ্ক। ড্রোনগুলো মাথার ওপর চক্কর দেয়, তারপর হঠাৎ এক ঘোষণা – “চার মিনিট! যত পারো নিয়ে নাও!” বালির মধ্যে কিছু খাদ্যের বাক্স ফেলে রাখা হয়। তা কখনোই যথেষ্ট হয় না। হঠাৎ লড়াই শুরু হয় – কেউ কেউ ছুরি চালায়, মুষ্টিযুদ্ধ বেধে যায়, শিশুদের কান্না, মহিলাদের হাঁটুপরে হামাগুড়ি – এইসব দৃশ্য যেন বাস্তবের 'হাঙ্গার গেমস'। আর তারপর আসে গুলির শব্দ। মে মাসের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত ৫০০’র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, এবং ৪,০০০’রও বেশি আহত হয়েছেন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে – শুধুমাত্র ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়ার সময়। একজন স্থানীয়ের বাবা , ১৪ জুন সকালে পরিবারকে খাবার জোগার করতে গিয়ে আর ফেরেননি। .....বিস্তারিত পড়ুন


রাজস্থানের রাবারি(Rabari) উপজাতি: একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গল্প
গার্গী আগরওয়ালা মাহাতোঃ রাজস্থানের বর্ণময় ভূমিতে, যেখানে মরুভূমির বুকে ইতিহাস ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে, সেখানে রাবারি উপজাতি তাদের অনন্য জীবনধারা ও ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই যাযাবর সম্প্রদায়টি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে রাজস্থানের থর মরুভূমির কঠিন পরিবেশে বেঁচে থেকে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে। তাদের রঙিন পোশাক, অপূর্ব হস্তশিল্প এবং পশুপালনের ঐতিহ্য তাদেরকে রাজস্থানের সাংস্কৃতির একটি অপরিহার্য অংশ করে তুলেছে। এই নিবন্ধে আমরা রাবারি উপজাতির ইতিহাস, জীবনধারা, সংস্কৃতি এবং তাদের জীবনে আসা আধুনিক সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করব। ঐতিহাসিক পটভূমি রাবারি উপজাতির উৎপত্তি নিয়ে ঐতিহাসিক মতভেদ রয়েছে। কিংবদন্তি অনুসারে, তারা মূলত পশ্চিম ভারতের যাযাবর পশুপালক সম্প্রদায়। কেউ কেউ বলেন, তারা মধ্য এশিয়া থেকে এসেছিল, আবার অনেকে তাদের রাজপুত বংশোদ্ভূত বলে মনে করেন। তাদের নাম ‘রাবারি’ শব্দটি এসেছে ‘রাহবার’ থেকে, যার অর্থ ‘পথপ্রদর্শক’। এই নামটি তাদের যাযাবর জীবনধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, কারণ তারা মরুভূমির বিস্তীর্ণ প্রান্তরে পশুদের নিয়ে চলাচল করত। (MAGIK INDIA, ২০২২)। ১২৯৮ খ্রিস্টাব্দের একটি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক ঘটনা সেই সময় তাদের উপস্থিতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে: যখন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি গুজরাটের সিদ্ধপুরের একটি মন্দির থেকে একটি শিবলিঙ্গ দখল করেছিলেন, তখন রাবারিরা যোদ্ধা দল গঠন করে এবং সিরোহির মহারাজার সাথে এটি পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করে, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রদর্শন করে (MAGIK INDIA,২০২২)। রাবারিরা প্রধানত গুজরাট, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশে বসবাস করে। রাজস্থানে তারা কচ্ছ, জয়সলমের, বাড়মের এবং জোধপুরের মতো এলাকায় বেশি দেখা যায়। তাদের জীবনযাত্রা মূলত পশুপালনের ওপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে উট, গরু, ভেড়া এবং ছাগল পালন।রাবরিরা আধা-যাযাবর জীবনযাত্রায় গবাদি পশু পালন সহ দুধ উৎপাদনের মতো কাজকে অগ্রাধিকার দেয়। ভেড়ার পশম এবং ছাগলের দুধ হল রাবারিদের মূল অর্থনৈতিক সম্পদ, যা পুষ্কর উটের মেলার মতো বাজারে বিক্রি হয়। বস্তুত আজও পুষ্কর মেলা বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র । .....বিস্তারিত পড়ুন


মুম্বাই চিড়িয়াখানায় পেঙ্গুইনের ছানার জন্ম: মারাঠি নামের দাবিতে বিজেপি!
উত্তরাপথঃ মুম্বই শহরের রাজনীতি এমনিতেই উত্তেজনাপূর্ণ। কিন্তু এবার রাজনীতির রং লাগল পেঙ্গুইনের গায়েও! শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি—এবার দাবি উঠেছে, মুম্বাইয়ের চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া পেঙ্গুইনের ছানাদের নাম রাখতে হবে মারাঠি ভাষায়। তাঁদের যুক্তি? এই ‘উড়ন্ত পাখি’ নাকি মহারাষ্ট্রের আদি বাসিন্দা! বিজেপি নেতা নীতিন বাঙ্কার তো রীতিমতো মিছিল করে জানিয়ে দিয়েছেন —“যখন বিদেশ থেকে পেঙ্গুইন আনা হয়েছিল বীরমাতা জিজাবাই ভোঁসলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানায় (যাকে সবাই রানিবাগ বলে চেনে), তখন আমরা মেনে নিয়েছিলাম যে তাদের নাম ইংরেজিতে হবে। কিন্তু সদ্যজাত এই পেঙ্গুইন এখন তো মুম্বইতেই জন্মেছে! এই ছানারা একেবারে ঘরের, এদের নাম কি 'লুসি' বা 'চকো' হবে? মারাঠি নাম দিলে মন্দ কী?" মুম্বাই পৌরসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি কর্মীদের এই প্রতিবাদ দেখে মনে হতে পারে, এটা যেন পরিচয়ের রাজনীতির এক নতুন অধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিএমসিকে (বৃহন্মুম্বই পৌর কর্পোরেশন) একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কানে তুলছে কে? "বাচ্চা পেঙ্গুইনের নাম ঠিক করতে এত গড়িমসি! যেন ইউনাইটেড নেশনের ভোট লাগবে!" — কটাক্ষ করেন তিনি। বিজেপি নেতা নীতিন বাঙ্কারের মতে, মারাঠি তো এখন ক্লাসিক্যাল ভাষা। তাহলে পেঙ্গুইনের নাম 'রোমিও' না হয়ে 'ভাউ' হতে দোষ কোথায়? প্রসঙ্গত এই নামকরণ যুদ্ধ কিন্তু শুধু মুম্বইতেই নয়, এর আগেও দেখা গেছে অন্য দেশে। চিলিতে, একবার স্থানীয়রা দাবি করেছিলেন, অ্যান্ডিজ পর্বতের পাশে জন্ম নেওয়া পেঙ্গুইনের নাম রাখা হোক 'পেপে' বা 'পেদ্রো'—একেবারে স্থানীয় স্টাইলে। জাপানে তো এক চিড়িয়াখানায় পান্ডার বাচ্চার নাম রাখার জন্য জনসাধারনের মধ্যে ভোটাভুটি হয়, এরপর জাপানি সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নাম রাখা হয়। এমনকি কানাডায় একবার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে জন্মানো পেঙ্গুইনের নাম রাখা হয় 'ম্যাপল'—তাদের জাতীয় গাছের নামে! তাই ভাবুন, যদি বিদেশের পেঙ্গুইনেরাও 'দেশি' নামে পরিচিত হতে পারে, তাহলে মুম্বইয়ের আমাদের ঘরের পেঙ্গুইন ছানারা কেন পাবে না মারাঠি নাম? তবে এটা নিশ্চিত, পেঙ্গুইন ছানারা এ নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। হয়ত চিড়িয়াখানার কাঁচের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ভাবছে—"নাম যাই হোক, মাছটা ঠিকমতো দিলেই হল!" .....বিস্তারিত পড়ুন


১০০ বছর আগে টেলিভিশনের জন্মের পেছনে ছিল চাঞ্চল্যকর ষড়যন্ত্র ও হিংস্র প্রতিযোগিতা!
উত্তরাপথঃ আজ থেকে ঠিক ১০০ বছর আগে, ১৯৩৬ সালে, টেলিভিশনের জন্ম হয়েছিল এক রোমাঞ্চকর গল্পের মধ্য দিয়ে। এই গল্পে ছিল তীব্র প্রতিযোগিতা, ষড়যন্ত্র, উৎসবের আমেজ আর এক বিধ্বংসী দুর্ঘটনা। গল্পের চরম মুহূর্ত এলো যখন ১৯৩৬ সালের ৩০ নভেম্বর লন্ডনের ক্রিস্টাল প্যালেসে আগুন লেগে টেলিভিশনের উদ্ভাবক জন লজি বেয়ার্ডের ল্যাবরেটরির একটা বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেল। এর চেয়ে খারাপ সময় আর তাঁর কাছে হতে পারত না! বেয়ার্ড তখন লড়াই করছিলেন EMI নামের এক বিশাল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে, যারা গুগলিয়েলমো মারকনি ও আমেরিকান রেডিও কোম্পানি RCA-এর সঙ্গে জোট বেঁধে আধুনিক ইলেকট্রনিক টিভি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিল। বেয়ার্ডের হাতেই ছিল পুরনো যন্ত্রচালিত টিভি প্রযুক্তি। এই যন্ত্রচালিত টিভি-ই তাকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তারবিহীন চলন্ত ছবি প্রেরণকারী হিসেবে খ্যাতি এনে দিয়েছিল, ১৯২৫ সালে। টেলিভিশনের শুরুর দিনগুলো টেলিভিশনের শুরুর দিনগুলো ছিল একটা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। অনেক উদ্ভাবকই এই নতুন মাধ্যমের জন্য লড়াই করছিলেন। জন লজি বেয়ার্ড ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। তিনি প্রথম বেতারের মাধ্যমে চলমান ছবি পাঠাতে সক্ষম হন, যেমনটা ১৯২৫ সালের জুন মাসে পপুলার সায়েন্স ম্যাগাজিনের লেখক নিউটন বার্ক লিখেছিলেন। কিন্তু বেয়ার্ডের প্রাথমিক সাফল্যের পর তিনি ব্যর্থ হন কারণ তিনি পুরনো যান্ত্রিক (মেকানিকাল) প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেছিলেন, যখন নতুন ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি অনেক বেশি কার্যকর ছিল। বেয়ার্ডের যান্ত্রিক টেলিভিশন সিস্টেম সেই সময়ের জন্য বিপ্লবী ছিল। এটা দিয়ে তিনি একটা ল্যাবরেটরির এক ঘর থেকে আরেক ঘরে মানুষের মুখের হাসি, চোখের পলক ফেলা—এসব ছবি পাঠাতে পারতেন, তাও কোনো তার বা ফটোগ্রাফি ছাড়াই! কিন্তু ছবিগুলো এতটাই অস্পষ্ট ছিল যে, বেয়ার্ডের ছবি দেখে মনে হতো যেন কোনো ভৌতিক মুখ! তবু বার্ক লিখেছিলেন, “মুখের আউটলাইন স্পষ্ট, চোখের গর্তের ছায়া আর খোলা মুখের আকৃতি পরিষ্কার দেখা যায়।” অন্যদের অবদান বেয়ার্ডের কাজ একা তার নিজের ছিল না। তিনি অনেক আগের উদ্ভাবকদের কাজের ওপর ভিত্তি করে এগিয়েছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন


বিড়ালরা কি সত্যিই শসা ভয় পায় ?
উত্তরাপথঃ আপনি সম্ভবত সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন ভিডিও দেখেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে বিড়ালরা শসা দেখে ভয় পাচ্ছে। এই ক্লিপগুলিতে, একটি শান্ত বিড়াল বসে খাচ্ছে, তারপর হঠাৎ তার পিছনে একটি শসা দেখতে পায়। তারপর সেই বেড়ালটি বাতাসে লাফিয়ে ওঠে বা হতবাক হয়ে যায়, অবাক বা ভীত দেখায়। অনেকেই ভাবছেন, "কেন বিড়ালরা এইভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়? শসা কি তাদের কাছে সত্যিই ভয়ঙ্কর?" কেউ কেউ মনে করেন কারণ শসা দেখতে সাপের মতো, যা বন্য বিড়ালদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। কিন্তু ক্যাটেনা জোন্স, যিনি পশুর আচরণ সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন ,তিনি এ বিষয়ে এতটা নিশ্চিত নন। জোন্স ব্যাখ্যা করেন, "এটি একটি সহজাত প্রবৃত্তি হতে পারে। বিড়ালরা শসাকে সাপের সাথে গুলিয়ে ফেলতে পারে কারণ তাদের পূর্বপুরুষরা সাপ খেয়েছিল। কিন্তু আমি অনেক বছর ধরে বিড়ালদের সাথে কাজ করেছি, এবং সত্যি বলতে, তারা সাধারণত শসা বা অনুরূপ জিনিস সম্পর্কে চিন্তা করে না।" তিনি একটি বিড়ালের শসা, গাজর এবং একটি ক্যান্ডি বার শুঁকানোর একটি ভিডিওও দেখিয়েছিলেন। বিড়ালরা আসলে গাজর বা ক্যান্ডি নিয়ে চিন্তিত ছিল না - শসাই ছিল বড় প্রতিক্রিয়ার কারণ। আমরা একটা জিনিস জানি যে বিড়ালরা স্বাভাবিকভাবেই সতর্ক কারণ তারা শিকারী প্রাণী। বন্য অঞ্চলে, তারা সবসময় বিপদের জন্য সতর্ক থাকে। জোন্স বলেন, "তাদের বিশ্রাম নিতে এবং খেতে যথেষ্ট নিরাপদ বোধ করতে কিছুটা সময় লাগে, বিশেষ করে যদি তারা নতুন বা খোলা জায়গায় থাকে। একবার তারা বুঝতে পারে যে খারাপ কিছু ঘটছে না, তারা শান্ত হয়ে যায়।" এর মানে হল যে ভিডিওগুলিতে বিড়ালদের হঠাৎ শসা দেখার পরে লাফিয়ে বা পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে যেখানে প্রায়শই তারা অপরিচিত এবং ভীতিকর কিছুতে প্রতিক্রিয়া দেখায়। কল্পনা করুন যদি আপনি স্নান করছেন এবং হঠাৎ একটি বিশাল মাকড়সা দেখতে পান - তাহলে আপনিও চমকে যাবেন। জোন্স বলেন, "শসা কেবল একটি বড়, অন্ধকার বস্তু যা বিড়ালের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে উপস্থিত হয়। এটি তাদের ভয় দেখায় কারণ তারা স্বাভাবিকভাবেই সতর্ক এবং অবাক হতে পছন্দ করে না।" বিড়ালের আচরণ বিশেষজ্ঞ জেন এহরলিচও ভাবছেন যে ক্যামেরার বাইরে এমন কিছু ঘটছে যা বিড়ালদের ভয় দেখিয়ে থাকতে পারে। হয়তো কোনও শব্দ বা নড়াচড়া বিড়ালটিকে সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য করেছে। উভয় বিশেষজ্ঞই একমত যে বিড়ালদের প্রতিক্রিয়া দেখায় যে তারা খুব চাপে আছে। সাধারণত, যখন বিড়ালরা ভয় পায়, তখন তারা তাদের পশম ফুলিয়ে, পিঠ বাঁকিয়ে .....বিস্তারিত পড়ুন