বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি


মহাকাশ স্টেশনে কেন অসুস্থ হচ্ছেন নভোচারীরা?

উত্তরাপথঃ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS) হলো মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক ল্যাবরেটরি, যেখানে পৃথিবী থেকে হাজার কিলোমিটার দূরে বিজ্ঞানীরা প্রতিদিন গবেষণা চালাচ্ছেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, পৃথিবীতে আমরা সুস্থ থাকার জন্য সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ চাই , অন্যদিকে মহাকাশ স্টেশনের "অতিরিক্ত পরিষ্কার – পরিচ্ছন্নতার" ফলেই নাকি নভোচারীদের মধ্যে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কেন সমস্যা হচ্ছে? ISS-এ প্রতিদিন এয়ার ফিল্টার চালানো হয়, সাপ্তাহিকভাবে মুছে ফেলা হয় সব পৃষ্ঠ, এমনকি নিয়মিত ভ্যাকুয়াম ক্লিনারও ব্যবহার করা হয়। তবুও নভোচারীদের মাঝে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া, ত্বকে র‍্যাশ ওঠা, এমনকি সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। নতুন এক গবেষণা জানাচ্ছে, এর মূল কারণ হতে পারে জীবাণুর বৈচিত্র্যের অভাব। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রডলফো স্যালিদো বেনিতেজ এবং তাঁর দল দেখেছেন, ISS-এর ভেতরে প্রায় সব জীবাণুই মানুষের ত্বক বা স্টেশনের উপকরণ থেকে এসেছে। মাটির বা জলের মতো প্রাকৃতিক উৎস থেকে আসা জীবাণুর পরিমাণ ০.৩ শতাংশেরও কম। আমরা সাধারণত জীবাণু মানেই রোগ ভেবে ভয় পাই। কিন্তু সত্য হলো, আমাদের শরীর ও পরিবেশে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির জীবাণু একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে, ফলে ক্ষতিকর জীবাণু একচেটিয়া ক্ষমতা পায় না। যেমন, পৃথিবীতে যারা গ্রামীণ পরিবেশে পশুপাখির সংস্পর্শে থাকে— তাদের মধ্যে হাঁপানি বা অ্যালার্জির ঝুঁকি অনেক কম। কারণ তাদের চারপাশের জীবাণুর বৈচিত্র্য তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী রাখে। কিন্তু মহাকাশ স্টেশনে সেই বৈচিত্র্য নেই। দেয়াল, টেবিল বা যন্ত্রপাতি শুধু নভোচারীদের শরীর থেকে আসা একই ধরনের জীবাণুকেই প্রতিফলিত করছে। এরফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নভোচারীদের জন্য "ভালো জীবাণু" যোগ করা দরকার। এর একটি উপায় হতে পারে— ফারমেন্টেড খাবার (যেমন দই ও আচার) রাখা। এতে জীবাণুর বৈচিত্র্য কিছুটা বাড়বে। .....বিস্তারিত পড়ুন

আমাদের মস্তিষ্কে প্লাস্টিকের জমাট বাঁধা – এক নতুন আতঙ্ক

উত্তরাপথঃ আমরা প্রতিদিন প্লাস্টিকের ব্যবহার করি—পানীয়ের বোতল, বাজারের ব্যাগ, খেলনা থেকে শুরু করে শ্যাম্পুর বোতল পর্যন্ত। কিন্তু সেই একই প্লাস্টিক এখন আমাদের শরীরের ভেতরে, এমনকি মস্তিষ্কের ভেতরেও ঢুকে পড়ছে—যা এক সময় অকল্পনীয় মনে হতো। সম্প্রতি Nature Medicine-এ প্রকাশিত এক গবেষণা দেখিয়েছে, গত ২৫ বছরে সংগৃহীত মস্তিষ্কের টিস্যু নমুনায় চমকপ্রদ মাত্রায় মাইক্রোপ্লাস্টিক ও ন্যানোপ্লাস্টিক (MNPs) জমা পাওয়া গেছে। গবেষকরা জানান, ২০১৬ সালে যেখানে প্রতি গ্রাম মস্তিষ্ক টিস্যুতে গড়ে প্রায় ৩,৩৪৫ মাইক্রোগ্রাম প্লাস্টিক পাওয়া যেত, ২০২৪ সালে সেই মাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪,৯১৭ মাইক্রোগ্রামে—অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। আমাদের মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখতে একটি বিশেষ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে—blood-brain barrier। এটি সাধারণত ক্ষতিকর পদার্থকে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। কিন্তু এই গবেষণা প্রমাণ করেছে যে মাইক্রোপ্লাস্টিকও সেই প্রাচীর ভেদ করে প্রবেশ করতে সক্ষম। এমনকি লিভার ও কিডনির তুলনায় মস্তিষ্কে ১০ গুণ বেশি প্লাস্টিক জমে থাকতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে। আরেকটি আলাদা গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষের মধ্যে যেখানে সমুদ্রের জলে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক ছিল, সেখানে বাসিন্দাদের মধ্যে একটা বয়সের পর স্মৃতিশক্তি হ্রাস, চিন্তা-ভাবনার সমস্যা, এমনকি দৈনন্দিন কাজ (যেমন পোশাক পরা, বাজার করা) করার ক্ষেত্রেও নানা অসুবিধার মধ্যে পড়তে  দেখা গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কে পাওয়া প্লাস্টিক কণাগুলো মূলত পলিথিন (Polyethylene) জাতীয় প্লাস্টিক থেকে এসেছে—যা বাজারের ব্যাগ, বোতল বা খেলনায় ব্যবহৃত হয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এগুলো মসৃণ দানার মতো নয়, বরং ধারালো ও লম্বাটে কণা—যা টিস্যুকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে মাইক্রোপ্লাস্টিক সরাসরি মস্তিষ্কে রোগ সৃষ্টি করে। তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন— .....বিস্তারিত পড়ুন

টেফলনের বিকল্প? এই আবিষ্কার বদলাতে পারে রান্নার পাত্রের ভবিষ্যৎ

উত্তরাপথঃ টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের Faculty of Applied Science & Engineering–এর গবেষকেরা এমন এক নতুন উপাদান তৈরি করেছেন, যা রান্নার বাসন সহ বিভিন্ন দৈনন্দিন জিনিসে ব্যবহৃত প্রচলিত নন-স্টিক কোটিংয়ের তুলনায় অনেকটা নিরাপদ হতে পারে। এই নতুন কোটিং জলের মতোই তেল বা চর্বিকেও সহজে প্রতিহত করতে সক্ষম, অথচ এতে প্রচলিত ক্ষতিকর PFAS (per- and polyfluoroalkyl substances)–এর মাত্রা অনেক কম। টেফলন ও PFAS-এর বিজ্ঞান ১৯৩০-এর দশকে তৈরি হওয়া টেফলন (PTFE) রান্নার পাত্রে বিপ্লব ঘটায়। টেফলন PFAS পরিবারের অন্তর্ভুক্ত, যেখানে কার্বন-ফ্লোরিনের শক্তিশালী বন্ধন থাকে। এই বন্ধন ভাঙা প্রায় অসম্ভব, তাই টেফলন খুব ভালো নন-স্টিক বৈশিষ্ট্য দেখায়। কিন্তু এই রাসায়নিক ভেঙে না গিয়ে পরিবেশে থেকে যায় বহু বছর ধরে—তাই একে বলা হয় “forever chemicals”। PFAS শুধু টেকসইই নয়, জীবদেহেও জমতে থাকে। খাদ্যশৃঙ্খল ধরে এগোতে এগোতে এর ঘনত্ব আরও বেড়ে যায়। গবেষণা বলছে, দীর্ঘদিন PFAS–এর সংস্পর্শে থাকলে ক্যানসার, জন্মগত ত্রুটি, এমনকি অন্যান্য জটিল স্বাস্থ্যসমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। বিকল্প খোঁজার চেষ্টা গবেষক দলটি এবার ব্যবহার করেছে PDMS (polydimethylsiloxane) নামক উপাদান, যা সাধারণভাবে ‘সিলিকন’ নামে পরিচিত। সিলিকন অনেক ক্ষেত্রে জীবদেহের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ (যেমন: চিকিৎসায় ইমপ্লান্টে ব্যবহৃত হয়), কিন্তু এতদিন পর্যন্ত PFAS–এর মতো সিলিকনের ক্ষেত্রে কার্যকর তেল-প্রতিরোধ ক্ষমতা দেখা যায়নি। এই সীমাবদ্ধতা কাটাতে গবেষক স্যামুয়েল আউ তৈরি করেছেন নতুন এক প্রযুক্তি—“ন্যানোস্কেল ফ্লেচিং”। এখানে PDMS–এর ক্ষুদ্র শিকল (bristles) একটি বেস উপাদানের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এরপর প্রতিটি শিকলের প্রান্তে যুক্ত করা হয় PFAS–এর সবচেয়ে ছোট অণু, যা এক কার্বনের সঙ্গে মাত্র তিনটি ফ্লোরিন নিয়ে গঠিত। এর ফলে তৈরি হয় তীরের পালকের মতো গঠন, যা জলের পাশাপাশি তেলও প্রতিহত করতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

 ইভারমেকটিনঃ ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে বিপ্লব আনছে এই একটি ট্যাবলেট

উত্তরাপথঃ একটি সাধারণ ট্যাবলেট এখন ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন আশা জাগাচ্ছে। এই ট্যাবলেট খেলেই মানুষ হয়ে উঠছে মশার জন্য ‘মারণাস্ত্র’—কারণ রক্ত চুষতেই মারা যাচ্ছে মশা! সম্প্রতি কেনিয়া ও মোজাম্বিকে পরিচালিত একটি বিশাল গবেষণায় দেখা গেছে, ইভারমেকটিন নামের একটি অ্যান্টিপ্যারাসাইটিক ওষুধ ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ২৬% পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। এক মাসে একবার ওষুধ খেলেই কাজ হচ্ছে, এবং বাড়তি বোনাস হিসেবে কমেছে উকুন ও চুলকানির সমস্যাও কমে যায় ,অর্থাৎ—এক ঢিলে অনেক পাখি! আইভারমেকটিন একটি নিরাপদ এবং সহজলভ্য ওষুধ। গবেষণায় দেখা গেছে পুরো গ্রাম এটি  ব্যবহার করলে ম্যালেরিয়া ছড়ানো ২৬% কমে যায়। BOHEMIA Project-এর অধীনে (Broad One Health Endectocide-based Malaria Intervention in Africa) গবেষণাটি করা হয়েছিল । কেনিয়ার কোয়ালে কাউন্টি-তে (৫–১৫ বছর বয়সী শিশুদের নিয়ে)এবং মোজাম্বিকের মোপিয়া জেলায় (৫ বছরের নিচে শিশুদের নিয়ে)। সেখানে তিন মাস ধরে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট ডোজে (৪০০ মাইক্রোগ্রাম/কেজি) ইভারমেকটিন খাওয়ানো হয় বর্ষাকালের শুরুতে, যেটা ম্যালেরিয়ার প্রধান মৌসুম। কেনিয়ার কোয়ালে কাউন্টিতে দেখা গেছে, যারা ইভারমেকটিন নিয়েছে, তাদের মধ্যে ম্যালেরিয়ার হার ২৬% কমেছে। ২০,০০০-এর বেশি শিশুকে নিয়ে ৫৬,০০০ বার ডোজ দেওয়া হয়েছে, এবং কোথাও বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।বোহেমিয়া ট্রায়াল নামের এই গবেষণাটি দেখিয়েছে যে এই ওষুধ ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে অতিরিক্ত সুরক্ষা দিতে পারে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছে বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ (আইএসগ্লোবাল), সঙ্গে ছিল লা কাইক্সা ফাউন্ডেশন, মানহিসা হেলথ রিসার্চ সেন্টার এবং কেমরি-ওয়েলকাম ট্রাস্ট। ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন-এ(The New England Journal of Medicine )। ২০২৩ সালে বিশ্বে ম্যালেরিয়ায় ২৬৩ মিলিয়ন মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল এবং ৫৯৭,০০০ মানুষ মারা গিয়েছিল। মশারী বা স্প্রে এখন আর আগের মতো কার্যকর নয়, কারণ মশারা এগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়ে গেছে। এমনকি মশারা এখন বাইরে বা দিনের বেলায় কামড়ায়, যখন মানুষ মশারীর নিচে থাকে না। তাই নতুন কিছুর দরকার ছিল, আর আইভারমেকটিন সেই সমাধান হতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে সহনশীল ফল ও সবজি উৎপাদন কি সম্ভব?

উত্তরাপথঃ জলবায়ু পরিবর্তন পৃথিবীর কৃষিক্ষেত্রের সামনে এক বড় সমস্যা হিসেবে উঠে এসেছ। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, খরা, অতিবৃষ্টি এবং মাটির উর্বরতা হ্রাস—এই সমস্ত প্রভাব আমাদের খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ফল ও সবজি, যেগুলো আমাদের খাদ্যচক্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, সেগুলোর উৎপাদন এই পরিবর্তনের কারণে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞানীরা খোঁজ করছেন এমন প্রযুক্তির, যা এই ফল ও সবজিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সহনশীল করে তুলতে পারে। কীভাবে এটা সম্ভব? চলুন বিজ্ঞানের আলোকে বিশ্লেষণ করা যাক। জলবায়ু অসামঞ্জস্যতা: বর্ষাকাল আগেভাগে বা দেরিতে আসা, খরার সময়সীমা দীর্ঘ হওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ—এই সবই চাষের সময় নির্ধারণ ও সেচের ওপর প্রভাব ফেলে। নতুন পোকামাকড় ও রোগ: উষ্ণ পরিবেশে নতুন নতুন রোগজীবাণু ও কীটপতঙ্গ বিস্তার লাভ করে যা ফল ও সবজির ক্ষতি করে। তাপমাত্রাবৃদ্ধি: উচ্চ তাপমাত্রা গাছের ফুল ফোটার সময়ে বিঘ্ন ঘটায়, ফলে ফলন হ্রাস পায়। উদাহরণস্বরূপ, টমেটো এবং স্ট্রবেরির মতো ফসল তাপমাত্রা সংবেদনশীল। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সাহায্যে প্রতিরোধ ১. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (Genetic Engineering) বিজ্ঞানীরা বর্তমানে ফল ও সবজির জিনে পরিবর্তন ঘটিয়ে সেগুলোকে জলবায়ুর প্রতিকূলতার প্রতি সহনশীল করে তুলছেন। এই প্রক্রিয়ায় এমন বৈশিষ্ট্য যুক্ত করা হয় যা গাছকে:উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে সহায়তা করে, লবণাক্ততা ও খরার মধ্যে বাঁচিয়ে রাখে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। উদাহরণ: GM টমেটো: তাপ ও খরার প্রতিকূল পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে। বায়োটেক ব্রোকলি: উচ্চ তাপমাত্রা ও শুষ্ক মাটিতে ভাল ফলন দেয়। ২. CRISPR প্রযুক্তি নতুন প্রজন্মের জিন সম্পাদন প্রযুক্তি ‘CRISPR’ এখন উদ্ভিদ উন্নয়নে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব নিখুঁতভাবে নির্দিষ্ট জিন পরিবর্তন করা যায়, যাতে ফল বা সবজি জলবায়ুর প্রতিক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। ৩. প্রথাগত সংকরায়ণ (Traditional Breeding) ও বায়োটেক সংকরায়ণ দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতিতে বিজ্ঞানীরা এমন জাত তৈরি করছেন যেগুলো অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা, খরা বা জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে। এই জাতগুলোতে বেশি ফলন, কম পানির প্রয়োজন এবং রোগ প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য থাকে। .....বিস্তারিত পড়ুন

বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানীরা যাঁরা বদলে দিয়েছেন আমাদের পৃথিবী

উত্তরাপথঃ বিজ্ঞান বদলে দিতে পারে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ—এই সত্যি বারবার প্রমাণ করেছেন কিছু অসাধারণ মানুষ, যাঁদের আবিষ্কার ও চিন্তাধারা আমাদের জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ধারনাটাই বদলে দিয়েছেন। এই অসাধারণ মানুষগুলো পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা এবং আরও অনেক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তারা তাদের কাজ  দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা  প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করার এবং বিশ্বকে বদলে দেওয়ার সাহস দেখিয়েছেন। তাদের জ্ঞানের অদম্য সাধনা মানবজাতিকে এমনভাবে এগিয়ে নিয়ে গেছে, যা একসময় অকল্পনীয় ছিল।এই সব অসাধারণ মানুষদের মধ্যে অন্যতম হলেন আলবার্ট আইনস্টাইন। আজ আমরা তাঁর জীবনের গল্প এবং বিজ্ঞান জগতে তাঁর অসামান্য অবদান নিয়ে কথা বলব। আলবার্ট আইনস্টাইন শুধু একজন বৈজ্ঞানিক প্রতিভা ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় এবং কৌতূহলী ব্যক্তিত্ব। তাঁর বিখ্যাত সূত্র *E = mc²* এবং আপেক্ষিকতার তত্ত্ব বিজ্ঞানের ভিতকেই নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনিই দেখিয়েছেন, কিভাবে সময় ও স্থানের ধারণা একে অপরের সাথে জড়িত। আইনস্টাইনের জন্ম ১৮৭৯ সালে, জার্মানির উলম শহরে। ছোটবেলায় কেউ ভাবতেও পারেনি, এই ছেলেটিই একদিন বিজ্ঞানের রূপ বদলে দেবে। অনেকেই বলেন যে তিনি অঙ্কে নাকি একবার ফেল করেছিলেন, যা একেবারেই সত্য নয়। বরং ছোটবেলা থেকেই তাঁর আগ্রহ ছিল আলো, চৌম্বকত্ব ও মহাকাশের রহস্যে। ১৯০৫ সালে তিনি সুইস পেটেন্ট অফিসে কেরানি হিসেবে কাজ শুরু করেন। এই বছরটি ‘*আইনস্টাইনের অলৌকিক বছর’ নামে পরিচিত। তিনি এক বছরে চারটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, যার মধ্যে ছিল বিশেষ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব এবং বিখ্যাত সূত্র **E = mc²*, যা বলে, ভর (mass) ও শক্তি (energy) একে অপরের রূপান্তর।এই তত্ত্বগুলোর সাহায্যে আজকের নিউক্লিয়ার শক্তি, জিপিএস প্রযুক্তি এবং আধুনিক মহাকাশবিজ্ঞানের ভিত্তি তৈরি হয়েছে।১৯১৬ সালে তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি প্রস্তাব করেন যে ভর স্থান এবং সময়ের কাঠামোকে বিকৃত করে। ১৯২১ সালে আইনস্টাইন পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, তবে এটি সাধারণ আপেক্ষিকতার জন্য নয়, বরং আলোকবৈদ্যুতিক প্রভাব আবিষ্কারের জন্য .....বিস্তারিত পড়ুন

ডাইনোসরের কঙ্কালে লুকিয়ে আছে ক্যান্সারের প্রাচীন ইতিহাস!

উত্তরাপথঃ প্রাচীন ইতিহাসে ডাইনোসরের Fossil-এ কি লুকিয়ে আছে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভবিষ্যৎ? হ্যাঁ, ঠিক এমনটাই বলছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা। বিজ্ঞানীরা আজ আর শুধু ডাইনোসরের কঙ্কাল খুঁড়ে তাদের দৈর্ঘ্য-মোটা বোঝার চেষ্টা করছেন না, বরং এই প্রাণীদের Fossil-এ জমে থাকা নরম কলার (soft tissue) ভেতর খুঁজে চলেছেন জটিল রোগের উৎস, যেমন ক্যান্সার। ● ডাইনোসরের Fossil-এ মিলল ক্যান্সারের সূত্র! ব্রিটেনের আঙ্গলিয়া রাস্কিন বিশ্ববিদ্যালয় (Anglia Ruskin University) এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের একদল গবেষক সম্প্রতি এমনই এক ব্যতিক্রমী কাজ করে ফেলেছেন। আধুনিক প্যালিওপ্রোটিওমিক (paleoproteomic) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা কোটি কোটি বছর আগের ডাইনোসরের হাড়ের মধ্যে আবিষ্কার করেছেন লাল রক্তকণিকার মতো দেখতে গঠন এবং প্রোটিনের উপস্থিতি। যে ডাইনোসরের Fossil পরীক্ষা করা হয়েছে, তার নাম Telmatosaurus transylvanicus—একটি ৬৬-৭০ মিলিয়ন বছর আগের উদ্ভিদভোজী ডাইনোসর, যাকে অনেকে "marsh lizard" নামেও ডাকেন। এই Fossil বিশ্লেষণে বিজ্ঞানীরা স্ক্যানিং ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে এমন কিছু নরম টিস্যুর ছাপ পেয়েছেন, যা দেখে বোঝা যাচ্ছে—ডাইনোসরের শরীরে এক সময় রক্তপ্রবাহ, প্রোটিন, এমনকি রোগ-এর প্রমাণও থাকতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব Fossil যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা যায়, তবে ভবিষ্যতের গবেষকরা এগুলোর মধ্যে থেকে ক্যান্সারের প্রাচীন রূপ বুঝতে পারবেন। শুধু তাই নয়, ক্যান্সার কীভাবে বিভিন্ন প্রজাতির জীবজগতে বিস্তার লাভ করেছে এবং কিছু প্রাণী কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে এই রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, তারও গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলতে পারে। গবেষক প্রফেসর জাস্টিন স্টেববিং জানিয়েছেন—"ডাইনোসরের মতো বড়দেহী প্রাণীরা জীবাশ্ম বিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক মহা পরীক্ষাগার। শুধু হাড় নয়, Fossil-এ থাকা নরম টিস্যু সংরক্ষণ করা হলে ভবিষ্যতের গবেষণায় আরও বিস্ময়কর তথ্য উঠে আসবে।" তিনি আরও বলেন, “হাড়ের মধ্যে থাকা প্রোটিন DNA-র তুলনায় অনেক বেশি টেকসই। তাই এই প্রোটিন বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যায় কোনো প্রাণী জীবনে কী ধরনের রোগে আক্রান্ত হতো বা প্রতিরোধ গড়ে তুলত।” একটি পূর্ববর্তী গবেষণায়ও Telmatosaurus-এর Fossil-এ ক্যান্সারের লক্ষণ পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে .....বিস্তারিত পড়ুন

12 3 4 5 6 7 8
Scroll to Top