শিক্ষা ও স্বাস্থ্য


প্লাস্টিকের রাসায়নিকে হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ভারতে সর্বোচ্চ!
উত্তরাপথঃ একটি নতুন বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে চমকপ্রদ তথ্য—প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত একধরনের রাসায়নিক প্রতিদিন ব্যবহারের ফলে ২০১৮ সালে বিশ্বব্যাপী হৃদরোগজনিত কারণে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত এই রাসায়নিকের নাম ফথালেটস (Phthalates)। এগুলো বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতভাবে ব্যবহৃত হলেও মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এর কারণে মৃত্যুর হার অনেক বেশি—বিশ্বের মোট মৃত্যুর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ এই অঞ্চলগুলিতে ঘটেছে। এখন প্রশ্ন কিভাবে ফথালেটস আমাদের শরীরে ক্ষতি করে? সাধারণত ফথালেটস ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন প্রসাধনী, ডিটারজেন্ট, প্লাস্টিক পাইপ, কীটনাশক, খাবার সংরক্ষণের পাত্র ও চিকিৎসা সামগ্রীতে। এগুলো শরীরে প্রবেশ করে অতি সূক্ষ্ম কণায় ভেঙে যায়, এটি সাধারণত শ্বাস-প্রশ্বাস, খাদ্যগ্রহণ বা ত্বকের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, এর ফলে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, বন্ধ্যাত্ব, ক্যান্সার এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ে। এ গবেষণাটি পরিচালনা করেছে NYU Langone Health-এর গবেষকরা, যারা বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন ডাই-২-ইথাইলহেক্সাইল ফথালেট (DEHP) নামক একটি উপাদানকে। এটি DEHP প্লাস্টিককে নমনীয় করে তুলতে ব্যবহৃত হয় এবং মূলত খাবারের পাত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জামে বেশি ব্যবহার হয়। গবেষণায় বলা হয়েছে, DEHP হৃদপিণ্ডের ধমনিতে প্রদাহ তৈরি করে, যা সময়ের সাথে হৃদরোগ বা স্ট্রোকের সম্ভাবনা বাড়ায়। তারা হিসাব করে দেখেছেন যে, ২০১৮ সালে শুধু ৫৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষের মধ্যেই এই রাসায়নিকের কারণে ৩ লক্ষ ৫৬ হাজার ২৩৮টি মৃত্যু হয়েছে, যা ওই বয়সের শ্রেণিতে হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ১৩ শতাংশ। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটি সত্যি যেভারতে সবচেয়ে বেশি DEHP জনিত কারণে হৃদরোগজনিত মৃত্যু হয়েছে — ১,০৩,৫৮৭ জন। এরপরেই রয়েছে চীন ও ইন্দোনেশিয়া। পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য মিলে বিশ্বব্যাপী DEHP-সম্পর্কিত মৃত্যুর ৪২% এবং পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল মিলে ৩২%। .....বিস্তারিত পড়ুন


আপনার দাঁতের যত্নে ৭টি সহজ পরামর্শ – ভুল ধারণা থেকে সাবধান!
উত্তরাপথঃ দাঁত একবার গেলে আর ফেরে না। ছোটবেলার দাঁতের জায়গায় বড়দের দাঁত একবার উঠে গেলে সেটা সারা জীবন সঙ্গী হয়। আগে যেখানে দাঁত টিকতো ৫০-৬০ বছর পর্যন্ত, এখন আমাদের দাঁত টিকিয়ে রাখতে হয় ৯০-১০০ বছর পর্যন্ত! তাই দাঁতের যত্নে একটু সচেতন হওয়াটা খুবই জরুরি। ১. দাঁত মাজার পর কুলি করবেন না! আমরা অনেকেই দাঁত মেজে সঙ্গে সঙ্গে কুলি করে ফেলি। কিন্তু দাঁতের বিশেষজ্ঞ ডা. ম্যাথিউ মেসিনা বলছেন, এটা ঠিক নয়। দাঁত মাজার পর শুধু থুতু ফেলে দিন, কুলি করবেন না। কারণ, ফ্লুরাইড টুথপেস্ট দাঁতে থেকে কাজ করতে সময় পায় না যদি কুলি করে ফেলেন। যদি কুলিই করতে হয়, সেটা ব্রাশ করার আগে করুন — যেমন ফ্লসিংয়ের সময়। ২. দাঁত দিয়ে কাজ নয়, শুধু খাওয়া! দাঁত দিয়ে বোতল খোলা, সুতা কাটার মতো কাজ অনেকে করে থাকেন। কিন্তু এসব অভ্যাসে দাঁতে চিড় বা ফাটল ধরতে পারে। দাঁতের কাজ শুধু খাওয়া, কিছু খোলা বা টানাটানি করা নয়। ৩. তেল টানা (অয়েল পুলিং) কি সত্যিই দরকারি? অনেকে নারকেল তেল বা সরিষার তেল মুখে ঘুরিয়ে "অয়েল পুলিং" করেন। এটি আয়ুর্বেদিক পুরনো পদ্ধতি। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর কার্যকারিতা নিয়ে এখনও পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই। দাঁতে ব্যথা বা মুখে সংক্রমণ থাকলে এই অভ্যাসে সমস্যা হতে পারে। ৪. কাঠকয়লা দিয়ে দাঁত মাজা বিপজ্জনক! সুন্দর সাদা দাঁতের আশায় অনেকে চারকোল টুথপেস্ট ব্যবহার করেন। কিন্তু এতে বিপদ বাড়ে! ডা. মেসিনা বলেন, "চারকোল আসলে একধরনের ঘষা-মাখা জাতীয় পদার্থ, যেটা দাঁতের এনামেল ধ্বংস করে দেয়।" এনামেল একবার নষ্ট হলে আর ফেরে না। ফলে দাঁত দুর্বল হয়ে যায়। ৫. দাঁত মাজা কি ডায়েট কন্ট্রোল করে? অনেকেই বলেন, দাঁত মাজলে খাওয়ার ইচ্ছা কমে যায়। এটা আসলে মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। দাঁত মাজার পরে খাবার খেলে মুখে তেতো লাগে, তাই খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। তবে এটি ওজন কমানোর উপায় নয়। ৬. সারা দিন টুকটাক খাওয়ার বদলে একসঙ্গে খান খাবার খেলে মুখের ব্যাকটেরিয়া চিনি খেয়ে অ্যাসিড তৈরি করে, যা দাঁত ক্ষয় করে। দিনভর বারবার খেলে দাঁত সব সময় অ্যাসিডে ডুবে থাকে। .....বিস্তারিত পড়ুন


এই ৩ ভুলেই হাড় হয় দুর্বল!
উত্তরাপথঃ আমাদের দেহের গঠন ও কাজকর্মে হাড়ের ভূমিকা অপরিসীম। হাড় শুধু শরীরকে আকার দেয় না, মস্তিষ্ককে করোটি দিয়ে এবং হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসকে পাঁজর দিয়ে রক্ষা করে। এর পাশাপাশি, হাড়ের মধ্যে থাকা মজ্জায় রক্তকণিকা তৈরি হয় এবং হাড়ে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সংরক্ষিত থাকে। তবুও, হাড়ের যত্ন আমরা প্রায়ই অবহেলা করি। অস্থি ও জয়েন্ট বিশেষজ্ঞ ডঃ রাজু ব্যানার্জির মতে , হাড় দুর্বল হওয়ার প্রধান তিনটি কারণ হলো – ১. অপুষ্টি ২. দৈহিক পরিশ্রমের অভাব ৩. অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা। আসুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে এই কারণগুলো হাড়ের ক্ষতি করে এবং কীভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ১. অপুষ্টি (Nutritional Deficiencies) হাড় মজবুত রাখতে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন-ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই উপাদান দুটির ঘাটতিতে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অস্টিওপোরোসিস ও সহজেই ভাঙার মতো সমস্যা দেখা দেয়। ভারসাম্যহীন খাদ্যাভ্যাসই এই ঘাটতির মূল কারণ। সমাধান: প্রতিদিন দুধ, দই, পনির, মাছ, ডিম এবং সবুজ শাকসবজি খান সকালের রোদে (সকাল ৮টা–১০টার মধ্যে) অন্তত ২০ মিনিট সময় কাটান প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন ২. দৈহিক পরিশ্রমের অভাব (Lack of Physical Activity) সক্রিয় জীবনধারাই হাড়কে সবল রাখে। দীর্ঘ সময় বসে থাকা, ব্যায়ামের অভাব কিংবা অলস জীবনধারা হাড়ের কোষকে দুর্বল করে এবং হাড় ক্ষয়ের গতি বাড়িয়ে দেয়। সমাধান: রোজ ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানো বা হালকা ব্যায়াম করুন যাদের বসে কাজ করতে হয়, প্রতি ঘন্টায় অন্তত ৫ মিনিট উঠে হাঁটুন যোগব্যায়াম বা ভারোত্তোলনের মতো ওজন বহনকারী ব্যায়াম হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে ৩. অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা (Unhealthy Lifestyle) ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান হাড়ের বিপাকক্রিয়াকে প্রভাবিত করে, ফলে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে। ধূমপান হাড়ে রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয় এবং মদ্যপান হাড় গঠনের গতি কমিয়ে দেয়। সমাধান: মপান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করুন মদ্যপান সম্পূর্ণ বন্ধ করা সম্ভব না হলে, খুব সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করুন পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানোর দিকে নজর দিন .....বিস্তারিত পড়ুন


চকোলেট + চা = রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ? বিজ্ঞানীরা প্রকাশ করলেন আশ্চর্যজনক তথ্য
উত্তরাপথঃ সারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় জানা গেছে, চকোলেট এবং চায়ের মতো খাবারে থাকা ফ্ল্যাভান-৩-অল নামক একটি প্রাকৃতিক উপাদান রক্তচাপ কমাতে এবং রক্তনালীর স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এর প্রভাব উল্লেখযোগ্য। কিছু ক্ষেত্রে এটি ওষুধের মতোই কার্যকর হতে পারে। এই গবেষণা হৃদয়ের স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য একটি সুস্বাদু এবং সহজলভ্য উপায়ের দিক নির্দেশ করেছে। চা, চকোলেট এবং হৃদয়ের স্বাস্থ্য চা এবং চকোলেট প্রেমীদের জন্য সুখবর! প্রতিদিন এক কাপ চা বা একটি ছোট ডার্ক চকোলেট খাওয়া আপনার হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। সারির বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নতুন গবেষণা, যা *ইউরোপিয়ান জার্নাল অফ প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজি*-তে প্রকাশিত হয়েছে, জানাচ্ছে যে ফ্ল্যাভান-৩-অল নামক প্রাকৃতিক উপাদান রক্তচাপ কমাতে এবং রক্তনালীর স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এই উপকারী উপাদানটি কোকো, চা, আপেল এবং আঙুরের মতো সাধারণ খাবারে পাওয়া যায়। ১৪৫টি নিয়ন্ত্রিত গবেষণার তথ্য বিশ্লেষণ করে গবেষকরা দেখেছেন, নিয়মিত ফ্ল্যাভান-৩-অল গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রক্তচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে এর প্রভাব কিছু রক্তচাপের ওষুধের মতোই। ফ্ল্যাভান-৩-অল এর সবচেয়ে সমৃদ্ধ উৎস হলো ডার্ক চকোলেট, সবুজ এবং কালো চা, আপেল, কোকো পাউডার এবং লাল বা বেগুনি আঙুর। এক কাপ সবুজ চায়ে প্রায় ১০০-২০০ মিলিগ্রাম ফ্ল্যাভান-৩-অল থাকে, আর ডার্ক চকোলেটে (কোকোর পরিমাণের উপর নির্ভর করে) ১০ গ্রামে ১০০-৬০০ মিলিগ্রাম থাকতে পারে। কোকো পাউডারে এটি আরও ঘনীভূত। রক্তচাপের বাইরেও উপকার: রক্তনালীর স্বাস্থ্য এর উপকার শুধু রক্তচাপ কমানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ফ্ল্যাভান-৩-অল রক্তনালীর অভ্যন্তরীণ সূক্ষ্ম আস্তরণ, যাকে এন্ডোথেলিয়াম বলা হয়, তার কার্যকারিতা উন্নত করে। এটি হৃদয়ের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মজার বিষয় হলো, এমনকি রক্তচাপ অপরিবর্তিত থাকলেও এই উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে, যা রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থায় এর ব্যাপক প্রভাব নির্দেশ করে। ডার্ক চকোলেট, বিশেষ করে যেগুলোতে ৭০% বা তার বেশি কোকো থাকে, ফ্ল্যাভান-৩-অল এর সমৃদ্ধ উৎস। .....বিস্তারিত পড়ুন


ক্যাফেইন আপনার মস্তিষ্ককে ঘুমের মধ্যেও "জাগিয়ে" রাখে!
উত্তরাপথঃ আপনি কি সকালে এক কাপ কফি দিয়ে দিন শুরু করেন ? কিংবা সকালে চা, চকোলেট, এনার্জি ড্রিংক বা কোমল পানীয় পছন্দ করেন ? তাহলে জেনে নিন, এগুলোর মধ্যে থাকা ক্যাফেইন আপনার ঘুমের সময়ও মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে পারে! মন্ট্রিয়ল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নতুন গবেষণায় এমনই চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে। ক্যাফেইন শুধু আপনাকে দিনের বেলা জাগিয়ে রাখে না, এটি ঘুমের সময় মস্তিষ্কের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকেও বদলে দেয়। এতে শরীর ও মনের সতেজতা এবং স্মৃতিশক্তির উপর প্রভাব পড়ে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ফিলিপ থলকে ও কারিম জারবি। তাঁরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাফি (EEG) ব্যবহার করে দেখেছেন, ক্যাফেইন ঘুমের সময় মস্তিষ্কের সংকেতের জটিলতা বাড়ায়। এটি মস্তিষ্ককে একটি "ক্রিটিকাল" অবস্থায় নিয়ে যায়, যেখানে মস্তিষ্ক সুশৃঙ্খল কিন্তু নমনীয় থাকে। এই অবস্থায় মস্তিষ্ক তথ্য প্রক্রিয়া করতে, শিখতে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু সমস্যা হলো, এই "জাগ্রত" অবস্থা ঘুমের সময় মস্তিষ্কের বিশ্রামে বাধা দেয়। গবেষক জুলি ক্যারিয়ার বলেন, "ক্যাফেইন মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত করে, যার ফলে এটি রাতে মস্তিস্ককে পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে দেয় না। ফলে স্মৃতি গঠন ও মনোযোগ ক্ষমতার উপর প্রভাব পড়তে পারে।" কিভাবে গবেষণা হলো? গবেষকরা ৪০ জন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কের ঘুমের সময় মস্তিষ্কের কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করেছেন। এক রাতে তাঁরা ঘুমের আগে ক্যাফেইন ক্যাপসুল খেয়েছেন, আরেক রাতে প্লাসিবো (নকল ওষুধ)। ফলাফলে দেখা গেছে, ক্যাফেইন গ্রহণের পর মস্তিষ্কের সংকেত আরও জটিল এবং গতিশীল হয়, বিশেষ করে নন-র্যাপিড আই মুভমেন্ট (NREM) ঘুমের সময়, যা স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, ক্যাফেইন ধীর তরঙ্গ (থিটা ও আলফা), যা গভীর ঘুমের সঙ্গে যুক্ত, কমিয়ে দেয় এবং বেটা তরঙ্গ বাড়ায়, যা জাগ্রত অবস্থায় মানসিক সক্রিয়তার সময় দেখা যায়। এর মানে, ক্যাফেইনের প্রভাবে ঘুমের সময়ও মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে, যা বিশ্রামের জন্য ক্ষতিকর। তরুণদের উপর বেশি প্রভাব গবেষণায় দেখা গেছে, ২০-২৭ বছর বয়সী তরুণদের মস্তিষ্ক ক্যাফেইনের প্রভাবে বেশি সাড়া দেয়, বিশেষ করে REM ঘুমের সময়, যখন আমরা স্বপ্ন দেখি। এর কারণ তরুণদের মস্তিষ্কে অ্যাডেনোসিন রিসেপ্টর বেশি থাকে। .....বিস্তারিত পড়ুন


চাল-কফির গুণে হার্ট অ্যাটাক রোধ? নতুন গবেষণায় চমক
উত্তরাপথ;প্রতিদিনের খাবারে থাকা কিছু সাধারণ উপাদান হয়তো হৃদরোগের বিরুদ্ধে এক নতুন প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে পারে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, চাল, কফি ও কিছু সবজিতে থাকা ফেরুলিক অ্যাসিড (Ferulic Acid) নামের একটি প্রাকৃতিক যৌগ হৃদয়ের ধমনী সংকোচন রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এই ধমনী সংকোচনই অনেক সময় হৃদস্পন্দন অনিয়ম, বুকে ব্যথা ও হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম কারণ হয়ে ওঠে। জাপানের তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্স অনুষদের গবেষক ড. কেনতো ইয়োশিওকা, ড. কেইসুকে ওবারা ও অধ্যাপক ইওশিও তানাকা সম্প্রতি তাঁদের গবেষণাপত্রে এই ফলাফল প্রকাশ করেছেন । কীভাবে কাজ করে এই প্রাকৃতিক যৌগ? গবেষণায় ব্যবহার করা হয় শূকরের করোনারি আর্টারি, যেটি মানুষের হৃদরক্তনালীর গঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে মিলে যায়। পরীক্ষা করে দেখা যায়, রাসায়নিকভাবে আর্টারি সংকোচনের সময় ফেরুলিক অ্যাসিড তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়। গবেষকরা জানান, ফেরুলিক অ্যাসিড মূলত দুটি পথে কাজ করে: প্রথমত, এটি ধমনীতে ক্যালসিয়াম প্রবেশে বাধা দেয়, ফলে পেশি সংকোচন বাধাগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয়ত, ক্যালসিয়াম ছাড়া অন্য উপায়ে ধমনী সংকোচন রোধেও এটি ভূমিকা রাখে। এটি মায়োসিন লাইট চেইন নামক এক বিশেষ প্রোটিনের সক্রিয়তা কম করে, যা ধমনী সংকোচনের জন্য জরুরি। ওষুধের চেয়েও কার্যকর? আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো—বাজারে প্রচলিত হৃদরোগ প্রতিরোধী ওষুধ ডিলটিয়াজেম-এর চেয়েও ফেরুলিক অ্যাসিড অনেক ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর হয়েছে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। "যেহেতু এটি প্রাকৃতিক ও নিরাপদ, তাই ভবিষ্যতে এটি খাদ্য উপাদান বা হার্টের নতুন ওষুধ তৈরির উপাদান হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে," বলেন গবেষক ড. ইয়োশিওকা। কোথায় পাওয়া যায় ফেরুলিক অ্যাসিড? ফেরুলিক অ্যাসিড পাওয়া যায়— চালের খোসা ও ব্রান-এ কফির দানায় ও রোস্টেড কফিতে গাজর, টমেটো, আপেল, শস্যদানা, ও সবুজ পাতাযুক্ত সবজিতে হৃদয়ের যত্নে খাদ্যের ভাবনা বর্তমানে হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা ভারতে ও বাংলাদেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এই অবস্থায় খাদ্যের মাধ্যমে হৃদয় সুস্থ রাখার এই সম্ভাবনা মানুষের জীবনে নতুন আশা এনে দিতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন


পেঁয়াজ কাটলেই চোখে জল? বিজ্ঞান যা বলছে, তা জানলে অবাক হবেন!
উত্তরাপথঃ রান্নাঘরে পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে চোখের জল পড়েনি—এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। আমরা অনেকেই ঠান্ডা জল ব্যবহার, পেঁয়াজ ফ্রিজে রাখা কিংবা সানগ্লাস পরার মতো ঘরোয়া টিপস মেনে চলেছি, কিন্তু তবুও চোখের জল থামানো যেন অসম্ভব! তাহলে এর আসল কারণ কী? সম্প্রতি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এক আকর্ষণীয় গবেষণায় দেখিয়েছেন, সমস্যার মূল চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে আপনার ছুরির ধার ও কাটার কৌশলে। পেঁয়াজ: ইতিহাসে ও পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এক উপাদান পেঁয়াজ শুধু রান্নার উপাদান নয়, এটি হাজার হাজার বছর ধরে মানব সভ্যতার খাদ্যাভাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রাচীন মিশরীয়রা পেঁয়াজকে অনন্ত জীবনের প্রতীক মনে করত, এমনকি ফেরাউনদের সমাধিতেও রাখা হতো এই অদ্ভুত গন্ধওয়ালা সবজিটি! আজ আমরা জানি, পেঁয়াজ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান এবং জরুরি পুষ্টিতে পরিপূর্ণ একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য। কেন পেঁয়াজ আমাদের কাঁদায়? পেঁয়াজ কাটলে চোখে জল আসে, কারণ এতে থাকা এক বিশেষ রাসায়নিক যৌগ—সিন-প্রোপেনেথিয়াল-এস-অক্সাইড—কাটার সময় বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই গ্যাস চোখে গিয়ে অশ্রুগ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে, ফলে চোখ জল দিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখায়, যাতে এই জ্বালাময়ী পদার্থ ধুয়ে ফেলা যায়। কর্নেলের গবেষণায় কী বেরিয়ে এসেছে? এই সমস্যা নিয়ে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি অভিনব পরীক্ষা চালান। তারা একটি ছোট পেঁয়াজ "গিলোটিন" তৈরি করেন, যেখানে বিভিন্ন প্রকারের ব্লেড ব্যবহার করে আলাদা গতিতে পেঁয়াজ কাটা হয়। পেঁয়াজের প্রতিক্রিয়া আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য এগুলো কালো স্প্রে পেইন্টে রঙ করা হয়, যাতে কাটা অংশটিকে পরিষ্কার ভাবে দেখা যায়। তারা দেখতে পান: • ধারালো ছুরি ব্যবহার করলে পেঁয়াজ কম বিকৃত হয়, ফলে কম গ্যাস নির্গত হয়। • ভোঁতা ছুরি পেঁয়াজকে চাপ দিয়ে ফাটিয়ে ফেলে, যার ফলে হঠাৎ এক ধরনের "রাসায়নিক বিস্ফোরণ" ঘটে এবং ক্ষতিকর অ্যারোসল চোখে পৌঁছায়। • দ্রুত কাটার ফলে আরও বেশি গ্যাস তৈরি হয়। গবেষণায় বলা হয়েছে, একটি ভোঁতা ছুরি ধারালো ছুরির তুলনায় ৪০ গুণ বেশি জ্বালাময়ী কণা তৈরি করতে পারে, এবং দ্রুত কাটার গতি সেই পরিমাণ চারগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে! তাহলে করণীয় কী? গবেষকরা বলছেন, যদিও গবেষণাটি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে, তবুও প্রাথমিক ফলাফল সুস্পষ্ট: 👉 একটি ভালো ধারালো ছুরি ব্যবহার করুন 👉 ধীরে ধীরে এবং শান্তভাবে কেটে নিন এই দুটি অভ্যাস পেঁয়াজ কাটার সময় চোখে জল আসার সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে দিতে পারে। পেঁয়াজ, এই নিরীহ মনে হলেও এটি একপ্রকার জৈব অস্ত্রের মতো! যদি আপনি তাড়াহুড়ো করে, ভোঁতা ছুরি দিয়ে এটিকে সামলাতে যান, তাহলে এটি আপনার চোখে সরাসরি ‘হামলা’ চালাবে। .....বিস্তারিত পড়ুন