সাহিত্য ও শিল্প


জীবনানন্দ : আবহমান রূপসী বাংলার কবি
ড. জীবনকুমার সরকারঃউত্তর রৈবিক যুগের এক অনন্য মাত্রার কবি জীবনানন্দ দাশ। রবীন্দ্রনাথের পর বাংলা কাব্যভুবনে এক দল কবি রবীন্দ্রআবহ ছেড়ে এবং পূর্বতন কাব্যধারার বাইরে দাঁড়িয়ে আধুনিক-প্রগতিশীল ও সাম্যবাদী কাব্য আন্দোলন শুরু করেন। একথা বাংলা সাহিত্যের পাঠক মাত্রই জানেন। সেটার বিস্তৃত ব্যাখ্যার কোনো প্রয়োজন দেখি না। এখানে শুধু এটুকু বলার যে, এই আধুনিক কবিতা আন্দোলনের সেই সময়টা শুরু হয় বিশ শতকের তিরিশের দশক থেকে। আশ্চর্যের বিষয় এই আধুনিক কাব্য আন্দোলনের উত্তাপ জীবনানন্দকে গ্রাস করতে পারলো না। তাহলে কি তিনি আধুনিক নন? অবশ্যই আধুনিক। শুধু আধুনিক নন, আধুনিক কালের শ্রেষ্ঠ কবি। তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব হলো, রোমান্টিক মেদুরতায়। রোমান্টিক মেদুরতার আত্মমগ্ন কবি ছিলেন জীবনানন্দ দাশ। আবার প্রখর জীবন ও সময়বোধ ছিলো তাঁর। এই দুইয়ের যুগলবন্দি চেতনা তাঁকে নতুন কাব্যবয়ান নির্মাণে সাহায্য করেছিলো। ফলে প্রগতিশীল ও রক্ষণশীল দুই পক্ষই তাঁকে শাণিত আক্রমণে জর্জরিত করেছিলো। সে আক্রমণ কখনও কখনও ব্যক্তিগত পর্যায়েও দাঁড়িয়ে যেতো। কাব্যচেতনায় বিভোর, কল্পনা প্রতিভায় অনন্য এবং আত্মনিমগ্ন কবি জীবনানন্দ প্রথম থেকেই সবার থেকে আলাদা হতে শুরু করেন। নানা সমালোচনার মুখে তাঁকে পড়তে হয়েছে। সবই হয়েছে তাঁর অভিনবত্ব কাব্যভাষার সৌজন্যে। বরিশালের নিসর্গে ইন্দ্রিয়তন্ময়তায় একের পর এক যেসব কবিতা সৃজন করেছেন তিনি, তা আমাদের বোধের জগতে নতুন সংকেত দিয়েছে। পারিবারিক স্বপ্নচেতনা, নৈতিক শুদ্ধতার বশবর্তী হবার ফলে তিনি হয়ে ওঠেন নিঃসঙ্গচারী এক পথিক। একটি শক্তিশালী মূল্যবোধ ও নীতিজ্ঞান নিয়ে জীবনকে এগিয়ে নিতে চাইতেন, যেটা তাঁর কাছে ঈশ্বরবোধের মতো হয়ে উঠেছিলো। আলাদা করে ঈশ্বরচিন্তা জীবনানন্দ দাশের ছিলো না। একবার অরবিন্দ গুহের সঙ্গে আলাপচারিতা করার সময় জীবনানন্দ দাশ জানাচ্ছেন — “ আমি ঈশ্বর বিশ্বাস করি না। আমি মানুষের নীতিবোধে বিশ্বাস করি।” ( সূত্র: জীবনানন্দ দাশ নির্জনতম বিভ্রান্তি, সুব্রত রাহা, উত্তরধ্বনি, শিলিগুড়ি, পৃষ্ঠা: ১২) .....বিস্তারিত পড়ুন


তাজমহল সম্পর্কে নানা রকম অজানা তথ্য
উত্তরাপথঃ তাজমহল হল, আগ্রায় অবস্থিত একটি সাদা মার্বেল সমাধি, যা অনন্ত প্রেমের প্রতীক' হিসাবে আজও আমাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে।মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মরণে তৈরি করেছিলেন। নিশ্ছিদ্র সৌন্দর্য বিকিরণকারী, সাদা মার্বেল সমাধিটি ভারতের অন্যতম দর্শনীয় পর্যটন স্থান। প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে লক্ষ লক্ষ পর্যটক পরিদর্শন করেন। প্রেমের প্রতীক এবং মুঘল স্থাপত্যের মাস্টারপিস ভারতের এই অন্যতম আইকনিক এবং ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট তাজমহলকে, ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়,সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য আচ্ছাদিত করা হয়েছিল।প্রসঙ্গত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময়, তাজমহল আক্রমণ বা ক্ষতির লক্ষ্য হতে পারে বলে উদ্বেগ ছিল। এই ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ রক্ষার জন্য, ভারত সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং তাজমহলকে পাটের তন্তু দিয়ে ১৫ দিনের জন্য ঢেকে দেয়। সেইসাথে ডালপালা এবং ঝোপ লাগিয়ে এটিকে বনের মতো চেহারা দেওয়া হয়েছিল যাতে আকাশ থেকে ভবনটি দেখা না যায়। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও তাজমহলকে বাঁশ দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। এই সমাধানটি সেই সময় কার্যকর প্রমাণিত হয় এবং তাজমহল ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরও অক্ষত অবস্থায় থাকে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় খেরিয়া রানওয়ের কাছে এবং কীথামে পাকিস্তানি বিমান বোমা বর্ষণ করে এবং রানওয়ের কাছে একটি গভীর গর্ত তৈরি হয় । এরপর তড়িঘড়ি তাজমহলকে ঢেকে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।এসকে শর্মা (অবসরপ্রাপ্ত), যিনি তাজমহলের তৎকালীন সংরক্ষণ সহকারী ছিলেন, তিনি এক জায়গায় বলেন, যে ৪ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকদের প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছিল। বিকেলে আদেশ আসতেই তাজমহল ঢেকে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। অধিদপ্তরের কাছে পাওয়া চটটি সবুজ রঙ করা হয়েছিল এবং একই দিনে গম্বুজে ঝুলানো হয়েছিল। এছাড়াও, তাঁবু মালিকদের কাছ থেকে তেরপল অর্ডার করা হয়েছিল এবং বাজার থেকে পুরানো কাপড় কেনা হয়েছিল। এটিও সবুজ রং করা হয়েছিল এবং স্মৃতিস্তম্ভটি আচ্ছাদিত ছিল। । .....বিস্তারিত পড়ুন


পৌরাণিক প্রেম থেকে নারী স্বাধীনতার এক আসাধারন নাটক কালিদাসের 'অভিজ্ঞান শকুন্তলম '
গার্গী আগরওয়ালা মাহাতঃ ভারত তার ধর্মীয় বিশ্বাসের পৌরাণিক পটভূমির জন্য পরিচিত। শকুন্তলায়, কালিদাস পৌরাণিক কাহিনীকে ভারতীয় ঐতিহ্যের বুননে বুনেছিলেন ।তিনি ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যকে তার কালজয়ী নাটক অভিজ্ঞান শকুন্তলমের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এখানে কালিদাস পৌরাণিক চরিত্র শকুন্থলা সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন, যিনি দুষ্যন্ত নামক পৌরাণিক রাজার প্রেমে পড়েছিলেন, যিনি পুরু রাজবংশের শাসক হিসাবে বিবেচিত হন। এমনকি কালিদাস তার নাটকে তাদের জন্ম, প্রেম, বিবাহ, বিচ্ছেদ এবং পুনর্মিলনের মধ্যেও পৌরাণিক উপাদান অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ফলস্বরূপ, কালিদাস একটি মহান পৌরাণিক প্রেমের গল্প বের করেছেন যা ভারতের ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধকে চিত্রিত করে। শকুন্তলা ভারতীয় সাহিত্যের অন্যতম প্রশংসিত নারী চরিত্র। প্রথমবার শকুন্তলার চরিত্রটি মহাভারতে উদ্ধৃত হয়েছিল। তারপর থেকে তিনি ভারতের বিভিন্ন ভাষার বিভিন্ন গ্রন্থে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। কালিদাসের অভিজ্ঞান শকুন্তলমে, শকুন্তলা হলেন ঋষি বিশ্বামিত্র এবং অপ্সরা মেনকার প্রকৃত কন্যা। যাকে ঋষি কণ্ব এবং তাঁর স্ত্রী গৌতমী দত্তক নিয়েছিলেন এবং লালনপালন করেছিলেন।কালিদাসের নাটকে শকুন্তলা একটি দেহাতি মেয়ে, যিনি কম্ব মুনীর আশ্রমে বেড়ে উঠেছেন। নাটকের অগ্রগতির সাথে, তিনি রাজা দুষ্যন্তের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন যিনি একটি অভিশাপের কারণে শকুন্তলাকে ভুলে যান। পরে, তাকে ঋষি কশ্যপ এবং তার স্ত্রী অদিতি শকুন্তলাকে তাদের আশ্রমে আশ্রয় দেন। সেখানে শকুন্তলা একটি সাহসী শিশু ভরতের জন্ম দেন এবং অবশেষে তার স্বামীর সাথে পুনরায় মিলন হয়। শকুন্তলা নাটকে কালিদাসের চিত্রায়ন নিছক রোমান্সের বাইরে একটি জগতের ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরে। .....বিস্তারিত পড়ুন


ছোটগল্প: স্মৃতির চেয়ে বিস্মৃতি ভালো
অসীম পাঠক: মফঃস্বল কলেজের বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক এটুকু পরিচয়েই আমি সন্তুষ্ট। একা মানুষ হাত পুড়িয়ে রান্না করি , না পারলে গঞ্জের দোকানে পাউরুটি বেকারি বিস্কুট আর মুরগির ডিম তো আছেই। যা হোক চলে গেলেই হলো। সপ্তাহে বারো ঘন্টা ক্লাশ, অবসর সময়ে লেখালিখি আর ছুটিছাটা তে বেরিয়ে পড়া মুসৌরী দেরাদুন হরিদ্বার পুরী। ঘুরেফিরে এই আমার পছন্দের জায়গা। নিজের বলতে কেও নেই। আর দশ বছর পর রিটায়ার্ড করবো , এর মধ্যে একটা বৃদ্ধাশ্রম খুলবো। ওটাই শেষ বয়সের অবলম্বন।দিন চলছে বেশ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। দিন যাপন আর প্রান ধারনের গ্লানির মাঝে আমার কোন বৈচিত্র্য বা বৈপরীত্য নেই। অযথা বন্ধু বান্ধবের ঝামেলা নেই , অহেতুক বিরক্তি নেই , অকারন টেনশন নেই। ভলো লাগাা বলতে একটু বৃষ্টি বিলাসী আমি। মেঘলা দিনে বাড়িতে বসে ফ্লাস্ক ভর্তি কফি ঢুকঢুক করে খাই আর আকাশের বুক থেকে বৃষ্টির ঝরে পড়া দেখি। চারদিক কেমন সবুজ , মায়াময় অনুভূতি। যেনো আকাশ আর মাটির প্রেমে বৃষ্টি হলো গভীর সংযোগ।এরকম ই এক বাদল দিনে ভাবলাম সুকান্ত সমগ্র খুলে চিঠিগুলো পড়ি । দারুন লাগে সুকান্তের লেখা চিঠিগুলো। হাসপাতালে যক্ষ্মার সাথে যুদ্ধ করে ক্লান্ত মনে আবেগ অভিমানের কথা। সুকান্তের কবিতা আমার কৈশোরের প্রেম। সাহিত্যের প্রথম ভালো লাগা।সুকান্ত সমগ্র খুলতেই বেরিয়ে আসে একটা চেনা গন্ধ। বুক শেল্ফে এই পুরানো বই এর গন্ধে এক মাদকতা মিশে থাকে। মানুষ যেমন অনেকদিন পর পূজার পবিত্র শুকনো ফুল খুঁজে পায় পুরানো বই এর পাতার ভাঁজে, তেমনই একখানা ছবি বেরিয়ে পড়লো বই থেকে। একটা গ্রুপ ফটো। এমন সময় দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। একটু বিরক্ত হলাম , অসময়ে আবার কে এলো ? দরজা খুলে দেখি সেকেন্ড ইয়ারের নিশা অদিতি আর কোয়েল। আমার পছন্দের তিন ছাত্রী । আমি এদের একসাথে ত্রিনয়নী বলে ডাকি। .....বিস্তারিত পড়ুন


ছোটগল্পঃ- সীমানা
অনসূয়া পাঠকঃ সম্মিলিত জাতিসংঘের বৈঠক হচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো তে। উপস্থিত আছেন গোট বিশ্বের রাষ্ট্র নেতারা। ভারতবর্ষের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্বে শ্রেয়সী বোস। ম্যাডাম বোস এসেছেন জাতিসংঘের বৈঠকে যোগ দিতে। ফাইভ স্টার হোটেলের আঠারো তলার ব্যালকনি থেকে শহর টাকে খুব ছোট মনে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা ফাইল পড়ে আছে , কফিটা শেষ করে ওগুলো তে মন দিতে হবে। এমন সময় ঝিরঝির করে বৃষ্টি নামলো। কেমন যেনো শিহরন অনুভব করে শ্রেয়সী। বাইরের কঠিন আবরন ভেদ করে ভেতরের আবেগ যেনো বেরিয়ে আসে। কাল ঠিক দশটায় বৈঠক , রাত শেষ হতে আর কয়েক ঘন্টা। শ্রেয়সীর মন চলে যায় সুদূর অতীতে। সম্মিলিত জাতিসংঘের বৈঠক হচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকো তে। উপস্থিত আছেন গোট বিশ্বের রাষ্ট্র নেতারা। ভারতবর্ষের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্বে শ্রেয়সী বোস। ম্যাডাম বোস এসেছেন জাতিসংঘের বৈঠকে যোগ দিতে। ফাইভ স্টার হোটেলের আঠারো তলার ব্যালকনি থেকে শহর টাকে খুব ছোট মনে হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটা ফাইল পড়ে আছে , কফিটা শেষ করে ওগুলো তে মন দিতে হবে। এমন সময় ঝিরঝির করে বৃষ্টি নামলো। কেমন যেনো শিহরন অনুভব করে শ্রেয়সী। বাইরের কঠিন আবরন ভেদ করে ভেতরের আবেগ যেনো বেরিয়ে আসে। কাল ঠিক দশটায় বৈঠক , রাত শেষ হতে আর কয়েক ঘন্টা। শ্রেয়সীর মন চলে যায় সুদূর অতীতে। সানফ্রান্সিসকো শহর টা তার অচেনা নয়। এই শহরকে ঘিরে তার জীবনের কিছু সুন্দর স্মৃতি রয়েছে। শ্রেয়সী ভারতবর্ষের কোলকাতার মেয়ে , তার বাবা অভিনব বোস ছিলেন একসময় ভারতের রেল মন্ত্রী। পারিবারিক ভাবেই রাজনীতির মধ্যে তার আবর্তন। শ্রেয়সী যখন খুব ছোট তখনই তার মা মারা যান। বাবাই ছিলো তার সব। অভিনব বাবুর প্রিয় ছিলো দুটি জিনিস , তাঁর দেশ ও তাঁর মেয়ে। .....বিস্তারিত পড়ুন


জুলিয়াস ও ইথেল
রবি রায়ঃ ১৯৫৩ সালের ১৯শে জুন সূর্যাস্তের আগে ইলেকট্রিক চেয়ারে বসিয়ে রোজেনবার্গ দম্পতির মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। সেদিনই ছিল তাদের ১৪তম বিবাহবার্ষিকী। দুজনের মৃত্যুদন্ড আলাদাভাবে কার্যকর করা হয়েছিলো। প্রথমে চেয়ারে বসানো হয় জুলিয়াস রোজেনবার্গ। প্রথম ইলেকট্রিক শকেই মারা যান তিনি। কিন্তু ব্যতিক্রম দেখা যায় ইথেলের বেলায়। প্রথম শকে তিনি মারা যাননি। নিয়ম মোতাবেক তিনবার শক দেয়ার পরও ডাক্তাররা পরীক্ষা করে তার হৃদস্পন্দন খুঁজে পান! তখন বাধ্য হয়ে আরো দু’বার শক দেয়া হয় তাঁকে। এরপরই মারা যান ইথেল রোজেনবার্গ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে, তখন ইথেলের মাথা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গিয়েছিলো! তাদের অপরাধ- তারা নিজেদের আন্তর্জাতিকতাবাদী বলতেন৷ দুনিয়ায় যেখানেই শোষণ বঞ্চনা, তার প্রতিবাদে মুখর হতেন৷ কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক'এ উপস্থিত থাকতেন৷ নিজের দেশের শাসকের শোষণের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠতেন৷ আমেরিকা সরকার এই কমিউনিস্ট দম্পতিকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়েছিল৷ পারমানবিক বোমা তৈরীর প্রযুক্তি ভীনদেশে সরবরাহের উছিলায় তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছিল৷ আমেরিকার অনেকেই মনে করতেন যে, তারা নির্দোষ। নানা দিক থেকে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ধিক্কার উঠেছিল৷ ক্রুদ্ধ জা-পল সার্ত্র মন্তব্য করেছিলেন, "এটা আইনের উছিলায় হত্যা। একটা গোটা জাতি গায়ে রক্ত মাখছে।" রোজেনবার্গ দম্পতির প্রাণভিক্ষা করে আইজেনহাওয়ারের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন পোপ এবং পাবলো পিকাসো। এমনকি অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, হ্যারল্ড উরের মতো নোবেল জয়ী বিজ্ঞানী এবং সমাজের আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ রায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন তখন। কিন্তু ১৯৫৩ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি সবার আবেদন নাকচ করে দেন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার৷ এবং মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন৷ .....বিস্তারিত পড়ুন


আন্দামান ট্রাঙ্ক রোড ও জারোয়া সম্প্রদায়
প্রিয়াঙ্কা দত্তঃ আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের প্রধান শহর পোর্ট ব্লেয়ার থেকে মাত্র ৪৪ কিমি দূরে রয়েছে পৃথিবীর আদিমতম জনগোষ্ঠী জারোয়াদের বাসস্থান।আন্দামানে বসবাসকারী প্রায় ছয় ধরনের আদিম জনজাতির অন্যতম এই জারোয়ারা, যারা প্রায় ৬০০০০ বছর ধরে এই আন্দামানেই রয়ে গেছে সভ্যতার ছোঁয়া বাঁচিয়ে। বহু দিন আগে তারা দক্ষিণ আন্দামান, বরাটাং, মধ্য ও উওর আন্দামানের বিস্তীর্ণ এলাকায় বসবাস করলেও ব্রিটিশ আমল থেকেই বিভিন্ন কারণে তাদের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে । এখন কেবল এই বরাটাং এলাকায় তাদের মাত্র ৩৮০ (২০১১সালের জনগণনা অনুসারে) জনের মতো সদস্য অবশিষ্ট আছে। পোর্ট ব্লেয়ার ও ডিগলিপুরের সংযোগকারী প্রধান সড়ক আন্দামান ট্রাঙ্ক রোড বা ATR চলে গেছে জরোয়াদের নিজস্ব এলাকার বুক চিরে। বলা বাহুল্য, সেই আদিম জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সভ্য মানুষের সখ্য গড়ে ওঠার কাহিনী খুব ছোট নয়। স্বাধীনতার অব্যবহিতপরেই আন্দামানের উন্নতি কল্পে পোর্টব্লেয়ারকে অন্যান্য দ্বীপের সঙ্গে সংযুক্ত করার প্রয়োজন হয়ে পরে। আগে যাতায়াত বা পণ্য পরিবহনের জন্য জলপথ ব্যবহৃত হলেও প্রায় ১০-১২ ঘন্টা সময় লেগে যেতো। তাই ১৯৬০ এর দশকে শুরু হয় ATR নির্মাণের কাজ। কিন্তু জারোয়ারা তখনও অপরিচিত মানুষদের জন্য ছিলো ত্রাস। প্রায়শই PWD এর কর্মীদের উপর হামলা চালাতে থাকে তারা। কয়েকজন নিহত আবার বেশ কয়েকজন আহতও হয় তাদের তিরের আঘাতে। তেমনই একজন আহত ব্যাক্তি কালি মুত্তু। তাঁর শরীরে প্রায় তিরিশটি তিরের আঘাত নিয়েও তিনি ফিরে আসতে পেরেছিলেন জিরকাটাং এর ক্যাম্পে। আর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে জিরকাটাং চেক পোস্টের কাছে নির্মাণ করেছিলেন মারিয়াম্মা দেবীর মন্দির। যা এখনও বরাটাং ভ্রমণকারীদের কাছে ভোর রাতের আশ্রয়স্থল। অবশেষে পাকা রাস্তা নির্মিত হলো .....বিস্তারিত পড়ুন