slider


গাট ব্যাকটেরিয়ার গোপন শক্তি - "কেচাপ থেকে টুথপেস্ট—হজম হয় সব!"

উত্তরাপথঃ দশকের পর দশক ধরে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে এসেছেন যে খাবারে ব্যবহৃত অনেক সাধারণ থিকনার বা ঘন করার উপাদান (যেমন সেলুলোজ-ভিত্তিক অ্যাডিটিভ) মানুষের শরীরে হজম হয় না। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা দেখাচ্ছে, এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া–এর একদল গবেষক আবিষ্কার করেছেন, আমাদের অন্ত্রে থাকা বিশেষ কিছু গাট ব্যাকটেরিয়া আসলে এই বৃহৎ আণবিক গঠনগুলোকে খাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এতদিন ধরে যেটিকে অসম্ভব মনে করা হতো! গবেষকদের মতে, এর মূল রহস্য লুকিয়ে আছে এনজাইমে। সাধারণত আমাদের শরীর খাদ্য আঁশ ভাঙতে যে এনজাইম ব্যবহার করে, সেই একই এনজাইম সক্রিয় হয়ে এই কৃত্রিম সেলুলোজজাত থিকনারকেও ভেঙে ফেলতে পারে। ড. দীপেশ পানওয়ার, মাইকেল স্মিথ ল্যাবরেটরির পোস্টডক্টরাল ফেলো এবং গবেষণার প্রধান লেখক, জানিয়েছেন— “আমরা এতদিন ধরে ভেবেছিলাম এই সেলুলোজ-জাত থিকনারগুলো অপরিবর্তিত অবস্থায় শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু আমাদের গবেষণা দেখাল, ফল, শাকসবজি ও সিরিয়ালের মতো প্রাকৃতিক পলিস্যাকারাইড খাওয়ার পর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া আসলে এই অ্যাডিটিভগুলো ভাঙতে সক্ষম।” কেচাপ, সালাদ ড্রেসিং, আইসক্রিম, এমনকি টুথপেস্ট—এসবের মধ্যে যে ঘনভাব বা মসৃণতা আমরা পাই, তার মূল কারণ এই সেলুলোজ-ভিত্তিক থিকনার। কিন্তু একইসঙ্গে, বেশি পরিমাণে এগুলো গ্রহণ করলে এগুলো ল্যাক্সেটিভ বা হালকা জোলাপ হিসেবেও কাজ করে। এই গবেষণা দেখিয়েছে, যদি অন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো আগে থেকেই প্রাকৃতিক শর্করার দীর্ঘ শৃঙ্খল (পলিস্যাকারাইড)–এর সংস্পর্শে থাকে, তবে তারা কৃত্রিম সেলুলোজ ভাঙতে প্রস্তুত হয়ে যায়। অর্থাৎ, স্বাস্থ্যকর খাবারের সঙ্গে এই অ্যাডিটিভ খেলে ব্যাকটেরিয়া সহজে এগুলোকে শক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। ড. হ্যারি ব্রুমার, কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক, বলেছেন— “আমরা কখনো ভাবিনি যে এই কৃত্রিম উপাদানগুলোও ব্যাকটেরিয়ার জন্য চিনি সরবরাহ করতে পারে। এতদিন যেগুলোকে নিছক নিষ্ক্রিয় থিকনার মনে করা হতো, সেগুলো আসলে ভিন্ন ভূমিকাও রাখছে।” .....বিস্তারিত পড়ুন

মহালয়া হল পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা

প্রীতি গুপ্তাঃ মহালয়া সনাতন ধর্মে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন, যা নবরাত্রির ঠিক পূর্বে পালিত হয়। এই দিনটি দেবী দুর্গার পৃথিবীতে আগমনের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। হিন্দু পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, মহালয়ার দিনে মা দুর্গা স্বর্গলোক থেকে পৃথিবীতে আসেন এবং তাঁর পূজার মাধ্যমে ভক্তরা তাঁকে স্বাগত জানান। এই দিনটি শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বাঙালি সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। মহালয়া হল পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনা। পিতৃপক্ষের শেষ দিনে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা হয়, এবং এরপর শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনার প্রস্তুতি। পুরাণ অনুসারে, মহালয়ার দিনে দেবী দুর্গা মর্ত্যলোকে আগমন করেন এবং তাঁর পূজার মাধ্যমে ভক্তরা তাঁর কৃপা লাভের জন্য প্রার্থনা করেন। এই দিনে দেবীকে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজা করা হয় এবং বিশেষ মন্ত্র ও আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর আগমন উদযাপিত হয়। বাঙালির কাছে মহালয়া শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি দুর্গাপূজার প্রস্তুতির আনুষ্ঠানিক সূচনা। এই দিনে ভোরবেলা বাঙালি পরিবারগুলোতে রেডিও বা টেলিভিশনে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের অমর কণ্ঠে "মহিষাসুরমর্দিনী" শ্রবণের রীতি প্রচলিত। এই অনুষ্ঠানটি বাঙালির হৃদয়ে এক অমোঘ স্থান দখল করে আছে। দেবী দুর্গার মহিমা ও তাঁর মহিষাসুর বধের কাহিনী এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। মহালয়ার এই দিনটি বাঙালির মনে দুর্গাপূজার উৎসাহ ও উদ্দীপনা জাগিয়ে তোলে। পূজার মণ্ডপ তৈরি, প্রতিমা নির্মাণ, এবং উৎসবের প্রস্তুতি এই সময় থেকেই শুরু হয়। এটি একটি সময় যখন পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়, এবং সমাজে একতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হয়। মহালয়ার দিনে অনেকে পবিত্র নদীতে স্নান করে পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করেন। এছাড়াও, মন্দিরে বা বাড়িতে দেবী দুর্গার পূজার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়। কোথাও কোথাও এই দিনে বিশেষ হোম বা পূজার আয়োজন করা হয়। .....বিস্তারিত পড়ুন

নাচনি নাচের উৎস সন্ধানে

ড. নিমাইকৃষ্ণ মাহাতঃ নাচনি নাচের উৎস সন্ধান খুবই দুরূহ কাজ । মানভূমের লোকসংস্কৃতির অন্যান্য অঙ্গের মতো নাচনি নাচের শুরু হয়েছিল কোন এক সুদূর অতীতে - একথা বলা যায় । লোকসংস্কৃতির অন্যান্য আঙ্গিক যেমন বিভিন্ন যুগ-পরিবেশে লোকসমাজে উদ্ভূত হয়ে সাধারণের মধ্যে লালিত , চর্চিত , অনুশীলিত হয়ে কালের কষ্টিপাথরে যাচিত হয়ে বংশপরম্পরায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বাহিত হয়ে চলেছে , নাচনি নাচও অনেকটা তাই। দ্বিতীয় অর্থে - নাচনি কারও নয় । জীবন সংগ্রামের জ্বালায় জর্জরিত হয়ে এই রূঢ় পৃথিবীতে সে নিজের প্রাণ ধারণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রত । সেখানে সে প্রয়োজনে স্বামীকে ছেড়ে রসিকের কাছে বা এক রসিককে ছেড়ে অন্য রসিকের সাহচর্য বেছে নিতে বাধ্য হয় । এই পরিস্থিতিতে সে কারও নয় । আবার , মানভূমে একটি প্রচলিত প্রবাদ আছে , তা হল -   নাচ, নাচনি আর নাগর - এই তিন নিয়ে নাচনি। লোকগবেষকরা মনে করেন ' নাচনি ' শব্দটি ' নাচ ' শব্দ থেকেই উদ্ভূত হয়েছে । অনেকে ' নাই চিনি ' শব্দগুচ্ছথেকে ' নাচনি ' শব্দের উদ্ভব হয়েছে বলে মনে করেন । অর্থাৎ নাচনিকে কেউ চেনে না বা নাচনি কাউকে চেনে না - এই ধারণা থেকেই ' নাচনি 'শব্দটির লোক সমাজে প্রচলিত হয়েছে । প্রথম অর্থে নাচনি লোকসমাজে অচেনা , অবজ্ঞাত , অবহেলিত , প্রান্তিক শ্রেণির। মানভূমের লোক সাধারনের মধ্যে নাচ ও গান স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এসে যায় । অর্থাৎ এখানকার মানুষের নাচ-গান স্বভাবজ বলা যায় , রক্তের মধ্যেই রয়েছে । তাই কেউ ভালোবেসে নাচ- গানকে আশ্রয় করেন , কেউ জীবন- জীবিকার টানে একে আঁকড়ে ধরেন । নাচনি নাচের ইতিহাস অনেকটা এরকমই।  নাচনি নাচের উৎস সন্ধানকে আমরা বিভিন্ন দিক থেকে আলোচনা করতে পারি । যেমন -  ১ ) ইতিহাসগত দিক , ২ )সামাজিকদিক ,  ৩ ) সাহিত্যিক দিক ইত্যাদি। ইতিহাসগত দিক  মানভূম , ধলভূম , গোপভূম , ভঞ্জভূম , শিখরভূম  প্রভৃতি অঞ্চলের সামাজিক , সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রনৈতিক ইতিহাস - কিছুটা ধোঁয়াশাচ্ছন্ন ।  তাই , এই অঞ্চলে বিস্তারলাভ করা নাচনি নাচের উদ্ভব ও বিকাশের রূপরেখাও কুয়াশাচ্ছন্ন। নাচনি নাচকে অশ্লীল , নিম্নরুচি ও নিম্ন শ্রেণির নাচ বলে দেগে দেওয়ার একটা প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে সমাজের বৃহত্তর অংশের মধ্যে রয়েছে ।তাই  , অনালোকিত ও অনালোচিত বা স্বল্প আলোচিত .....বিস্তারিত পড়ুন

টুভালু (#Tuvalu) — কীভাবে এক দ্বীপ রাষ্ট্র বিলীন হচ্ছে সমুদ্রে

প্রীতি গুপ্তাঃ টুভালু( Tuvalu), প্যাসিফিক মহাসাগরের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র, যা নয়টি প্রবালদ্বীপ ও অ্যাটল নিয়ে তৈরি। এর মোট ভূমি এলাকা মাত্র ২৬ বর্গকিলোমিটার, এবং জনসংখ্যা প্রায় ১১,০০০। এই দেশটি হাওয়াই এবং অস্ট্রেলিয়ার মাঝামাঝি অবস্থিত।দেশটির গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ২ মিটার এবং এর সর্বোচ্চ স্থান মাত্র ৪.৬ মিটার উচ্চতায়। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের জলস্তর বাড়তেই দেশটির অস্তিত্ব এখন গভীর সংকটে। নাসার পর্যবেক্ষণ বলছে, গত ৩০ বছরে টুভালুর সমুদ্রস্তর প্রায় ১৫ সেমি বেড়েছে, যা বৈশ্বিক গড়ের চেয়েও দ্রুত। ফল: ঘন ঘন জলোচ্ছ্বাস, উপকূল ভাঙন, নোনা জল ভূগর্ভে ঢুকে পড়া। টুভালুর রাজধানী ফুনাফুটি—একটি সরু অ্যাটল, দু’দিকে নীল সমুদ্র আর মাঝে ছোট্ট বসতি, এয়ারস্ট্রিপ, নারকেল-গাছের সারি। এই ভৌগোলিক বাস্তবতাই টুভালুকে জলবায়ু সংকটের প্রথম সারির শিকার বানিয়েছে। টুভালুতে ইতিমধ্যে লবণাক্ত জলের অনুপ্রবেশের কারণে ভূগর্ভস্থ জল অযোগ্য হয়ে পড়েছে, যা কৃষি এবং পানীয় জলের সরবরাহকে প্রভাবিত করছে। নারকেল এবং পুলাকার মতো ফসল উৎপাদন কমছে। ঝড় এবং কিং টাইডস (অস্বাভাবিক উচ্চ জোয়ার) প্রায়ই সমুদ্র উপকূলের ভূ-ভাগকে প্লাবিত করে, ২০১৫ সালের সাইক্লোন প্যাম ৪৫% জনগণকে বাস্তুচ্যুত করেছিল। এখানকার অর্থনীতি মূলত মৎস্য শিকার।আয়ের অন্য কোনও উপায় না থাকায় এরা প্রতিবেশী দেশগুলির অর্থ সাহায্যের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।জলবায়ু পরিবর্তন এই সবকিছুকে হুমকির মুখে ফেলেছে।বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে সমুদ্রের জলস্তর প্রতি বছর বাড়ছে।মূলত হিমবাহ ও বরফচাঁই গললে সেই জল সাগরে মিশছে এবং সমুদ্রের জলস্তর বাড়িয়ে দিচ্ছে। টুভালুতে সাগরপৃষ্ঠ প্রতি বছর গড়ে ~৫ মিমি হারে বাড়ছে—এটা বিশ্বের গড় বৃদ্ধির চেয়ে বেশী। টুভালুবাসীর উদ্যোগ- সমুদ্রভাঙন ঠেকাতে অবকাঠামো: ‘Tuvalu Coastal Adaptation Project (TCAP)’ ফুনাফুটির উপকূলে বালু ফেলে নতুন ভূমি-প্ল্যাটফর্ম তুলছে, যাতে ২১০০ সালের পরের সাগরস্তর ও ঝড়ের ঢেউও টপকাতে না পারে। (Wikipedia) আইন ও কূটনীতি: দেশটি চায়—সমুদ্র এগোলেও যেন তাদের সমুদ্রসীমা ও মৎস্যসম্পদ আইনি ভাবে অটুট থাকে। .....বিস্তারিত পড়ুন

পিঁপড়ে বিভ্রান্ত, মানুষ উপকৃত - কেন্নোর (millipede) বিষে আশার আলো মস্তিষ্ক ও স্নায়ুরোগের ওষুধ

উত্তরাপথঃ জঙ্গলের মাটির নিচে, শুকনো পাতার স্তূপের আড়ালে ঘুরে বেড়ানো ছোট্ট জীব কেন্নোকে অনেকেই ভয়ঙ্কর “কীটপতঙ্গ” বলে ভাবেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই বহু পা-ওয়ালা প্রাণীর দেহে লুকিয়ে আছে এমন কিছু রাসায়নিক যা শুধু পিঁপড়েকে বিভ্রান্তই করে না, মানুষের মস্তিষ্কেও কার্যকর হতে পারে! বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই অদ্ভুত যৌগ ভবিষ্যতে স্নায়বিক ব্যাধি ও ব্যথা উপশমে নতুন ধরনের ওষুধ তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে। আমেরিকার ভার্জিনিয়া টেকের বিজ্ঞানী এমিলি মেভার্স এবং তার দল এক নতুন শ্রেণির জটিল যৌগ আবিষ্কার করেছেন, যা কেন্নোর দেহ থেকে নিঃসৃত হয়। এরা আলকালয়েডস নামক প্রাকৃতিক রাসায়নিক পরিবারের অন্তর্গত। গবেষকরা এর নাম দিয়েছেন অ্যান্ড্রোগনাথানলস এবং অ্যান্ড্রোগনাথিনস, মিলিপিড Andrognathus corticarius–এর নাম অনুসারে। এই যৌগগুলো এতটাই শক্তিশালী যে পিঁপড়েরা এদের সংস্পর্শে এসে দিকভ্রান্ত হয়ে যায়। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এরা মানুষের মস্তিষ্কের কিছু বিশেষ রিসেপ্টরের সঙ্গেও প্রতিক্রিয়া করতে পারে, যা ব্যথা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষক মেভার্স মূলত অজানা বা উপেক্ষিত প্রাণী থেকে ওষুধ আবিষ্কারের নতুন রাস্তা খুঁজে বের করেন। তিনি দেখেছেন, কেন্নোরা যখন শিকারির আক্রমণে পড়ে, তখন দেহ থেকে বিশেষ রাসায়নিক নিঃসরণ করে। এভাবে তারা নিজেদের রক্ষা করে, আবার একই সঙ্গে কাছের সঙ্গীদেরও সংকেত দিতে পারে। এখনও পর্যন্ত কেন্নোদের নিয়ে অনেক রহস্য অমীমাংসিত — এদের খাদ্যাভ্যাস, সঠিক সংখ্যা, আচরণ, এমনকি রাসায়নিক গঠন নিয়েও অজানা অনেক কিছু আছে। তাই এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পল ম্যারেক গবেষণা করছেন, যাতে এই তথ্যগুলো মানুষের উপকারে ব্যবহার  করা যায়। এর আগেও গবেষকরা একটি ভিন্ন প্রজাতির কেন্নো (Ishchnocybe plicata) থেকে এমন রাসায়নিক পেয়েছিলেন, যা Sigma-1 নামের একটি বিশেষ নিউরোরিসেপ্টরের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে। এই রিসেপ্টর ব্যথা ও অন্যান্য স্নায়বিক সমস্যার সঙ্গে যুক্ত। সর্বশেষ আবিষ্কৃত যৌগগুলিও একই রিসেপ্টরের সঙ্গে কাজ করে। .....বিস্তারিত পড়ুন

মালবিকা ও অগ্নিমিত্র: কালিদাসের প্রথম নাটকের সাহিত্যিক বিশ্লেষণ

প্রীতি গুপ্তাঃ ভারতীয় সংস্কৃত সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ও নাট্যকার কালিদাস, যাঁর রচনাগুলি কেবল ভারতেই নয়, আজও বিশ্বসাহিত্যে এক অমর স্থান অধিকার করে রয়েছে। মহাকবি কালিদাস একদিকে যেমন ছিলেন বিখ্যাত কবি, অন্যদিকে নাট্যকার ও দার্শনিক হিসেবেও তিনি ছিলেন অনন্য। কালিদাস তাঁর কাব্য ও নাটকগুলিতে সৌন্দর্য, আবেগ এবং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের জীবনের গভীর সম্পর্ক ইত্যাদি বিভিন্ন দিক নিয়ে অত্যন্ত পরিশীলিত শৈলীর মাধ্যমে আলোচনা করেছেন যা পাঠক ও দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। মহাকবি রচিত তিনটি নাটক —মালবিকাগ্নিমিত্রম্, অভিজ্ঞান শকুন্তলম্, এবং বিক্রমোর্বশীয়ম্—এর মধ্যে মালবিকাগ্নিমিত্রম্ হলো তাঁর প্রথম নাটক। এই নাটকটি কালিদাসের প্রাথমিক সাহিত্য সাধনার নিদর্শন হলেও এতে তাঁর ভবিষ্যৎ কাব্যিক গুণাবলি ও রসাশ্রয়ী নাট্যচেতনার শক্ত ভিত রচিত হয়েছে। আজ আমরা আলোচনা করব মালবিকা ও অগ্নিমিত্র নাটকের কাঠামো, চরিত্রচিত্রণ, ভাষা ও শৈলী নিয়ে, সেই সঙ্গে এর ঐতিহাসিক ও সাহিত্যিক প্রেক্ষাপট, যা এই নাটকটিকে কালিদাসের প্রথম নাট্যকর্ম হিসেবে অনন্য মর্যাদা দিয়েছে। নাটকের পটভূমি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট “মালবিকা ও অগ্নিমিত্র” কালিদাসের প্রথম নাটক হিসেবে বিবেচিত হলেও এর রচনাকাল নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অনেকে মনে করেন এটি গুপ্ত যুগে রচিত, যখন ভারতীয় সংস্কৃতি ও সাহিত্য তার স্বর্ণযুগে পৌঁছেছিল। নাটকটির কাহিনী শুঙ্গ রাজবংশের রাজা অগ্নিমিত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত, যিনি ঐতিহাসিকভাবে শুঙ্গ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা পুষ্যমিত্র শুঙ্গের পুত্র ছিলেন। নাটকটি ঐতিহাসিক ঘটনার উপর ভিত্তি করে না, বরং এটি কালিদাসের কল্পনাশক্তি এবং নাটকীয় দক্ষতার একটি অপূর্ব সৃষ্টি। নাটকটির পটভূমি হল বিদিশার রাজপ্রাসাদ, যেখানে রাজা অগ্নিমিত্রের রাজকীয় জীবন এবং তাঁর প্রেমকাহিনী নাটকটির মূল বিষয়। এটি একটি প্রণয়কেন্দ্রিক নাটক, যেখানে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র, রাজকীয় জীবনের .....বিস্তারিত পড়ুন

চাঁদে কলোনি, ২৯ কোটি ক্ষুধার্ত ৫৩টি দেশ খাদ্য সংকটে: এটাই কি উন্নয়ন?

উত্তরাপথঃ বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) সাম্প্রতিক ‘গ্লোবাল ফুড ক্রাইসিস’ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে যে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে, তা মানব সভ্যতার বিবেককে নাড়িয়ে দেওয়ার মতো। ২০২৪ সালে টানা ষষ্ঠ বছর বিশ্ব জুড়ে গভীর খাদ্য সংকট চলছে এবং শিশুদের অপুষ্টি আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। অথচ এই সময়েই আমরা গর্বের সঙ্গে প্রযুক্তির উন্নয়ন, অবকাঠামোর প্রসার এবং মহাকাশে কলোনি গড়ার দাবি করছি। প্রশ্ন উঠছে—এটাই কি সত্যিকারের উন্নয়নের মানদণ্ড? আজ আমরা এমন এক যুগে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে একদিকে স্পেস স্টেশন, রোবোটিক চাঁদযান ও AI-এর বিস্ময়কর উন্নয়নের গল্প শুনি, অন্যদিকে প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ না খেয়ে রাত কাটান। বিশ্ব যখন ‘উন্নয়ন’ শব্দের মহিমা প্রচারে ব্যস্ত, তখন মানবিক বিপর্যয়গুলোর দিকে চোখ ফিরিয়ে দেখাও হয় না। সম্প্রতি খবরে প্রকাশ, ২০২৪ সালে বিশ্বের ৫৩টি দেশ বা অঞ্চলে প্রায় ২৯.৫ কোটি মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছেন। ২০২৩ সালের তুলনায় এই সংখ্যা বেড়েছে ১.৩৭ কোটি। অর্থাৎ, পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি, বরং সংকট আরও গভীর হয়েছে। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এই দুরবস্থার মূল কারণ। এসব কারণে ২০টি দেশে প্রায় ১৪ কোটি মানুষ চরম ক্ষুধার্ত অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছেন। এসব অঞ্চলে মানবিক সহায়তা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে, খাদ্য সরবরাহও বাধাপ্রাস্ত হচ্ছে। এটি শুধু একটি ব্যর্থ রাজনৈতিক অবস্থানের দৃষ্টান্ত নয়, এটি মানবিক মূল্যবোধেরও মৃত্যু। খাদ্য সংকটের আরেক বড় কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ধস, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্বের কারণে ১৫টি দেশে প্রায় ৫.৯৪ কোটি মানুষ প্রায় অভুক্ত থাকতে বাধ্য হচ্ছে। পাশাপাশি, খরা ও বন্যা ১৮টি দেশে ৯.৬ কোটি মানুষকে খাদ্য সংকটে ফেলেছে। এরচেয়েও ভয়াবহ হলো, এই সংকটে আন্তর্জাতিক সাহায্যের হারও নাটকীয়ভাবে কমে গেছে। খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তার জন্য যেসব তহবিল বরাদ্দ করা হতো, .....বিস্তারিত পড়ুন

12 3 4 5 6 7 8
Scroll to Top