slider


রাজস্থানের রাবারি(Rabari) উপজাতি: একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গল্প

গার্গী আগরওয়ালা মাহাতোঃ রাজস্থানের বর্ণময় ভূমিতে, যেখানে মরুভূমির বুকে ইতিহাস ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে, সেখানে রাবারি উপজাতি তাদের অনন্য জীবনধারা ও ঐতিহ্যের জন্য বিখ্যাত। এই যাযাবর সম্প্রদায়টি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে রাজস্থানের থর মরুভূমির কঠিন পরিবেশে বেঁচে থেকে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে। তাদের রঙিন পোশাক, অপূর্ব হস্তশিল্প এবং পশুপালনের ঐতিহ্য তাদেরকে রাজস্থানের সাংস্কৃতির একটি অপরিহার্য অংশ করে তুলেছে। এই নিবন্ধে আমরা রাবারি উপজাতির ইতিহাস, জীবনধারা, সংস্কৃতি এবং তাদের জীবনে আসা আধুনিক  সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করব। ঐতিহাসিক পটভূমি রাবারি উপজাতির উৎপত্তি নিয়ে ঐতিহাসিক মতভেদ রয়েছে। কিংবদন্তি অনুসারে, তারা মূলত পশ্চিম ভারতের যাযাবর পশুপালক সম্প্রদায়। কেউ কেউ বলেন, তারা মধ্য এশিয়া থেকে এসেছিল, আবার অনেকে তাদের রাজপুত বংশোদ্ভূত বলে মনে করেন। তাদের নাম ‘রাবারি’ শব্দটি এসেছে ‘রাহবার’ থেকে, যার অর্থ ‘পথপ্রদর্শক’। এই নামটি তাদের যাযাবর জীবনধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, কারণ তারা মরুভূমির বিস্তীর্ণ প্রান্তরে পশুদের নিয়ে চলাচল করত। (MAGIK INDIA, ২০২২)। ১২৯৮ খ্রিস্টাব্দের একটি উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক ঘটনা সেই সময় তাদের উপস্থিতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে: যখন সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি গুজরাটের সিদ্ধপুরের একটি মন্দির থেকে একটি শিবলিঙ্গ দখল করেছিলেন, তখন রাবারিরা যোদ্ধা দল গঠন করে এবং সিরোহির মহারাজার সাথে এটি পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করে, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রদর্শন করে (MAGIK INDIA,২০২২)। রাবারিরা প্রধানত গুজরাট, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশের কিছু অংশে বসবাস করে। রাজস্থানে তারা কচ্ছ, জয়সলমের, বাড়মের এবং জোধপুরের মতো এলাকায় বেশি দেখা যায়। তাদের জীবনযাত্রা মূলত পশুপালনের ওপর নির্ভরশীল, বিশেষ করে উট, গরু, ভেড়া এবং ছাগল পালন।রাবরিরা আধা-যাযাবর জীবনযাত্রায় গবাদি পশু পালন সহ দুধ উৎপাদনের মতো কাজকে অগ্রাধিকার দেয়। ভেড়ার পশম এবং ছাগলের দুধ হল রাবারিদের মূল অর্থনৈতিক সম্পদ, যা পুষ্কর উটের মেলার মতো বাজারে বিক্রি হয়। বস্তুত আজও পুষ্কর মেলা বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র । .....বিস্তারিত পড়ুন

মুম্বাই চিড়িয়াখানায় পেঙ্গুইনের ছানার জন্ম: মারাঠি নামের দাবিতে বিজেপি!

উত্তরাপথঃ মুম্বই শহরের রাজনীতি এমনিতেই উত্তেজনাপূর্ণ। কিন্তু এবার রাজনীতির রং লাগল পেঙ্গুইনের গায়েও! শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি—এবার দাবি উঠেছে, মুম্বাইয়ের চিড়িয়াখানায় জন্ম নেওয়া পেঙ্গুইনের ছানাদের নাম রাখতে হবে মারাঠি ভাষায়। তাঁদের যুক্তি? এই ‘উড়ন্ত পাখি’ নাকি মহারাষ্ট্রের আদি বাসিন্দা! বিজেপি নেতা নীতিন বাঙ্কার তো রীতিমতো মিছিল করে জানিয়ে দিয়েছেন —“যখন বিদেশ থেকে পেঙ্গুইন আনা হয়েছিল বীরমাতা জিজাবাই ভোঁসলে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানায় (যাকে সবাই রানিবাগ বলে চেনে), তখন আমরা মেনে নিয়েছিলাম যে তাদের নাম ইংরেজিতে হবে। কিন্তু  সদ্যজাত এই পেঙ্গুইন এখন তো মুম্বইতেই জন্মেছে! এই ছানারা একেবারে ঘরের, এদের নাম কি 'লুসি' বা 'চকো' হবে? মারাঠি নাম দিলে মন্দ কী?" মুম্বাই পৌরসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি কর্মীদের এই প্রতিবাদ দেখে মনে হতে পারে, এটা যেন পরিচয়ের রাজনীতির এক নতুন অধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, বিএমসিকে (বৃহন্মুম্বই পৌর কর্পোরেশন) একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কানে তুলছে কে? "বাচ্চা পেঙ্গুইনের নাম ঠিক করতে এত গড়িমসি! যেন ইউনাইটেড নেশনের ভোট লাগবে!" — কটাক্ষ করেন তিনি। বিজেপি নেতা নীতিন বাঙ্কারের মতে, মারাঠি তো এখন ক্লাসিক্যাল ভাষা। তাহলে পেঙ্গুইনের নাম 'রোমিও' না হয়ে 'ভাউ' হতে দোষ কোথায়? প্রসঙ্গত এই নামকরণ যুদ্ধ কিন্তু শুধু মুম্বইতেই নয়, এর আগেও দেখা গেছে অন্য দেশে। চিলিতে, একবার স্থানীয়রা দাবি করেছিলেন, অ্যান্ডিজ পর্বতের পাশে জন্ম নেওয়া পেঙ্গুইনের নাম রাখা হোক 'পেপে' বা 'পেদ্রো'—একেবারে স্থানীয় স্টাইলে।  জাপানে তো এক চিড়িয়াখানায় পান্ডার বাচ্চার নাম রাখার জন্য জনসাধারনের মধ্যে ভোটাভুটি হয়, এরপর জাপানি সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নাম রাখা হয়।  এমনকি কানাডায় একবার প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ডে জন্মানো পেঙ্গুইনের নাম রাখা হয় 'ম্যাপল'—তাদের জাতীয় গাছের নামে! তাই ভাবুন, যদি বিদেশের পেঙ্গুইনেরাও 'দেশি' নামে পরিচিত হতে পারে, তাহলে মুম্বইয়ের আমাদের ঘরের পেঙ্গুইন ছানারা কেন পাবে না মারাঠি নাম? তবে এটা নিশ্চিত, পেঙ্গুইন ছানারা এ নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। হয়ত চিড়িয়াখানার কাঁচের  জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ভাবছে—"নাম যাই হোক, মাছটা ঠিকমতো দিলেই হল!" .....বিস্তারিত পড়ুন

১০০ বছর আগে টেলিভিশনের জন্মের পেছনে ছিল চাঞ্চল্যকর ষড়যন্ত্র ও হিংস্র প্রতিযোগিতা!

উত্তরাপথঃ আজ থেকে ঠিক ১০০ বছর আগে, ১৯৩৬ সালে, টেলিভিশনের জন্ম হয়েছিল এক রোমাঞ্চকর গল্পের মধ্য দিয়ে। এই গল্পে ছিল তীব্র প্রতিযোগিতা, ষড়যন্ত্র, উৎসবের আমেজ আর এক বিধ্বংসী দুর্ঘটনা। গল্পের চরম মুহূর্ত এলো যখন ১৯৩৬ সালের ৩০ নভেম্বর লন্ডনের ক্রিস্টাল প্যালেসে আগুন লেগে টেলিভিশনের উদ্ভাবক জন লজি বেয়ার্ডের ল্যাবরেটরির একটা বড় অংশ ধ্বংস হয়ে গেল। এর চেয়ে খারাপ সময় আর তাঁর কাছে হতে পারত না! বেয়ার্ড তখন লড়াই করছিলেন EMI নামের এক বিশাল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে, যারা গুগলিয়েলমো মারকনি ও আমেরিকান রেডিও কোম্পানি RCA-এর সঙ্গে জোট বেঁধে আধুনিক ইলেকট্রনিক টিভি প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিল। বেয়ার্ডের হাতেই ছিল পুরনো যন্ত্রচালিত টিভি প্রযুক্তি। এই যন্ত্রচালিত টিভি-ই তাকে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তারবিহীন চলন্ত ছবি প্রেরণকারী হিসেবে খ্যাতি এনে দিয়েছিল, ১৯২৫ সালে। টেলিভিশনের শুরুর দিনগুলো টেলিভিশনের শুরুর দিনগুলো ছিল একটা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো। অনেক উদ্ভাবকই এই নতুন মাধ্যমের জন্য লড়াই করছিলেন। জন লজি বেয়ার্ড ছিলেন তাদের মধ্যে একজন। তিনি প্রথম বেতারের মাধ্যমে চলমান ছবি পাঠাতে সক্ষম হন, যেমনটা ১৯২৫ সালের জুন মাসে পপুলার সায়েন্স ম্যাগাজিনের লেখক নিউটন বার্ক লিখেছিলেন। কিন্তু বেয়ার্ডের প্রাথমিক সাফল্যের পর তিনি ব্যর্থ হন কারণ তিনি পুরনো যান্ত্রিক (মেকানিকাল) প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করেছিলেন, যখন নতুন ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি অনেক বেশি কার্যকর ছিল। বেয়ার্ডের যান্ত্রিক টেলিভিশন সিস্টেম সেই সময়ের জন্য বিপ্লবী ছিল। এটা দিয়ে তিনি একটা ল্যাবরেটরির এক ঘর থেকে আরেক ঘরে মানুষের মুখের হাসি, চোখের পলক ফেলা—এসব ছবি পাঠাতে পারতেন, তাও কোনো তার বা ফটোগ্রাফি ছাড়াই! কিন্তু ছবিগুলো এতটাই অস্পষ্ট ছিল যে, বেয়ার্ডের ছবি দেখে মনে হতো যেন কোনো ভৌতিক মুখ! তবু বার্ক লিখেছিলেন, “মুখের আউটলাইন স্পষ্ট, চোখের গর্তের ছায়া আর খোলা মুখের আকৃতি পরিষ্কার দেখা যায়।” অন্যদের অবদান বেয়ার্ডের কাজ একা তার নিজের ছিল না। তিনি অনেক আগের উদ্ভাবকদের কাজের ওপর ভিত্তি করে এগিয়েছিলেন। .....বিস্তারিত পড়ুন

বিড়ালরা কি সত্যিই শসা ভয় পায় ?

উত্তরাপথঃ আপনি সম্ভবত সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন ভিডিও দেখেছেন যেখানে দেখা যাচ্ছে বিড়ালরা শসা দেখে ভয় পাচ্ছে। এই ক্লিপগুলিতে, একটি শান্ত বিড়াল বসে খাচ্ছে, তারপর হঠাৎ তার পিছনে একটি শসা দেখতে পায়। তারপর সেই বেড়ালটি  বাতাসে লাফিয়ে ওঠে বা হতবাক হয়ে যায়, অবাক বা ভীত দেখায়। অনেকেই ভাবছেন, "কেন বিড়ালরা এইভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়? শসা কি তাদের কাছে সত্যিই ভয়ঙ্কর?" কেউ কেউ মনে করেন কারণ শসা দেখতে সাপের মতো, যা বন্য বিড়ালদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। কিন্তু ক্যাটেনা জোন্স, যিনি পশুর আচরণ সম্পর্কে অনেক কিছু জানেন ,তিনি এ বিষয়ে এতটা নিশ্চিত নন। জোন্স ব্যাখ্যা করেন, "এটি একটি সহজাত প্রবৃত্তি হতে পারে। বিড়ালরা শসাকে সাপের সাথে গুলিয়ে ফেলতে পারে কারণ তাদের পূর্বপুরুষরা সাপ খেয়েছিল। কিন্তু আমি অনেক বছর ধরে বিড়ালদের সাথে কাজ করেছি, এবং সত্যি বলতে, তারা সাধারণত শসা বা অনুরূপ জিনিস সম্পর্কে চিন্তা করে না।" তিনি একটি বিড়ালের শসা, গাজর এবং একটি ক্যান্ডি বার শুঁকানোর একটি ভিডিওও দেখিয়েছিলেন। বিড়ালরা আসলে গাজর বা ক্যান্ডি নিয়ে চিন্তিত ছিল না - শসাই ছিল বড় প্রতিক্রিয়ার কারণ। আমরা একটা জিনিস জানি যে বিড়ালরা স্বাভাবিকভাবেই সতর্ক কারণ তারা শিকারী প্রাণী। বন্য অঞ্চলে, তারা সবসময় বিপদের জন্য সতর্ক থাকে। জোন্স বলেন, "তাদের বিশ্রাম নিতে এবং খেতে যথেষ্ট নিরাপদ বোধ করতে কিছুটা সময় লাগে, বিশেষ করে যদি তারা নতুন বা খোলা জায়গায় থাকে। একবার তারা বুঝতে পারে যে খারাপ কিছু ঘটছে না, তারা শান্ত হয়ে যায়।" এর মানে হল যে ভিডিওগুলিতে বিড়ালদের হঠাৎ শসা দেখার পরে লাফিয়ে বা পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে যেখানে প্রায়শই তারা অপরিচিত এবং ভীতিকর কিছুতে প্রতিক্রিয়া দেখায়। কল্পনা করুন যদি আপনি স্নান করছেন এবং হঠাৎ একটি বিশাল মাকড়সা দেখতে পান - তাহলে আপনিও চমকে যাবেন। জোন্স বলেন, "শসা কেবল একটি বড়, অন্ধকার বস্তু যা বিড়ালের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে উপস্থিত হয়। এটি তাদের ভয় দেখায় কারণ তারা স্বাভাবিকভাবেই সতর্ক এবং অবাক হতে পছন্দ করে না।" বিড়ালের আচরণ বিশেষজ্ঞ জেন এহরলিচও ভাবছেন যে ক্যামেরার বাইরে এমন কিছু ঘটছে যা বিড়ালদের ভয় দেখিয়ে থাকতে পারে। হয়তো কোনও শব্দ বা নড়াচড়া বিড়ালটিকে সেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে বাধ্য করেছে। উভয় বিশেষজ্ঞই একমত যে বিড়ালদের প্রতিক্রিয়া দেখায় যে তারা খুব চাপে আছে। সাধারণত, যখন বিড়ালরা ভয় পায়, তখন তারা তাদের পশম ফুলিয়ে, পিঠ বাঁকিয়ে .....বিস্তারিত পড়ুন

ডায়াবেটিসের ওষুধ মেটফর্মিনে বাড়ছে মুরগির ডিম উৎপাদন

উত্তরাপথঃ মানুষ আর মুরগির মধ্যে এত মিল থাকতে পারে—তা শুনলে অবাক হতে হয়। বিশেষ করে প্রজনন বা ফার্টিলিটির ক্ষেত্রে! আর এই অদ্ভুত মিলের সেতুবন্ধনে রয়েছে এক সাধারণ কিন্তু বহুল ব্যবহৃত ডায়াবেটিসের ওষুধ—মেটফর্মিন। পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকদের নতুন আবিষ্কার বলছে, এই ওষুধ শুধু টাইপ 2 ডায়াবেটিস এবং পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) এর চিকিৎসায় কার্যকর নয় বরং এটি ব্রয়লার ব্রিডার মুরগিদেরও বেশি ডিম দিতে সাহায্য করে। মূলত মুরগির বার্ধক্যজনিত ফার্টিলিটি হ্রাস প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  কিভাবে কাজ করে মেটফর্মিন? যদিও আগে থেকেই বিজ্ঞানীরা জানতেন মেটফর্মিন ডিম উৎপাদনে সহায়তা করে, কিন্তু ঃ সম্প্রতি উন্মোচন হয়েছে ‘Biology of Reproduction’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায়।দেখা গেছে, মুরগির শরীরের লিভার অংশে এই ওষুধ এমন কিছু জিনকে "উদ্দীপিত" করে যেগুলো ইয়োল্ক প্রোটিন তৈরি ও রক্তে সুগারের ভারসাম্য রক্ষা করে। একইসঙ্গে এটি এমন কিছু  জিনকে “’  নিষ্ক্রিয়" করে দেয় যেগুলো চর্বি সঞ্চয়ের জন্য দায়ী। এর কাজ মানুষের শরীরে মেটাবলিক ডিসঅর্ডারে ওষুধের কাজের সাথে মিলে যায়। মানুষের জন্য কী বার্তা দেয় এই গবেষণা? PCOS একটি হরমোনজনিত সমস্যা, যা প্রায় ৪% থেকে ১২% নারীর মধ্যে দেখা যায় এবং এটি নারী বন্ধ্যাত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। মেটফর্মিন প্রায়শই PCOS লক্ষণগুলির চিকিৎসার জন্য অফ-লেবেল ব্যবহার করা হয় ।এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে, অতিরিক্ত হরমোনের মাত্রা কমায় এবং মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, সম্ভাব্যভাবে প্রজনন  ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। প্রোডাকশন জার্নালে প্রকাশিত ২০২৩ সালের একটি গবেষণায়, পেন স্টেটের গবেষকরা মুরগির একটি দলকে ৪০ সপ্তাহ ধরে মেটফর্মিনের একটি ছোট দৈনিক ডোজ দিয়েছিলেন।ফলাফলগুলি ছিল আশ্চর্যজনক: এতে মুরগিগুলি বেশি উর্বর ডিম পাড়ে, তাদের শরীরের চর্বি কম ছিল এবং ওষুধ না দেওয়া মুরগির তুলনায়  এই মুরগিগুলিতে স্বাস্থ্যকর প্রজনন হরমোনের মাত্রা দেখিয়েছিল।সুতরাং এই গবেষণার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে—মানুষের প্রজনন সমস্যা বোঝার জন্য মুরগিকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

কিডনি ভালো রাখতে বোনডাক নাট (Bonduc Nut); প্রাচীন জ্ঞানের সাথে বিজ্ঞানের অনন্য সংযোগ

উত্তরাপথঃ সামগ্রিক সুস্থতার জন্য আমাদের অনুসন্ধানে, আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রাচীন ভেষজ প্রতিকারগুলি কীভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে তা দেখে অনুপ্রেরণাদায়ক। এরকম একটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার হল Caesalpinia bonduc ভেষজ, যা Bonduc Nut নামেও পরিচিত, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষায় - বুদ্ধ শাকামুনির শিক্ষা সহ - সম্মানিত। Caesalpinia bonduc এর প্রাচীনত্ প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির অনেক গুণাগুণ আজকের দিনে বিজ্ঞানের আলোয় আবার নতুনভাবে আবিষ্কৃত হচ্ছে। এমনই একটি আশ্চর্যজনক উদাহরণ হলো Caesalpinia bonduc, বা আমাদের পরিচিত বোনডাক নাট। হাজার বছর আগে এই ভেষজটি বুদ্ধ শাক্যমুনির শিক্ষায় উল্লেখিত ছিল। আর আজ আধুনিক গবেষণা বলছে—এই গাছটি আমাদের কিডনি রক্ষা করতে পারে! প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে, এশিয়া এবং আফ্রিকা জুড়ে ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ব্যবস্থা Caesalpinia bonduc কে তার বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য ব্যবহার করে আসছে। এটি Hjam-hbras এর মতো ফর্মুলেশনে বিশিষ্টভাবে উপস্থিত রয়েছে, যা কিডনি স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন শারীরিক ক্রিয়াকলাপকে সমর্থন করে বলে বিশ্বাস করা হয়। তবে, সম্প্রতি পর্যন্ত, এর নির্দিষ্ট প্রভাবের বৈজ্ঞানিক বৈধতা সীমিত ছিল।  কী বলছে আধুনিক বিজ্ঞান? সম্প্রতি প্রফেসর ভূষনার( Bhusnar) ও তাঁর  গবেষকদল একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রকাশ করেছেন । এই গবেষণায় তারা হজম-ভ্রাস (Hjam-hbras)নামক তিব্বতীয় ঐতিহ্যবাহী ওষুধের মূল উপাদান বোনডাক নাট-এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করেন।তারা নেটওয়ার্ক ফার্মাকোলজি এবং বায়োইনফরমেটিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে আবিষ্কার করেন, এই ভেষজটি কিডনি-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ জিন এবং রাসায়নিক পথের (signaling pathways) সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে। ফলে এটি কিডনির কোষকে সুরক্ষা দিতে পারে এবং কিডনি রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। .....বিস্তারিত পড়ুন

সুগন্ধি মিশন ও বেগুনি বিপ্লব

প্রিয়াঙ্কা দত্তঃ ভারতসহ সারা বিশ্বে সুগন্ধি দ্রব্যের ইতিহাস স্মরণাতীত কাল থেকে প্রবাহমান। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা থেকে সিন্ধু সভ্যতা, বৈদিক যুগ থেকে  আধুনিক যুগ , সব কালে , সব দেশে সুগন্ধি  দ্রব্যের  চাহিদা ও ব্যবহার চিরন্তন। তবে তার ব্যবহারের রীতি নীতির  বহু পরিবর্তন হয়েছে কালে কালে। সুগন্ধি বা পারফিউম এর মোহময় আবেশ যুগ যুগ ধরে মানুষকে বেঁধে রেখেছে এক অদ্ভুত ভালোলাগায়। প্রাচীনকালে যা ছিলো রাজকীয় সম্ভোগের বিষয় আজ তা সর্ব স্তরের সব বয়সী মানুষের কাছে পৌঁছে গেছে। শুধুমাত্র পারফিউম হিসাবেই নয়, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদের ব্যবহার্য প্রতিটি জিনিস, সে টুথ পেস্ট হোক বা ধুপকাঠি , তেল হোক বা সাবান, বিয়ে বাড়ি হোক বা অফিস যাত্রা, বিশেষ বিশেষ গন্ধ আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয়ের একটিকে, বিশেষ ভাবে পরিতৃপ্তি দিয়ে চলেছে যুগ যুগ ধরে । প্রাচীন মিশরে একে তুলনা করা হয়েছে ঈশ্বরের ঘামের সঙ্গে। আমরা আজ কথা বলব সেই সুগন্ধি দ্রব্যের উপাদান নিয়ে। বরাহমিহিরের বৃহৎসংহিতা গ্রন্থে কালেয়ক, অগুরু, চন্দন, কস্তুরী,কুমকুম, মন:শিলা, মঞ্জিষ্ঠা ,চাঁপা ইত্যাদি উপাদান সিদ্ধ করে বা তেলে মিশিয়ে সুগন্ধি হিসাবে ব্যবহার করার উল্লেখ পাওয়া যায়। পারস্য, ইরান, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে পরবর্তি কালে বিভিন্ন ফুলের নির্যাসে প্রস্তুত আতরের মত সুগন্ধি দীর্ঘ সময় রাজত্ব করেছে। বিদেশী পারফিউম এর মধ্যে ফ্রেঞ্চ পারফিউম অসাধারণ হলেও তা সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এই সমস্যার সমাধানে বিভিন্ন দেশীয় কোম্পানি গুলো এগিয়ে এলেও সস্তা আলকোহল বা ইথানলের ব্যবহার নানা সমস্যার সৃষ্টি করছিল। মাঝখানে সাধারণ মানুষ তাই আস্থা হারাচ্ছিলো সুগন্ধি দ্রব্যের নিত্য ব্যবহারে। এই সময় জনসাধারণের আর্থিক অবস্থার বিচারে পারফিউমের সৌরভ প্রায় বিলীন হতে বসেছিল। ইতিমধ্যে মুক্ত অর্থনীতি আর টেকনোলজির হাত ধরে সারা বিশ্বের ফ্যাশন জগতে এলো বিপুল পরিবর্তন। ফাস্ট ফ্যাশন এর অঙ্গ হয়ে উঠলো ফাস্ট চেঞ্জিং পারফিউম। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমরা ছোট বেলায় যদিওবা বাবা মায়ের অনুমতিক্রমে অনুষ্ঠান বাড়িতে একটু আধটু সেন্ট এর ছিটে পেতাম এখনকার জেন জি তো এবেলা ওবেলা পারফিউম পাল্টায়। যুগের সাথে তাল মেলাতে তাই বদলে গেলো সুগন্ধি উপাদান গুলোও। সাইক্লোমেথিকোন নামক রাসায়নিক এর ব্যবহার .....বিস্তারিত পড়ুন

12 3 4 5 6 7 8
Scroll to Top