

NASA-র সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ [জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST)] দ্বারা বন্দী আরেকটি বিস্ময়। ছবিটি @NASA @NASAWebb এর এক্স হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত।
উত্তরাপথঃ সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, আমাদের সৌরজগতের বাইরে জীবনের অনুসন্ধান আরও তীব্র হয়েছে, NASA একটি নতুন গবেষণা বলছে, আমাদের সৌরজগতের বাইরেও প্রাণ থাকতে পারে। NASA র এই গবেষণা দলটি আশা প্রকাশ করেছে যে সৌরজগতের বাইরে আরও ১৭টি এক্সোপ্ল্যানেট (Exoplanet)বা অনুরূপ বিশ্ব থাকতে পারে। NASA-র দ্বারা পরিচালিত গবেষণা এক দূরবর্তী বরফময় বিশ্বের সম্ভাব্য বাসযোগ্যতার সম্ভাবনার উপর আলোকপাত করে।
এক্সোপ্ল্যানেট (exoplanet) বা আমাদের সৌরজগতের বাইরে অবস্থিত গ্রহগুলি বিজ্ঞানী এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য অত্যন্ত আগ্রহের বিষয়। বছরের পর বছর ধরে, NASA-র কেপলার এবং TESS মিশনগুলি হাজার হাজার এক্সোপ্ল্যানেট সনাক্ত করেছে, যার মধ্যে অনেকগুলি তাদের নিজ নিজ তারা সিস্টেমের বাসযোগ্য অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত। এই বাসযোগ্য অঞ্চলগুলি, “গোল্ডিলক্স জোন” নামেও পরিচিত, এটি এমন অঞ্চল যেখানে কোনও গ্রহের পৃষ্ঠে তরল জলের অস্তিত্বের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি ঠিক হতে পারে।
নাসার সাম্প্রতিক অনুসন্ধানে একটি নির্দিষ্ট ধরণের এক্সোপ্ল্যানেট নিয়ে আলোচনা করেছে। এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলি, তাদের বরফের পৃষ্ঠ দ্বারা আবৃত, পূর্বে এই এক্সোপ্ল্যানেটগুলিকে তাদের চরম ঠান্ডা তাপমাত্রার কারণে জীবনের জন্য অযোগ্য বলে মনে করা হয়েছিল।বর্তমানে, NASA-র গবেষণা পূর্বের সেই অনুমানকে চ্যালেঞ্জ করেছে, এই বরফের এক্সোপ্ল্যানেটগুলিতেও বাসযোগ্য মহাসাগর এবং বিস্ফোরনের সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে।
NASA-র সাম্প্রতিক আবিষ্কার বরফযুক্ত এক্সোপ্ল্যানেটে বাসযোগ্য মহাসাগরের উপস্থিতি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।বিজ্ঞানীদের অনুমান আমাদের সৌরজগতের বাইরের পৃথিবীতেও বরফের পৃষ্ঠের নীচে তরল জলের সমুদ্র থাকতে পারে। আমরা জানি এটি জীবনের বিকাশ এবং টিকিয়ে রাখার জন্য অপরিহার্য উপাদান।
NASA এর গবেষণাতে এই বরফের এক্সোপ্ল্যানেটগুলিতে বিস্ফোরণের কেন্দ্র তথা আগ্নেয়গিরি উপস্থিতির কথাও উল্লেখ করা হয়েছে । আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত বিস্ফোরকগুলি মূলত জল এবং বাষ্পের শক্তিশালী জেট যা ভূ-তাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপের দ্বারা চালিত হয়ে পৃষ্ঠের নীচ থেকে বিস্ফোরিত হয়। আগ্নেয়গিরির উপস্থিতি বিজ্ঞানীদের দূরবর্তী বিশ্বের গঠন এবং সম্ভাব্য বাসযোগ্যতা অধ্যয়ন করার একটি অনন্য সুযোগ প্রদান করে। আগ্নেয়গিরি থেকে বের হওয়া উপাদানগুলি বিশ্লেষণ করে, বিজ্ঞানীরা সমুদ্রের রাসায়নিক গঠনের ব্যাপারে একটি সাম্যক ধারনা পেতে পারেন এবং সম্ভাব্যভাবে জীবনের লক্ষণগুলি সনাক্ত করতে পারেন।
বরফযুক্ত এক্সোপ্ল্যানেটে (Exoplanet) বাসযোগ্য মহাসাগর এবং আগ্নেয়গিরির আবিষ্কার এই পৃথিবীর বাইরেও জীবনের অস্তিত্ব সন্ধানের ক্ষেত্রে অনেকটাই প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। তরল জলের উপস্থিতি জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সন্দেহ নেই, সেই সাথে মহাসাগর এবং আগ্নেয়গিরির সংমিশ্রণ আমাদের সৌরজগতের বাইরে জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। বিজ্ঞানীদের দ্বারা আবিস্কৃত এই ফলাফলগুলি ভবিষ্যতে তাদের অনুসন্ধানের ক্ষেত্র প্রসারিত করতে সাহায্য করবে ।
আশা করা যাচ্ছে এক্ষেত্রে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST), দূরবর্তী বিশ্বগুলিকে আরও বিস্তারিতভাবে অধ্যয়ন করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। JWST-এর উন্নত যন্ত্রগুলি বিজ্ঞানীদের এক্সোপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করতে, বাসযোগ্য মহাসাগর এবং আগ্নেয়গিরিগুলির অস্তিত্বকে খুঁজে বের করার জন্য আরও তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে। সেইসাথে JWST-এর উন্নত যন্ত্রগুলি বিজ্ঞানীদের এক্সোপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডল বিশ্লেষণ করতেও সাহায্য করবে।
সুত্রঃ Prospects for Cryovolcanic Activity on Cold Ocean Planets. Lynnae C. Quick, Aki Roberge, Guadalupe Tovar Mendoza, Elisa V. Quintana, and Allison A. Youngblood ApJ 2023, 956, 29.
আরও পড়ুন
প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে
উত্তরাপথঃ হঠাৎ করেই একটি নতুন দ্বীপের জন্ম হয়েছে।২০২৩ এর ৩০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত একটি নতুন দ্বীপের জন্ম দিয়েছে। বিস্ফোরণের পর জাপানের ওগাসাওয়ারা দ্বীপ চেইনের কাছে বিশাল বিশাল পাথরের টুকরো দেখা গেছে। এ বিষয়ে জাপানি গবেষক বলেন, গত মাসে প্রশান্ত মহাসাগর জলের নিচে আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের পর টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইওটো দ্বীপের কাছে একটি ছোট নতুন দ্বীপের উদ্ভব হয়েছে।টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ফুকাশি মায়েনো জানিয়েছেন যে নতুন দ্বীপ, এখনও যার নাম নেই প্রশান্ত মহাসাগরের ইওটো দ্বীপ থেকে ১ কিলোমিটার দূরে ১০০ মিটার ব্যাসের একটি পাথুরে দ্বীপে একটি phreatomagmatic বিস্ফোরণ ঘটেছে। টোকিও থেকে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে বিস্ফোরণটি দেখা গেছে। ভূপৃষ্ঠের নীচে জলের সাথে লাল গরম ম্যাগমা সংঘর্ষের কারণে প্রতি কয়েক মিনিটে বিস্ফোরণ ঘটে।গত ২১ অক্টোবর, ২০২৩-এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল, যা আগে ইও জিমা নামে পরিচিত ছিল এবং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের স্থান ছিল। প্রায় ১০ দিন ধরে অগ্ন্যুৎপাত চলার পর, আগ্নেয়গিরির উপাদান অগভীর সমুদ্রতলের উপর জমা হয় এবং প্রায় ১৬০ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় বড় বড় পাথরের আকারে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে। .....বিস্তারিত পড়ুন
World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?
প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন
সহযাত্রী
দীপা - আর তো এগারো বছর আটমাস বারোদিন চাকরি , তাই না ? অংশু - বাপরে বরাবরই তোমার স্মৃতিশক্তি প্রবল , এতোটা মনে আছে ? দীপা- ঘোরো টো টো করে আর কটা বছর , আফটার রিটায়ার্ড মেন্ট কি করবে ? অংশু - ফার্ম হাউস ,গাছপালা পশুপাখি নিয়ে থাকবো। দীপা- বাঃ উন্নতি হয়েছে। যে অংশুবাবু কখনও একটা ফুলের চারা লাগায়নি সে কিনা ফার্ম হাউস করবে … অংশু - সময়ের সাথে সব বদলায় ম্যাডাম , আচ্ছা তোমার কনুইয়ের নীচে সেই পোড়া দাগটা দেখি তো গেছে কিনা … দীপা- তুমি অনেক রোগা হয়ে গেছো , তা ওজন কত শুনি ? অংশু - সত্তর বাহাত্তর হবে বোধহয় মাপিনি, দীপা - তা কেনো মাপবে ? একটা অগোছালো মানুষ। অংশু - যাক বাবা তাও অপদার্থ শব্দ টা বলোনি। দীপা - ভাবোনা ডিভোর্স হয়েছে বলে সে অধিকার নেই। সমাজ বিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েও আসলে সমাজটাই শেখোনি , আর কি শিখেছো বলো, ঐ ছেলে পড়ানো , সেমিনার আর লেখালেখি। তা ধন্যবাদ তোমার রূপালী ঠৌট উপন্যাস এবছর একাডেমি পেলো , দারুণ লেখো তুমি, আগের চেয়ে অনেক ধার। অংশু- বাঃ তুমি পড়েছো ? দীপা- সব পড়েছি , তোমার রিসেন্ট উপন্যাসের নায়িকা মেঘনা টি কে ? মানে কার আড়ালে কাকে লিখেছো ? অংশু - এও কি বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপিকাকে বলে দিতে হবে ? দীপা- বারোটা বছর সময়ের শাসনে অনেক বদলালেও আমি বোধহয় সেই বড্ড সেকেলেই রয়ে গেলাম। অংশু - একা একাই কাটিয়ে দিলে বারো বছর। দীপা- একই প্রশ্ন আমিও করতে পারি। অংশু - আচ্ছা দীপা আজ না হয় শেষবারের মতো বলি, আমার মধ্যে কি ছিলো না বলোতো ? কেনো পারোনি এই বাউন্ডুলে ভবঘুরে মানুষটার সাথে চিরকালের ঘর বাঁধতে ? আমি কি ভালোবাসতে জানি না ? .....বিস্তারিত পড়ুন
World’s most polluted cities: নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
উত্তরাপথঃ দিওয়ালি উদযাপনের একদিন পর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই এবং কলকাতা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় উঠে এসেছে।সোমবার, অর্থাৎ দীপাবলির পরের দিন এই শহরগুলির বায়ুর গুণমান উল্লেখযোগ্য মাত্রায় খারাপ হয়েছে।বায়ুর গুনমান খারাপ হওয়ার পেছনে মাত্রাতিরিক্ত আতশবাজি জ্বালানোকে দায়ী করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের (World’s most polluted cities) তালিকায় যথারীতি প্রথম স্থান দখল করেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। দীপাবলির পরের দিন এটির AQI (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স) পরিসংখ্যান ছিল ৪০৭। নভেম্বরের শুরু থেকে, দিল্লিতে AQI পরিসংখ্যান খারাপ হয়েছে। সুইস গ্রুপ আইকিউএয়ার শহরের বাতাসকে "বিপজ্জনক" বিভাগে রেখেছে।ভারতের আর্থিক রাজধানী মুম্বাই বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়(World’s most polluted cities), ১৫৭ এর AQI সহ ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। কলকাতা ১৫৪ এর AQI সহ সপ্তম স্থানে রয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন