Green Spaces: প্রাকৃতির মাঝে সময় কাটানোর স্বাস্থ্যগত সুবিধা

উত্তরাপথঃ মনে আছে আপনি শেষ কবে প্রকৃতির মাঝে (Green Spaces) আপনার মূল্যবান সময় কাটিয়েছিলেন? এখানে ফাঁকা রাস্তা দিয়ে হাঁটা ,গাড়ি বা বাসে চড়ে ফাঁকা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার কথা বলছি না।সবুজ ঘেরা বনভূমির মাঝে মাটিতে শুয়ে  বা খেলাধূলা করে কিছুটা সময় কাটানোর কথা বলছি অথবা গাছের ডালে পাখিদের উড়তে দেখা,মৌমাছি এবং প্রজাপতিদের দেখা যখন তারা ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে।  খোলা আকাশের নীচে সমস্ত কাজের চাপকে দূরে সরিয়ে রেখে চোখ বন্ধ করে প্রকৃতির নিস্তব্ধতা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন – কারণ বিজ্ঞানীরা বলছেন যে আমরা এই ধরনের প্রাকৃতিক স্থানগুলিতে (Green Spaces) সময় কাটালে অনেক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সুবিধা পেতে পারি।এই সুবিধা শুধুমাত্র বাইরে খেলাধুলা বা  ব্যায়াম করার স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কিত নয়। প্রকৃতির শান্ত পরিবেশে থাকার সহজ কাজটি আপনাকে মানসিক এবং শারীরিকভাবেও অনেক সুস্থ্য থাকতে সাহায্য করতে পারে।

 মনোবিজ্ঞানীদের মতে মানুষ যেহেতু বিভিন্ন প্রকৃতিক উপাদানে গঠিত সেই কারণে ঘরের বাইরে  আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে ভালো কাজ করে।এরপর আমরা যখন পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস গ্রহণ করি  তখন খুব সহজেই আমরা আমদের মানসিক চাপ প্রশমিত করতে পারি । নেব্রাস্কা-লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের গবেষকদের মতে , যারা প্রকৃতির মাঝে(Green Spaces) সময় কাটান এবং পরিষ্কার বাতাস শ্বাস নেন, তারা যারা ঘরের ভেতরে থাকেন তাদের তুলনায় নিজের কাজে অনেক বেশি ফোকাস থাকতে, মানসিক চাপ প্রশমিত করতে এবং আরও অনেক নতুন কিছু করতে সক্ষম।

গবেষকদের মতে আমরা যখন বাড়ির ভিতরে, শহরে বা অন্য কোনও তৈরি পরিবেশে থাকি, তখন আমাদের মস্তিষ্ককে কোনও বিষয়ে ফোকাস করতে অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। একটি কারণ হতে পারে যে এই জায়গাগুলি মানুষ, যানবাহন এবং অন্যান্য জিনিসে পূর্ণ যা আমাদের চারপাশের শান্ত পরিবেশকে শব্দ দিয়ে নষ্ট করে দেয় এবং আমাদের মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। প্রকৃতিতে থাকা সবুজ স্থানগুলি – গাছপালা এবং আরও অনেক কিছু যা আমাদের মনোযোগের জন্য বিশেষ উপযোগী  বলে মনে করা হয় এটি আমাদের শহুরে পরিবেশের ক্রমাগত কোলাহল এবং তাড়াহুড়ো থেকে বিশ্রাম দেয় এবং কোনও বিষয়ে ফোকাস করার ক্ষমতাকে উন্নত করে।

সবুজ স্থানগুলিতে(Green Spaces) দূষণ কম হওয়ার কারণে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেশি। এর ফলে এই সব এলাকায় পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস নেওয়ার কারণে,ব্যক্তিদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট এবং অ্যালার্জির ঝুঁকি অনেক কমে যায়।এছাড়া গবেষকদের মতে সবুজ স্থানে সময় কাটানো ব্যক্তিদের মনোযোগ, স্মৃতি এবং সৃজনশীলতা সহ জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে ।সেই সাথে মানসিক ক্লান্তি কমাতে এবং কোনও বিষয়ে ফোকাস উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

প্রাকৃতিক আলোতে সময় কাটানো ব্যক্তিরা  সূর্যালোক থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পেতে পারে যা আমাদের হাড়ের স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং মানসিক সুস্থতার উন্নতি করে৷

খবরটি শেয়ার করুণ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন


Bandna Festival: ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পাঁচ দিন বাঁদনার আমেজে মশগুল থাকে

বলরাম মাহাতোঃ চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী কার্তিক অমাবস্যার আগের দিন থেকে মোট পাঁচ দিন ব্যাপী বাঁদনার(Bandna Festival) আমেজে মশগুল থাকে ছোটনাগপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অবশ্য, পরবের শুভ সূচনা হয় তারও কয়েকদিন আগে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক শাসন ব্যবস্থার চূড়ামণি হিসাবে গাঁয়ের মাহাতো, লায়া, দেহরি কিম্বা বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নির্ধারণ করেন- ৩, ৫, ৭ বা ৯ ক’দিন ধরে গবাদি পশুর শিং-এ তেল মাখাবে গৃহস্বামী! রুখামাটির দেশের লোকেরা কোনোকালেই মাছের তেলে মাছ ভাজা তত্ত্বের অনুসারী নয়। তাই তারা গোরুর শিং-এ অন্য তেলের পরিবর্তে কচড়া তেল মাখানোয় বিশ্বাসী। কারণ কচড়া তেল প্রস্তুত করতে গোধনকে খাটাতে হয় না যে! কচড়া তেলের অপ্রতুলতার কারণে বর্তমানে সরষের তেল ব্যবহৃত হলেও, কচড়া তেলের ধারণাটি যে কৃষিজীবী মানুষের গবাদি পশুর প্রতি প্রেমের দ্যোতক, তা বলাই বাহুল্য! এভাবেই রাঢ বঙ্গে গোবর নিকানো উঠোনে হাজির হয়- ঘাওয়া, অমাবস্যা, গরইয়া, বুঢ়ি বাঁদনা ও গুঁড়ি বাঁদনার উৎসবমুখর দিনগুলি। পঞ্চদিবসে তেল দেওয়া, গঠ পূজা, কাঁচি দুয়ারি, জাগান, গহাইল পূজা, চুমান, চউক পুরা, নিমছান, গোরু খুঁটা, কাঁটা কাঢ়া প্রভৃতি ১১টি প্রধান পর্ব সহ মোট ১৬টি লোকাচারের মাধ্যমে উদযাপিত হয় বাঁদনা পরব(Bandna Festival )। .....বিস্তারিত পড়ুন

Vijay Stambh : চিতোরগড় দুর্গে বিজয় স্তম্ভ হিন্দু – মুসলিম সহাবস্থানের প্রতীক

উত্তরাপথঃ খ্রিস্টীয় ৭ম শতাব্দীতে মৌর্য রাজবংশ কর্তৃক স্থাপিত চিতোরগড় দুর্গ সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই দুর্গ তার বিশাল কাঠামো, রাজপ্রাসাদ, একাধিক  সুদৃশ্য মন্দির সহ সুন্দর জলাশয়ের জন্য বিখ্যাত।৭০০-একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত, এই দুর্গটিতে প্রায় ৬৫টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন রয়েছে যা রাজপুত এবং ইসলামিক স্থাপত্য শৈলীর সূক্ষ্মতার প্রমান দেয়। বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh)) হল এই দুর্গে অবস্থিত,সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর কাঠামো।এই আশ্চর্য-অনুপ্রেরণামূলক স্তম্ভটি কেবল তার উচ্চতার জন্য বিখ্যাত নয়,এটি রাজপুতদের অদম্য সাহস এবং অধ্যবসায়ের গল্পও বলে যা চিতোরগড় দুর্গেরই সমার্থক হয়ে উঠেছে।বিজয় স্তম্ভ (Vijay Stambh), নাম থেকে বোঝা যায়, বিজয়ের প্রতীক।  প্রাচীনকালে যে কোনো যুদ্ধ অভিযানের সাফল্যের পর সেই বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে রাজারা মন্দির, স্তূপ, স্মৃতিস্তম্ভ ও স্তম্ভ নির্মাণ করতেন।  ৯ তলা এই বিজয় স্তম্ভটি ১৯৪০ থেকে ১৪৪৮ সালের মধ্যে মহারানা কুম্ভ দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। .....বিস্তারিত পড়ুন

World Children's Day: সত্যিই কি ‘বিশ্ব শিশু দিবস´পালনের কোনও যৌক্তিকতা আছে ?

প্রীতি গুপ্তাঃ হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটি দিন তারপর ১৪ নভেম্বর আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে  পালন করা হবে ‘বিশ্ব শিশু দিবস´(World Children's Day)।এই দিনটি শিশুদের মঙ্গলের জন্য, তাদের ভবিষ্যতের জন্য একটি অনুকূল বিশ্ব তৈরি করার প্রচেষ্টার একটি দিন।কিন্তু প্রশ্ন,সত্যি কি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু দিবস পালন করার কোনও যৌক্তিকতা আছে? আদৌ কি এর কোনও লাভ আমরা আমাদের প্রান্তিক স্তরের শিশুদের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি ? সম্প্রতি কাজের প্রয়োজনে রাজস্থানের উদয়পুর শহরে আসা। আমরা সবাই জানি উদয়পুর বিখ্যাত তার হ্রদের কারণে । এখানকার স্থানীয় থেকে পর্যটক সকলেই এই সুন্দর হ্রদগুলির আকর্ষণে বারবার ছুঁটে যায়। ‘ফতে সাহেব লেক’ রাজস্থানের উদয়পুরের এক বিখ্যাত পর্যটক স্থল।এখানে বহু মানুষ সকাল- বিকেল এই লেকের চার ধারে হাঁটাহাঁটি করতে বেরিয়ে পড়ে। সেভাবেই দুই দিন আগে বিকেলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়লাম ‘ফতে সাহেব লেকের ধারে হাঁটার উদ্দেশ্য নিয়ে। হাঁটার মাঝখানে হঠাৎ করে একটি বাচ্চাছেলে আওয়াজ করে ডাকছে ,বললাম কিছু বলবি? সে বলল একটু দাঁড়াতে। ও ছুটে গিয়ে হাতে করে কয়েকটি বেলুন নিয়ে এসে হাজির । সে বারবার বেলুন কেনার অনুরোধ জানাতে লাগল। হাতে অন্য কাজের চাপ নেই অনেকটা অবসর সময় তাই আমি অনেকটা সাংবাদিক সুলভ মন নিয়ে বললাম ঠিক আছে আমি তোর বেলুন নেব ,কিন্তু তার আগে আমি  তোকে যা বলব তার তার ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে। সে খুশী খুশী রাজি হয়ে গেল । .....বিস্তারিত পড়ুন

NASA Carbon Emission: পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে

উত্তরাপথঃ কার্বন নির্গমন (NASA Carbon Emission) সম্পর্কে নাসার সর্বশেষ আবিষ্কার পৃথিবীর জন্য এক সতর্কতা সংকেত। মহাকাশ সংস্থার মতে, পৃথিবী কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার চেয়ে বেশি নির্গত করছে, যার ফলে গ্রিনহাউস গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। NASA এর এই আবিষ্কারটি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসাবে দেখা যেতে পারে, সেইসাথে কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করেছে।নাসার সর্বশেষ গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে পৃথিবীর মহাসাগর এবং ভূমি-ভিত্তিক বাস্তুতন্ত্র আগের চেয়ে কম কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে গত এক দশকে ভূমি এবং মহাসাগর দ্বারা শোষিত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ৫% হ্রাস পেয়েছে, যার ফলে গ্যাসের বায়ুমণ্ডলীয় ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। .....বিস্তারিত পড়ুন

Scroll to Top